“এবং কাফেরেরা চক্রান্ত করেছে আর আল্লাহও কৌশল অবলম্বন করেছেন। বস্তুতঃ আল্লাহ হচ্ছেন সর্বোত্তম কুশলী।“(সূরা আল ইমরানঃআয়াত-৫৪)
পৃথিবীর বড় বড় রিসার্ভ ফরেস্ট বা অভায়ারন্যের মধ্যে সারেঙ্গেটি, মাসাই মারা ও কুগার ন্যাশনাল পার্ক অন্যতম। এখানে ওয়াইল্ড বিস্ট, ইম্পালা ও স্প্রিং বক(হরিন প্রিজাতি)নামে প্রাণীর প্রচুর সমাগম দেখা যায়। আর এদের বংশ বৃদ্ধি জ্যামেতিক হারে হয় আর এটা এমন ভাবে ঘটে সে এক আশ্চর্য ব্যাপার। আর এ কারনেই এদের খাদ্য ঘটতি বেশী দেখা যায়। এ কারনে তারা বছরের একটা সময়ে মাইগ্রেশন করে থাকে খাবারের খোঁজে। মাসাই মারার, মারা নদীতে এরা যেভাবে মাইগ্রেশন করে তা দেখার জন্য হাজার হাজার ভ্রমন পিয়াসী মানুষ জড় হয় এই অভনব মাইগ্রেশন দেখার জন্য। এই মাইগ্রেশন একদিকে যেমন দৃষ্টি নন্দন অন্যদিকে তেমনি মর্মান্তিক। এরা কিন্তু প্রতি বছর একই জাইগাই মাইগ্রেশন করেন না। আর এরা নদী যখন শুকনো থাকে তখনও এটা করে না। যখন এটা করে তখন বন্যা বা ঢল নামে। আর এই সময়ে সেই নদীতে কুমিরে ভরা থাকে, ফলে মাইগ্রেশনের সময় পদদলিত ও ঢলে বা ডুবে অনেক প্রাণীর মৃত্যু ঘটে থাকে। আর সেই মাইগ্রেসন সম্পূর্ণ হবার সময় ও পরে কুমির, সারস ও শকুনদের ভূরি ভোজের মহোৎসব দেখা যাই, আর অন্যদিকে সেই সব প্রাণীদের আহাজারি। কেন তারা এই কঠিন সময়ে এই মাইগ্রেশন করে,কেন অন্য সময় যে প্রাণীরা অন্য যেকোনো বিষয় ভুলে যাই আর এক্ষেত্রে কেন ভুলে না? তা আজ রহস্যাবৃত, যদিও প্রাণীদের কোন ঘটনা বা কোনকিছু বেশীদিন মনে রাখে না। কিন্তু এই মাইগ্রেশনের ব্যাপারটা কেন যেন আশ্চর্য? তারা ভুলে না ফলে যে প্রান হানি ঘটে তা বর্ণনা করার মত না। যদিও বন বিভাগ এটার কিছু করতে পারে নাই বা তারা করতে চান নাই বা করতে চেষ্টাও করে নাই। কারণ হয়ত প্রকৃতির ব্যাপারে তারা হস্তক্ষেপ পছন্দ করে না। এটা আল্লাহ্ তালার একটা ইশারা প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার জন্য।
মানুষের মধেও সেই ভুলে যাবার ব্যাপারটা আমাদের চরিত্রগত,মজ্জাগত বা জন্মগত যাই বলি না কেন সেটা আছে। কারণ ইনসান এর আভিধানিক অর্থ ইনসিওন বা ভুলে যাওয়া। দুইটা জিনিষ প্রথমে আমাকে খুবই হতবাক করেছিল। এক, পৃথিবীতে জন্ম হতে শুরু করে কেয়ামত পর্যন্ত আগমন কারী থেকে প্রস্থান কারী আমাদের সবারই বয়স সমান আর দুই কোন বুড়া মানুষ বেহেস্তে যাবে না ! রূহানী জগতে আমাদের সবারই রূহ কে একই সঙ্গে সৃষ্টি করা হয়েছে। আর সেই কারনেই আমাদের সবারই বয়স সমান, পৃথিবীতে আগমন ও প্রস্থানের সময় আলাদা। কোন বুড়া মানুষ বেহেস্তে যাবে না কারণ বেহেস্তে প্রবেশের আগে আল্লাহ্র রহমতে তখন সবাই সুন্দর যুবক হয়ে যাবে।
যাই হোক, আসল কথাই ফিরে আসি, তো সেই প্রাণীরা তাদের আগের বিপদের কথা স্মরণ রেখে আগের একই পথে আর জীবনেও পা বাড়াই না। যদিও বা তারা মানুষের থেকেও বেশী ভুলে যাবার অভ্যাস, তার পরও কিন্তু মানুষই একমাত্র প্রাণী যে আগের বিপদের কথা ভুলে যাই বা সামনের এক ভাই বিপদে পরলেও আমরা তা থেকে শিক্ষা গ্রহন করি না। সেই সব পার্ক গুলো প্রাণীদের জন্য অভায়ারন্য হলেও কবুতর জগত খামারিরে বা কবুতর প্রেমীদের জন্য অভায়াশ্রম না। আমাকে কিছুদিন আগে একজন বলেছিল ভাই আমাদের তো ক্রুটি থাকবেই আমরা তো ফেরেশতা না। হাঁ আমরা ফেরেশতা না আমরা ফেরেশতা জিন ও সকল প্রাণী থেকে শ্রেষ্ঠ করে বানিয়েছেন। আর তাই আমরা ফেরেশতা দের থেকেও শ্রেষ্ঠ। কিন্তু এই শ্রেষ্ঠতা কি খালি নামে ? আমাদেরকে প্রথমেই যে শিক্ষা দিয়া হয় তা হল যে কোন পাপই করা হোক তওবা করে মাফ, শিরক ছাড়া আর সেই মানসিকতা থেকেই না ধরনের ঠক বাজি, জচ্চরি, ধান্দাবাজি এমন কিছু নাই যা আমরা করি না। আল্লাহ্ তওবা কারিকে পছন্দ করেন, কিন্তু যে বার বারই একই ভুল করে তার ব্যাপারে আল্লাহ্ ভাল জানেন। আল্লাহ্ বলেন, “অবশ্যই তোমাদের উপর তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্ত আছে। সম্মানিত আমল লেখকবৃন্দ। তারা জানে যা তোমরা কর। সৎকর্মশীলগণ থাকবে জান্নাতে। এবং দুষ্কর্মীরা থাকবে জাহান্নামে; তারা বিচার দিবসে তথায় প্রবেশ করবে।“ (সূরা আল ইনফিতারঃআয়াত-১০-১৫)
১৯৯৬ সালে আমি সবে পড়াশুনা শেষ করেছি। টিউশনি করি, সেই সময় আমার এক বন্ধু তখন সে এক কোম্পানি তে চাকরি করে, সে চাকরীর ফাকে ফাকে শেয়ার ব্যাবসা করে ভাল টাকা কামিয়েছে। তখন রাস্তার উপর হাতে হাতে শেয়ার কেনা বেচা হত, আমার সেই বন্ধুটি আমাকে প্রলুব্ধ করে বলল, আরে ১ লক্ষ্য টাকা খালি বিনিয়োগ কর, দেখবি রাতারাতি কোটিপতি ! আমি রাজি হলাম না কারণ বড়লোক হবার বাসনা আমার কখনও ছিল না এখনও নাই। আর কাঁচা টাকার একটা গরম আছে সেটা আর এর প্রভাব সবাই সহ্য করতে পারে না। ফলে নানা অপকর্মে জরিয়ে পড়ে। রসুলুল্লাহ(সাঃ) দারিদ্রতার প্রভাব ও সম্পদের অধিক্য থেকে আল্লাহ্র কাছে পানাহ চেয়েছেন। যাই হোক, সে আমার বাসাই গিয়ে আমার মা কে রাজি করিয়ে আমাকে শেয়ার বাজারে নামাল, সে আরও বলল আরে তর টাকা ক্ষতি হলে আমি দিব। সেই সময় এই টাকা আমার কাছে অনেক কিছু অনেক মানে রাখে। যাইহোক সেই সময়তা ছিল শেয়ারের চরম অবস্থা মানে উচ্চ সময় ! যাইহোক কিছু শেয়ার সরাসরি উচ্চ দামে কিনলাম কিছু আবেদন করে পেলাম। এর পড়ি শুরু হল ভেল্কি। রাতারাতি শেয়ারের দাম অর্ধেক ! আমার ১ লক্ষ্য টাকার শেয়ার ২ টা লট বাদে মানে ৮০ হাজার টাকার শেয়ার তখন হয়ে গেল ৪০ হাজার ! আমার তো মাথা নষ্ট হবার উপক্রম। যত রাগ গিয়ে পড়ল সেই বন্ধুটির উপর, কিন্তু তাকে কি বলব তার অবস্থা তো আরও খারাপ, যাই হোক পর মোটামটি সর্বমোট ৩০ হাজার টাকাই সব গুলো বিক্রি করতে পেরেছিলাম। আর এ জন্য আজ আল্লাহ্র কাছে শুকরিয়া জানাই। কারণ আমার পরে যারা ছিল তারা সেই টাকা টুকুও পাইনি। আগের শেয়ার বাজারের অবস্থা আর বর্তমানে শেয়ার বাজারের অবস্থা প্রায় একই বরং আরও ভয়াবহ। সেই যাই হোক আমি এগুলো নিয়ে ব্যাবচ্ছেদ করতে বসিনাই। কারণ আমার ঘাড়ে একটাই মাথা। তো শেয়ার বাজারে এক ধরনের চক্র কাজ করে। সামাজিক সাইট গুলো তে সেই সব চক্র কাজ করেছে ব্যাপক। যেমন- একটা চক্র ছিল তাদের কাজ ছিল আগামিকাল কোন শেয়ারের দাম বাড়বে সেটা বলে দিয়া আর সেই সব গ্রুপের সদস্য রা সেই সব শেয়ার ক্রয় করে যে লাভ হত তার একটা অংশ তাদের দিতে হত। পরে প্রসাসন তাদের গ্রেফতার করে। এর বাইরেও কিছু চক্র কাজ করত। যারা নিজেদের মধ্যে শেয়ার কেনা বেচা করে দামের একটা পর্যায়ে নিয়ে যেত এর পর বাইরের কিছু বোকা লোক সেগুলো যখন কেনা শুরু করত তখন তারা দাম আরও বাড়াত, এর পর তারা তাদের মুনাফা টুকু নিয়ে কেটে পড়ত। আর সর্ব শান্ত হতে হত সেই মধ্যবিত্ত সেই সব লোকদের যারা তাড়াতাড়ি বড়লোক হবার নেশাই মত্ত থাকে।
হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে যে ‘কোনো ব্যক্তি মুসলমানদের লেনদেনে হস্তক্ষেপের মাধ্যমে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণ ঘটালে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা আগুনের হাড়ের ওপর তাকে বসিয়ে শাস্তি দেবেন।’
শেয়ার বাজারের মানুষ জন যখন আসতে আসতে তাদের কষ্ট গুলোকে সামাল দিয়ে কবুতর বাজারে প্রবেশের একটা চেষ্টা করছে ঠিক সেই সময়ই এই কবুতর সেক্টরের কিছু অসাধু চক্র আবার সক্রিয় হয়ে গেছে। এরা নানা ভাবে কবুতরের দাম বাড়াই কমাই, আর আবারও এই চক্রের কবলে পড়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছে সেই সব না জেনে ঝাপিয়ে পড়া লোকজন। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, তোমরা ক্রেতাকে ধোঁকা দেওয়ার লক্ষ্যে ক্রেতার মূল্যের উপর মূল্য বৃদ্ধি করে ক্রেতাকে ধোঁকা দিয়ো না’।
এরই মধ্যে হয় অনেকেই আমার মুণ্ডপাত করতে শুরু করেছেন নিশ্চয় আর না করলেও হয়ত ভ্রুকুচকে মনে মনে বলছেন ভাই আপনি তো মনে হই সব জান্তা হয়ে গেছেন। না ভাই আমি সব জান্তা না। আমি ব্যাপারটা নিয়ে অনেক চিন্তা করেছি। কিন্তু আজ সকালেই আমার এক বন্ধু যখন আমাকে আরও ভালভাবে বলল, তখন আমি সেই সব তথ্য একত্রিত করে আপনাদের সদয় অবগতির জন্য পেশ করলাম। সঠিক বা ভুল তার বিচারের দায়িত্ব আপনাদের!
“হে বুদ্ধিমানগণ! কেসাসের মধ্যে তোমাদের জন্যে জীবন রয়েছে, যাতে তোমরা সাবধান হতে পার।“(সূরা আল বাক্বারাহঃআয়াত-১৭৯)
সুত্র বা ফর্মুলা নম্বর একঃ
এই সুত্র বা ফর্মুলা ব্যাবহার করে কিছু খামারি হটাত করে রাতারাতি বিশেষ কিছু কবুতরের শো ডাউন শুরু করে প্রথমে, অবশ্য তার আগে এই কবুতর গুলো তাদের ভোগ দখলে থাকে বা আগে থেকেই সংগ্রহ করে ফেলে, এর পর শুরু হয় সেগুলোর বার বার প্রদর্শন আর নানা ধরনের কথা বার্তা বা মন্তব্য ঝগড়া ঝাটি ইত্যাদি। আর পড়ি শুরু হয় চারিদিকে মানুষের খোজ আরে ভাই আপনার কাছে কি এটা আছে আরাএ ভাই আপনার কাছে কি এটা আছে? কেমন যেন একটা হাহাকার ভাব যেন এটা না হলে বিরাট একটা ক্ষতি বা কিছু একটা হয়ে যাবে। সেই মরিচ আর বেগুন কেনার মত ১০০ কেজি কেন মরিচ ১০০ টাকা বেগুন কেন বেগুন ! কি একটা অসহ্য ব্যাপার। কিন্তু দিনের পর দিন একই কাহিনী ঘটলেও আমাদের কবুতর খামারিদের শিক্ষা হয় না তারা আরও শিক্ষা নিবার জন্য তৈরি হতে থাকে দিনের পর দিন আর তারই সুযোগে সেই সব চক্র ঠোট চাটতে থাকে মনের আনন্দে। আর বলতে থাকে আরে ভোদাই তোরা কবে শিখবি আর কবে মানুষ হবি। কিন্তু আমরা মানুষ হতে পারি না। কারণ আমাদের মধ্যে সচেতনতা নাই আর কবে হবে জানা নাই।
সুত্র বা ফর্মুলা নম্বর দুইঃ
এই সুত্র বা ফর্মুলাই কিছু লোক তার পকেটের টাকা খরচ করে (যদিও এর থেকে তারা বেশী মুনাফার আশা করে বা তাদের বিনিয়গের অংশ হিসাবে তারা এটা করে থাকে) যারা নাকি সেই চক্রেরই অংশ, মানুষ কে ফোন করতে থাকে নানা জায়গায় আপনি কোন অ্যাড দেন আর নাই দেন বা ধরুন আপনি সিরাজি বা লক্ষার অ্যাড দিয়েছেন সেই সব লোক আপনাকে কল দিয়ে জিজ্ঞাস করবে ভাই আপনার কাছে কি এই কবুতর টা হবে। আপনি বললেন না ভাই নাই আচ্ছা কার কাছে হবে? আমাকে একটু জানাবেন আপনার জানা থাকলে আপনি জানালেন আর না থাকলে জানানোর প্রতিস্রুতি দিয়ে আপনিও আবার খোজ শুরু করলেন। এভাবে বাজারের একটা রিরি পড়ে যাই ভাই এটা কোথাই ভাই এটা কোথাই পাব বা সেই সব লোক যারা আপনাকে কোন কবুতর বিক্রি করেছে এখন সে আপনার কাছ থেকে তার থেকেও বেশী দামে কিনার জন্য আপনাকে অফার দিবে। তখন আপনার চিন্তা হবে আরে সে আমার কাছ থেকে এটা নিতে চাচ্ছে কেন মনে হয় এটার বাজার ভাল তখন আপনি এটা না ছেড়ে আরও বেশী করে সংগ্রহ করাতে লেগে যাবেন। আর সেটাই তারা চাচ্ছিল। এই ধরনের কল আমার কাছে বেশী করে আসে, আর সেগুলো সব অপরিচিত নম্বর থেকেই বেশী। আমার ধারনা আমার মত অনেকেরই কাছে এ রকম কল পাওয়া অসম্ভব কিছুই না। কারণ তারা জানে অনেক মানুষ আমার সাথেই কথা বলে আর সবাই জিজ্ঞাস করে কোন কবুতর টা কিনব আর যাতে আমি বলি ওইটা কেনেন। কিন্তু আমি এই চক্রের চাল জানি বলেই বরং উল্টাটা বলি। কিন্তু মানুষ সেটা না বুঝেই সেই চালে পা দেয় আর বিপদে পড়ে।
তিন নম্বর সুত্র বা ফর্মুলাঃ
কিছু খামারি আছে তারা সরাসরি অ্যাড দিবে না। তারা এভাবে শো করে যে আমার নতুন কালেকশন, বা আমার নতুন ব্রীড বা কেমন হয়েছে অথবা এটা কোন ব্রীড বলতে পারেন? ইত্যাদি। আমাদের অনেকের মধ্যে এই বদ্ধমূল ধারনা আছে যে মানুষ ভাল কবুতরের অ্যাড দেই না। আর যেহেতু সেই গুলো অ্যাড দিতেছে না শো করছে আর তাই সেই কবুতর গুলোই মনে হই ভাল। দাম যতই হোক না কেন। আর এগুলো শো করার পর যখন কেউ দাম জিজ্ঞাস করে তাকে তাড়াতাড়ি করে দাম বলে আপনি যদি বিক্রি করার উদ্দেশ্যে এটা না করে থাকেন তাহলে কিভাবে দাম জানাচ্ছেন? কিছু খামারি আছেন যারা গিরিবাজের সাথে ফেন্সির ক্রস দিয়ে একটা জাত বের করে মানুষকে ঠকাচ্ছেন। সেদিন একজন আমাকে ব্লাক সাউথ আফ্রিকান আউল দেখালেন তিনি কিনেছেন উনি মহা খুশি, আমি এই ব্রীড কোনদিন দেখি নাই। অরে ভাল করে পরীক্ষা করে বুঝলাম এটা ঝাক এর সাথে চাইনা আউল এর ক্রস করে এই জাত তুলেছেন। আর তিনি ভাল দামে বিক্রিও করেছেন। বিশিষ্ট ছাহাবী ওয়াসিলা ইবনুল আকওয়া (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্ল¬াহ (ছাঃ) আমাদের কাছে আসতেন এবং বলতেন, হে বণিক দল! তোমরা মিথ্যা কথা ও মিথ্যা কারবার থেকে অবশ্যই দূরে থাকবে’।
আমাদের দেশে এই ধরনের খামারির সংখ্যা নেহাতই কম না কিন্তু তারা সব নাজায়েজ কাজকে জায়েজ করার জন্য নিজে ফতোয়া তৈরি করে রাখে যাতে মানুষ কে বুঝাতে পারে বা মনে মনে একটা লজিক দিয়ে নিজেকে অনর্থক সান্তনা বা বুঝ দেয়। এরা নিজেদের কে ব্রিডিং কারিগর মনে কর। আসলে এরা যে কি সেটা এরা নিজেরাও জানে না। এরাই হল কবুতর জগতের প্রধান শত্রু যদিও এরা কবুতর প্রেমি বলে পরিচয় দেয়।
“তাদের দুস্কর্ম তাদেরকে বিপদে ফেলেছে, এদের মধ্যেও যারা পাপী, তাদেরকেও অতি সত্ত্বর তাদের দুস্কর্ম বিপদে ফেলবে। তারা তা প্রতিহত করতে সক্ষম হবে না।“(সূরা আল যুমারঃআয়াত-৫১)
তারা হয়ত মনে করে তাদের এই চালাকি কেউ বুঝতে পারে না, কারণ তারা একাই চালাক। কিছু লোক ছাড়া সবাই বুঝে কিন্তু কিছু বলতে পারে না। বা বলার কিছুই বা করার কিছু থাকে না মনে মনে ঘৃণা করা ছাড়া। আমাদের দেশে কিছু খামারি তাদের মনের মধ্যে জং পড়ে গেছে। তারা সেই ঘৃণা তুকুও করে না , তারা সাড়া জীবন মানুষের উপকারের কথা দূরে থাক, ভাল কিছু করার কথা চিন্তাও করে না। তারা ভাল কিছু দেখলেই নানা নেতিবাচক কথা বলে মানুষদের নিরুৎসাহিত করে। ফলে আমাদের দেশে আজ পর্যন্ত ভাল কিছু এখনও পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি আর তাতে লাভ তাদেরই। এরা বাইরে কবুতর পাঠাই কি আসে যাই এখানকার খামারিরা মরল না বাচল। কিন্তু তারা জানে না। যে কেউ যদি কারো জন্য গর্ত খুঁড়ে তাহলে সেটাতে তারও পরার সম্ভাবনা বেশী থাকে। এরা কয়টা টাকার জন্য নিজের ঈমান ও জামীর বিক্রি করে দেয়। “তোমরা আল্লাহর অঙ্গীকারের বিনিময়ে সামান্য মূল্য গ্রহণ করো না। নিশ্চয় আল্লাহর কাছে যা আছে, তা উত্তম তোমাদের জন্যে, যদি তোমরা জ্ঞানী হও।“ (সূরা নাহল:আয়াত-৯৫)
এই চক্র শকুনের মত কাল থাবা নিয়ে বসে আছে একটু সুযোগের অপেক্ষায়, আমাদের যেকোনো দুর্বল মুহূর্তে আরও বড় সর্বনাশ করতেও এরা প্রস্তুত, তাই আমাদের আগে থেকেই সতর্ক হতে হবে। আর এটাই সেই উপযুক্ত সময়। আল্লাহ্ বলেন, “আল্লাহ কোন জাতির অবস্থা পরিবর্তন করেন না, যে পর্যন্ত না তারা তাদের নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন করে। আল্লাহ যখন কোন জাতির উপর বিপদ চান, তখন তা রদ হওয়ার নয় এবং তিনি ব্যতীত তাদের কোন সাহায্যকারী নেই।“(সূরা রা’দঃআয়াত-১১) কিন্তু দুঃখ জনক হলেও সত্য যে আমারা এখনও আমাদের ভাগ্য পরিবর্তন করতে যা করা দরকার তার কিছুই করি না নিয়তির হাতে নিজেকে সঁপে দিয়ে বসে থাকে অনায়াসে।
আমাদের দেশের এই সব চক্রকে কোনদিন কোন শিক্ষা দিয়া যাই না বা যাবে না যতক্ষণ না আল্লাহ্ এর তরফ থেকে কোন ফায়সালা এসে যায়। এরা দরিদ্রতা ভয় করে আর তাই নানা অপকর্মের মাধ্যমে টাকা রোজগারে পিছপা হয়না। এরা হালাল ও হারামের পার্থক্য করে না। আর এর যে খারাপ প্রতিক্রিয়া হতে পারে সেটা তারা উপলব্ধি করতে পারে না। আজ তারা ১ লক্ষ্য টাকা আয় করলে নানা ভাবে তাদের এর থেকেও বেশী খরচ হয়ে যাই নানা চিকিৎসা ও বেফজুল কাজে, তারা শান্তিতে ঘুমাতে পারে, শান্তিতে খেতে পারেনা। তারপরও তারা বুঝে না তাদের উপলব্ধি হয়না। তাহলে এই টাকা অর্জন করে কি লাভ? এজন্য বলা হয় easy money, easy go !
“শয়তান তোমাদেরকে অভাব অনটনের ভীতি প্রদর্শন করে এবং অশ্লীলতার আদেশ দেয়। পক্ষান্তরে আল্লাহ তোমাদেরকে নিজের পক্ষ থেকে ক্ষমা ও বেশী অনুগ্রহের ওয়াদা করেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সুবিজ্ঞ।(সূরা আল বাক্বারাহঃআয়াত-২৬৮)
আমাদের হাই স্কুলের ক্লাসে একটা দুষ্ট ছেলে ছিল নাম ফয়সাল। সারাদিন নানা ধরনের দুষ্টামু আর বাদরামু তে ব্যাস্ত থাকত। আমরা সবাই তাকে এক বিচিত্র কারনে পছন্দ করতাম। তারও কারণ ছিল আর সেটা হল আমাদের স্কুল অউয়ার সাড়ে পাচ ঘণ্টা আর এর মধ্যে কেউ ক্লাস থেকে বের হতে পারবে না। কোন কথা বলতে পারবে না। চুপ করে বসে থাকতে হবে বেঞ্চিতে। এটাও কি সম্ভব। আমাদের ক্লাস ক্যাপ্তেন ছিল হার বজ্জাত সে ছিল সারের একনম্বর চামচা। ফয়সাল ক্যাপ্টেনের চোখ রাঙ্গান কে পাত্তা দিত না আর যেহেতু ফয়সাল একটু ডানপিটে বলে সে তাকে খ্যাপাত না। যাই হোক, ক্লাসে তার বদমাসির জন্য অনেক মার খেত, কিন্তু তাতে তার কোন কিছু এসে যেত না। তারটা পছন্দের গান ছিল বাংলা সিনেমার,’ তুমি যাইবা কেমনে, বোল যাইবা কোনখানে…? ধরা পইরা গেছ তুমি রঙ্গিলা জালে।হাইরে রঙ্গিলা জালে।‘ এই গানটা শুনতে শুনতে প্রথম দিকে একটু বিরক্ত লাগলেও পরে কেমন যেন এটার সাথে একটা পরিচিতি হয়ে গেছিলাম। আমাদের ইংরেজি শিক্ষক যিনি অনেক বছর ইংল্যান্ডে ছিলেন আর মেম বিয়ে করেছিলেন, তিনিও ক্লাসে একবার পড়াতে এসে খুবই বিরক্ত হয়ে বললেন। তোমরা যান আমার বাসার কাজের বুয়া পর্যন্ত ইংরেজিতে কথা বলে অথচ তোমরা তা পার না… what a shame…! What a pity…!! পরেরদিন আমরা সবাই ক্লাসে আসলাম এসে দেখলাম ফয়সাল কেমন যেন একটু পরিবর্তন সবার সাথে ইংরেজিতে কথা বলছে। ভুল হোক আর সুদ্ধ হোক কিন্তু বলছে। গতকালের সারের কথা তার ইগো তে লেগেছিল তাই সে প্রতিজ্ঞা করেছিল কাজের মেয়ে যদি ইংলিসে কথা বলতে পারে তাহলে আমি কেন পারব না। সবই ঠিক আছে সমস্যা হল তার গান গাওয়া। আর তারই সেই পরিচিত গানটা আজ কেন যেন অপরিচিত মনে হল। ‘how you will go, and where you will go..? you are caught in the color net….!’ কিন্তু গান গাওয়া নিয়ে কাজ আর সে তো কাওকে শুনানোর জন্য গাইছে না সে নিজের জন্য গাইছে। তাই সে কাউকে পরোয়া না করে, গেয়েই চলল। আজ অনেক বছর তার সাথে দেখা হইনি কেমন আছে জানিও না। কিন্তু তার কথা মনে আছে, মনে থাকবে। আমাদের দেশে এই সব বাটপার, জোচ্চোর লোক ঠকানর লোকদের জন্য মাঝে মাঝে মনে হয়, সেই গানের মত যে তারা কালার নেট বা রঙ্গিলা জালে হয়ত ধরা পড়বে না কোন দিন, কিন্তু সাদাকাল জালে একদিন ঠিকই ধরা পড়বে…! পড়তেই হবে…!! কোন ভুল নাই তাতে…!!!
আল্লাহ্ বলেন,“আল্লাহ তোমাকে যে অর্থ সম্পদ দিয়েছেন তার দ্বারা আখিরাতের আবাস (জান্নাত) অনুসন্ধান করো এবং পার্থিব জীবনে তোমার বৈধ (ভোগের) অংশও ভুলে থেকোনা। (মানুষের) কল্যাণ করো, যেমন আল্লাহ তোমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। আর (অর্থ সম্পদ দ্বারা) দেশে বিপর্যয় সৃষ্টি করোনা। বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের আল্লাহ পছন্দ করেন না। “(সূরা ২৮ আল কাসাস : আয়াত ৭৭)
মূল লেখক : সোহেল রাবি ভাই
শেয়ার বাজার কবুতরের সূত্র ও ফর্মুলা (কেস স্টাডি) BD Online Pigeon Market

Pigeon Discussion, Pigeon Diseases & treatment