“যেগুলো সম্পর্কে তোমাদের নিষেধ করা হয়েছে যদি তোমরা সেসব বড় গোনাহ গুলো থেকে বেঁচে থাকতে পার। তবে আমি তোমাদের ক্রটি-বিচ্যুতিগুলো ক্ষমা করে দেব এবং সম্মান জনক স্থানে তোমাদের প্রবেশ করার।” (সূরা আন নিসাঃআয়াত-৩১)
মাগুরার লিটন ভাইয়ের একটা ছোট খামার কিছু সখেরবসে কবুতর পালেন। কিছুদিন আগে তিনি ২ জোড়া কবুতরের বিজ্ঞাপন দিলেন, অনেক সাড়া পেলেন। কিন্তু একজন বিশেষ ভাবে অনুরধ করেন যে তার কবুতর গুলো খুবই পছন্দ হয়েছে আর তিনি এটা নিতে আগ্রহী যাই হোক দাম দর শেষে, ক্রেতা তাকে বিশেষ ভাবে অনুরধ করলেন যেন তিনি কবুতর গুলো ঢাকায় পৌঁছে দিবার ব্যাবস্থা যেন করেন তাহলে তিনি কৃতজ্ঞ থাকবেন। যেহেতু লিতন ভাইয়ের নিয়মিত অফিসের কাজে ঢাকায় আসতে হয়,তাই তিনি কোন প্রকার দ্বিমত না করেই রাজি হয়ে গেলেন। গত তিনি বৃহস্পতি বা রাতে গাড়িতে উতলেন ঢাকার জন্য শুক্রবার ভোরে তিনি ঢাকার খিলগাঁও পেট্রোল পাম্পের অখানে কথামত দাড়িয়ে আছেন, কিছুক্ষণ আগেও ক্রেতার সাথে কথা হয়েছে। ক্রেতা তাকে আসস্থ করেছেন যে তিনি লোক পাঠাচ্ছেন…! কিন্তু ১ ঘণ্টা যাই ২ ঘণ্টা যাই লোকের কোন খবর নাই ক্রেতা কে ফোন দিলে বন্ধ টোন আসে, শেষে কোন উপায়ন্তর না দেখে তিনি কাপ্তান বাজার হাতে গিয়ে কবুতর গুলো বিক্রি করে বাসাই ফেরেছিলেন এক তাক্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে।
তাহলে কি বিশ্বাস নামক কোন বস্তু আর নাই। “প্রত্যেককে বিশ্বাস করা বিপদজনক, কিন্তু কাউকে বিশ্বাস না করা আরো বেশী বিপদজনক।“(আব্রাহাম লিংকন।) আমাদের কবুতর খাতে বিশ্বাস টাই একমাত্র জিনিষ যার উপর ভর করে চলছে। হয়ত ছবি দেখে, বিক্রেতা কে জানাচ্ছেন টাকা পাঠাচ্ছেন কবুতর বুঝে নিচ্ছেন এটাই হয়ত অনেকেই ১০০% ভাগ সন্তোষ হচ্ছেন না কিন্তু এভাবেই চলছে এই খাতটি। ব্যাতিক্রম যে হয়না টা না। কিন্তু তারপরও সর্বোপরি সন্তোষজনকই বলা যায়। কিন্তু সেদিনের যে ঘটনাটা ঘটেছে সেটা কিন্তু স্বাভাবিক না। কিছুদিন দরেই লক্ষ করা যাচ্ছে কিছু লোক এ ভাবেই ফোনে কনফার্ম করে কবুতর আনতে বলে, এর পর বলে অমুক দোকানে রাখেন, আমি টাকা নিয়ে আসতেছি। এভাবে এক ঘণ্টা পার হল হয়ত আপনি একটু চা খেতে বা কিছু খেতে অন্য দোকানে গেলেন আর এই ফাকেই সে কবুতর টা নিয়ে কেটে পড়বে। আপনি হয়ত, ফিরে এসে দোকানদার কে জিজ্ঞাস করলেন যে, কবুতর কই দোকানদার আপনাকে জানাবে আপনার ভাই টো নিয়ে গেল। আপনি কিছুই করতে পারবেন না। হতবম্ব হওয়া ছাড়া। কিছুদিন আগে কাজিপাড়ার এক ছাত্র যে খুবই সখ করে কবুতর পালে, তার সাথেও এই ধরনের ঘটনা অল্পের জন্য বেচে গেছে। এরকম ঘটনা অহরহ ঘটছে। কিন্তু বেশীরভাগ খামারি এটা তেমন গুরুত্ত দেন না। বা হয়ত নিজের বোকামি টা লজ্জার খাতিরে চেপে যেতে চান। কিন্তু কেন ভাই। আপনার এহেন আচরন আরেকজনের সর্বনাশ করছে। তাই সবাইকে একটু সচেতন হতে হবে। আপানর কোন তাক্ত অভিজ্ঞতা আপনি শেয়ার করুন আপনার পরিচিত খামারির সাথে বা পরিচিত জনের সাথে, তাহলেই হত ভবিতসতে এই ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়ানো সম্ভব। আর আপনি যদি এরূপ করতেই চান তাহলে আগে বিকাশ করে টাকা নিয়ে নেন, এরপর একজনকে সাথে নিয়ে তারপর যান বা ক্রেতা কে নিজের বাসাতেই আসতে বলেন, বা যদি দূরের পথ হয় তাহলে আগে টাকা নেন এর পর পাঠাবার ব্যাবস্থা করেন। আর যদি কখনও এই ধরনের কোন তিক্ত অভিজ্ঞতার সম্মুখিন হন সেটা সবার সাথে শেয়ার করুন, তাহলেই হয়ত ব্যাপারটাকে এড়ানো সম্ভব তা না হলে নয়।
পরিশেষে,যারা এই ধরনের ঘৃণিত কাজ করে থাকে, তারা হয়ত ভাবে যে তারা পার পেয়ে যাবে, কিন্তু এদের সম্পর্কে আল্লাহ্ বলেন, “আমি প্রত্যেককেই তার অপরাধের কারণে পাকড়াও করেছি। তাদের কারও প্রতি প্রেরণ করেছি প্রস্তরসহ প্রচন্ড বাতাস, কাউকে পেয়েছে বজ্রপাত, কাউকে আমি বিলীন করেছি ভূগর্ভে এবং কাউকে করেছি নিমজ্জত। আল্লাহ তাদের প্রতি যুলুম করার ছিলেন না; কিন্তু তারা নিজেরাই নিজেদের প্রতি যুলুম করেছে।“ (সূরা আল আনকাবুতঃ আয়াত-৪০)
মূল লেখক : সোহেল রাবি ভাই
সাবধান (কবুতরের কেস স্টাডি) BD Online Pigeon Market

Pigeon Discussion
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন