আমার কবুতর ভাবনা।
“যে ভয় করে, সে উপদেশ গ্রহণ করবে,আর যে, হতভাগা, সে তা উপেক্ষা করবে, সে মহা-অগ্নিতে প্রবেশ করবে।“(সূরা আল আ’লা-১০,১১,১২)
আজাদ ভাই একজন নতুন কবুতরপ্রেমি। তার খুবই সখ যে তিনি একটা ছোট কবুতরের আদর্শ খামার করবেন। আর সেই লক্ষে তিনি গ্রাম থেকে কাপ্তান বাজারে এসেছেন কিছু কবুতর কিনবেন। সেখান থেকে তিনি লক্ষা, সিরাজি নিয়ে খুশি মনে বাসাই ফিরছেন, বাসে তার সাথে একজন বড় কবুতর খামারির দেখা, তিনি নানা কথা প্রসঙ্গে জানালেন যে তার কাছেও এর থেকে ভাল কবুতর আছে যদি আপনি নিতে আগ্রহী থাকেন তাহলে আপনার জন্য সস্তা দামে দিব। আজাদ ভাই সরল মনে তার কাছ থেকে ২ জোড়া পূর্ণবয়স্ক সারটিন প্রতি জোড়া ২০ হাজার টাকা করে, একজোড়া পূর্ণবয়স্ক আইস মুখি দাম ৬৫ হাজার টাকা দিয়ে নিলেন। এই শর্তে যে ডিম বাচ্চা নিশ্চিত। যদিও মুখি ২ জোড়া গত ১ বছরেও ডিম দেইনি। বা দিবার তেমন কোন লক্ষণ ও নাই, তবে তাতে তার মন খারাপ দেখলাম না, বরং সে খুশি কারণ তার আইস মুখি ৩ বার ডিম দিয়েছে বাচ্চাও ফুটেছে আর সেগুলো বড় হয়েছে। তিনি হয়ত ভাল মানুষ তাই তিনি খুশি হয়ে গেলেন। কিন্তু আমি খুশি হতে পারলাম না, আমার ধারনা এমন কোন নতুন কবুতর খামারি নাই যার এই ধরনের অভিজ্ঞতা হয় নাই। বিক্রেতার বিচারে হয়ত তিনি নিজে সাফাই গাইতে পারেন ভাই আমি তো কাউকে জোরজবরদস্তি করি নাই, তিনি তো স্বেচ্ছাতেই কিনেছেন, এখানে আমার দোষ কোথায় ইত্যাদি ইত্যাদি।
হাঁ দোষ টা যে কোথায় সেটাই আমাদের আগে জানা খুবই দরকার।
হাদিসে আছে,”ব্যবসায়ী যদি সীমাতিরিক্ত মূল্য গ্রহন করে এ সুযোগে যে ক্রেতা পণ্যের প্রকৃত মূল্য জানে না, তাহলে এই অতিরিক্ত পরিমানের মূল্য সুদ পর্যায়ে গণ্য হবে।” আর সুদের শাস্তি সম্পর্কে কমবেশী সবাই জানেন, আল্লাহ্ বলেন,” আল্লাহ্ ব্যাবসাকে হালাল ও সুদকে হারাম করেছেন।“( সূরা বাকারাঃআয়াত-২৭৫)।
ফেরেশতা কর্তৃক গোসল করার সভাগ্যবান সাহাবী হানযালা তনয় আব্দুল্লাহ(রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল(সাঃ) ইরশাদ করেন,” জেনে বুঝে এক দিরহাম পরিমান সুদ খাওয়া ছত্রিশবার জেনা করার চেয়েও বড় অপরাধ।”
অপর এক হাদিসে ইবনে আব্বাস(রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী করিম(সাঃ) ইরশাদ করেন,”যখন এলাকায় সুদ ও ব্যাভিচার প্রকাশ পাবে তখন বুঝতে হবে তারা নিজেদের উপর আল্লাহ্র শাস্তি হালাল করে নিয়েছে।“ এ রকম আরও অনেক হাদিস ও আয়াত রয়েছে আমাদের কে সতর্ক করার জন্য কিন্তু আমরা কয়জন সতর্ক এই ধরনের জঘন্য অপরাধের থেকে, কিন্তু তাহলে কি রাতারাতি সবাই ভাল হয়ে যাবে। না যারা ভাল হবার তারাই হবে।
আল্লাহ বলেন, “যে কেউ সৎপথে চলে, তারা নিজের মঙ্গলের জন্যেই সৎ পথে চলে। আর যে পথভ্রষ্ট হয়, তারা নিজের অমঙ্গলের জন্যেই পথ ভ্রষ্ট হয়। কেউ অপরের বোঝা বহন করবে না। কোন রাসূল না পাঠানো পর্যন্ত আমি কাউকেই শাস্তি দান করি না।“(সূরা বনী ইসরাঈলঃ আয়াত-১৫)
প্রবাদ আছে, “পায়রা পুঁথি তাস, করে সর্বনাশ!” আসলেই কথা সত্য যদি এখনকার কবুতরের ব্যাপারটা নিয়ে চিন্তা করি। আমরা যে জিনিসটার পিছনে একবার পড়ি সেটার বারটা বাজা না পর্যন্ত বা তার শেষ অবস্থা না দেখা পর্যন্ত দম ফেলি না। যখন কাঁচা মরিচের দাম বেশী তখন আমরা বেশী করে কাঁচা মরিচ কিনি, যখন বেগুণের দাম বেশী তখন বেগুন বেশী করে কিনি, কিন্তু এগুলো যদি আমরা না কিনি তাহলে কি হবে? আমরা মারা যাব? কবুতরের খামারি দের সেই একই রোগ, লক্ষা কিনতে কিনতে মানুষ লক্ষার বারটা বাজিয়েছে এখন, সার্তিন, জার্মান শিল্ড, মুখী এখন সেটা হেলমেট এ ঠেকেছে। আর কি আশ্চর্য আমরা সবাই একই ভাবে ছুটছি। ভাল জিনিষের থেকে খারাপ জিনিনের প্রতি আমাদের আকর্ষণ সহজাত একটা ভাল ব্রীডের কবুতর আমরা সহজে কিনতে চাইনা, কিন্তু উল্টা পাল্টা ব্রীডের কবুতর বিক্রি করতে যদি একটু চাপাবাজি করেন দেখেবেন লাফিয়ে লাফিয়ে আপনার কবুতর কিনছে। যেমনঃ সবুজ গলা এর সাথে লক্ষা এর ক্রস করে = লাজুক আবার নাম পরিবর্তন করে সেজুক লক্ষা, মন্দানা এর সাথে কিং এর ক্রস করে = মন্টানা, সিরাজি+লক্ষা, আউল+ঝাক এর ক্রস করে আফ্রিকান আউল নামে চালাচ্ছেন কিছু অসাধু কবুতর খামারি। আর এগুলো তে আকর্ষিত হয়ে প্রতারিত হচ্ছেন অনেক খামারিরা।
কিছুদিন আগে দেখলাম একটা কার্টুনে ২ জনের মাথা অনেক মোটা আর এর ভারে তারা ঠিকমত কাজ করতে পারছে না তাই তারা মাথার মগজ টা কে পাশে রেখে কাজ করা শুরু করল, আমাদের এমনিতেই অনেক বুদ্ধি, কিন্তু কবুতর সেক্টরে বা কবুতরের ব্যাপার আসলেই অনেক খামারি সেই কার্টুন এর মত মগজ টা পাশে রেখে দেয়। আর এজন্য আমাদের বিচার বুদ্ধি থাকে না সেই সময় বা আমরা একটু বেশী চালাকি করি হরিনের মত (বলে রাখা ভাল হরিন এম্নিতেই খুব চালাক কিন্তু ঝোপে কোন শব্দ হলে বা নরাচরা দেখলেই সেটাকে বুঝের জন্য আরও কাছে যাই আর এই সুযোগের সে শিকারে পরিনত হয়।)
ইসলামে হালাল ভাবে জীবিকা অর্জনের তাগিত দিয়া হয়েছে, নবী করিম(সাঃ) ঘোষণা করেছেন,” যে ব্যাক্তি বৈধভাবে জীবিকা অর্জন করে, কিয়ামতের দিন তার মুখমণ্ডল পূর্ণিমার চাঁদের মত উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।“ আরেক হাদিসে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,‘ক্বিয়ামতের দিন ব্যবসায়ীরা মহা অপরাধী হিসাবে উত্থিত হবে। তবে যারা আল্লাহকে ভয় করবে, সততা ও ন্যায় নিষ্ঠার সাথে ব্যবসা করবে তারা ব্যতীত’।“ক্বিয়ামতের ময়দানে কঠিন শাস্তি হ’তে মুক্তি পেতে হ’লে আল্ল¬াহভীতি সহকারে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে হবে। কাউকে সামান্যতম ঠকানোর মানসিকতা অন্তরে পোষণ করা যাবে না।
কথা গুলো শুনে অনেকেই হয়ত মনে ভয় ধরে যাবে তাহলে কি? কবুতর বিক্রি করা ছেড়ে দিব? তা কেন? আমাদের দেশে যেমন বুনো ওল তেমনি বাঘা তেতুল। ক্রেতা ও বিক্রেতা সমান। একজন বিক্রেতা যেমন সুযোগ পেলে ক্রেতা কে শোষণ করে তেমনি ক্রেতা বিক্রেতার অসহায় এর সুযোগ নিয়ে তাকে প্রাপ্য মূল্য দিয়া থেকে বঞ্চিত করে। এভাবে আমাদের এই কবুতর সেক্টরে এক অসুভ প্রতিযোগিতা চলে ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে। যে যত চাপা বাজি বা মিথ্যা কথা বলতে পারবে সে, সে তো বড় ক্রেতা আর যে যত বেশী চাপা মারতে বা ঠকবাজি করতে পারবে সে তত বড় বিক্রেতা। এভাবেই পাটা পুঁতাই ঘষা ঘষি টে মরিচের দম শেষ হবার মত অবস্থা হয় সৎ বিক্রেতা ও নিরীহ নতুন ক্রেতার। আমাদের দেশে সবাই প্রথমে শখের বসেই কবুতর পালন শুরু করে। আর কবুতর অধিকাংশ মানুষেরই ভালবাসার প্রতিক বা শান্তির প্রতিক হিসাবে কবুতর পালন শুরু করে। পরবর্তীতে অনেক ত্যাগ তিথিক্ষার পরে যখন একজন খামারি কবুতরের ব্রিডিং শুরু করে। তার প্রথম কবুতরের ডিম বা বাচ্চা পাবার আনন্দ হয় সে ছাড়া পৃথিবীর আর কেউ জানে না। পরে যখন বাচ্চা বড় হয় তার চোখে নতুন স্বপ্ন বাসা বাধে, খামারি হবার, এভাবে সে আসতে আসতে একজন বড় খামারি হয়ে উঠে। আর এই খামারি হতে গিয়ে সে প্রথমেই একজন ভাল ক্রেতা হয়ে যান বা যেতে হয়। অনেক মূল্য পরিশোধের পর তিনি যখন একজন পর্যায়ে আসেন, তখন শুরু হয় তিনি যেমন ব্যাবহার পেয়ে আসেছেন বা ঠকেছেন তেমন ভাবেই একজন বিক্রেতা কে কিভাবে ঠকান যাই অন্য ভাবে যদি বলি তাহলে কিভাবে কম মূল্য দিয়া যাই সেই চিন্তায় ব্যাস্ত থাকেন, আর এক্ষেত্রে যদি কোন অসহায় বিক্রেতা হন তাহলে তো কথাই নাই! আমাদের ছোটবেলার শিক্ষা যে কোন জিনিষের দাম অর্ধেক বলতে হবে, আর একজন বিক্রেতা যদি যদি একটাকাও দাম বলে আমাদের অভ্যাস বিনে পয়সাই কিভাবে নিয়া যাই সেটারি ফন্দিফিকির করা, আর এ কারনেই হয়ত আমাদের মধ্যে একটা অশুভ প্রতিযোগিতা চলতে থাকে। হাদিসে আছে,” যদি তোমাদের সমর্থ থাকে তাহলে বিক্রেতা কে তার পাওনা মুজুরি প্রদান করো, পারলে একটু বেশী দিও, তাহলে সে প্রতারনা থেকে দূরে থাকবে।“(হাদিস টি হুবুহু মনে নাই)
একবার আমি একটা শো কিং এর মাদী সংগ্রহ করলাম, তো আনার সময় এক লোক আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন যে ভাই দাম কত পড়ল, আমি বললাম, ২৫ হাজার টাকা, তিনি একটু অবজ্ঞার হাসি দিয়ে বললেন ভাই ভীষণ ভাবে ঠোকে গেছেন। আমি একটু অবাক হয়ে জিজ্ঞাস করলাম কেমন? তিনি একজন অভিজ্ঞ ভাব নিয়ে বললেন আরে ভাই কাপ্তান বাজারে ৩-৪ হাজারে কিং পাওয়া যাই তা আবার জোড়া। আমার মাথার চুল খাড়া হয়ে গেল রাগে আর দুঃখে। পাশে বরফ দিয়া সরবত বিক্রি করছিল, মনে হল একজগ ঠাণ্ডা সরবত আমার মাথাই ডালি বা সেই লোকের মাথাতে ডেলে দেই। যাই হোক নিজেকে অনেক কষ্টে কন্ট্রোল অরে একটু বোকার মত হাসি দিবার চেষ্টা করলাম। তিনি আবার যোগ করলেন প্রথম প্রথম এ রকম একটু হবে, পরে দেখবেন সব শিখে ফেলবেন। আমি মনে মনে বললাম আপনি যে এরই মধ্যে কিছুই শিখে ফেলেছেন সেটা আমি জেনে ফেলেছি। আমাদের দেশের অধিকাংশ খামারির এই একই সমস্যা, আমরা জানি না ব্র্যান্ডের যিনি আর লোকাল জিনিষের পার্থক্য কি? যেমন যদি উদাহারন স্বরূপ একটা রাড ঘড়ি যদি একটা ব্র্যান্ডের দোকান থেকে কিনেন তাহলে কত দাম পড়বে। সাধারনত ৫ থেকে ৬ লক্ষ্য টাকা কিন্তু যদি আপনি গুলিস্তানে যান আপনি সেটা ২০০-২৫০ টাকার মধ্যে কিনতে পারবেন। তাহলে কেউ যদি আপনার ব্র্যান্ডের রাড ঘড়ি দেখে বলে ভাই আপনি তো ঠোকে গেছেন তখন আপনার বলার কিছুই থাকেবে না। আপনি হয়ত তখন মনে মনে ভাববেন যে তার এই ঘড়ি সম্পর্কে কোন ধারনা নাই বলেই সে এই ধরনের কথা বলেছে। আমাদের দেশে অধিকাংশ ব্রীডের মান অনেক নিন্ম পর্যায়ে চলে গেছে আর তার কারন কিছু অসাধু চালাক খামারি, সেই নিন্ম ব্রীড গুলোকে তারা বাজারে ছেড়ে বাজারের ভারসাম্য নষ্ট করছেন। আর না জেনে কিছু নতুন খামারি সেগুলো সস্তাই কিনে একটু তৃপ্তির ঢেকুর তুলে বাসাই ফিরছেন আর অন্য কবুতর কেনার সময় রেফারেন্স হিসাবে বলছেন ভাই আমি তো এই কবুতর এত দামে কিনেছি কিন্তু আপনি কেন এত দাম চাইছেন। কেন চাচ্ছে তা যদি আপনার মানের পার্থক্য বুঝার ক্ষমতা থাকত তাহলে আপনি বুঝতে পারতেন। যাইহোক এভাবেই একজন নতুন খামারি যেমন এভাবেই ঠকছেন তেমনি সেই সার্কেল ঘুরে ফিরে বাজারে হাত বদল হচ্ছে। অর্থনীতিতে বলা হয় একটা মুদ্রা তিন জনের হাত বদল হলে সেটা তিনটি মুদ্রার কাজ করল বলে ধরা হয়, কিন্তু কবুতর সেক্টরে একটা বাজে কবুতর যদি হাত বদল হই তাহলে তাকে কি বলা হবে। আর ফলশ্রুতিতে নতুন খামারিদের বাজার সম্পর্কে ও মান সম্পর্কে ভুল ধারনা তৈরি হচ্ছে। যা আমাদের জন্য একটা অশনিসংকেত।
একজন ক্রেতা কি মূল্যে খরিদ করবে, বা কি মূল্যে খরিদ করা বিধান আছে, যদিও ইসলামে পণ্যের মূল্য নির্ধারণ ব্যাপারে কোন বিধি নিষেধ নাই, আনাস (রাঃ) বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর যুগে (একবার পণ্যের) মূল্য বেড়ে গেল। তখন ছাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমাদের জন্য মূল্য নির্ধারণ করে দিন। তখন তিনি বললেন, নিঃসন্দেহে আল্লাহই হচ্ছেন মূল্য নির্ধারণকারী; তিনি সঙ্কোচনকারী, সম্প্রসারণকারী ও রিযিকদাতা। আর আমি অবশ্যই এমন এক অবস্থায় আমার রবের সাথে সাক্ষাৎ করার আকাঙ্ক্ষা পোষণ করি যাতে তোমাদের মধ্য থেকে কেউ আমার বিরুদ্ধে রক্ত (প্রাণ) ও সম্পদ সম্পর্কে যুলুমের অভিযোগ উত্থাপন করতে না পারে’ অন্য এক হাদিসে বলা হয়েছে, আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, এক ব্যক্তি এসে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলল, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমাদের দ্রব্যের মূল্য নির্ধারণ করে দিন। তখন তিনি বললেন, ‘বরং আল্লাহই সঙ্কোচন-সম্প্রসারণ করেন। আমি অবশ্যই এমতাবস্থায় আল্লাহর সাথে মিলিত হ’তে চাই যে, আমার পক্ষ থেকে কারো প্রতি সামান্যতম যুলুমও থাকবে না’। একেক ধরনের পণ্য এক এক মূল্য হতে পারে আবার সেটা স্থান কাল পাত্র ভেদেও বিভিন্ন হতে পারে, এ প্রসঙ্গে হাদিসে বর্ণিত আছে যে, ‘নবী করীম (ছাঃ)-এর নিকট পশুর একটি চালানের সংবাদ আসল। তিনি আমাকে একটি দীনার দিয়ে বললেন, উরওয়া! তুমি চালানটির নিকট যাও এবং আমাদের জন্য একটি বকরী ক্রয় করে নিয়ে আস। তখন আমি চালানটির কাছে গেলাম এবং চালানের মালিকের সাথে দরদাম করে এক দীনার দিয়ে দুইটি বকরী ক্রয় করলাম। বকরী দু’টি নিয়ে আসার পথে এক লোকের সাথে দেখা হয়। লোকটি আমার থেকে বকরী ক্রয় করার জন্য আমার সাথে দরদাম করল। তখন আমি তার নিকট এক দীনারের বিনিময়ে একটি বকরী বিক্রয় করলাম এবং একটি বকরী ও একটি দীনার নিয়ে চলে এলাম। তখন আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! এই হচ্ছে আপনার দীনার এবং এই হচ্ছে আপনার বকরী। তখন রাসূল (ছাঃ) বললেন, এটা করলে কিভাবে? উরওয়া বলেন, আমি তখন তাঁকে ঘটনাটি বললাম। তখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, হে আল্লাহ! আপনি তার হাতের লেন-দেনে বরকত দিন’ যে জিনিষ টা কমন আর জেতার বাজার দাম সবাই জানে সেটার ক্ষেত্রে ছাড়া নতুন জিনিষের দামের ব্যাপারে বিক্রেতার এখতিয়ার। লেনদেনের একটা সীমা পরিসীমা আছে কিন্তু সেটা যেন মাত্রারিক্ত না হয়ে যাই। আর আমরা যেন কোন কিছু কিনতে গিয়ে কারো অসহায়ত্তের সুযোগ না নেই। এতে ভারসাম্য নষ্ট হবার ভয় থেকেই যায়।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন ‘আল্লাহ ঐ মহানুভব মানুষের প্রতি দয়া করেন, যে ক্রয়-বিক্রয়ে এবং নিজের পাওনা আদায়ে নম্রতা ও সহনশীলতা প্রদর্শন করে’। আমরা অনেক সময় কোন কিছু কেনার সময় মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে থাকি, অনেকেই বলেন ভাই এই জিনিসটা তো অমুক এর কাছে এত দিয়ে পাওয়া যাচ্ছে বা অমুক তো এত দিয়ে কিনেছে বা বাজারে তো এত দামে পাওয়া যাচ্ছে আপনি কেন আত দাম চাচ্ছেন ইত্যাদি। আসলে কিন্তু তা সঠিক কথা নয় তারপরও আমরা এ রকম বলে থাকি, আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরানে ইরশাদ করেছেন,‘‘তোমাদের শপথসমূহকে তোমরা হেফাজত করো’’।(সূরা মায়েদা : আয়াত-৮৯)
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে একথা বলতে শুনেছি, ‘‘অধিক শপথ, সম্পদ বিনষ্ট কারী এবং উপার্জন ধ্বংশ কারী।’’ (বুখারি ও মুসলিম)
কসম যে কোন কিসুর উপর বা শপথ যে কিছু বলে করতে হবে তা কিন্তু না, আমার একটা আপনি কোন কিছুর যদি উদাহারন দেন সেটাই শপথ হতে পারে। ফলে আমরা কোনও কসমের বা শপথের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে, যাতে এর জন্য আমাদের চরম মূল্য দিতে না হয়।
একজন বিক্রেতার প্রথম যে কাজ সেটা হল পণ্য বিক্রির সময় পণ্যের গুণাগুণ বা দোষ ক্রেতা কে বলে দিয়া, এর মধ্যেই ক্রেয়ার পছন্দ জিনিষ ক্রয় করবেন না হলে ক্রয় করবেন না, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যদি তারা উভয়েই সততা অবলম্বন করে এবং পণ্যের দোষ-ত্রুটি প্রকাশ করে, তাহলে তাদের পারস্পরিক এ ক্রয়-বিক্রয়ে বরকত হবে। আর যদি তারা মিথ্যার আশ্রয় নেয় এবং দোষ গোপন করে, তাহলে তাদের এ ক্রয়-বিক্রয়ের বরকত শেষ হয়ে যাবে।’ (বুখারি) যদিও আমাদের অধিকাংশ বিক্রেতার এই গুনটারই অভাবই দেখা যায় বেশী। আর এজন্যই সততা, আমানতদারী ও বিশ্বস্ততা ব্যবসা হালাল হওয়ার পূর্বশর্ত। অন্য এক হাদিসে বলা হয়েছে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, তোমরা ক্রেতাকে ধোঁকা দেওয়ার লক্ষ্যে ক্রেতার মূল্যের উপর মূল্য বৃদ্ধি করে ক্রেতাকে ধোঁকা দিয়ো না’। অন্য হাদিসে বলা হয়েছে, বিশিষ্ট ছাহাবী ওয়াসিলা ইবনুল আকওয়া (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্ল¬াহ (ছাঃ) আমাদের কাছে আসতেন এবং বলতেন,’ হে বণিক দল! তোমরা মিথ্যা কথা ও মিথ্যা কারবার থেকে অবশ্যই দূরে থাকবে’। আবদুল্লাহ ইবনে আমর রা. হতে বর্ণিত, রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেন, চারটি গুণ যার মধ্যে একত্র হবে, সে সত্যিকার মুনাফেক। আর যার মধ্যে এ তিনটি গুনের যে কোন একটি থাকবে সে যতদিন পর্যন্ত তা পরিহার না করবে তার মধ্যে নেফাকের একটি গুণ অবশিষ্ট থাকল। যখন কথা বলে মিথ্যা বলে। আর যখন কোন বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দেয়, তখন তা লঙ্ঘন করে, আর যখন ওয়াদা করে তা খিলাফ করে, যখন ঝগড়া-বিবাদ করে, সে অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করে।“
একজন ক্রেতা কোন কিবুতর কেনার সময় তার জ্ঞানের সর্বচ্চ ব্যাবহারের চেষ্টা করে থাকে, যেটা অন্য কিছুতে করে আর, কথাই আছে বেশী চালাকের ময়লা ৩ জাইগায় লাগে, বিস্তারত না বলি। যাই হোক তো ক্রেতা তার বরশিতে নানা টোপ ব্যাবহার করে আর একজন অসহায় বিক্রেতা কে তার কবুতর বিক্রি করতে হয় অনেক সময় বাটে পড়ে, কিন্তু ক্রেতা জানেন না তাকেও একসময় বিক্রেতা হতে হবে আর তাকেও সেই একই ফাঁদে পড়তে হবে। কথাই আছে যে অপরের জন্য গর্ত খুঁড়ে সেই গর্তে সে নিজেই পড়ে এক সময়। একজন ক্রেতার প্রথম যে প্রশ্ন থাকে, যে ভাই এটা কি রিং এর? এরপর এটা কি NPA নাকি EE রিং, অথচ এই ক্রেতা রা জানে না এর অর্থ কি, আর আমাদের দেশে যে ধরনের রিং তৈরি করা সম্ভব সেটা তাদের মাথাই আসে না। একজন ক্রেতা একজন বিক্রেতাকে ঈমানী পরীক্ষার মধ্যে ফেলে দেয় আর অনেকের জ্ঞানের অভাবে সেই পরীক্ষাতে উত্তীর্ণ হতে পারে না। আমাদের দেশে আইয়ামে জাহেলিয়াতের যুগের মত এখনও জিজ্ঞাস করা হয় ডিম বাচ্চা গ্যারেন্টি আছে তো? আরে ভাই, পৃথিবীর সর্বময় ক্ষমতা আল্লাহতালার উপর তাতে আমি কিভাবে গ্যারেন্টি দিতে পারি, আর যদি আমি এটা করি তাহলে তো আমি দোষী হয়ে যাব আল্লাহ্ এর কাছে, এমন কি আমার ঈমান ও নষ্ট হতে পারে, হাদিসে আছে, যুহায়র ইবনু হারব ও মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জাহিলী যুগের লোকেরা “হাবালূল হাবালা- শর্তে উটের গোশত কেনাবেচা করত। “হাবালুল হাবালা-, হল এমন শর্তে উটনী খরিদ করা যে, এর ঝড়া হওয়ার পর ঐ বাচ্ছা গর্ভধারণ করলে মূল্য পরিশোধ করা হবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ধরনের বিক্রয় নিষেধ করেছেন। (সহীহ মুসলিম:৩৬৬৮)
আমার এখানে ডিম বাচ্চা যদিও করে আপনার ওখানে গিয়ে হয়ত রেস্ট এ চলে যেতে পারে, বা আপনি যদি আজাচিত অ্যান্টিবায়টিক ব্যাবহার করেন কোন কিছুর প্রতিরোধ হিসাবে তাহলেও এটা হতে পারে, বা আপনার খাদ্যাভ্যাস যদি পরিবর্তন করেন তাহলে এই ধরনের অসুবিধা হতে পারে। তাহলে কিভাবে আমরা গ্যারেন্টি দিতে পারি? একজন ক্রেতা আমদানি করা কবুতরের ক্ষেত্রে সুস্থ না অসুথ ডিম বাচ্চা করবে কিনা সেটা চিন্তা করে না ফাটা না ভাল সেটা চিন্তা করে না দাম কি সেটা নিয়ে মাথা ঘামায় না। খালী দোয়া করে মনে মনে যেন কবুতর টা পাই, এর পর বাসাই এনে মারা গেলেও ভাল, কলার উচিয়ে বলতে তো পারে আরে ভাই আমার কাছে imported ring এর এই কবুতর ছিল জানেন। এত দামে কিনেছিলাম। কিন্তু একজন খামারির কাছ থেকে সেই ব্রীড অর্ধেক দামেও কিনতে কেমন যেন হয়ে যাই। একজন ভাল ব্রীডার বলেছিলেন, ভাল কবুতরের রিং লাগে না। আসলেই তো তাই, কিন্তু আমরা যে আমাদের মগজ টা পাশে রেখে দিয়েছি, এটাই ত স্বাভাবিক মাথা তো কাজ করবেই না। কথাই আছে, “স্বভাব যাই না মলে (মরলে), আর ইল্লত(চরিত্র) যাই না ধুলে।“ আমাদের স্বভাব আর চরিত্র আমরা যতই চেষ্টা করি সহজে পরিবর্তন সম্ভব না, যদি না আল্লাহ্ অন্য কিছু করে দেন বা সাহায্য না করেন। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) পণ্যে ভেজাল দিয়ে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে দ্রব্যের মূল্য বাড়িয়ে দিতে নিষেধ করেছেন।
আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, একদা নবী করীম (ছাঃ) কোন এক খাদ্যস্তূপের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি খাদ্যস্তূপে হাত ঢুকিয়ে দিয়ে দেখলেন তার হাত ভিজে গেছে। তিনি বললেন, হে খাদ্যের মালিক! ব্যাপার কি? উত্তরে খাদ্যের মালিক বললেন, হে আল্লাহ্র রাসূল (ছাঃ)! বৃষ্টিতে উহা ভিজে গেছে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাকে বললেন, ‘তাহ’লে ভেজা অংশটা শস্যের উপরে রাখলে না কেন? যাতে ক্রেতারা তা দেখে ক্রয় করতে পারে। নিশ্চয়ই যে প্রতারণা করে সে আমার উম্মত নয়’। অন্য এক হাদিসে প্রখ্যাত ছাহাবী আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, জনৈক বেদুঈন একটি ছাগী নিয়ে যাচ্ছিল। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, তুমি কি ছাগীটি তিন দিরহামে বিক্রি করবে? লোকটি বলল, আল্লাহ্র কসম! বিক্রি করব না। কিন্তু সে পরে সেই মূল্যেই ছাগীটি বিক্রি করে দিল। আমি এ বিষয়টি রাসূলুল্লাহ্র (ছাঃ)-এর কাছে এসে উল্লে¬খ করলাম। তিনি আমার কথাগুলো শুনে বললেন, লোকটি দুনিয়ার বিনিময়ে তার পরকালকে বিক্রি করে দিয়েছে’।
একজন সৈনিক কে শিক্ষা দিয়া হয় যে, সাথী বাচলে আমি বাচব। সেই শিক্ষা একজন ব্যাবসায়ি পায় না। বিশেষ করে কবুতর সেক্টরে তো নাই। কিন্তু আমরা যদি সেই শিক্ষায় শিক্ষিত হই। “you save i save” বরং উল্টা হয়। একজন খামারি আরেকজন খামারি কে কিভাবে দমান যায় সেই চেষ্টাই সময় করে যায়। শুধু তাই নয় আমরা যদি একেক জন একেক ধরনের কবুতর পালি বা কবুতরের বাজে ক্রস ব্রীড বন্ধ করে দেয় তাহলেই কেবল এই সেক্টর কে বাচান সম্ভব। কিন্তু কথাই আছে চরে শনেনা ধর্মের কাহিনী। কাকে বলবেন আর কে শুনবে। সবারই একই অবস্থা, যার যার তার তার(he’s he’s who’s who’s), আর সমস্যা এখানেই।
আমাদের কবুতর সেক্টর এ ক্রেতার থেকে বিক্রেতা আবার এক খাড়া উপরে থাকার চেষ্টা করেন, ফাটা কবুতর কিভাবে পর তুলে বিক্রি করা যাই, বা নিম্ম মানের কবুতর কিভাবে রিং লাগিয়ে, আমদানি করা ব্লাড লাইন বলে চালান যাই। অথবা ক্রস ব্রীড তৈরি করে মানুষকে ঠকান যায় কিভাবে সেটাই নিয়ে সব সময় পরীক্ষা নিরীক্ষায় ব্যাস্ত। একজন ভাল খামারি কে ভাল মানের কবুতর তৈরি করতে অনেক কষ্ট কনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়, যেটা একজন ব্যাপারি বা ধোঁকাবাজ খামারি জানতেও পারবে না। আর জানার কথাও না। এব্যাপারে অনেক টা সেই গল্পের মত একবার আমার অফিস এ এক সহকর্মী বিয়ে করল, বস তাকে জিজ্ঞাস করল, what about planning of child? সহকর্মী বলল, Yes boss I’m trying…! বস বলল, trying? Its very easy…you know.. just put the things inside down…that all…! আসলেই কি তাই? যদিও একজন সেই ধরনের খামারি তাই মনে করেন…আর তাই তো এই ধরনের বাজে ব্রীড করতে উৎসাহিত হন, আর তাদের উৎসাহিত করেন সেই সব না জানা নতুন খামারি। যদিও এই সব খামারি তাদের পক্ষে যুক্তি দাড় করানোর অপচেষ্টা করেন ভাই, আমি ত নতুন…! আমি ত বুঝতে পারি নাই…! এসব কথা বলে নিজের দোষ ডাকার একটা চেষ্টা করে থাকেন তারা, আসলেই এভাবে বলে দায়িত্ব এড়ানো সম্বভ।
আমরা সব কিছুই বুঝি খালি কবুতর সেক্টরে আসলেই নতুন আর অবুঝ হয়ে যাই কেন? আর ডিজিটাল যুগে এসব কথা বলে কেউ পার পাবে না। একজন নতুন খামারি রাতারাতি খামারি হতে চান…আর সেই জন্য এক দিনেই সব ধরনের কবুতর না জেনেই সংগ্রহ করতে ব্যাতিব্যাস্ত হয়ে যান। কিন্তু তাদের মনে রাখতে হবে একদিনে ১০ তলা বাড়ি তৈরি সম্ভব না আর যদি কেউ এটা করতেও চাই তাহলে ভেঙ্গে পড়ার সম্ভাবনা অনেক অনেক বেশী।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ্ বলেন, আল্লাহ তোমাকে যে অর্থ সম্পদ দিয়েছেন তার দ্বারা আখিরাতের আবাস (জান্নাত) অনুসন্ধান করো এবং পার্থিব জীবনে তোমার বৈধ (ভোগের) অংশও ভুলে থেকোনা। (মানুষের) কল্যাণ করো, যেমন আল্লাহ তোমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। আর (অর্থ সম্পদ দ্বারা) দেশে বিপর্যয় সৃষ্টি করোনা। বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের আল্লাহ পছন্দ করেন না। (সূরা আল কাসাস : আয়াত ৭৭)
আর এই নতুন খামারিরা তাদের অর্থ দিয়ে এই সেক্টরে এক প্রকার মহা বিপর্যয় সৃষ্টি করছেন। আগে জানুন বুঝুন এর পর আসতে আসতে কবুতর সংগ্রহ করুন ভাল মানের কবুতর, প্রয়োজনে ভাল খামারির পরামর্শ নেন। আল্লাহ্ আরও বলেন, “যখন আমি কোন জনপদকে ধ্বংস করার ইচ্ছা করি তখন তার অবস্থাপন্ন লোকদেরকে উদ্ধুদ্ধ করি অতঃপর তারা পাপাচারে মেতে উঠে। তখন সে জনগোষ্টীর উপর আদেশ অবধারিত হয়ে যায়। অতঃপর আমি তাকে উঠিয়ে আছাড় দেই।“ (সূরা বনী ইসরাঈলঃআয়াত-১৫)
আমার দেশের বাড়িতে সামনের পাকা রাস্তায় একটু বৃষ্টি হলে পানি উঠে, আর এই সময় সেই পানি পার হয়ে যেতে হয় সবাইকেই কারণ বাজারে যাবার এটাই প্রধান সড়ক, তো এক লোক লুঙ্গি পড়া এক হাঁটে সিগারেট অন্য হাঁতে সে তার লুঙ্গির পিছনের কোঁচাটা ধরল, কিন্তু মনের ভুলে সেটা পিছনের টা না হয়ে সামনের কোঁচাটা ধরে সে হাটা দিল গান গাইতে গাইতে” প্রেমের মরা জলে ডোবে না…।“ সেই হাঁটু পানি পার হয়ে, এদিকে পানি যতই বাড়ছিল সে লুঙ্গিটা ততই উঠাচ্ছিল আর এদিকে যে নিচে তার বলস দেখা যাচ্ছিল সেদিকে তার খেয়ালি ছিল না, সবাই দৃশ্য টা দেখে হাসাহাসি করছিল কিন্তু লোকটি এদিক ওদিক তাকাচ্ছিল, আর মাথা নিচু করে তার নিচের দিকে কি ব্যাপার সেটা দেখার চেষ্টা করছিল, কিতু তার মাথা নিচে নামানর সময় তার হাতটাও নেমে যাচ্ছিল ফলে সে বুঝতেই পারছিল না মানুষরা তার দিকে তাকিয়ে কেন হাসছে। সে আর কোন চিন্তা না করেই তার বলস ঝুলাতে ঝুলাতে হেঁটে চলে গেল। আর এই সময় আরেক বয়স্ক লোক তার গানের কলি শুনে রেগে বলল হাঁ, প্রেমের মরা জলে ডোবে কিনা একবার ডুবাই দেখ না… ডোবে কিনা…? আমি জানি না প্রেমের মরা জলে ডোবে না ভাসে সে পরীক্ষা করার মত সময় হইনি, আর সেই পরীক্ষা কখনও করতেও চাইনা। কিন্তু আমি জানি, প্রেমের মরা জলে ডুবুক না নাই ডুবুক, এই যে এই নতুন খামারিরা এক অশুভ খেলাই মেতে উঠেছে অন্য অসাধু খামারি দের সাথে না বুঝেশুনে তারা যে একদিন ১০০% ডুববে তাতে বিন্দু মাত্র কোন সন্দেহ নাই। পরিশেষে কোরআনের আয়াত দিয়ে শেষ করছি, আল্লাহ্ বলেন,
“কেউ অপরের বোঝা বহন করবে না। কেউ যদি তার গুরুতর ভার বহন করতে অন্যকে আহবান করে কেউ তা বহন করবে না-যদি সে নিকটবর্তী আত্নীয়ও হয়। আপনি কেবল তাদেরকে সতর্ক করেন, যারা তাদের পালনকর্তাকে না দেখেও ভয় করে এবং নামায কায়েম করে। যে কেউ নিজের সংশোধন করে, সে সংশোধন করে, স্বীয় কল্যাণের জন্যেই আল্লাহর নিকটই সকলের প্রত্যাবর্তন।“(সূরা ফাতিরঃআয়াত-১৮)
মূল লেখক : সোহেল রাবি ভাই
আমার কবুতর ভাবনা। BD Online Pigeon Market

Pigeon Discussion, Pigeon Diseases & treatment
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন