মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১৪

আমরা কি ধরনের কবুতর খামারি ? (কবুতরের কেস স্টাডি)

আমরা কি ধরনের কবুতর খামারি ? (কবুতরের কেস স্টাডি)


আমাদের দেশে উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে যে ধরনের হ জ ব র ল শিক্ষা ব্যাবস্থা, আমার মনে হয় দেশের ৯০% শিক্ষার্থীর এই সময়টা খুব একটা সুখকর ভাবে কাটে না। আমি স্কুল জীবনে খুব একটা ভাল মানের ছাত্র ছিলাম না কিন্তু সব সময়ই প্রথম বেঞ্চিতে বসতাম, আমার স্কুলে পৌঁছাতে দেরি হলেও আমার জন্য সেই জায়গা তা বরাদ্দ থাকত। প্রথম বা দ্বিতীয় ক্যাপ্টেন আমার জন্য সেই জায়গা টা রেখে দিত। যাই হোক, আমাদের প্রধান শ্রেণী শিক্ষক আমাদের, অংক, ইংরেজি, গ্রামার ও বিজ্ঞান ক্লাস নিতেন। প্রতিদিন ১০ টা অংক, ১ টা প্যারাগ্রাফ, ১০ টা অনুবাদ, ছাড়াও বিজ্ঞানের কোন না কোন বাসার কাজ দিতেন। সমাজ বিজ্ঞান শিক্ষক তো আরেক খাড়া উপরে তিনি প্রতিদিন ২ পাতা করে সমাজ বিজ্ঞান এর সেই কঠিন পড়া মুখস্থ করতে দিতেন আর পরদিন সেগুলো দাড়িয়ে তার সামনে বলতে হত না দেখে তিনি সামনে এমন ভাবে ছড়ি ঘুরাতেন যে জানা পড়াও অনেক সময় ভুলে যেতাম, বা যারা ভাল ছাত্র ছিল তারাও পর্যন্ত তার হাত থেকে রেহাই পেত না যদি না সে উনার কাছে প্রাইভেট পড়ত। এর পর ইসলামিয়াত শিক্ষক বিভিন্ন সুরার শানে নযুল ও সূরা গুলো মুখস্থ করতে হত।


টিফিন পিরিয়ডে ৪০ মিনিট সময় পাওয়া যেত, এর মধ্যেই নাস্তা এরই মধ্যে নামাজ কারণ টিফিন ব্রেক এর পরে আরবি শিক্ষক এর ক্লাস আর যদি নামাজ না পড়ি তাহলে শাস্তির পরিমান দ্বিগুণ, ফলে অনেক সময় নামাজ পড়ে টিফিন করার সময় পাওয়া যেত না। আর সেই কারনে কোন রকমে ১ টাকার বার ভাজা খেয়েই টিফিনের কাজটা সারতে হত। আর একারনেই আজ অনেক বছর পরও সেই সময়ের অনিয়মের বোঝা আজও বয়ে বেড়াতে হচ্ছে। সেই আরবি ক্লাসে প্রতিদিন ১০-১৫ নতুন আরবি শব্দ প্রতিদিন মুখস্থ করতে হত। ইংরেজি রচনার জন্য একজন শিক্ষক যিনি সপ্তাহে ২ দিন ক্লাস নিতেন, তাকে প্রতি ক্লাসে একটা করে ইংরেজি রচনা মুখস্থ বলতে হত। আর এসেম্বলি রোদের মধ্যে ৪০ মিনিট প্রান ঘাতি ছিল। এর পর আবার সিনিয়র ও জুনিয়র সমস্যা। সিনিয়র দের সামে কমরে হাত দিয়ে দারান যাবে না। পায়ে পা তুলে বসা যাবে না। উনাদের সামনে আড্ডা মারা যাবে না। আর এর উল্টো হলে, তার কপালে কি হত সেটা না হয় নাই বললাম। এভাবেই জীবনের উচ্চ বিদ্যালয়ের ৫ বছর পার করেছি। মাঝে মাঝে পড়ার চাপ এত বেশী হত যে অসুস্থ হয়ে পড়তাম বা স্কুল কামাই দিতাম। পরে হয় জরিমানা দিতাম বা অবিভাবক এর আবেদন পত্র জমা দিতাম। সেই সময়ের দুঃসহ সৃতি নিউরো সেলে বা ২৩ জোড়া ক্রমসমের কোন জায়গাই এমন ভাবে জেঁকে বসে গেছে। যে আজ জীবনের অনেক বছর পার হলেও মাঝে মাঝে রাতে ঘুমের মধ্যে সেই সময়ের স্বপ্ন দেখলে ভয়ে ঘেমে উঠি, আর ঘুম থেকে জেগে উঠে একগ্লাস পানি খেয়ে ঘাম মুছতে মুছতে মহান আল্লাহ্‌ তালার কাছে শুকরিয়া আদায় করি, যে কমপক্ষে আল্লাহ্‌ সেই কঠিন সময় টা তো পার করিয়েছেন। আমাদের সেই হ য ব র ল শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে আমরা কেউই খুব ভাল না জানি অংক,না জানি ভাল ইংরেজি,না জানি ভাল বিজ্ঞান, না জানি ভাল ধর্ম। আমেরিকার এক জরিপে দেখা গেছে ৭০% সঠিক ভাবে জানে না মানুষের পাকস্থলী কোথাই অবস্থিত। আর জানার দরকার নাই। কারণ তারা কেউই ডাক্তার না। আর তাদের মতে এগুলো জানবে ডাক্তাররা, এটা তাদের জানার দরকার নাই। একজন বিখ্যাত মনিষী বলেছিলেন, যে জিনিষ ক্যালকুলেটরে একটা বতাম চিপে বের করা যাই সেটা মনে রাখার দরকার নাই। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হয়। কারণ আমাদের সাধারন একটা অফিস সহকারী পদের জন্য বিশ্বের কোথাই বেশী হাতি আছে? আর চাঁদে কি আছে, সমুদ্র তলদেশে কি আছে সেই সব প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়! আর সেটা সেই পদের সঙ্গে সম্পর্ক থাকুক আর নাই থাকুক, কিছুই যায় আসে না।


বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কবুতর খামারি দের দিকে যদি লক্ষ্য করি তাহলে দেখব এক এক খামারি এক এক জাতের কবুতর ব্রীড করছে। আর তাতে তাদের সমস্থ মেধা প্রয়োগ করছে। ক্রস ব্রীড, আউট ব্রীড, লাইন ব্রীড করে তারা ভাল জাতের কবুতর উৎপাদন করছে। খুব কম খামারিই আছেন যারা সব জাতের কবুতর এক সাথে ব্রীড করছেন। কিন্তু আমাদের দেশে সেই জগা খিচুরি শিক্ষা ব্যাবস্থা থেকেই হোক, আর যে কারনেই হোক একজন ব্রীডারের কাছে সব ব্রীড থাকতে হবে। তা নাহলে সে খামারি না। আমরা অনেক সমই ভুলে যাই, যে আমাদের দেশে সবাই কবুতর বিক্রি করে পেট চালাই না। ফলে যিনি কবুতর বিক্রি করে পেট চালান আর যিনি শখের বসে পালেন তাদের ২ জনের খামারের পরিবেশ এক হবে না বা হবার কথাও না। একজন পেশাদার কবুতর খামারির কাছে যে কবুতর থাকবে, আকজন সৌখিন কবুতর খামারির কাছে সে কবুতর নাও থাকতে পারে। কিন্তু আমরা আমাদের চিন্তাধার অন্যের মধ্যে চাপিয়ে দিয়ার চেষ্টা করি সব সময়।


আমাদের চিন্তা ধারা আমি যেমন আমার ছেলেও সে রকম হবে, কিন্তু আমরা ভুলে যাই তার চিন্তা চেন্তনা তার থেকে ভিন্ন হতেও পারে। ছাগল ও ভেড়া কে কেউ যদি দড়ি ধরে টেনে নিতে চাই তাহলে সেটা পারবে না। কিন্তু তাদের একটাকে কেউ কোলে তুলে যদি নিয়ে যাই, তাহলে বাকিগুলো সবাই সেটাকে অনুসরন করতে থাকবে, সে যেখানেই যাক না কেন। আমাদের চিন্তা চেতনায় কোথাই যেন, এই প্রাণীর সাথে বিচিত্র কারনে মিল পাওয়া যাই, আমাদের ক্রমসমের কোন এক জোড়ার সাথে হয়ত তাদের তাদের টা মিশে গেছে। কারণ তা না হলে কবুতর খামারিরা কেন এক জন এক ব্রীড কিনেই সবাই কেনার জন্য হিরিক পরে যাই, কেন আমরা বুঝি না যে সবাই যদি এক দিকে ছুটি তাহলে জিনিষটার ভারসাম্যহীনতা ঘটবে। আর ফলে সবাইকে তাতে ভুগতে হবে। সেদিন এক অনুষ্ঠানে কবুতরের বড় বড় সব ব্রীডাররা জ্বালাময়ী সব বক্তৃতা দিলেন, আমদানি কারকদের তুলোধোনা করে ফেললেন। তাদের কাছেই সব গুলো ভাল ব্রীড আছে সেটাও শুনাতে ছাড়লেন না। যাই হোক, কিছু লোক আবার কবুতরের বিদেশী ঔষধের কথাও বললেন যে আমাদের দেশে বিদেশ থেকে ঔষধ আমাদানি করছে কিছু লোক, আমাদের দেশি ঔষধ অনেক ভাল ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু তিনি খেয়াল করেনি যে তার পিছনেই প্রজেক্টরে বিভিন্ন বিদেশী ঔষধের বিজ্ঞাপন চলছিলো আর তারই পাশের সেগুলো কেনার হিড়িক। এই ব্যাপার টা দেখে আমার মনে পরে গেল সেই কথা, “মোল্লা যা বলে তা শুন কিন্তু যা করে তা করোনা।”


আজ থেকে দুই বছরেরও আগে আমি আমার এক পোস্ট এ যখন এই সব ব্রীডাররা আমদানি কারকদের কাছে সকাল বিকাল ধরনা দিতেন আর আমদানি করা রিং এর কবুতরের বাহারি ছবি বিভিন্ন সামাজিক সাইট গুলো তে গর্ব ভরে দিতেন, আমার নতুন কালেকশন এনপিএ ব্র্যান্ডেড বা এই এই রিং ২০১০ ইত্যাদি তখন বলেছিলাম যে এভাবে চলতে থাকলে এক সময় আসবে যখন সবাইকে লোক দিয়ে মাথাই করে কবুতর বিক্রি করতে হবে বা বাসার ফ্রাইং প্যানে ফ্রাই করে খেতে হবে। তখন তাদের মনে এসব কথা মনেও হইনি, কারণ তখন তারা তাদের ঘড় গুছাতে ব্যাস্ত ছিলেন। তারা খেয়ালি করেনি যে তাদের নিজের অজান্তেই তাদের ঘরে যে আগুন লেগেছে সেই আগুন তাদেরকেও পুরাতে পারে। আজ যখন সেই আগুনে তাদের গা পুঁড়া শুরু হয়েছে তখন টনক নড়েছে। আরে কি হচ্ছে, হই হই রৈ রৈ …!!! করে বেড়াচ্ছেন বাঁচানোর জন্য, কিন্তু তারা ভুলে গেছেন, তাদেরকে কে বাচাবে। যখন আক্রান্ত সবাই। বিড়ালকে মাছের হাড়ি চিনিয়েছে কারা, আর আজ যদি সব বেড়াল সেই সব হাড়ীর খোঁজে বের হয়ে পরে তারা কি করতে পারবেন?


আজ যখন এই সেক্টর তা সকটাপন্ন তখন তারা সেই স্কুল জীবনের সিনিয়র আর জুনিয়র কল্কী হাতে নিয়ে টান দিয়ে ধুয়া ছাড়ছেন। কিন্তু তাদের কে মনে রাখতে হবে একটা সময় পর সিনিয়র ও জুনিয়র এর কোন ভেদাভেদ থাকে না। আর আপনি যদি এটা চিন্তা করেন তাহলে আমি বলব, আপনি মূর্খের রাজ্যে বাস করছেন এখনও অথবা আপানি একজন জ্ঞান পাপী ছাড়া আর কিছুই না। আমরা ফরজ কাজের খোজ রাখি না কিন্তু সুন্নত ও নফল নিয়ে টানাটানি করি। এই প্রসঙ্গে এক গল্প না বললেই নয়, একবার এক হুজুর এক গ্রামের মসজিদে বয়ান দিলেন যে, পাগড়ি পড়া সুন্নত, তো একদিন হুজুর গ্রামের ক্ষেতের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। সেই খেতে এক গ্রাম্য কৃষক কাজ করছিল লুঙ্গি পরে খালি গায়ে। হুজুর কে দেখে তার বয়ান এর কথা মনে হতেই, তাড়াতাড়ি করে সে লুঙ্গি টা খুলে পাগড়ি বানিয়ে মাথাই দিল, এদিকে তার নিচের দিকে কোন কাপড় না থাকাই হুজুর তাড়াতাড়ি চোখ ঢেকে বললেন আরে কর কি কর কি? কৃষক অবাক হল, হুজুরের এই ধরনের প্রশ্নে, সে বলল হুজুর আপনে না বলেছেন যে, পাগড়ি পড়া সুন্নত? হুজুর বলল, আরে মিয়া আগে ফরজ আদায় কর তারপরই সুন্নত পালন করবে। আমাদের দেশে কবুতর সেক্টরে আরেকটা বড় সমস্যা সেটা আমার স্কুলের মতই সিনিয়র জুনিয়র সমস্যা, এই ভুত আমাদের মাথা থেকে নামে না। তারা ভুলে যান যে, বয়সের এই বাঁধ থাকে না থাকতে হয় না। তাহলে আপনি জীবনে চলার পথ হারিয়ে ফেলবেন।


আমাদের এই সেক্টরের লোকজন কবুতরের আমদানি কারকদের উপর দোষারোপ করে নিজেরা নিজেদের দোষ ঢাকার এক অপচেষ্টা করছেন মাত্র। আমাদের দেশে কবুতর সেক্টরের এই অবস্থার জন্য আমদানি কারকরা যতনা দায়ী, তার থেকেও দ্বিগুণ দায়ী আমাদের মানসিক অবস্থা আর আমাদের নৈতিকতা। আমাদের এক জন বড় ব্রীডার ২-৩ হাজার টাকার লোভ সামলাতে পারে না। ফাটা কবুতরের পর তুলে বিক্রি করে। অসুস্থ কবুতর কে চালিয়ে দেয় সুস্থ বলে। নতুন খামারি কে উৎসাহিত করার বদলে ঘার মটকে কিভাবে খাওয়া যাই সেটাই চিন্তা করে। আর এটা দিনের পর দিন চলে আসছে…! এটা কেন হবে…? আমরা কি মনে করি না যে আমাদের কে কবরে যেতে হবে…২ দিন আগে বা পরে? আমরা কি ভুলে গেছি আজ যাদের জন্য আমি গর্ত খুঁড়ছি কালকে সেই গর্তে আমাকেও পড়তে হতে পারে…! তাহলে কেন…এই সব বাটপারি…কেন এই সব জচ্চরি…?! আমাদের কিছু সৌখিন ব্রীডার এই সব অবস্থা দেখে কবুতর পালাই ছেড়ে দিয়েছেন। আরে ভাই মাথা ব্যাথা হলে যদি মাথা কেটে ফেলাই সমাধান হত তাহলে তো কোন সমস্যাই থাকত না। আর সব কারনের ফলেই সেই সব খামারিরা আমদানি করা কবুতর কিনতে আগ্রহী হয়েছেন। আর আজ আমরা বুঝতে পারছি আমরা কি করছি। আমাদের কিছু ব্রীডার পাশের দেশে কবুতর পাঠাতেন, তখন তাদের কোন অসুবিধা হয়নি। আর লোকাল কবুতর বাজার নিয়ে তাদের তখন কোন ম্যাথাব্যাথাও ছিল না। কারণ তখন তারা লোকাল বাজার থেকেই বেশী দাম পাচ্ছেন। কিন্তু আজ যখন সেটা বুমেরাং হয়ে গেছে তখন তাদের আত্মা কেপে উঠেছে। তখনি সেই সব কবুতর সেক্টরের সমাজপতিরা সোচ্চার হয়ে উঠেছেন কি করা যাই কি করা যাই। কিন্তু প্রবাদ আছে, “ভাবিয়া করিয় কাজ করিয়া ভাবিও না!” আমাদের দেশে আমদানি কারক আর বিক্রেতা, ট্রেডার আর তথাকথিত ব্রীডার দের অত্যাচারে যখন প্রান ওষ্ঠাগত তখন ক্রেতার অস্থিরতা আর এক মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।


সেদিন এক আমদানি কারকের বাসাই গিয়ে এক ক্রেতা তার কাঙ্ক্ষিত কবুতর না পেয়ে এমন ভাবে হাঁ হুতাস করতে শুরু করলেন মনে হল যেন সেই কবুতর টা উনার জীবন রক্ষা কারী ঔষধ আর ওটা না পেলে উনি এখনি মারা যাবেন। এই এই সুযোগ গুলোই সবাই গ্রহন করেন। কাঁচা মরিচের দাম যখন ১০০ টাকা তখন আপনার তো সেটা কিনার দরকার নাই বা আপনার যদি বিকল্প কিছু থাকে। কিন্তু না আমরা তার পিছনেই দৌড়াতে পছন্দ করি। যাই হোক প্রকৃতি, সময় মানুষকে সব কিছু শিখতে বাধ্য করে, আর আশা করি হয়ত অচিরেই মানুষ শিক্ষা নিবে না হয় চরম মূল্য দিতেই থাকবে অনন্ত কাল, যতক্ষণ না নিঃশেষ হয়ে যায়।


“আর যে সম্পদকে আল্লাহ তোমাদের জীবন-যাত্রার অবলম্বন করেছেন, তা অর্বাচীনদের হাতে তুলে দিও না। বরং তা থেকে তাদেরকে খাওয়াও, পরাও এবং তাদেরকে সান্তনার বানী শোনাও।“(সূরা আন নিসাঃআয়াত-৫)


লেখক : সোহেল রাবি ভাই



আমরা কি ধরনের কবুতর খামারি ? (কবুতরের কেস স্টাডি) BD Online Pigeon Market

আমরা কি ধরনের কবুতর খামারি ? (কবুতরের কেস স্টাডি)

Uncategorized

শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৪

বিদেশ থেকে আমদানিকৃত কবুতরের বিভিন্ন রোগের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঔষধ (Pigeon Medicine) বিক্রয় করা হবে।

বিদেশ থেকে আমদানিকৃত কবুতরের বিভিন্ন রোগের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঔষধ (Pigeon Medicine) বিক্রয় করা হবে। আগ্রহী কবুতর পালক,খামারি ও ফেন্সিয়াররা যোগাযোগ করুন, মোবাইল# ০১৮১৯৮১৬৩৯৩। (মজুত সীমিত।)


1) Coccicure: কবুতরের coccidiosis প্রতিরোধ ও চিকিত্সায় ভাল কার্যকরী ঔষধ।


2) Streptococ-coli-cure : কবুতরের Streptococcus bovis (তরুণ কবুতরের অসুস্থতা) ও ই-কোলাই দ্বারা সৃষ্ট রোগ ও তার প্রতিকারের জন্য ব্যবহৃত হয়।


3) Trichomonas Cure: Trichomoniasis (Cankar) এবং Hexamitiasis রোগের প্রতিরোধ ও

চিকিত্সায় ভাল কাজ কএ থাকে।


4) Paratyphoid cure: salmonellosis (প্যারাটাইফয়েড) এর জন্য কার্যকরী।


5) Wormacure: কবুতরের বিভিন্ন ধরনের ক্রিমির জন্য কার্যকরী।


6) Total Disinfection Combination: occidiosis,trichomoniasis(cankar),salmonella (টাইফয়েড-

সদৃশ জ্বর), ornithosis(one eye coldness) জন্য প্রতিকারের জন্য কার্যকরী ।


7) OrniSpecial: ornithosis(one eye coldness) জন্য প্রতিকারের জন্য কার্যকরী


8) BS: canker (tricho), coccidiosis, hexamitiasis এবং বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়াল

সংক্রমন থেকে প্রতিকার করে, হজমের সমস্যা ও হজম শক্তি বাড়াতে

ও অতিরিক্ত পালক ঝরা রোগ থেকে প্রতিকার করে থাকে।


9) Belgawormac: কবুতরের বিভিন্ন ধরনের ক্রিমির জন্য কার্যকরী।


13) 10% ENROFLOXAROM ঃব্রড স্পেকট্রাম antimicrobial, Mycoplasmosis, salmonellosis,

pasteurelosis চিকিত্সার জন্য ও সংক্রামক coryza ব্যাকটেরিয়া, মাইকোপ্লাজ়মা এবং chlamidia

দ্বারা উত্পাদিত রোগের চিকিৎসায় কার্যকরী।


14) Alazol: trichomoniasis (cankar) চিকিৎসায় ও প্রতিরোধে ভাল কাজ করে থাকে।


17) Belgaroni 10%: trichomoniasis (cankar) ক্ষেত্রে প্রিভেন্টিভ এবং চিকিত্সা রোগ নিরাময়কারী।


18) Chevi-Col: Trichomoniasis (cankar) এবং Hexamitiasis প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় কার্যকারী।


19) OrniSpecial: Ornithosis (one eye coldness) , ময়লা নাক,কঠিন শ্বাস (ঝিমুনি ভাব), চোখের পাতা ফোলা, ইত্যাদি চিকিৎসায় কার্যকরী।


20) Nirfuramycin: salmonellosis (Paratyphus) বিরুদ্ধে ভাল চিকিত্সা। এছাড়াও যেকোনো ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ, কোলাই সংক্রমণে , শ্বাসযন্ত্র ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ, বা স্ট্রেস এ ভাল কাজ করে থাকে।


21) Superboli: একটি আদর্শ ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের । কবুতরের রেসের পর এই ভিটামিন বিশেষ ভাবে কার্যকরী।



বিদেশ থেকে আমদানিকৃত কবুতরের বিভিন্ন রোগের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঔষধ (Pigeon Medicine) বিক্রয় করা হবে। BD Online Pigeon Market

বিদেশ থেকে আমদানিকৃত কবুতরের বিভিন্ন রোগের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঔষধ (Pigeon Medicine) বিক্রয় করা হবে।

শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর, ২০১৪

কবুতর খামারিদের জন্য শীতের মাসিক ছক

কবুতর খামারিদের জন্য শীতের মাসিক ছক


“তাদের অন্তর রয়েছে, তার দ্বারা বিবেচনা করে না, তাদের চোখ রয়েছে, তার দ্বারা দেখে না, আর তাদের কান রয়েছে, তার দ্বারা শোনে না। তারা চতুষ্পদ জন্তুর মত; বরং তাদের চেয়েও নিকৃষ্টতর।“ (সূরা আল আ’রাফঃআয়াত-১৭৯)


আমাদের জীবনে অহরহ অনেক ঘটনা ঘটছে বা অনেক কিছুই আমরা জানতে পারছি পড়া,দেখা বা শুনার মাধ্যমে। যেটা আমাদের মন বিশ্বাস করে না বা সায় দেই না সেগুলোকে আমরা অন্য কারো সাথে আলোচনা করা বা জানানোর প্রয়োজন মনে করি না। কিন্তু যে সব ঘটনা আমরা অন্যের সাথে আলোচনা করি বা জানানোর জন্য ব্যাতিব্যাস্ত থাকি। যদিও বা আমারা মুখে বলে থাকি এগুলো আমি বিশ্বাস করি না বা এগুলো ভুয়া। যেভাবেই বলি না কেন একবার একটু চিন্তা করে দেখেন এগুলোর ব্যাপারে মনের এক কনাই কোথাও যেন এর কিছুটা হলেও বিশ্বাস লুকিয়ে আছে বা এই কথার স্বপক্ষে কোন যুক্তি আপনার মনে আছে। একথার বাস্তবতা বা কেস স্টাডি হল এরূপ, অনেকেই আছেন যারা বলে থাকেন ভাই আমাকে উনি এই ঔষধ দিয়েছেন এটা কি ভাল হবে? বা ভাই আমি উনাকে এই ধরনের ঔষধ দিতে দেখেছি। বা উনাকে এই ঔষধ প্রয়োগ করে উপকার পেতে দেখেছি, আপনি কি বলেন। এভাবে কারো কাছে উপদেশ চাওয়া হয়। বা বলা হয় ভাই উনি আপনার সম্পর্কে এটা বলেন বা বলেছেন। এর মানে আপনি এই কথা স্বপক্ষে আপনার মনে একটু হলেও সমর্থন আছে বা এই কথা আপনি একটু হলেও বিশ্বাস করেন। অনেকেই বলে যা রটে তা কিছু না কিছু বটে। অনেক সময় কিছু না রটলেই আমরা বিশ্বাস করে নেই এটা কিছু বটে। যেমন ভ্যাকসিন এর কোথাই বলি, আমাদের দেশে হাঁস মুরগির ভ্যাকসিন মানুষ দিতেছে অবলীলাই জিজ্ঞাস করলে বলেন, ভাই মানসিক সান্তনা। ভাই অহেতুক মানসিক সান্তনা কেন দিবেন? অনেকেই আছেন যারা এই ধরনের মানসিক সান্তনা লাভ করারা সাথে সাথে অহেতুক এই মানসিক সান্তনা তা অন্যকে দিতেও উৎসাহিত করেন। ব্যাপারটা অনেক টা এ রকম,”o foxes cut your tails because it is ugly….!” কিন্তু অন্যের লেজ কাটার ব্যাপারে উনারা কেন আগ্রহী তা বোধগম্য হয় না।



এখন ডিজিটাল যুগ এই যুগে একটা বোতামের চাপে অনেক কিছুই জানা যায়। আর এই যুগেও যদি আমরা বলি ভাই আমি জানিও না বা আমি তো নতুন এটা বলে। সেই তেমনি মানসিক সান্তনাই পাবেন আর কিছু না। আর এটা বলে আপনি আপনার দায়িত্ব থেকে পালাতে পারবেন না। পরকালে যদি আপনি বলেন যে হুজুর রা আমাদেরকে এটা জানানি তাহলেও কিন্তু আপনি মাফ পাবেন না। আপনার নিজের দায়িত্ব হল জ্ঞান অর্জন করা আর আপনি সেই ফরজ তরখ করেছেন। সেই জন্য এ ক্ষেত্রে আপনার দুই ধরনের শাস্তি হতে পারে পরকালে। এক, না জানা বা জানার চেষ্টা না করা এবং দুই, পালন না করার।


যাই হোক, শীত প্রায় সমাগত, তাই অনেকের মনে কবুতর নিয়ে আজানা আতঙ্ক বিরাজ করছে শীতে অনেক কবুতর মারা যায়। আসলে তা সঠিক না। আপনি যদি আপনার কবুতরের সঠিক পরিচর্যা না করেন তাহলে শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা সব ঋতুতেই আপনার কবুতর মারা যাবে। আর আপনি যদি সঠিক পরিচর্যা করেন বা অলসতা না করেন। তাহলেই কেবল আপনি সফল খামারি হিসাবে পরিগণিত হবেন সন্দেহ নাই।


শীতের মাসিকঃ


দিন ১-৪ঃ পর্যন্ত সাল্মনিল্লা কোর্স করাতে হবে। (যেটা বিভিন্ন জন বিভিন্ন ভাবে করে থাকে, কিন্তু সবচেয়ে উপযুক্ত সাফি+ফেবনিল+মারবেলাস এর মিক্স কোর্স করা, অনুপাত তা এরূপ ২+২+১ টেবিল চামচ ।)


দিন ৫ঃ স্যালাইন দিন। (অথবা এর বদলে ভিটামিন সি দিতে পারেন যেমন লেবুর রস। ১ টি লেবু ১ লিটার পানিতে।)


দিন ৬-৯ঃ পর্যন্ত ভিটামিন বি কমপ্লেক্স দিন। (এক্ষেত্রে toxynil, biovit, vita B+C ইত্যাদি ভিটামিন দিতে পারেন। কারন এর অভাবে বেশীর ভাগ টাল রোগ হয়।)


দিন ৯-১০ঃ পর্যন্ত হমিও Kali Curb 30 দিন। (এটা ঠাণ্ডা জনিত সমস্যা থেকে প্রতিরোধ করবে।)




দিন ১১ঃ
রসুন বাটা+মধু+লেবুর রস। (১ লিটার পানিতে ২ চা চামচ রসুন বাতা,২ চা চামচ মধু আর ১ চামচ লেবুর রস মিক্স করে দিলে ভাল।তবে পানি অবশ্য ছেকে নিতে হবে। আর লেবু চিপার সময় গ্লভস বা লেমন ইস্কুইজার ব্যাবহার করবেন। এটা শরীর গরম রাখতে সাহায্য করবে।তবে খেয়াল রাখতে হবে যে এই কোর্স করার আগে কবুতরের ক্রিমির ঔষধ দিয়া আছে কিনা টা জেনে নিবেন। কারন ক্রিমি থাকলে এটা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।)


দিন ১২ঃ হোমিও Belodona 30 (এটা আপনার কবুতর কে প্যারামক্সি ভায়রাস থেকে মুক্ত রাখতে সাহায্য করবে।)


দিন ১৩-১৬ঃ পর্যন্ত ক্যাল ডি,ভিটামিন K ও E ভিটামিন দিয়া ভাল। (এক্ষেত্রে Calcium Forte+AD3e+k Vitঅথবা Calbo D+Ad3e+k Vitদিয়া যেতে পারে। এতে শরীর গরম রাখতে সাহায্য করবেও ভিটামিন কে ডিমের ভিতর কবুতরের বাচ্চা মারা যাওয়া ইত্যাদি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করবে। এগুলো আলাদাভাবে বা একসঙ্গেও দিতে পারেন। তবে ভিটামিন K টা আলাদা ভাবে দেবার চেষ্টা করবেন।)




দিন ১৭ঃ
স্যালাইন দিন। (অথবা এর বদলে ভিটামিন সি দিতে পারেন যেমন লেবুর রস। ১ টি লেবু ১ লিটার পানিতে।)


দিন ১৮-২১ঃ পর্যন্ত লিভার টনিক দিন। (অধিকাংশ কবুতর লিভার জনিত সমস্যায় বেশি ভুগে থাকে। তাই লিভার এর ব্যাপারে একটু খেয়াল রাখা জরুরি। এক্ষেত্রে হামদারদ এর Cinkara, Icturn, Karmina ইত্যাদি বা আপনার পছন্দ মতো ব্যাবহার করতে পারেন।)


দিন ২২ঃ হোমিও Tiberculinum 30 দিন।(এটি ধুলা জনিত সমস্যা থেকে প্রতিরোধ করবে।)




দিন ২৩ঃ
লিকার চা বা গ্রিন চা বা প্রবায়টীক দিতে পারেন। ( এটা কাঙ্কার প্রতিরোধ ও ভাল ব্যাকটেরিয়া উৎপাদনে সাহায্য করবে।)


দিন ২৪ঃ হোমিও Borax 30 দিন। (এটি বায়ু বাহিত রোগ থেকে প্রতিরোধ করবে।)

দিন ২৫ তারিখ অ্যাপেল সিডার দিন। (এক্ষেত্রে আমিরিকার তৈরি অ্যাপেল সিডার দিয়া উত্তম। এটা সাল্মনিল্লা প্রতিরোধে সাহায্য করবে।১ লিটারে ১ সিসি বা তার কম, বেশি প্রয়োগ করবেন না তাতে বিপরিত ফল হতে পারে।)


দিন ২৬-৩০ঃ পর্যন্ত মাল্টি ভিটামিন দিয়া ভাল। (এক্ষেত্রে pawer max(made in Vietnam),All Vit Ma(Made in Germany),Max grower (made in Holland) দিয়া যেতে পারে। এতে শরীর গরম রাখতে সাহায্য করবে। সকল ভিটামিন ও মিনারেলস এর অভাব পুরন করবে।)


দিন ৩১ঃ স্যালাইন দিন। (অথবা এর বদলে ভিটামিন সি দিতে পারেন যেমন লেবুর রস। ১ টি লেবু ১ লিটার পানিতে।অথবা সাধারন পানিও দিতে পারেন।)


প্রতিরোধক কিছু জরুরি ঔষধঃ


১) হোমিও deptherinum 200 ১ ফোঁটা করে মাসে বা ক্যালিমুর ৬ক্স ১ টা ট্যাবলেট মাসে দিতে পারেন। এতে ডিপথেরিয়া হবার সভাবনা অনেকটা কম থাকবে বা এর প্রতিরোধক হিসাবে কাজ করবে।


২) হোমিও Eupatorium Perfo. ১ সিসি= ১ লিটার পানিতে মিক্স করে সাধারন খাবার পানি হিসাবে পরিবেশন করবেন (মাসে ১ বার)।


(সতর্কতাঃ ২ ধরনের হোমিও ঔষধ একসঙ্গে ব্যাবহার করবেন না অনুগ্রহ করে।)


এই ছক যে আপনাকে অনুসরন করতেই হবে এমন কন বাধ্যবাধকতা নাই, এটা আপনার পছন্দ অনুযায়ী পরিবত্তন করে নিতে পারেন। তবে খেয়াল রাখবেন অসুস্থ কবুতর কে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ছাড়া অন্য কোন ভিটামিন দিবেন না। এটা তার ক্ষতি হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে। আর অনেকে বয়লার গ্রয়ার বা এই ধরনের খাবার দিতে পছন্দ করেন। বিশেষ করে অসুস্থ কবুতরকে এই ধরনের খাবার দিয়া ঠিক না।একটা কথা খুব ভাল করে খেয়াল রাখতে হবে শীতে ক্রিমির ঔষধ ৪৫ দিন পর পর দিতে হবে, যদিও ছকে এটা উল্লেখ করা হয়নি। একটা জিনিষ আপনি খেয়াল রাখবেন সব সময় উপরের ছক একটা দিক নির্দেশনা মাত্র, এটা অত্যাবশ্যকীয় কিছুই না সাল্মনেল্লা,লিভার টনিক, বি কমপ্লেক্স, মাল্টি ভিটামিন ও ক্যালসিয়াম ছাড়া। আপনি যদি এই কয়টা করেন ঠিক মত আপনার আর কোন কিছু না করলেও চলবে। ব্যাপারটা অনেক টা এ রকম যে ঘর যত সুন্দর করে সাজাতে পারেন ততই দেখতে ভাল লাগবে আপনার। অনুরূপ ভ্যাকসিন এর ব্যাপারেও, অনেকে মনে করেন ভ্যাকসিনই সকল সমস্যার সমাধান। কিন্তু আসলে এটা ঠিক না। আপনি যদি ভ্যাকসিন দিতে চান তবে কবুতরের জন্য যে ভ্যাকসিন সেগুলো দিবেন। হাঁস বা মুরগির ভ্যাকসিন দিবেন না অনুগ্রহ করে। আতে আপনার কোন কাজে আসবেই না, বরং এতে আপনার কবুতরের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যাবে।


“আর তোমাদেরকে যদি কেউ দোয়া করে, তাহলে তোমরাও তার জন্য দোয়া কর; তারচেয়ে উত্তম দোয়া অথবা তারই মত ফিরিয়ে বল। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ব বিষয়ে হিসাব-নিকাশ গ্রহণকারী।“(সূরা আন নিসাঃআয়াত-৮৬)


লেখক : সোহেল রাবি ভাই



কবুতর খামারিদের জন্য শীতের মাসিক ছক BD Online Pigeon Market

কবুতর খামারিদের জন্য শীতের মাসিক ছক

Pigeon Discussion, Pigeon Diseases & treatment

বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০১৪

ভুল সবই ভুল (কবুতর এর কি রানিখেত হয়?) কেস স্টাডি পর্ব-৮

“মানুষ সব বস্তু থেকে অধিক তর্কপ্রিয়।“( সূরা কাহফঃআয়াত-৫৪)


ছোট বেলায় একবার পাখি শিকার করতে গিয়ে ভয় পেয়েছিলাম আমি সহ আমার আরও ৩ সহপাঠী আর এর পর থেকেই আমার জ্বর আসত, অনেক তেল পড়া পানি পড়া ইত্যাদি দিয়ার পর বা যেকারনেই হোক ভাল হলাম। একসময় আমার বাবা এক ভণ্ড পীর কে দিয়ে আমাকে দোয়া করানো হল তিনি আমাকে দেখে বললেন যে ওর উপর পরীর ছায়া আছে। মনের মধ্যে ভয় ঢুকে গেল, এক অজানা আশঙ্কায় ভয়ে কেপে কেপে উঠতাম আবার মনের মধ্যে গভীর এক বাসনাও জেগে উঠত পরী বলে কথা, যাই হোক সময় বাড়ার সাথে সাথে এই ব্যাপারটা নিয়ে বুঝলাম ও হাসলাম। আসলে এগুলো সবই আজগুবি কথা বাস্তবে এ গুলো হয় না। আর আমাদের দেশে পীর, ফকির, ওঝা, হস্তবিশারদ ইত্যাদি লোকদের উপর এখনও মানুষের অগাধ বিশ্বাস। এদের কাছে কেউ কোন রোগী নিয়ে গেলেই প্রথমে যে কথা গুলো বলে তা হল, ওকে তো জিনে ধরেছে ওর উপর তো কালির আসর আছে, ওর উপর তো শনির দৃষ্টি পড়েছে বা ওর সামনে একটা বিপদ আছে বা ওর সামনে একটা দুর্ঘটনা হবার সম্ভাবনা আছে ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু আশ্চর্য জনক ভাবে তারা জানে না যে মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব আর মানুষের ক্ষমতার উপর আল্লাহ্‌ ছাড়া কারো ক্ষমতা খাটবে না যদি ষে নির্দিষ্ট সিমার মধ্যে থাকে। আর অদৃষ্ট এর কথা আল্লাহ্‌ ছাড়া কেউ জানেন না। এমন কি ফেরেশতারাও জানে না। কিন্তু তারপরও কিছু মানুষ দাবি করে। এখন তাহলে তাদের কোন পর্যায়ে ফেলা যাই তার বিচার আপনাদের উপর।



আমাদের কবুতর সেক্টরে এমনি কিছু পীর ফকির এখনও আছে যাদের আমরা পশু চিকিৎসক বলি তারা ঠিক এমনি ভাবে এখনও আজগুবি জ্ঞান বহির্ভূত চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন। ফলে আমাদের দেশে প্রাণী সেক্টরের প্রচুর সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও আমরা অনেকটা পিছিয়ে আছি। আমাদের মনে রাখতে হবে আমরা এখন বিংশ শতাব্দীতে আর এটাকে ডিজিটাল যুগ বলে আমরা চাইলেই একটা বোতামের চাপে বিশ্বের অনেক কিছুই অনায়াসে জানতে পারি। অনেক জ্ঞান অর্জন করতে পারি কিন্তু আমরা তা করি না। আমরা পুরানো ভুল টাকেই আঁকড়ে ধরে থাকতে পছন্দ করি। নিজেদের কে যুগের সাথে আপডেট হতে পছন্দ করি না শুধু মাত্র স্টাইল ছাড়া। আমাদের ডিজিটাল যুগে ওয়েব গুলোতে একদিকে যেমন সঠিক তথ্য থাকে তেমন মুখরোচক ভুল তথ্যও থাকে আপনাকে আপনার জ্ঞান ও বিচার বিবেচনা ও নানা সাইট ঘেঁটে বেছে বের করতে হবে সঠিক তথ্যটি, আর আপনি যদি না পারেন তাহলে আপনি অপারগ। আর আমাদের এই অপারগতা আজ ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। যার ছায়া আমাদের প্রাণী বিশেষ করে কবুতর সেক্টরে পড়েছে। আমাদের দেশে ভেটেনারি ডাক্তাররা পোলট্রি চিকিৎসা ব্যাবস্থা এই সব ফান্স্যি দামী কবুতরের উপর প্রয়োগ করে হাত জস করেন। চিকিৎসা যদি কাজে লাগে ভাল না হলে ভাই এটা রানিখেত হয়েছিল ইত্যাদি। কিন্তু আমাদের দেশে ৯৫% খামারিই জানেন না যে কবুতরের রানিখেত হয় না। আমার এই কথা শুনে হয়ত অনেকেরই ভুরু কুচকে যাবে, হাঁ কুচকে যাবারি কথা। একটু যদি আলোচনা করি জিনিসটা আপনাদের কাছে পরিস্কার হয়ে যাবে।


১) আমরা অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেনিতে জীব বিজ্ঞানে পড়েছিলাম রানিখেত নিয়ে যেটা শুধু হাঁস মুরগির মধ্যেই সীমাবদ্ধ।


২) মেডিক্যাল অভিধানে আছে, নিউক্যাসল রোগ = (ভেটেরিনারী বিজ্ঞান) কেন্দ্রিয় স্নায়ুতন্ত্রের নিউমোনিয়া এবং প্রদাহ দ্বারা চিহ্নিত পাখির একটি তীব্র ভাইরাল রোগ, বিশেষ করে পোলট্রির জন্য।


৩) রানিক্ষেত রোগের প্রতিশব্দ হল নিউক্যাসেল রোগ। যদিও নিউক্যাসল রোগ ও রানিক্ষেত রোগের ডি,এন,এ গত পার্থক্য আছে।


৪) নিউক্যাসল রোগ ও রানিক্ষেত রোগে আক্রান্ত হলে কোন চিকিৎসা নাই। যদিও আমাদের দেশের নান জনে নান ধরনের চিকিৎসার চেষ্টা করেন।


৫) নিউক্যাসল রোগ ও রানিক্ষেত রোগ এ ৯০% মৃত্যুহার আর ১০% মৃত্যুপ্রায় অবস্থাই থাকে।


৬) যেহেতু এটা একটা ভাইরাল সংক্রমিত রোগ তাই এটি কোন প্রকার অ্যান্টিবায়টিক বা ঔষধে কাজ করে না।


৭) নিউক্যাসল রোগ ও রানিক্ষেত রোগ প্যারামক্সি ভাইরাস গ্রুপ (PMV1) এর অন্তভুক্ত। এই ২ টি রোগের ভাইরাস অনেক প্রকার হয়ে থাকে যার মধ্যে MMV1-PMV9 প্রধান।


৮) নিউক্যাসল রোগ ও রানিক্ষেত রোগ একটি অতি সংবেদনশিল সংক্রমিত রোগ।


৯) নিউক্যাসল রোগ ও রানিক্ষেত রোগে নিমিষের মধ্যে পুরো খামার আক্রান্ত হয়ে

যায় ও পপ্রাণী মারা যায়। অনেকটা বার্ড ফ্লু এর মত।


১০) কবুতরের মধ্যে প্যারামক্সি(PMV) রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যেতে দেখা যাই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে, কিন্তু আমাদের দেশে এ পর্যন্ত এই রোগের প্রাদুর্ভাব এখনও দেখা যায়নি, কিন্তু তারপরও কিছু জ্ঞানহীন লোকের কাণ্ডজ্ঞানহীন কার্যকারিতার কারনে আমাদের দেশকে প্রাণীদের রেড জোন হিসাবে চিহ্নিত হয়ে আছে। আর ফলশ্রুতিতে আমরা আমাদের দেশ থেকে কোন প্রাণী রপ্তানি করতে পারছি না।


১১) নিউক্যাসল রোগ ও রানিক্ষেত রোগের জন্য নানা ধরনের ভ্যাকসিন পাওয়া যাই যা শুধুই পোলট্রির জন্য প্রযোজ্য এগুলো কবুতরের ক্ষেত্রে কোন কজে লাগে না। যদিও বিপণন নীতির কারনে এই ভ্যাকসিন কে কবুতরের জন্য প্রযোজ্য বলে চালান হয় আসলে তা ঠিক না। বিশ্বের কোন দেশেই কবুতরের জন্য এই ভ্যাকসিন ব্যাবহার করতে দেখা যায় না বা শুনাও যায়না। তারপরও আমাদের দেশে ৬০% খামারি এই পোলট্রি ভ্যাকসিন ব্যাবহার করে থাকেন।


১২) অনেকেই ডিপথেরিয়া রোগ কে রানিখেত বলে ভুল করে থাকে। কারণ ডিপথেরিয়ার লক্ষন সব গুলোই রানিক্ষেত রোগের সঙ্গে মিলে যাই। যদিও অনেকেই মনে করেন যে কবুতরের ডিপথেরিয়া হয় না আসলে তা সঠিক না। আবার অনেকেই সাল্মনিল্লা কে রানিক্ষেত বলে থাকেন যার কোন ভিত্তি নাই।


১৩) নিউক্যাসল রোগ ও রানিক্ষেত রোগের পোলট্রি প্রতিরোধক ভ্যাকসিন আমাদের দেশে পাওয়া যায়, কিন্তু কবুতরের প্যারামক্সি ভাইরাস এর প্রতিরোধক ভ্যাকসিন আমাদের দেশে কেউ ব্যক্তিগত উদ্যোগে আমদানি না করলে পাওয়া যাই না।


১৪) আমাদের দেশে যদিও কবুতরের প্যারামক্সি ভাইরাস এর জীবাণু নাই তারপরও যদি সুযোগ থাকে তাহলে বছরে ১ বার অন্তত এই ভ্যাকসিন দিলে রাখলে ভাল, কারণ যে হারে কবুতর আমদানি হচ্ছে তাতে অচিরেই এই ভাইরাস বাংলাদেশে আবির্ভাব হলে অবাক হবার কিছুই থাকবে না।


পরিশেষে, সবারই কাছে বিশেষ ভাবে অনুরধ যেন যেকোনো কিছুরই সঠিক ভাবে বিচার বিবেচনা করেই কেবল মন্তব্য করবেন। আমরা যা জানি না সঠিক ভাবে সেগুলো নিয়ে আরও পড়াশুনা করব। আরও বেশী করে যাব তাহলেই কেবল অনাখাংকিত পরিস্থিতি থেকে বেচে থাকতে পারব।



ভুল সবই ভুল (কবুতর এর কি রানিখেত হয়?) কেস স্টাডি পর্ব-৮ BD Online Pigeon Market

ভুল সবই ভুল (কবুতর এর কি রানিখেত হয়?) কেস স্টাডি পর্ব-৮

Pigeon Discussion, Pigeon Diseases & treatment

শনিবার, ১১ অক্টোবর, ২০১৪

কবুতরের ম্যালেরিয়া রোগ (Pigeon Malaria)

কবুতরের ম্যালেরিয়া রোগ (Pigeon Malaria)


“তুমি মনে করো না, যারা নিজেদের কৃতকর্মের উপর আনন্দিত হয় এবং না করা বিষয়ের জন্য প্রশংসা কামনা করে, তারা আমার নিকট থেকে অব্যাহতি লাভ করেছে। বস্তুতঃ তাদের জন্যে রয়েছে বেদনাদায়ক আযাব।“(সূরা আল ইমরানঃআয়াত-১৮৮)


আমি, কবুতরের রোগব্যাধি সম্পর্কিত যা আছে তা সকল খামারিদের মধ্যে শেয়ার করতে সব সময় চেষ্টা করেছি ও করছি অনবরত। কিন্তু মাঝে মাঝে কিছু জিনিস মানসিক পীড়া দেয় প্রচণ্ড, যখন আমার এই কষ্ট সাধ্য লিখা অনায়াসে নিজের নামে কপি করে চালাই কতিপয় কিছু লোক, তাই এই ব্যাপারে আমি আর লিখি নাই, শুধুমাত্র কেস স্টাডি আকরে রোগের ও কার্যক্রমের কিছু ইঙ্গিত দিবার চেষ্টা করেছি। কিছুদিন মনের সাথে লড়াই করে। আল্লাহ্‌র এই আয়াতটি মনে পরে গেল। আসলেই তো আমি কেন চিন্তা করি এসবের ? সকল প্রশংসা ও তারিফ তো শুধুমাত্র আল্লাহ্‌ তায়ালার আমি তো উসিলা মাত্র। তাই দ্বিতীয় কোন চিন্তা না করেই আল্লাহ্‌র উপর সমস্থ কিছু ছেড়ে দিয়ে নিশ্চিন্ত মনে আজ এই অতীব গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট টা লিখলাম, আশা করি খামারিরা এতে উপকৃত হবেন।



একবার বাংলাদেশে জাতিসংঘ থেকে একদল পরিদর্শক দল আসল এ দেশের এক বিশেষ জরিপের জন্য, পরে তারা বিভিন্ন স্কুল ও কলেজ পরিদর্শন করল। সেখানের ছাত্রদের এক এক করে জিজ্ঞাস করল তুমি কি হতে চাও? কেউ বলল ডাক্তার কেউ ইঞ্জিনিয়ার কেউ পাইলট ইত্যাদি। পরে তারা জরিপ শেষে তারা দুঃখ প্রকাশ করে বলেছিল যে, তোমাদের দেশ কৃষি প্রধান দেশ কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, একজন ছেলেও পেলাম না যে সে, কৃষক হতে চাই। এটা তোমাদের জন্য খুবই বিপদজনক। এ রকম যদি কোন জরিপ করা হয় কবুতর সেক্টরে তাহলেও আমরা দেখব যে, আমাদের দেশে অধিকাংশ (৯০% প্রায়) খামারি কবুতর পালে শুধুমাত্র পালার জন্য, নামের জন্য বা ব্যাবসায়িক উদ্দেশ্য হাসিল করার জন্য। কবুতর কে ভালবাসে বা শখের বসে কবুতর খামারি হয় শুধুমাত্র (১০% প্রায়)। আর সমস্যার সূত্রপাত এখানেই ! শুধু তাই নয় আমাদের দেশের খামারিরা কবুতরের রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে গাফেলতি করেন। কোন কবুতরের রোগ হলে মানে ঝিমাতে দেখেলেই খামারিদের করনীয় হল। সেটাকে ধরে ঠিকমত পরখ করা।


১) তার মুখের ভিতরে কফ আছে কিনা বা লালা ধরনের কিছু আছে কিনা?

২) সাদা সাদা বা হলদে ধরনের কিছু আছে কিনা?

৩) হাঁচি বা কাশি দেয় কিনা?

৪) হাঁ করে শ্বাস নেয় কিনা?

৫) সবুজ ও হালকা হলদে ধরনের পায়খানা করে কিনা?

৬) মুখে গন্ধ আছে কিনা? ইত্যাদি পরীক্ষা করা। কিন্তু সেটা না করেই বলেন কবুতর ঝুমাচ্ছে।


কোন প্রশ্ন করা হলে না দেখেই বলেন না এসব কিছু নাই। ঠিক ৩-৪ দিন পরই বলেন যে, এসব লক্ষণ আছে, এর মানে আপনি ইতিমধ্যে চিকিৎসা ব্যাবস্থা থেকে এই সময়টা পিছিয়ে গেলেন। আর যদি মারা যায় তাহলে নিজের দায়িত্ব এড়ানোর জন্য বলা হয়। যে তার হায়াত ছিল না বা চিকিৎসা ঠিকমত হয়নি বা যিনি ঔষধ দিয়েছেন তিনি ঠিকমত ঔষধ দিতে পারেননি ইত্যাদি ইত্যাদি। আসলেই কি এ কথা বলে পার পাওয়া যাবে? আল্লাহ্‌ ভাল জানেন। তবে এ প্রসঙ্গে আবার সেই হাদিস টি আপনাদের মনে করিয়ে দিতে চাই।


রসূল(সঃ) বলেন, “একজন মুসলিম যিনি একটি পোষা প্রাণী রাখতে পছন্দ করে, তার দায়িত্ব হল ভালমত এর যত্ন নেয়া,যথাযথ খাদ্য, পানি এবং আশ্রয়ের ব্যাপারে খেয়াল করা আবশ্যক। কোন বাক্তি যদি একটি পোষা প্রাণীর যত্নর ব্যাপারে উপেক্ষিত হয় তার কঠিন শাস্তি বর্ণনা করেছেন।“


গত ঈদুল ফিতর এ একজন সামাজিক সাইট এ তার খামারে পাখিদের লম্বা সারি করা মৃত দেহগুলোর ছবি গর্ব ভরে দিয়ে কাহিনী লিখল, এ রকম যে সে গ্রামের বাড়িতে ঈদের ছুটিতে বেড়াতে গেছিলো ৩ দিনের জন্য, আর তার খামারে সেই মত খাবার ও পানি রেখে গেছিলো। কিন্তু সে সাতদিন পর বাড়ি ফিরল! আর ফিরেই এই ঘটনা দেখল। সেই এই ঘটনা লিখে একটু সহানুভুতি পাবার একটা বৃথা চেষ্টা করেছিল মাত্র, আর অনেকেই কিছু না বুঝেই তাকে সান্তনা দিয়েছিল। আর তাতে সে হয়ত মনে মনে একটু খুশি হয়েছিল হয়ত। কিন্তু আমি তাকে কোন সান্তনার বানী শুনাতে পারিনি, এটা দেখে রাগে দুঃখে চোখে পানি চলে এসেছিল আমার, আর সেই অমানুষটাকে আমি আমার বন্ধু তালিকাতে আর রাখতে পারিনি। এ রকম এই ঈদেও অনেকেই খাবার ও পানি দিয়ে নিশ্চিন্ত মনে গ্রামের বাড়িতে চলে গেছেন। কিন্তু তারা হয়ত ভুলে গেছেন এগুলো হল প্রাণী, তারা হিসাব করে খেতে ও পান করতে জানে না। কিন্তু কাকে শোনাব এ সব কথা। যাকে বলব তারাত জেগে ঘুমান দলের লোক!


এদের সম্পর্কে আল্লাহ্‌ বলেন, “তারা কি এই উদ্দেশ্যে দেশ ভ্রমণ করেনি, যাতে তারা সমঝদার হৃদয় ও শ্রবণ শক্তি সম্পন্ন কর্ণের অধিকারী হতে পারে? বস্তুতঃ চক্ষু তো অন্ধ হয় না, কিন্তু বক্ষ স্থিত অন্তরই অন্ধ হয়।“( সূরা হাজ্জ্বঃআয়াত-৪৬)


আল্লাহ্‌ তায়ালা আরও বলেন, ”আল্লাহ তাদের অন্তকরণ এবং তাদের কানসমূহ বন্ধ করে দিয়েছেন, আর তাদের চোখসমূহ পর্দায় ঢেকে দিয়েছেন। আর তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি।“(সূরা আল বাক্বারাহঃআয়াত-৭)


রোগ বর্ণনাঃ


আমাদের খামারে কোন কবুতর যখনি অসুস্থ হয় তখনি আমরা কোন না কোন ঔষধ প্রয়োগ করি। কিছু ক্ষেত্রে হয়ত ঔষধ নির্বাচন সঠিক হয়। তাও সেগুলো বেশির ভাগই অনুমানের উপর ভিত্তি করে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আমরা জানি না কোন রোগের জন্য আমরা এই ঔষধ প্রয়োগ করা হয়েছে। আর কোন রোগের জন্য কোন ঔষধ প্রয়োগ করা হয়। আর কতদিন এই সব ঔষধ প্রয়োগ করতে হয় তা ৯৫% খামারিরাই জানেন না। এমনকি আমাদের দেশের অধিকাংশ পশু ডাক্তাররাও অনেক রোগ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল না বা এই ধরনের রোগের ক্ষেত্রে কি ধরনের ঔষধ প্রয়োগ করা উচিৎ সে সম্পর্কে নিজেকে প্রস্তুত করতেও প্রস্তুত না উনারা। আর এর ফল ভোগ করেন নিরীহ খামারিরা। তাই আপনাকে আগে রোগের সঠিক ধরন তা জানতে হবে চিকিৎসা শুরু করার আগে। তাহলেই কেবল আপনার পরিশ্রম সার্থক হবে। না হলে সব কিছুই ভেস্তে যাবে কোন সন্দেহ নাই।


কবুতরের ম্যালেরিয়াঃ

================


Plasmodiosis বা ম্যালেরিয়া ধিরে ধিরে দৃশ্যমান হয়ে উঠা একটি অতি জঘন্য ধরনের প্রচলিত রোগ। যাকে তথাকথিত নদীর রোগও বলা হয়। এই রোগের প্রাথমিক পর্যায়ে অনেক সময়ই কোন লক্ষণ প্রকাশ পাই না। কিন্তু একটু ভাল করে খেয়াল করলেই লক্ষণ গুলো ধরা পরে। এটি পোকামাকড় দ্বারা সৃষ্ট পৃথিবীতে প্রচুর পাখি ও কবুতরের মৃত্যুর অন্যতম কারণ হিসাবে ধরা হয়।


কারনঃ

=====


১) এটি কবুতরের গায়ের রক্ত শোষক মাছি যার নাম জকি বলা হয় (যদিও অনেক পশু ডাক্তার মনে করেন সাধারন মাছি এই রোগের কারণ কিন্তু আসলে তা সঠিক না।) ও স্ত্রি মশা যাকে আনোফেলিস বলা হয়। এই দুটি প্রাথমিক বাহক হিসাবে কাজ করে থাকে। যা পরে অন্তর্বর্তী হোস্ট হিসাবে কাজ করে। যারা প্রটোজোয়ান নামক জীবাণু কবুতরের শরীরে অনুপ্রবেশ ঘটায়। যার ফলে এই জীবাণু কবুতরের লাল রক্ত কোষে আক্রমন করে এটিকে আস্তে আস্তে ধ্বংস করে ফেলে। ফলে কবুতরে করুন মৃত্যু ঘটে।


২) বাইরের পাখি বা কবুতর এই রোগের বাহক হিসাবেও অনেক সময় কাজ করে থাকে।


৩) আক্রান্ত কবুতর বা পাখি থেকে অন্য কবুতরের মধ্যে সংক্রমিত হতে দেখা যায়।


৪) আক্রান্ত পাখি বা কবুতরের মল বা বিষ্ঠা থেকে এই রোগ সংক্রমিত হয়।


৫) মশা উৎপন্ন হয় যেখানে এ রকম আবহাওয়া বৈশিষ্ট্য স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশের কারনেও হতে পারে।


লক্ষণঃ

====


১) মুখ হাঁ করে শ্বাস নিবে কিন্তু মুখের ভিতরে কোন কফ বা সাদা ধরনের কিছু থাকবে না। (যদিও অনেকেই এটাকে ডিপথেরিয়ার লক্ষণ বলেও ভুল করে থাকে।)


২) বুকের নিচে পাতলা হাড্ডির কাছে লোম শূন্য ও প্রচুর খুস্কি দেখা যাবে। (যদিও অনেক সময় সুস্থ কবুতর অনেক দিন গোসল না করার ফলেও এ ধরনের খুস্কি দেখা যেতে পারে।)


৩) পালকের উজ্জলতা বা মসৃণ বা তেলতেলে ভাবতা নষ্ট হয়ে যাবে।


৪) কবুতর কে ধরলেই সেটা সাদা সাদা ধরনের বমি করবে ও প্রচণ্ড হাঁপাবে। ও মুখের ভিতরে প্রচণ্ড দুর্গন্ধ থাকবে যা অনেক সময় দূর থেকেই পাওয়া যায়। (যদিও ডিপথেরিয়ার ক্ষেত্রেও একই ধরনের লক্ষণ দেখা যাই।) যদিও কিছু খেলেও বমি করার প্রবনতা থেক্তে পারে।


৫) ফ্যাঁকাসে ও সাদা ঠোঁট দেখা যাবে। (সুস্থ কবুতরের মত গোলাপি ধরনের ঠোঁট থাকবে না)


৬) কবুতরের মধ্যে উদ্যমতা থাকবে না উদাসীনতা প্রকাশ পাবে। অর্থাৎ হটাত করে চমকে উঠবে।


৭) গায়ের তাপমাত্রা বেশী হবে স্বাভাবিকের থেকেও ও একটানা জ্বর থাকবে গায়ে।


৮) রক্তাল্পতা প্রকাশ পাবে।


৯) কবুতর খুবই খুব দুর্বল হয়ে পড়বে অল্পদিনের মধেই ও টলে পড়ে যাবে।


১০) পায়খানার তেমন কোন বিশেষ লক্ষণ চোখে পড়বে না, তবে পাতলা হলুদ বা সাদা ও সবুজ মিক্স ধরনের থাকবে। অথবা সাদা জমাট আঠাল ধরনের হতে পারে।


১১) এই রোগ সাধারণত বাচ্চা অর্থাৎ ইয়ং কবুতর ও ডিম পাড়া মাদী কবুতর বেশী এক্রান্ত হতে দেখা যায়।


১২) পাখা ঝুলে যাবে ও লেজ নেমে থাকবে।


১৩) এই রোগে কবুতরের লিভার অনেক বড় হয়ে যাই, আর রক্ত কোষের সংখ্যা কমে যাবার ফলে কয়েকদিনের মধ্যেই কবুতরের মৃত্যু ঘটবে।




প্রতিরোধঃ

=======


যেহেতু এই রোগে একবার আক্রান্ত হলে সেই কবুতর ম্যালেরিয়ার জীবাণু আজীবন বহন করে। তাই এই রোগের প্রতিকারের থেকে প্রতিরোধ করাটাই ভাল।


১) আপনার খামারে যেন পানি না জমে বা স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। যেখানে মশা ডিম উৎপাদন করতে না পারে।


২) বাইরের পাখি বা কবুতর যে খামারে প্রবেশের সুযোগ না পায় তার যথাযথ ব্যাবস্থা নিতে হবে।


৩) কবুতরের গায়ে যেন মাছি না জন্মে সে ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে, এ জন্য তাদের গোসল করার ব্যাবস্থা করা বা নিজে ধরে গোসল করাতে হবে।


৪) অন্য কবুতরের সঙ্গে মিশলে সেই কবুতর গুলোকে ভাল করে ধুলো মুক্ত করা বা জীবাণু মুক্ত করা। যাতে খামারে জীবাণু প্রবেশ না করে।


৫) নিয়মিত জীবাণু মুক্ত স্প্রে করা।


৬) খামার নিয়মিত পরিস্কার পরিছন্ন রাখা।


৭) হোমিও Eupatorium perfo 30 ১ সিসি ১ লিটার পানিতে মিক্স করে মাসে একবার করে দিলে প্রতিরোধের জন্য ভাল উপকার পাওয়া যায়।


৮) রসুন পানি মাসে একবার অন্তত পরিবেশন করুন। ২ চামচ রসুন বাঁটা ১ কাপ পানিতে মিক্স করে ছেকে ১ লিটার পানিতে মিক্স করে দিন।


৯) অ্যাপেল সিডার মাসে অন্তত একবার পরিবেশন করুন ১ সিসি ১ লিটার পানিতে।




প্রতিকার/ চিকিৎসাঃ

===============


১) এই রোগের চিকিৎসা একটু ধৈর্যশীলতা পরিচয় দিতে হয়। কারণ রোগ চিকিৎসা ৫২ দিন পর্যন্ত চালাতে হয় লাল রক্ত কোষ গুলো আবার আগের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে।


২) রোগ ভাল হবার পরও সপ্তাহে বা মাসে ১-২ দিন এই চিকিৎসা চালাতে হতে পারে।


৩) আয়রন ও জিঙ্ক ভিটামিন দিতে হবে যাতে লাল রক্ত কোষ বাড়তে সাহায্য হয়।


৪) ১/৪ ভাগ AVLOQUIN (Chloroquine phosphate) + ১/৪ ভাগ JASOPRIM (primaquine) + ১ গ্রাম গ্লুকোজ+ ১ স্যালাইন =১০ সিসি পানিতে মিক্স করে দিনে ৩ বার করে দিতে হবে।


৫) চিকিৎসা চলাকালীন সময়ে যেন কোন ভিটামিন ও মিনারেলস বাদ না পরে যথাবিধি সেগুলোকে প্রয়োগ করতে হবে।


৬) তবে সব থেকে কার্যকরী ঔষধ হল ARALEN WS Tablet (imported) প্রয়োগ করলে ভাল ফল পাওয়া যায়।


ময়না তদন্তঃ যদি আপনি কবুতরে কে ব্যাবচ্ছেদ করেন তাহলে দেখবেন ওর লিভারের গায়ে অনেক ছোট ছোট কাল ফোঁটা ফোঁটার মত জমাট রক্তর মত হয়ে আছে ও হালকা কালচে বরন ধারন করেছে।


আর সর্বোপরি মনে রাখতে হবে যে, আপনি যদি রোগ নির্ণয়ে অসুবিধা হয় তাহলে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ সাহায্য নিতে হবে, বিশেষ করে এই রোগ নির্ণয় করা বেশ কঠিন; কারণ এই ম্যালেরিয়ার লক্ষণ অন্যান্য রোগের লক্ষণের অনুরূপ হয়।


“যারা মনোনিবেশ সহকারে কথা শুনে, অতঃপর যা উত্তম, তার অনুসরণ করে। তাদেরকেই আল্লাহ সৎপথ প্রদর্শন করেন এবং তারাই বুদ্ধিমান।“(সূরা আল যূমারঃআয়াত-১৮)


মূল লেখক : সোহেল রাবি ভাই



কবুতরের ম্যালেরিয়া রোগ (Pigeon Malaria) BD Online Pigeon Market

কবুতরের ম্যালেরিয়া রোগ (Pigeon Malaria)

Pigeon Diseases & treatment

বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

শেয়ার বাজার কবুতরের সূত্র ও ফর্মুলা (কেস স্টাডি)

“এবং কাফেরেরা চক্রান্ত করেছে আর আল্লাহও কৌশল অবলম্বন করেছেন। বস্তুতঃ আল্লাহ হচ্ছেন সর্বোত্তম কুশলী।“(সূরা আল ইমরানঃআয়াত-৫৪)


পৃথিবীর বড় বড় রিসার্ভ ফরেস্ট বা অভায়ারন্যের মধ্যে সারেঙ্গেটি, মাসাই মারা ও কুগার ন্যাশনাল পার্ক অন্যতম। এখানে ওয়াইল্ড বিস্ট, ইম্পালা ও স্প্রিং বক(হরিন প্রিজাতি)নামে প্রাণীর প্রচুর সমাগম দেখা যায়। আর এদের বংশ বৃদ্ধি জ্যামেতিক হারে হয় আর এটা এমন ভাবে ঘটে সে এক আশ্চর্য ব্যাপার। আর এ কারনেই এদের খাদ্য ঘটতি বেশী দেখা যায়। এ কারনে তারা বছরের একটা সময়ে মাইগ্রেশন করে থাকে খাবারের খোঁজে। মাসাই মারার, মারা নদীতে এরা যেভাবে মাইগ্রেশন করে তা দেখার জন্য হাজার হাজার ভ্রমন পিয়াসী মানুষ জড় হয় এই অভনব মাইগ্রেশন দেখার জন্য। এই মাইগ্রেশন একদিকে যেমন দৃষ্টি নন্দন অন্যদিকে তেমনি মর্মান্তিক। এরা কিন্তু প্রতি বছর একই জাইগাই মাইগ্রেশন করেন না। আর এরা নদী যখন শুকনো থাকে তখনও এটা করে না। যখন এটা করে তখন বন্যা বা ঢল নামে। আর এই সময়ে সেই নদীতে কুমিরে ভরা থাকে, ফলে মাইগ্রেশনের সময় পদদলিত ও ঢলে বা ডুবে অনেক প্রাণীর মৃত্যু ঘটে থাকে। আর সেই মাইগ্রেসন সম্পূর্ণ হবার সময় ও পরে কুমির, সারস ও শকুনদের ভূরি ভোজের মহোৎসব দেখা যাই, আর অন্যদিকে সেই সব প্রাণীদের আহাজারি। কেন তারা এই কঠিন সময়ে এই মাইগ্রেশন করে,কেন অন্য সময় যে প্রাণীরা অন্য যেকোনো বিষয় ভুলে যাই আর এক্ষেত্রে কেন ভুলে না? তা আজ রহস্যাবৃত, যদিও প্রাণীদের কোন ঘটনা বা কোনকিছু বেশীদিন মনে রাখে না। কিন্তু এই মাইগ্রেশনের ব্যাপারটা কেন যেন আশ্চর্য? তারা ভুলে না ফলে যে প্রান হানি ঘটে তা বর্ণনা করার মত না। যদিও বন বিভাগ এটার কিছু করতে পারে নাই বা তারা করতে চান নাই বা করতে চেষ্টাও করে নাই। কারণ হয়ত প্রকৃতির ব্যাপারে তারা হস্তক্ষেপ পছন্দ করে না। এটা আল্লাহ্‌ তালার একটা ইশারা প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার জন্য।



মানুষের মধেও সেই ভুলে যাবার ব্যাপারটা আমাদের চরিত্রগত,মজ্জাগত বা জন্মগত যাই বলি না কেন সেটা আছে। কারণ ইনসান এর আভিধানিক অর্থ ইনসিওন বা ভুলে যাওয়া। দুইটা জিনিষ প্রথমে আমাকে খুবই হতবাক করেছিল। এক, পৃথিবীতে জন্ম হতে শুরু করে কেয়ামত পর্যন্ত আগমন কারী থেকে প্রস্থান কারী আমাদের সবারই বয়স সমান আর দুই কোন বুড়া মানুষ বেহেস্তে যাবে না ! রূহানী জগতে আমাদের সবারই রূহ কে একই সঙ্গে সৃষ্টি করা হয়েছে। আর সেই কারনেই আমাদের সবারই বয়স সমান, পৃথিবীতে আগমন ও প্রস্থানের সময় আলাদা। কোন বুড়া মানুষ বেহেস্তে যাবে না কারণ বেহেস্তে প্রবেশের আগে আল্লাহ্‌র রহমতে তখন সবাই সুন্দর যুবক হয়ে যাবে।


যাই হোক, আসল কথাই ফিরে আসি, তো সেই প্রাণীরা তাদের আগের বিপদের কথা স্মরণ রেখে আগের একই পথে আর জীবনেও পা বাড়াই না। যদিও বা তারা মানুষের থেকেও বেশী ভুলে যাবার অভ্যাস, তার পরও কিন্তু মানুষই একমাত্র প্রাণী যে আগের বিপদের কথা ভুলে যাই বা সামনের এক ভাই বিপদে পরলেও আমরা তা থেকে শিক্ষা গ্রহন করি না। সেই সব পার্ক গুলো প্রাণীদের জন্য অভায়ারন্য হলেও কবুতর জগত খামারিরে বা কবুতর প্রেমীদের জন্য অভায়াশ্রম না। আমাকে কিছুদিন আগে একজন বলেছিল ভাই আমাদের তো ক্রুটি থাকবেই আমরা তো ফেরেশতা না। হাঁ আমরা ফেরেশতা না আমরা ফেরেশতা জিন ও সকল প্রাণী থেকে শ্রেষ্ঠ করে বানিয়েছেন। আর তাই আমরা ফেরেশতা দের থেকেও শ্রেষ্ঠ। কিন্তু এই শ্রেষ্ঠতা কি খালি নামে ? আমাদেরকে প্রথমেই যে শিক্ষা দিয়া হয় তা হল যে কোন পাপই করা হোক তওবা করে মাফ, শিরক ছাড়া আর সেই মানসিকতা থেকেই না ধরনের ঠক বাজি, জচ্চরি, ধান্দাবাজি এমন কিছু নাই যা আমরা করি না। আল্লাহ্‌ তওবা কারিকে পছন্দ করেন, কিন্তু যে বার বারই একই ভুল করে তার ব্যাপারে আল্লাহ্‌ ভাল জানেন। আল্লাহ্‌ বলেন, “অবশ্যই তোমাদের উপর তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্ত আছে। সম্মানিত আমল লেখকবৃন্দ। তারা জানে যা তোমরা কর। সৎকর্মশীলগণ থাকবে জান্নাতে। এবং দুষ্কর্মীরা থাকবে জাহান্নামে; তারা বিচার দিবসে তথায় প্রবেশ করবে।“ (সূরা আল ইনফিতারঃআয়াত-১০-১৫)


১৯৯৬ সালে আমি সবে পড়াশুনা শেষ করেছি। টিউশনি করি, সেই সময় আমার এক বন্ধু তখন সে এক কোম্পানি তে চাকরি করে, সে চাকরীর ফাকে ফাকে শেয়ার ব্যাবসা করে ভাল টাকা কামিয়েছে। তখন রাস্তার উপর হাতে হাতে শেয়ার কেনা বেচা হত, আমার সেই বন্ধুটি আমাকে প্রলুব্ধ করে বলল, আরে ১ লক্ষ্য টাকা খালি বিনিয়োগ কর, দেখবি রাতারাতি কোটিপতি ! আমি রাজি হলাম না কারণ বড়লোক হবার বাসনা আমার কখনও ছিল না এখনও নাই। আর কাঁচা টাকার একটা গরম আছে সেটা আর এর প্রভাব সবাই সহ্য করতে পারে না। ফলে নানা অপকর্মে জরিয়ে পড়ে। রসুলুল্লাহ(সাঃ) দারিদ্রতার প্রভাব ও সম্পদের অধিক্য থেকে আল্লাহ্‌র কাছে পানাহ চেয়েছেন। যাই হোক, সে আমার বাসাই গিয়ে আমার মা কে রাজি করিয়ে আমাকে শেয়ার বাজারে নামাল, সে আরও বলল আরে তর টাকা ক্ষতি হলে আমি দিব। সেই সময় এই টাকা আমার কাছে অনেক কিছু অনেক মানে রাখে। যাইহোক সেই সময়তা ছিল শেয়ারের চরম অবস্থা মানে উচ্চ সময় ! যাইহোক কিছু শেয়ার সরাসরি উচ্চ দামে কিনলাম কিছু আবেদন করে পেলাম। এর পড়ি শুরু হল ভেল্কি। রাতারাতি শেয়ারের দাম অর্ধেক ! আমার ১ লক্ষ্য টাকার শেয়ার ২ টা লট বাদে মানে ৮০ হাজার টাকার শেয়ার তখন হয়ে গেল ৪০ হাজার ! আমার তো মাথা নষ্ট হবার উপক্রম। যত রাগ গিয়ে পড়ল সেই বন্ধুটির উপর, কিন্তু তাকে কি বলব তার অবস্থা তো আরও খারাপ, যাই হোক পর মোটামটি সর্বমোট ৩০ হাজার টাকাই সব গুলো বিক্রি করতে পেরেছিলাম। আর এ জন্য আজ আল্লাহ্‌র কাছে শুকরিয়া জানাই। কারণ আমার পরে যারা ছিল তারা সেই টাকা টুকুও পাইনি। আগের শেয়ার বাজারের অবস্থা আর বর্তমানে শেয়ার বাজারের অবস্থা প্রায় একই বরং আরও ভয়াবহ। সেই যাই হোক আমি এগুলো নিয়ে ব্যাবচ্ছেদ করতে বসিনাই। কারণ আমার ঘাড়ে একটাই মাথা। তো শেয়ার বাজারে এক ধরনের চক্র কাজ করে। সামাজিক সাইট গুলো তে সেই সব চক্র কাজ করেছে ব্যাপক। যেমন- একটা চক্র ছিল তাদের কাজ ছিল আগামিকাল কোন শেয়ারের দাম বাড়বে সেটা বলে দিয়া আর সেই সব গ্রুপের সদস্য রা সেই সব শেয়ার ক্রয় করে যে লাভ হত তার একটা অংশ তাদের দিতে হত। পরে প্রসাসন তাদের গ্রেফতার করে। এর বাইরেও কিছু চক্র কাজ করত। যারা নিজেদের মধ্যে শেয়ার কেনা বেচা করে দামের একটা পর্যায়ে নিয়ে যেত এর পর বাইরের কিছু বোকা লোক সেগুলো যখন কেনা শুরু করত তখন তারা দাম আরও বাড়াত, এর পর তারা তাদের মুনাফা টুকু নিয়ে কেটে পড়ত। আর সর্ব শান্ত হতে হত সেই মধ্যবিত্ত সেই সব লোকদের যারা তাড়াতাড়ি বড়লোক হবার নেশাই মত্ত থাকে।


হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে যে ‘কোনো ব্যক্তি মুসলমানদের লেনদেনে হস্তক্ষেপের মাধ্যমে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণ ঘটালে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা আগুনের হাড়ের ওপর তাকে বসিয়ে শাস্তি দেবেন।’


শেয়ার বাজারের মানুষ জন যখন আসতে আসতে তাদের কষ্ট গুলোকে সামাল দিয়ে কবুতর বাজারে প্রবেশের একটা চেষ্টা করছে ঠিক সেই সময়ই এই কবুতর সেক্টরের কিছু অসাধু চক্র আবার সক্রিয় হয়ে গেছে। এরা নানা ভাবে কবুতরের দাম বাড়াই কমাই, আর আবারও এই চক্রের কবলে পড়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছে সেই সব না জেনে ঝাপিয়ে পড়া লোকজন। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, তোমরা ক্রেতাকে ধোঁকা দেওয়ার লক্ষ্যে ক্রেতার মূল্যের উপর মূল্য বৃদ্ধি করে ক্রেতাকে ধোঁকা দিয়ো না’।

এরই মধ্যে হয় অনেকেই আমার মুণ্ডপাত করতে শুরু করেছেন নিশ্চয় আর না করলেও হয়ত ভ্রুকুচকে মনে মনে বলছেন ভাই আপনি তো মনে হই সব জান্তা হয়ে গেছেন। না ভাই আমি সব জান্তা না। আমি ব্যাপারটা নিয়ে অনেক চিন্তা করেছি। কিন্তু আজ সকালেই আমার এক বন্ধু যখন আমাকে আরও ভালভাবে বলল, তখন আমি সেই সব তথ্য একত্রিত করে আপনাদের সদয় অবগতির জন্য পেশ করলাম। সঠিক বা ভুল তার বিচারের দায়িত্ব আপনাদের!


“হে বুদ্ধিমানগণ! কেসাসের মধ্যে তোমাদের জন্যে জীবন রয়েছে, যাতে তোমরা সাবধান হতে পার।“(সূরা আল বাক্বারাহঃআয়াত-১৭৯)


সুত্র বা ফর্মুলা নম্বর একঃ


এই সুত্র বা ফর্মুলা ব্যাবহার করে কিছু খামারি হটাত করে রাতারাতি বিশেষ কিছু কবুতরের শো ডাউন শুরু করে প্রথমে, অবশ্য তার আগে এই কবুতর গুলো তাদের ভোগ দখলে থাকে বা আগে থেকেই সংগ্রহ করে ফেলে, এর পর শুরু হয় সেগুলোর বার বার প্রদর্শন আর নানা ধরনের কথা বার্তা বা মন্তব্য ঝগড়া ঝাটি ইত্যাদি। আর পড়ি শুরু হয় চারিদিকে মানুষের খোজ আরে ভাই আপনার কাছে কি এটা আছে আরাএ ভাই আপনার কাছে কি এটা আছে? কেমন যেন একটা হাহাকার ভাব যেন এটা না হলে বিরাট একটা ক্ষতি বা কিছু একটা হয়ে যাবে। সেই মরিচ আর বেগুন কেনার মত ১০০ কেজি কেন মরিচ ১০০ টাকা বেগুন কেন বেগুন ! কি একটা অসহ্য ব্যাপার। কিন্তু দিনের পর দিন একই কাহিনী ঘটলেও আমাদের কবুতর খামারিদের শিক্ষা হয় না তারা আরও শিক্ষা নিবার জন্য তৈরি হতে থাকে দিনের পর দিন আর তারই সুযোগে সেই সব চক্র ঠোট চাটতে থাকে মনের আনন্দে। আর বলতে থাকে আরে ভোদাই তোরা কবে শিখবি আর কবে মানুষ হবি। কিন্তু আমরা মানুষ হতে পারি না। কারণ আমাদের মধ্যে সচেতনতা নাই আর কবে হবে জানা নাই।


সুত্র বা ফর্মুলা নম্বর দুইঃ


এই সুত্র বা ফর্মুলাই কিছু লোক তার পকেটের টাকা খরচ করে (যদিও এর থেকে তারা বেশী মুনাফার আশা করে বা তাদের বিনিয়গের অংশ হিসাবে তারা এটা করে থাকে) যারা নাকি সেই চক্রেরই অংশ, মানুষ কে ফোন করতে থাকে নানা জায়গায় আপনি কোন অ্যাড দেন আর নাই দেন বা ধরুন আপনি সিরাজি বা লক্ষার অ্যাড দিয়েছেন সেই সব লোক আপনাকে কল দিয়ে জিজ্ঞাস করবে ভাই আপনার কাছে কি এই কবুতর টা হবে। আপনি বললেন না ভাই নাই আচ্ছা কার কাছে হবে? আমাকে একটু জানাবেন আপনার জানা থাকলে আপনি জানালেন আর না থাকলে জানানোর প্রতিস্রুতি দিয়ে আপনিও আবার খোজ শুরু করলেন। এভাবে বাজারের একটা রিরি পড়ে যাই ভাই এটা কোথাই ভাই এটা কোথাই পাব বা সেই সব লোক যারা আপনাকে কোন কবুতর বিক্রি করেছে এখন সে আপনার কাছ থেকে তার থেকেও বেশী দামে কিনার জন্য আপনাকে অফার দিবে। তখন আপনার চিন্তা হবে আরে সে আমার কাছ থেকে এটা নিতে চাচ্ছে কেন মনে হয় এটার বাজার ভাল তখন আপনি এটা না ছেড়ে আরও বেশী করে সংগ্রহ করাতে লেগে যাবেন। আর সেটাই তারা চাচ্ছিল। এই ধরনের কল আমার কাছে বেশী করে আসে, আর সেগুলো সব অপরিচিত নম্বর থেকেই বেশী। আমার ধারনা আমার মত অনেকেরই কাছে এ রকম কল পাওয়া অসম্ভব কিছুই না। কারণ তারা জানে অনেক মানুষ আমার সাথেই কথা বলে আর সবাই জিজ্ঞাস করে কোন কবুতর টা কিনব আর যাতে আমি বলি ওইটা কেনেন। কিন্তু আমি এই চক্রের চাল জানি বলেই বরং উল্টাটা বলি। কিন্তু মানুষ সেটা না বুঝেই সেই চালে পা দেয় আর বিপদে পড়ে।


তিন নম্বর সুত্র বা ফর্মুলাঃ


কিছু খামারি আছে তারা সরাসরি অ্যাড দিবে না। তারা এভাবে শো করে যে আমার নতুন কালেকশন, বা আমার নতুন ব্রীড বা কেমন হয়েছে অথবা এটা কোন ব্রীড বলতে পারেন? ইত্যাদি। আমাদের অনেকের মধ্যে এই বদ্ধমূল ধারনা আছে যে মানুষ ভাল কবুতরের অ্যাড দেই না। আর যেহেতু সেই গুলো অ্যাড দিতেছে না শো করছে আর তাই সেই কবুতর গুলোই মনে হই ভাল। দাম যতই হোক না কেন। আর এগুলো শো করার পর যখন কেউ দাম জিজ্ঞাস করে তাকে তাড়াতাড়ি করে দাম বলে আপনি যদি বিক্রি করার উদ্দেশ্যে এটা না করে থাকেন তাহলে কিভাবে দাম জানাচ্ছেন? কিছু খামারি আছেন যারা গিরিবাজের সাথে ফেন্সির ক্রস দিয়ে একটা জাত বের করে মানুষকে ঠকাচ্ছেন। সেদিন একজন আমাকে ব্লাক সাউথ আফ্রিকান আউল দেখালেন তিনি কিনেছেন উনি মহা খুশি, আমি এই ব্রীড কোনদিন দেখি নাই। অরে ভাল করে পরীক্ষা করে বুঝলাম এটা ঝাক এর সাথে চাইনা আউল এর ক্রস করে এই জাত তুলেছেন। আর তিনি ভাল দামে বিক্রিও করেছেন। বিশিষ্ট ছাহাবী ওয়াসিলা ইবনুল আকওয়া (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্ল¬াহ (ছাঃ) আমাদের কাছে আসতেন এবং বলতেন, হে বণিক দল! তোমরা মিথ্যা কথা ও মিথ্যা কারবার থেকে অবশ্যই দূরে থাকবে’।


আমাদের দেশে এই ধরনের খামারির সংখ্যা নেহাতই কম না কিন্তু তারা সব নাজায়েজ কাজকে জায়েজ করার জন্য নিজে ফতোয়া তৈরি করে রাখে যাতে মানুষ কে বুঝাতে পারে বা মনে মনে একটা লজিক দিয়ে নিজেকে অনর্থক সান্তনা বা বুঝ দেয়। এরা নিজেদের কে ব্রিডিং কারিগর মনে কর। আসলে এরা যে কি সেটা এরা নিজেরাও জানে না। এরাই হল কবুতর জগতের প্রধান শত্রু যদিও এরা কবুতর প্রেমি বলে পরিচয় দেয়।


“তাদের দুস্কর্ম তাদেরকে বিপদে ফেলেছে, এদের মধ্যেও যারা পাপী, তাদেরকেও অতি সত্ত্বর তাদের দুস্কর্ম বিপদে ফেলবে। তারা তা প্রতিহত করতে সক্ষম হবে না।“(সূরা আল যুমারঃআয়াত-৫১)


তারা হয়ত মনে করে তাদের এই চালাকি কেউ বুঝতে পারে না, কারণ তারা একাই চালাক। কিছু লোক ছাড়া সবাই বুঝে কিন্তু কিছু বলতে পারে না। বা বলার কিছুই বা করার কিছু থাকে না মনে মনে ঘৃণা করা ছাড়া। আমাদের দেশে কিছু খামারি তাদের মনের মধ্যে জং পড়ে গেছে। তারা সেই ঘৃণা তুকুও করে না , তারা সাড়া জীবন মানুষের উপকারের কথা দূরে থাক, ভাল কিছু করার কথা চিন্তাও করে না। তারা ভাল কিছু দেখলেই নানা নেতিবাচক কথা বলে মানুষদের নিরুৎসাহিত করে। ফলে আমাদের দেশে আজ পর্যন্ত ভাল কিছু এখনও পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি আর তাতে লাভ তাদেরই। এরা বাইরে কবুতর পাঠাই কি আসে যাই এখানকার খামারিরা মরল না বাচল। কিন্তু তারা জানে না। যে কেউ যদি কারো জন্য গর্ত খুঁড়ে তাহলে সেটাতে তারও পরার সম্ভাবনা বেশী থাকে। এরা কয়টা টাকার জন্য নিজের ঈমান ও জামীর বিক্রি করে দেয়। “তোমরা আল্লাহর অঙ্গীকারের বিনিময়ে সামান্য মূল্য গ্রহণ করো না। নিশ্চয় আল্লাহর কাছে যা আছে, তা উত্তম তোমাদের জন্যে, যদি তোমরা জ্ঞানী হও।“ (সূরা নাহল:আয়াত-৯৫)


এই চক্র শকুনের মত কাল থাবা নিয়ে বসে আছে একটু সুযোগের অপেক্ষায়, আমাদের যেকোনো দুর্বল মুহূর্তে আরও বড় সর্বনাশ করতেও এরা প্রস্তুত, তাই আমাদের আগে থেকেই সতর্ক হতে হবে। আর এটাই সেই উপযুক্ত সময়। আল্লাহ্‌ বলেন, “আল্লাহ কোন জাতির অবস্থা পরিবর্তন করেন না, যে পর্যন্ত না তারা তাদের নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন করে। আল্লাহ যখন কোন জাতির উপর বিপদ চান, তখন তা রদ হওয়ার নয় এবং তিনি ব্যতীত তাদের কোন সাহায্যকারী নেই।“(সূরা রা’দঃআয়াত-১১) কিন্তু দুঃখ জনক হলেও সত্য যে আমারা এখনও আমাদের ভাগ্য পরিবর্তন করতে যা করা দরকার তার কিছুই করি না নিয়তির হাতে নিজেকে সঁপে দিয়ে বসে থাকে অনায়াসে।


আমাদের দেশের এই সব চক্রকে কোনদিন কোন শিক্ষা দিয়া যাই না বা যাবে না যতক্ষণ না আল্লাহ্‌ এর তরফ থেকে কোন ফায়সালা এসে যায়। এরা দরিদ্রতা ভয় করে আর তাই নানা অপকর্মের মাধ্যমে টাকা রোজগারে পিছপা হয়না। এরা হালাল ও হারামের পার্থক্য করে না। আর এর যে খারাপ প্রতিক্রিয়া হতে পারে সেটা তারা উপলব্ধি করতে পারে না। আজ তারা ১ লক্ষ্য টাকা আয় করলে নানা ভাবে তাদের এর থেকেও বেশী খরচ হয়ে যাই নানা চিকিৎসা ও বেফজুল কাজে, তারা শান্তিতে ঘুমাতে পারে, শান্তিতে খেতে পারেনা। তারপরও তারা বুঝে না তাদের উপলব্ধি হয়না। তাহলে এই টাকা অর্জন করে কি লাভ? এজন্য বলা হয় easy money, easy go !


“শয়তান তোমাদেরকে অভাব অনটনের ভীতি প্রদর্শন করে এবং অশ্লীলতার আদেশ দেয়। পক্ষান্তরে আল্লাহ তোমাদেরকে নিজের পক্ষ থেকে ক্ষমা ও বেশী অনুগ্রহের ওয়াদা করেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সুবিজ্ঞ।(সূরা আল বাক্বারাহঃআয়াত-২৬৮)


আমাদের হাই স্কুলের ক্লাসে একটা দুষ্ট ছেলে ছিল নাম ফয়সাল। সারাদিন নানা ধরনের দুষ্টামু আর বাদরামু তে ব্যাস্ত থাকত। আমরা সবাই তাকে এক বিচিত্র কারনে পছন্দ করতাম। তারও কারণ ছিল আর সেটা হল আমাদের স্কুল অউয়ার সাড়ে পাচ ঘণ্টা আর এর মধ্যে কেউ ক্লাস থেকে বের হতে পারবে না। কোন কথা বলতে পারবে না। চুপ করে বসে থাকতে হবে বেঞ্চিতে। এটাও কি সম্ভব। আমাদের ক্লাস ক্যাপ্তেন ছিল হার বজ্জাত সে ছিল সারের একনম্বর চামচা। ফয়সাল ক্যাপ্টেনের চোখ রাঙ্গান কে পাত্তা দিত না আর যেহেতু ফয়সাল একটু ডানপিটে বলে সে তাকে খ্যাপাত না। যাই হোক, ক্লাসে তার বদমাসির জন্য অনেক মার খেত, কিন্তু তাতে তার কোন কিছু এসে যেত না। তারটা পছন্দের গান ছিল বাংলা সিনেমার,’ তুমি যাইবা কেমনে, বোল যাইবা কোনখানে…? ধরা পইরা গেছ তুমি রঙ্গিলা জালে।হাইরে রঙ্গিলা জালে।‘ এই গানটা শুনতে শুনতে প্রথম দিকে একটু বিরক্ত লাগলেও পরে কেমন যেন এটার সাথে একটা পরিচিতি হয়ে গেছিলাম। আমাদের ইংরেজি শিক্ষক যিনি অনেক বছর ইংল্যান্ডে ছিলেন আর মেম বিয়ে করেছিলেন, তিনিও ক্লাসে একবার পড়াতে এসে খুবই বিরক্ত হয়ে বললেন। তোমরা যান আমার বাসার কাজের বুয়া পর্যন্ত ইংরেজিতে কথা বলে অথচ তোমরা তা পার না… what a shame…! What a pity…!! পরেরদিন আমরা সবাই ক্লাসে আসলাম এসে দেখলাম ফয়সাল কেমন যেন একটু পরিবর্তন সবার সাথে ইংরেজিতে কথা বলছে। ভুল হোক আর সুদ্ধ হোক কিন্তু বলছে। গতকালের সারের কথা তার ইগো তে লেগেছিল তাই সে প্রতিজ্ঞা করেছিল কাজের মেয়ে যদি ইংলিসে কথা বলতে পারে তাহলে আমি কেন পারব না। সবই ঠিক আছে সমস্যা হল তার গান গাওয়া। আর তারই সেই পরিচিত গানটা আজ কেন যেন অপরিচিত মনে হল। ‘how you will go, and where you will go..? you are caught in the color net….!’ কিন্তু গান গাওয়া নিয়ে কাজ আর সে তো কাওকে শুনানোর জন্য গাইছে না সে নিজের জন্য গাইছে। তাই সে কাউকে পরোয়া না করে, গেয়েই চলল। আজ অনেক বছর তার সাথে দেখা হইনি কেমন আছে জানিও না। কিন্তু তার কথা মনে আছে, মনে থাকবে। আমাদের দেশে এই সব বাটপার, জোচ্চোর লোক ঠকানর লোকদের জন্য মাঝে মাঝে মনে হয়, সেই গানের মত যে তারা কালার নেট বা রঙ্গিলা জালে হয়ত ধরা পড়বে না কোন দিন, কিন্তু সাদাকাল জালে একদিন ঠিকই ধরা পড়বে…! পড়তেই হবে…!! কোন ভুল নাই তাতে…!!!


আল্লাহ্‌ বলেন,“আল্লাহ তোমাকে যে অর্থ সম্পদ দিয়েছেন তার দ্বারা আখিরাতের আবাস (জান্নাত) অনুসন্ধান করো এবং পার্থিব জীবনে তোমার বৈধ (ভোগের) অংশও ভুলে থেকোনা। (মানুষের) কল্যাণ করো, যেমন আল্লাহ তোমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। আর (অর্থ সম্পদ দ্বারা) দেশে বিপর্যয় সৃষ্টি করোনা। বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের আল্লাহ পছন্দ করেন না। “(সূরা ২৮ আল কাসাস : আয়াত ৭৭)


মূল লেখক : সোহেল রাবি ভাই



শেয়ার বাজার কবুতরের সূত্র ও ফর্মুলা (কেস স্টাডি) BD Online Pigeon Market

শেয়ার বাজার কবুতরের সূত্র ও ফর্মুলা (কেস স্টাডি)

Pigeon Discussion, Pigeon Diseases & treatment

বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

কবুতরের গুরুত্বপূর্ণ ঔষধ (Pigeon Medicine) দাম ও কার্যকারিতা ।

Pigeon Medicine


1) Coccicure: Size 150 grm cntr Price:Tk.3000/-


Quantity: 2 cntr


Indications: Treatment of coccidiosis in racing pigeons caused by Eimeria spp.


Dosage: 1 spoonful per 2 litres drinking water for 6 days.


When 20 pigeons drink more than 1litre a day, reduce or raise the dose proportionally. Try to administer enough medicines to provide the quantity the pigeons drink in 1 day. Refresh the water after 1 day.


Note : Coccidiosis must only be treated in case of moderate or severe infections because coccidiosis is no big problem by racing pigeons. By light infections is extra hygiene enough. After a cure always 2 days multivitamins.


2) Streptococ-coli-cure: Size 150 grm cntr Price:Tk.3000/-


Quantity: 4 cntr


Indications:Diseases caused by the bacteria’s Streptococcus bovis, (young bird sickness) and E-coli. This cure is active against both problems in racing pigeons.


Treatment:Administer when signs of e-coli (mostly youngsters with no appetite, vomiting, weight lose, slimy droppings, mortality) or streptococcus (more older pigeons, muscle infections, paralysing of legs and wings, total illness).


Dosage:1 spoonful per 2 litre drinking water for 10 days. When 20 pigeons drink more or less than 1 litre a day, reduce or raise the dose proportionally. When adminster medicines in the drinking water, provide the quantity they drink in 1 day. Refresh the water after 1 day.


Prevention for e-coli:Young pigeons after every stress-situation (after vaccination, after weaning, after first time basketing, after first time training, after the first flights, after ending darkness) administer for 2 days.


Note: After each cure with streptococ-coli cure give multivitamins for 2 days


3) Trichomonas Cure: Size 150 grm cntr Price:Tk.2800/-


Quantity: 2 cntr


Indications: Trichomoniasis(Cankar) and Hexamitiasis in racing pigeons.


Treatment: When positive throat-swab (Trichomoniasis) or positive cloaca-swab (Hexamitiasis) When signs of Trichomoniasis ( yellow moisture on the mucous membrane in the mouth) in the throat.


Dosage:1 measure spoon in 4 litre water.


Prevention: When fanciers don’t use the Disinfection Combination then give ) Trichomonas Cure 1 day after the flight. And for 6 days when the pigeons sit on eggs.




4) Paratyphoid cure
: Size:150 grm cntr Price:Tk.3200/-cntr


Quantity:7 pcs


Indications:Salmonellosis (Paratyphoid) in racing pigeons.


Treatment:When signs of salmonella, dark green slimy and wet droppings, pigeons have lame legs or fly crooked, weight lose, dead youngsters in the nest, infertile eggs. If suspected lofts administer after the moult a cure for 14 days. The Paratyphoid Cure is also active against many other bacteriological gastro-intestinal infections. If serious infections the advice is: 14 days paratyphoid-cure, followed by 1 week paratyphoid cure. After treatment give multivitamins for 1 week. After treatment of severe infections, every six weeks bacteriological test of the droppings are needed for the duration of six months


Dosage: 1 spoonful per 2 litre drinking water during 14 days. When 20 pigeons drink more or less than 1 litre a day, reduce or raise the dose proportionally. When administer medicines in the drinking water provide the quantity they drink in 1 day. Refresh the water after 1 day.


5) Wormacure: Size: 100 grm cntr Price: 2200.- cntr Quantity:8 cntr


Indications: Worm infections from the roundworms ascaridia or cappillaria (hairworms) in racing pigeons.


Treatment:When worms are found in the droppings or eggs from the worms are found in the droppings, a cure must be given. Don’t treat with youngsters in the nest. Not to be used during the moult. After the cure administer 2 days multivitamins.


Dosage:1 spoon in 2 litre drinking water.


6) Total Disinfection Combination: Size: 150 grm cntr Price:Tk.5000/-


Quantity: 4 cntr


Indications: A magistral prepared water soluble powder with a disinfection cure for coccidiosis, trichomoniasis, paratyphoid and ornithosis for racing pigeons


Treatment:For 1 week before the beginning of the racing-season and during the races 1 day after each race. See further “The racing system”


Dosage: 1 spoonful per 2 litres drinking water. When 20 pigeons drink more than 1 litre a day, reduce or raise the dose proportionally. When administer medicines in the drinking water, provide the quantity they drink in 1 day. Refresh the water after 1 day.


7) OrniSpecial: Size: 5grm per sachets Price:Tk.600/-


Quantity:26 sachets


• Information:Combi-preparation with spectacular effects in case of Ornithosis Complex


symptoms such as:


• decreased desire to fly


• sudden lack of condition after ± 5 races


• dirty noses


• difficult breathing (rattles)


• swollen eyelids


• sneezing and scratching of the head


• darkening of the cere


• dry plumage


• “swollen” feathers around the ears


• Use: 1 – 4 days consecutive 1 measure spoon per 1 liter of water.


Preventive and for extra condition:


1 day before basketing 1 measure spoon per 1 liter of water.


Can also be mixed with W.N. for faster result:


1 sachet W.N. + 1 sachet OrniSpecial (or 2 measure spoons) per 2 liters of water.


8) B.S: Size: 5grm per sachets Price:400/- sachets


Quantity: 50 sachets/Box x 5 box


Indication: Preventive and curing in case of canker (tricho), coccidiosis, hexamitiasis and some bacterial infections of crop and intestinal. Stimulates down feather fall, purifies and improves digestion.


During breeding season on eggs: 6 days consecutive 1 sachet for 2 liters of water or 1 sachet mixed with 1 kilogram of grains .


After homing: 1,5 day 1 sachet per 2 liters of water or mixed with 1 kilogram of grains(sachets of 5 gr). Can also be used in combination with Belgasol.


9) Belgawormac: Size:100 tablets pkt Price:3000/-(per pc tk.30)


Quantity: 2 pkts


• Information: The new miracle tabl. (dewormer) against roundworms (Ascaridia, Capillaria) and tapeworms in pigeons. Easy to administer, highly effective and without any negative side effects.


• Use: 1 tablet per pigeon.


10) Biolektron: Size:500 ML Price:3000/- Quantity: 2 pcs


Information: Belgasol is a unique combination of electrolytes, vitamins, trace elements and amino acids on the basis of energy sources. Belgasol causes excessive fluid loss (dehydration) for a very rapid moisture absorption in the body. If suddenly manure, in the transition from porridge to the hard feed, accompanied by excessive alcohol consumption is excessive grit and mineral intake and weight loss the best solution Belgasol in double dose.


Application: During the breeding 5 consecutive days:


1-2 tablespoons to 1 liter of water.


Promote fitness and against thirst: The basketing: 1 tablespoon to 1 liter of water.


Faster recovery of the flight: 1 tablespoon to 1 liter of water immediately after returning home, possibly in combination with BS (Better digestion) 1 sachet per 2 liters of water or 1 sachet per 1 kg. to feed.


11) Superboli: Size :100 pills Price:Tk.1800/- Quantity: 1 cntr


Information :Pills on the basis of the vitamin B complex


Application : Enter up to1- 2 pills before basketing, also after returning home from a heavy flight


12)Ropa-B 10%: Size:250 ML Price:Tk.2000/- Quantity: 2 bottle


Keep your pigeons bacterial and fungal-free in a natural way.


ROPA-B Feeding Oil 10% (the only original) is a supplementary feed for pigeons.


This product is made from oregano oil extracted from the oregano plant. ROPA-B Feeding Oil 10% is an organic product that has no side effects. ROPA-B was tested by TNO and its effectiveness has been proven over and over again.


Effective against:


– Coccidiosis


– E.coli


– Trichmoniasis (Canker)


– Salmonella


– Worms


– Young Pigeon Sickness


Preventive: ROPA-B Feeding Oil 2% can be used safely throughout the year at 5mls per kilogram feed. We recommend using it 3 times per week for prevention and daily when birds experience stressful situations i.e. transport prior to and recovery post racing.


Recovery from bacterial or fungal challenge: 10mls per kilogram feed for 7 days.


13) ENROFLOXAROM 10%: Size:100 ML Price:1500/Cntr


Quantity:18 pcs


Broad spectrum antimicrobial


INDICATIONS


For the treatment of mycoplasmosis, salmonellosis, pasteurelosis, infectious coryza produced by bacteria, mycoplasma and chlamidia in poultry (hens, turkeys, racing and ornamental pigeons).


METHOD OF ADMINISTRATION


The product is administered orally, via the drinking water, as follows:


• In pigeons: 1 ml/litre of drinking water/day, for 5-6 days.


14) Alazol: Size:250 ML Price:Tk.3000/- Quantity: 1 CNTR


Treatment


Given the almost constant presence of trichomoniasis in a herd, it is prudent to conduct at least two preventive treatments in the year: one in the spring, the second before or after the big moult.


The treatment during the first half of the breeding season, is an excellent method since breeding will be free of trichomoniasis during feeding their young, excessively delicate period.


Preventive treatment can be conducted with TRICHOLYSE oral dimetridazole based powder, to be administered in drinking water at a rate of 4 teaspoons per liter of water for 5 days.


In times of extreme heat or feeding, it should compensate for the increased watering by reducing the dose accordingly, so that the drug dose ingested remains roughly constant: this is the reason that makes the most delicate Use of the ALAZOL more concentrated dimetridazole the TRICHOLYSE because poorly controlled, a drinking water consumption too dosed drug can cause nervous symptoms, fortunately reversible and leaving no sequelae specialty. Nevertheless, it is this product that I use alazol. Curative treatment undertaken when the disease is discovered, requires a treatment period of 7 days. Its exceptional safety (no side effects have ever been found and doses corresponding to 32 times the therapeutic dose did not result in the death of any canary …). I have not seen either of risk of infertility.


Preventive use


-when weaning, possibly before the first release.


-before mating, during the first half of the brooding,


If trichomoniasis declared, the collective treatment is needed!


Dosage Alasol:


– In 5 ml for preventive 2.5 liter for 5 days, or as 2 ml per liter.


– Curative same dosage but for 7 days of treatment


And for those like me who prefer to give in each case when I find an inflammation of the eye, beak I give 1 drop in a fountain of competition.


15) ROPA-B (Booster): Probiotic Size:300 grm cntr Price:Tk.3500/cntr


Quantity: 2 cntr


Ropa-B BOOSTER restores the intestinal flora after antibiotic use, vaccinations and / or heavy exertion. As the product is completely natural, there is no resistance or overdose Ropa-B BOOSTER provides encouraging a healthy digestive system and immune system in pigeons.


Maintenance dose: 4 grams per pound of feed, 3-4 days a week. Can be given during all seasons.


During vaccinations:. 8 grams per kilo of food, five days before and 5 days after.


After use of antibiotics: 8 grams per kilo of food for five days.


16 ) Endo & Ecto Parasites Control: Size:10 ML Quantity:5 pcs Tk.1600/- bottle


Benefits


Highly effective parasiticide

Great activity against both- Endo & Ecto parasites even at very small doses

Improves productivity

Improves overall health

Improves liver function

Improves immune function


Indications


Effective against all stages of most of the major Endo & Ecto parasites such as Roundworms. Ticks, Mites. Lice & Heart worm


ENDO-ECTO is a external and internal parasite control drop. Put one drop medicine on the neck skin of a pigeon and wait for until dry.


17) Belgaroni 10%: Size:Container of 150gr Price:Tk.3000/-


Quantity: 2 pcs


Indications: Preventive and treatment curative in case of trichomoniasis (canker)


Instructions and Dose:


– Preventive: 2 gr per liter of drinking water or with 1/2 kg of feed, for 2 days consecutive.


– Treatment: 2 gr per liter of drinking water or with 1/2 kg of feed, for 6 days consecutive.


– In severe cases, repeat after 14 days.


18) Chevi-col: 100 capsules per pkt Price:Tk.3500/Box


Indications:Treatment and prevention of Trichomoniasis and Hexamitiasis


Parent birds (very important!):After laying eggs but before hatching


Preventive treatment for all other pigeons 1 capsule 1 pigeon Twice a year, for 3 days each


19) OrniSpecial: Size: 80 grm per sachets Price:Tk.4000/-


Quantity:3 can


• Information:Combi-preparation with spectacular effects in case of Ornithosis Complex


symptoms such as:


• decreased desire to fly


• sudden lack of condition after ± 5 races


• dirty noses


• difficult breathing (rattles)


• swollen eyelids


• sneezing and scratching of the head


• darkening of the cere


• dry plumage


• “swollen” feathers around the ears


• Use: 1 – 4 days consecutive 1 measure spoon per 1 liter of water.


Preventive and for extra condition:


1 day before basketing 1 measure spoon per 1 liter of water.


Can also be mixed with W.N. for faster result:


1 sachet W.N. + 1 sachet OrniSpecial (or 2 measure spoons) per 2 liters of water.


20) Nirfuramycin: Size: 25 grm per sachets Price:Tk.650/-


Quantity:25 sachets


INDICATIONS: The best treatment against Salmonellosis (Paratyphus). With 1 sachet of Nifuramycin you can treat 250 pigeons


• Bacterial infections


• Coli infections


• Salmonellosis (Paratyphus)


• Bacterial infections of the respiratory organs


• General stress situations


DOSAGE


• 5 grams of Nifuramycin (1 measuring cup) per 2 litres of drinking water (20-25 pigeons) or 1 sachet in 12,5 litres of drinking water (250 pigeons) over period of 3-4 days.


21) Pigeons baby feeder: Quantity: 7 pcs Price:Tk.1000/pcs


মূল লেখক : সোহেল রাবি ভাই



কবুতরের গুরুত্বপূর্ণ ঔষধ (Pigeon Medicine) দাম ও কার্যকারিতা । BD Online Pigeon Market

কবুতরের গুরুত্বপূর্ণ ঔষধ (Pigeon Medicine) দাম ও কার্যকারিতা ।

Pigeon Discussion, Pigeon Diseases & treatment

ফ্যান্সি ও রেসার কবুতরের জন্য কিছু উন্নত মানের ভিটামিন, মিনারেলস ও কার্যকারী কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঔষধ।

Pigeon Medicine ফ্যান্সি ও রেসার কবুতরের জন্য কিছু উন্নত মানের ভিটামিন, মিনারেলস ও কার্যকারী কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঔষধ। আপনাদের আপনাদের কে সরবরাহের জন্য প্রস্তুত। আগ্রহী কবুতর প্রেমি/খামারি ভাইরা বিস্তারিত তথের জন্য যোগাযোগ করুন।



ফ্যান্সি ও রেসার কবুতরের জন্য কিছু উন্নত মানের ভিটামিন, মিনারেলস ও কার্যকারী কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঔষধ। BD Online Pigeon Market

ফ্যান্সি ও রেসার কবুতরের জন্য কিছু উন্নত মানের ভিটামিন, মিনারেলস ও কার্যকারী কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঔষধ।

1 pair running gray & blue bar siraji EE 2013 ringed for sale

1 pair running gray & blue bar siraji EE 2013 ringed



1 pair running gray & blue bar siraji EE 2013 ringed for sale BD Online Pigeon Market

1 pair running gray & blue bar siraji EE 2013 ringed for sale

মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

আমার কবুতর ভাবনা।

আমার কবুতর ভাবনা।


“যে ভয় করে, সে উপদেশ গ্রহণ করবে,আর যে, হতভাগা, সে তা উপেক্ষা করবে, সে মহা-অগ্নিতে প্রবেশ করবে।“(সূরা আল আ’লা-১০,১১,১২)


আজাদ ভাই একজন নতুন কবুতরপ্রেমি। তার খুবই সখ যে তিনি একটা ছোট কবুতরের আদর্শ খামার করবেন। আর সেই লক্ষে তিনি গ্রাম থেকে কাপ্তান বাজারে এসেছেন কিছু কবুতর কিনবেন। সেখান থেকে তিনি লক্ষা, সিরাজি নিয়ে খুশি মনে বাসাই ফিরছেন, বাসে তার সাথে একজন বড় কবুতর খামারির দেখা, তিনি নানা কথা প্রসঙ্গে জানালেন যে তার কাছেও এর থেকে ভাল কবুতর আছে যদি আপনি নিতে আগ্রহী থাকেন তাহলে আপনার জন্য সস্তা দামে দিব। আজাদ ভাই সরল মনে তার কাছ থেকে ২ জোড়া পূর্ণবয়স্ক সারটিন প্রতি জোড়া ২০ হাজার টাকা করে, একজোড়া পূর্ণবয়স্ক আইস মুখি দাম ৬৫ হাজার টাকা দিয়ে নিলেন। এই শর্তে যে ডিম বাচ্চা নিশ্চিত। যদিও মুখি ২ জোড়া গত ১ বছরেও ডিম দেইনি। বা দিবার তেমন কোন লক্ষণ ও নাই, তবে তাতে তার মন খারাপ দেখলাম না, বরং সে খুশি কারণ তার আইস মুখি ৩ বার ডিম দিয়েছে বাচ্চাও ফুটেছে আর সেগুলো বড় হয়েছে। তিনি হয়ত ভাল মানুষ তাই তিনি খুশি হয়ে গেলেন। কিন্তু আমি খুশি হতে পারলাম না, আমার ধারনা এমন কোন নতুন কবুতর খামারি নাই যার এই ধরনের অভিজ্ঞতা হয় নাই। বিক্রেতার বিচারে হয়ত তিনি নিজে সাফাই গাইতে পারেন ভাই আমি তো কাউকে জোরজবরদস্তি করি নাই, তিনি তো স্বেচ্ছাতেই কিনেছেন, এখানে আমার দোষ কোথায় ইত্যাদি ইত্যাদি।



হাঁ দোষ টা যে কোথায় সেটাই আমাদের আগে জানা খুবই দরকার।


হাদিসে আছে,”ব্যবসায়ী যদি সীমাতিরিক্ত মূল্য গ্রহন করে এ সুযোগে যে ক্রেতা পণ্যের প্রকৃত মূল্য জানে না, তাহলে এই অতিরিক্ত পরিমানের মূল্য সুদ পর্যায়ে গণ্য হবে।” আর সুদের শাস্তি সম্পর্কে কমবেশী সবাই জানেন, আল্লাহ্‌ বলেন,” আল্লাহ্‌ ব্যাবসাকে হালাল ও সুদকে হারাম করেছেন।“( সূরা বাকারাঃআয়াত-২৭৫)।


ফেরেশতা কর্তৃক গোসল করার সভাগ্যবান সাহাবী হানযালা তনয় আব্দুল্লাহ(রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল(সাঃ) ইরশাদ করেন,” জেনে বুঝে এক দিরহাম পরিমান সুদ খাওয়া ছত্রিশবার জেনা করার চেয়েও বড় অপরাধ।”


অপর এক হাদিসে ইবনে আব্বাস(রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী করিম(সাঃ) ইরশাদ করেন,”যখন এলাকায় সুদ ও ব্যাভিচার প্রকাশ পাবে তখন বুঝতে হবে তারা নিজেদের উপর আল্লাহ্র শাস্তি হালাল করে নিয়েছে।“ এ রকম আরও অনেক হাদিস ও আয়াত রয়েছে আমাদের কে সতর্ক করার জন্য কিন্তু আমরা কয়জন সতর্ক এই ধরনের জঘন্য অপরাধের থেকে, কিন্তু তাহলে কি রাতারাতি সবাই ভাল হয়ে যাবে। না যারা ভাল হবার তারাই হবে।


আল্লাহ বলেন, “যে কেউ সৎপথে চলে, তারা নিজের মঙ্গলের জন্যেই সৎ পথে চলে। আর যে পথভ্রষ্ট হয়, তারা নিজের অমঙ্গলের জন্যেই পথ ভ্রষ্ট হয়। কেউ অপরের বোঝা বহন করবে না। কোন রাসূল না পাঠানো পর্যন্ত আমি কাউকেই শাস্তি দান করি না।“(সূরা বনী ইসরাঈলঃ আয়াত-১৫)


প্রবাদ আছে, “পায়রা পুঁথি তাস, করে সর্বনাশ!” আসলেই কথা সত্য যদি এখনকার কবুতরের ব্যাপারটা নিয়ে চিন্তা করি। আমরা যে জিনিসটার পিছনে একবার পড়ি সেটার বারটা বাজা না পর্যন্ত বা তার শেষ অবস্থা না দেখা পর্যন্ত দম ফেলি না। যখন কাঁচা মরিচের দাম বেশী তখন আমরা বেশী করে কাঁচা মরিচ কিনি, যখন বেগুণের দাম বেশী তখন বেগুন বেশী করে কিনি, কিন্তু এগুলো যদি আমরা না কিনি তাহলে কি হবে? আমরা মারা যাব? কবুতরের খামারি দের সেই একই রোগ, লক্ষা কিনতে কিনতে মানুষ লক্ষার বারটা বাজিয়েছে এখন, সার্তিন, জার্মান শিল্ড, মুখী এখন সেটা হেলমেট এ ঠেকেছে। আর কি আশ্চর্য আমরা সবাই একই ভাবে ছুটছি। ভাল জিনিষের থেকে খারাপ জিনিনের প্রতি আমাদের আকর্ষণ সহজাত একটা ভাল ব্রীডের কবুতর আমরা সহজে কিনতে চাইনা, কিন্তু উল্টা পাল্টা ব্রীডের কবুতর বিক্রি করতে যদি একটু চাপাবাজি করেন দেখেবেন লাফিয়ে লাফিয়ে আপনার কবুতর কিনছে। যেমনঃ সবুজ গলা এর সাথে লক্ষা এর ক্রস করে = লাজুক আবার নাম পরিবর্তন করে সেজুক লক্ষা, মন্দানা এর সাথে কিং এর ক্রস করে = মন্টানা, সিরাজি+লক্ষা, আউল+ঝাক এর ক্রস করে আফ্রিকান আউল নামে চালাচ্ছেন কিছু অসাধু কবুতর খামারি। আর এগুলো তে আকর্ষিত হয়ে প্রতারিত হচ্ছেন অনেক খামারিরা।


কিছুদিন আগে দেখলাম একটা কার্টুনে ২ জনের মাথা অনেক মোটা আর এর ভারে তারা ঠিকমত কাজ করতে পারছে না তাই তারা মাথার মগজ টা কে পাশে রেখে কাজ করা শুরু করল, আমাদের এমনিতেই অনেক বুদ্ধি, কিন্তু কবুতর সেক্টরে বা কবুতরের ব্যাপার আসলেই অনেক খামারি সেই কার্টুন এর মত মগজ টা পাশে রেখে দেয়। আর এজন্য আমাদের বিচার বুদ্ধি থাকে না সেই সময় বা আমরা একটু বেশী চালাকি করি হরিনের মত (বলে রাখা ভাল হরিন এম্নিতেই খুব চালাক কিন্তু ঝোপে কোন শব্দ হলে বা নরাচরা দেখলেই সেটাকে বুঝের জন্য আরও কাছে যাই আর এই সুযোগের সে শিকারে পরিনত হয়।)


ইসলামে হালাল ভাবে জীবিকা অর্জনের তাগিত দিয়া হয়েছে, নবী করিম(সাঃ) ঘোষণা করেছেন,” যে ব্যাক্তি বৈধভাবে জীবিকা অর্জন করে, কিয়ামতের দিন তার মুখমণ্ডল পূর্ণিমার চাঁদের মত উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।“ আরেক হাদিসে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,‘ক্বিয়ামতের দিন ব্যবসায়ীরা মহা অপরাধী হিসাবে উত্থিত হবে। তবে যারা আল্লাহকে ভয় করবে, সততা ও ন্যায় নিষ্ঠার সাথে ব্যবসা করবে তারা ব্যতীত’।“ক্বিয়ামতের ময়দানে কঠিন শাস্তি হ’তে মুক্তি পেতে হ’লে আল্ল¬াহভীতি সহকারে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে হবে। কাউকে সামান্যতম ঠকানোর মানসিকতা অন্তরে পোষণ করা যাবে না।


কথা গুলো শুনে অনেকেই হয়ত মনে ভয় ধরে যাবে তাহলে কি? কবুতর বিক্রি করা ছেড়ে দিব? তা কেন? আমাদের দেশে যেমন বুনো ওল তেমনি বাঘা তেতুল। ক্রেতা ও বিক্রেতা সমান। একজন বিক্রেতা যেমন সুযোগ পেলে ক্রেতা কে শোষণ করে তেমনি ক্রেতা বিক্রেতার অসহায় এর সুযোগ নিয়ে তাকে প্রাপ্য মূল্য দিয়া থেকে বঞ্চিত করে। এভাবে আমাদের এই কবুতর সেক্টরে এক অসুভ প্রতিযোগিতা চলে ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে। যে যত চাপা বাজি বা মিথ্যা কথা বলতে পারবে সে, সে তো বড় ক্রেতা আর যে যত বেশী চাপা মারতে বা ঠকবাজি করতে পারবে সে তত বড় বিক্রেতা। এভাবেই পাটা পুঁতাই ঘষা ঘষি টে মরিচের দম শেষ হবার মত অবস্থা হয় সৎ বিক্রেতা ও নিরীহ নতুন ক্রেতার। আমাদের দেশে সবাই প্রথমে শখের বসেই কবুতর পালন শুরু করে। আর কবুতর অধিকাংশ মানুষেরই ভালবাসার প্রতিক বা শান্তির প্রতিক হিসাবে কবুতর পালন শুরু করে। পরবর্তীতে অনেক ত্যাগ তিথিক্ষার পরে যখন একজন খামারি কবুতরের ব্রিডিং শুরু করে। তার প্রথম কবুতরের ডিম বা বাচ্চা পাবার আনন্দ হয় সে ছাড়া পৃথিবীর আর কেউ জানে না। পরে যখন বাচ্চা বড় হয় তার চোখে নতুন স্বপ্ন বাসা বাধে, খামারি হবার, এভাবে সে আসতে আসতে একজন বড় খামারি হয়ে উঠে। আর এই খামারি হতে গিয়ে সে প্রথমেই একজন ভাল ক্রেতা হয়ে যান বা যেতে হয়। অনেক মূল্য পরিশোধের পর তিনি যখন একজন পর্যায়ে আসেন, তখন শুরু হয় তিনি যেমন ব্যাবহার পেয়ে আসেছেন বা ঠকেছেন তেমন ভাবেই একজন বিক্রেতা কে কিভাবে ঠকান যাই অন্য ভাবে যদি বলি তাহলে কিভাবে কম মূল্য দিয়া যাই সেই চিন্তায় ব্যাস্ত থাকেন, আর এক্ষেত্রে যদি কোন অসহায় বিক্রেতা হন তাহলে তো কথাই নাই! আমাদের ছোটবেলার শিক্ষা যে কোন জিনিষের দাম অর্ধেক বলতে হবে, আর একজন বিক্রেতা যদি যদি একটাকাও দাম বলে আমাদের অভ্যাস বিনে পয়সাই কিভাবে নিয়া যাই সেটারি ফন্দিফিকির করা, আর এ কারনেই হয়ত আমাদের মধ্যে একটা অশুভ প্রতিযোগিতা চলতে থাকে। হাদিসে আছে,” যদি তোমাদের সমর্থ থাকে তাহলে বিক্রেতা কে তার পাওনা মুজুরি প্রদান করো, পারলে একটু বেশী দিও, তাহলে সে প্রতারনা থেকে দূরে থাকবে।“(হাদিস টি হুবুহু মনে নাই)


একবার আমি একটা শো কিং এর মাদী সংগ্রহ করলাম, তো আনার সময় এক লোক আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন যে ভাই দাম কত পড়ল, আমি বললাম, ২৫ হাজার টাকা, তিনি একটু অবজ্ঞার হাসি দিয়ে বললেন ভাই ভীষণ ভাবে ঠোকে গেছেন। আমি একটু অবাক হয়ে জিজ্ঞাস করলাম কেমন? তিনি একজন অভিজ্ঞ ভাব নিয়ে বললেন আরে ভাই কাপ্তান বাজারে ৩-৪ হাজারে কিং পাওয়া যাই তা আবার জোড়া। আমার মাথার চুল খাড়া হয়ে গেল রাগে আর দুঃখে। পাশে বরফ দিয়া সরবত বিক্রি করছিল, মনে হল একজগ ঠাণ্ডা সরবত আমার মাথাই ডালি বা সেই লোকের মাথাতে ডেলে দেই। যাই হোক নিজেকে অনেক কষ্টে কন্ট্রোল অরে একটু বোকার মত হাসি দিবার চেষ্টা করলাম। তিনি আবার যোগ করলেন প্রথম প্রথম এ রকম একটু হবে, পরে দেখবেন সব শিখে ফেলবেন। আমি মনে মনে বললাম আপনি যে এরই মধ্যে কিছুই শিখে ফেলেছেন সেটা আমি জেনে ফেলেছি। আমাদের দেশের অধিকাংশ খামারির এই একই সমস্যা, আমরা জানি না ব্র্যান্ডের যিনি আর লোকাল জিনিষের পার্থক্য কি? যেমন যদি উদাহারন স্বরূপ একটা রাড ঘড়ি যদি একটা ব্র্যান্ডের দোকান থেকে কিনেন তাহলে কত দাম পড়বে। সাধারনত ৫ থেকে ৬ লক্ষ্য টাকা কিন্তু যদি আপনি গুলিস্তানে যান আপনি সেটা ২০০-২৫০ টাকার মধ্যে কিনতে পারবেন। তাহলে কেউ যদি আপনার ব্র্যান্ডের রাড ঘড়ি দেখে বলে ভাই আপনি তো ঠোকে গেছেন তখন আপনার বলার কিছুই থাকেবে না। আপনি হয়ত তখন মনে মনে ভাববেন যে তার এই ঘড়ি সম্পর্কে কোন ধারনা নাই বলেই সে এই ধরনের কথা বলেছে। আমাদের দেশে অধিকাংশ ব্রীডের মান অনেক নিন্ম পর্যায়ে চলে গেছে আর তার কারন কিছু অসাধু চালাক খামারি, সেই নিন্ম ব্রীড গুলোকে তারা বাজারে ছেড়ে বাজারের ভারসাম্য নষ্ট করছেন। আর না জেনে কিছু নতুন খামারি সেগুলো সস্তাই কিনে একটু তৃপ্তির ঢেকুর তুলে বাসাই ফিরছেন আর অন্য কবুতর কেনার সময় রেফারেন্স হিসাবে বলছেন ভাই আমি তো এই কবুতর এত দামে কিনেছি কিন্তু আপনি কেন এত দাম চাইছেন। কেন চাচ্ছে তা যদি আপনার মানের পার্থক্য বুঝার ক্ষমতা থাকত তাহলে আপনি বুঝতে পারতেন। যাইহোক এভাবেই একজন নতুন খামারি যেমন এভাবেই ঠকছেন তেমনি সেই সার্কেল ঘুরে ফিরে বাজারে হাত বদল হচ্ছে। অর্থনীতিতে বলা হয় একটা মুদ্রা তিন জনের হাত বদল হলে সেটা তিনটি মুদ্রার কাজ করল বলে ধরা হয়, কিন্তু কবুতর সেক্টরে একটা বাজে কবুতর যদি হাত বদল হই তাহলে তাকে কি বলা হবে। আর ফলশ্রুতিতে নতুন খামারিদের বাজার সম্পর্কে ও মান সম্পর্কে ভুল ধারনা তৈরি হচ্ছে। যা আমাদের জন্য একটা অশনিসংকেত।


একজন ক্রেতা কি মূল্যে খরিদ করবে, বা কি মূল্যে খরিদ করা বিধান আছে, যদিও ইসলামে পণ্যের মূল্য নির্ধারণ ব্যাপারে কোন বিধি নিষেধ নাই, আনাস (রাঃ) বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর যুগে (একবার পণ্যের) মূল্য বেড়ে গেল। তখন ছাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমাদের জন্য মূল্য নির্ধারণ করে দিন। তখন তিনি বললেন, নিঃসন্দেহে আল্লাহই হচ্ছেন মূল্য নির্ধারণকারী; তিনি সঙ্কোচনকারী, সম্প্রসারণকারী ও রিযিকদাতা। আর আমি অবশ্যই এমন এক অবস্থায় আমার রবের সাথে সাক্ষাৎ করার আকাঙ্ক্ষা পোষণ করি যাতে তোমাদের মধ্য থেকে কেউ আমার বিরুদ্ধে রক্ত (প্রাণ) ও সম্পদ সম্পর্কে যুলুমের অভিযোগ উত্থাপন করতে না পারে’ অন্য এক হাদিসে বলা হয়েছে, আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, এক ব্যক্তি এসে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলল, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমাদের দ্রব্যের মূল্য নির্ধারণ করে দিন। তখন তিনি বললেন, ‘বরং আল্লাহই সঙ্কোচন-সম্প্রসারণ করেন। আমি অবশ্যই এমতাবস্থায় আল্লাহর সাথে মিলিত হ’তে চাই যে, আমার পক্ষ থেকে কারো প্রতি সামান্যতম যুলুমও থাকবে না’। একেক ধরনের পণ্য এক এক মূল্য হতে পারে আবার সেটা স্থান কাল পাত্র ভেদেও বিভিন্ন হতে পারে, এ প্রসঙ্গে হাদিসে বর্ণিত আছে যে, ‘নবী করীম (ছাঃ)-এর নিকট পশুর একটি চালানের সংবাদ আসল। তিনি আমাকে একটি দীনার দিয়ে বললেন, উরওয়া! তুমি চালানটির নিকট যাও এবং আমাদের জন্য একটি বকরী ক্রয় করে নিয়ে আস। তখন আমি চালানটির কাছে গেলাম এবং চালানের মালিকের সাথে দরদাম করে এক দীনার দিয়ে দুইটি বকরী ক্রয় করলাম। বকরী দু’টি নিয়ে আসার পথে এক লোকের সাথে দেখা হয়। লোকটি আমার থেকে বকরী ক্রয় করার জন্য আমার সাথে দরদাম করল। তখন আমি তার নিকট এক দীনারের বিনিময়ে একটি বকরী বিক্রয় করলাম এবং একটি বকরী ও একটি দীনার নিয়ে চলে এলাম। তখন আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! এই হচ্ছে আপনার দীনার এবং এই হচ্ছে আপনার বকরী। তখন রাসূল (ছাঃ) বললেন, এটা করলে কিভাবে? উরওয়া বলেন, আমি তখন তাঁকে ঘটনাটি বললাম। তখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, হে আল্লাহ! আপনি তার হাতের লেন-দেনে বরকত দিন’ যে জিনিষ টা কমন আর জেতার বাজার দাম সবাই জানে সেটার ক্ষেত্রে ছাড়া নতুন জিনিষের দামের ব্যাপারে বিক্রেতার এখতিয়ার। লেনদেনের একটা সীমা পরিসীমা আছে কিন্তু সেটা যেন মাত্রারিক্ত না হয়ে যাই। আর আমরা যেন কোন কিছু কিনতে গিয়ে কারো অসহায়ত্তের সুযোগ না নেই। এতে ভারসাম্য নষ্ট হবার ভয় থেকেই যায়।


রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন ‘আল্লাহ ঐ মহানুভব মানুষের প্রতি দয়া করেন, যে ক্রয়-বিক্রয়ে এবং নিজের পাওনা আদায়ে নম্রতা ও সহনশীলতা প্রদর্শন করে’। আমরা অনেক সময় কোন কিছু কেনার সময় মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে থাকি, অনেকেই বলেন ভাই এই জিনিসটা তো অমুক এর কাছে এত দিয়ে পাওয়া যাচ্ছে বা অমুক তো এত দিয়ে কিনেছে বা বাজারে তো এত দামে পাওয়া যাচ্ছে আপনি কেন আত দাম চাচ্ছেন ইত্যাদি। আসলে কিন্তু তা সঠিক কথা নয় তারপরও আমরা এ রকম বলে থাকি, আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরানে ইরশাদ করেছেন,‘‘তোমাদের শপথসমূহকে তোমরা হেফাজত করো’’।(সূরা মায়েদা : আয়াত-৮৯)


আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে একথা বলতে শুনেছি, ‘‘অধিক শপথ, সম্পদ বিনষ্ট কারী এবং উপার্জন ধ্বংশ কারী।’’ (বুখারি ও মুসলিম)


কসম যে কোন কিসুর উপর বা শপথ যে কিছু বলে করতে হবে তা কিন্তু না, আমার একটা আপনি কোন কিছুর যদি উদাহারন দেন সেটাই শপথ হতে পারে। ফলে আমরা কোনও কসমের বা শপথের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে, যাতে এর জন্য আমাদের চরম মূল্য দিতে না হয়।


একজন বিক্রেতার প্রথম যে কাজ সেটা হল পণ্য বিক্রির সময় পণ্যের গুণাগুণ বা দোষ ক্রেতা কে বলে দিয়া, এর মধ্যেই ক্রেয়ার পছন্দ জিনিষ ক্রয় করবেন না হলে ক্রয় করবেন না, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যদি তারা উভয়েই সততা অবলম্বন করে এবং পণ্যের দোষ-ত্রুটি প্রকাশ করে, তাহলে তাদের পারস্পরিক এ ক্রয়-বিক্রয়ে বরকত হবে। আর যদি তারা মিথ্যার আশ্রয় নেয় এবং দোষ গোপন করে, তাহলে তাদের এ ক্রয়-বিক্রয়ের বরকত শেষ হয়ে যাবে।’ (বুখারি) যদিও আমাদের অধিকাংশ বিক্রেতার এই গুনটারই অভাবই দেখা যায় বেশী। আর এজন্যই সততা, আমানতদারী ও বিশ্বস্ততা ব্যবসা হালাল হওয়ার পূর্বশর্ত। অন্য এক হাদিসে বলা হয়েছে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, তোমরা ক্রেতাকে ধোঁকা দেওয়ার লক্ষ্যে ক্রেতার মূল্যের উপর মূল্য বৃদ্ধি করে ক্রেতাকে ধোঁকা দিয়ো না’। অন্য হাদিসে বলা হয়েছে, বিশিষ্ট ছাহাবী ওয়াসিলা ইবনুল আকওয়া (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্ল¬াহ (ছাঃ) আমাদের কাছে আসতেন এবং বলতেন,’ হে বণিক দল! তোমরা মিথ্যা কথা ও মিথ্যা কারবার থেকে অবশ্যই দূরে থাকবে’। আবদুল্লাহ ইবনে আমর রা. হতে বর্ণিত, রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেন, চারটি গুণ যার মধ্যে একত্র হবে, সে সত্যিকার মুনাফেক। আর যার মধ্যে এ তিনটি গুনের যে কোন একটি থাকবে সে যতদিন পর্যন্ত তা পরিহার না করবে তার মধ্যে নেফাকের একটি গুণ অবশিষ্ট থাকল। যখন কথা বলে মিথ্যা বলে। আর যখন কোন বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দেয়, তখন তা লঙ্ঘন করে, আর যখন ওয়াদা করে তা খিলাফ করে, যখন ঝগড়া-বিবাদ করে, সে অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করে।“


একজন ক্রেতা কোন কিবুতর কেনার সময় তার জ্ঞানের সর্বচ্চ ব্যাবহারের চেষ্টা করে থাকে, যেটা অন্য কিছুতে করে আর, কথাই আছে বেশী চালাকের ময়লা ৩ জাইগায় লাগে, বিস্তারত না বলি। যাই হোক তো ক্রেতা তার বরশিতে নানা টোপ ব্যাবহার করে আর একজন অসহায় বিক্রেতা কে তার কবুতর বিক্রি করতে হয় অনেক সময় বাটে পড়ে, কিন্তু ক্রেতা জানেন না তাকেও একসময় বিক্রেতা হতে হবে আর তাকেও সেই একই ফাঁদে পড়তে হবে। কথাই আছে যে অপরের জন্য গর্ত খুঁড়ে সেই গর্তে সে নিজেই পড়ে এক সময়। একজন ক্রেতার প্রথম যে প্রশ্ন থাকে, যে ভাই এটা কি রিং এর? এরপর এটা কি NPA নাকি EE রিং, অথচ এই ক্রেতা রা জানে না এর অর্থ কি, আর আমাদের দেশে যে ধরনের রিং তৈরি করা সম্ভব সেটা তাদের মাথাই আসে না। একজন ক্রেতা একজন বিক্রেতাকে ঈমানী পরীক্ষার মধ্যে ফেলে দেয় আর অনেকের জ্ঞানের অভাবে সেই পরীক্ষাতে উত্তীর্ণ হতে পারে না। আমাদের দেশে আইয়ামে জাহেলিয়াতের যুগের মত এখনও জিজ্ঞাস করা হয় ডিম বাচ্চা গ্যারেন্টি আছে তো? আরে ভাই, পৃথিবীর সর্বময় ক্ষমতা আল্লাহতালার উপর তাতে আমি কিভাবে গ্যারেন্টি দিতে পারি, আর যদি আমি এটা করি তাহলে তো আমি দোষী হয়ে যাব আল্লাহ্‌ এর কাছে, এমন কি আমার ঈমান ও নষ্ট হতে পারে, হাদিসে আছে, যুহায়র ইবনু হারব ও মুহাম্মাদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জাহিলী যুগের লোকেরা “হাবালূল হাবালা- শর্তে উটের গোশত কেনাবেচা করত। “হাবালুল হাবালা-, হল এমন শর্তে উটনী খরিদ করা যে, এর ঝড়া হওয়ার পর ঐ বাচ্ছা গর্ভধারণ করলে মূল্য পরিশোধ করা হবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ধরনের বিক্রয় নিষেধ করেছেন। (সহীহ মুসলিম:৩৬৬৮)


আমার এখানে ডিম বাচ্চা যদিও করে আপনার ওখানে গিয়ে হয়ত রেস্ট এ চলে যেতে পারে, বা আপনি যদি আজাচিত অ্যান্টিবায়টিক ব্যাবহার করেন কোন কিছুর প্রতিরোধ হিসাবে তাহলেও এটা হতে পারে, বা আপনার খাদ্যাভ্যাস যদি পরিবর্তন করেন তাহলে এই ধরনের অসুবিধা হতে পারে। তাহলে কিভাবে আমরা গ্যারেন্টি দিতে পারি? একজন ক্রেতা আমদানি করা কবুতরের ক্ষেত্রে সুস্থ না অসুথ ডিম বাচ্চা করবে কিনা সেটা চিন্তা করে না ফাটা না ভাল সেটা চিন্তা করে না দাম কি সেটা নিয়ে মাথা ঘামায় না। খালী দোয়া করে মনে মনে যেন কবুতর টা পাই, এর পর বাসাই এনে মারা গেলেও ভাল, কলার উচিয়ে বলতে তো পারে আরে ভাই আমার কাছে imported ring এর এই কবুতর ছিল জানেন। এত দামে কিনেছিলাম। কিন্তু একজন খামারির কাছ থেকে সেই ব্রীড অর্ধেক দামেও কিনতে কেমন যেন হয়ে যাই। একজন ভাল ব্রীডার বলেছিলেন, ভাল কবুতরের রিং লাগে না। আসলেই তো তাই, কিন্তু আমরা যে আমাদের মগজ টা পাশে রেখে দিয়েছি, এটাই ত স্বাভাবিক মাথা তো কাজ করবেই না। কথাই আছে, “স্বভাব যাই না মলে (মরলে), আর ইল্লত(চরিত্র) যাই না ধুলে।“ আমাদের স্বভাব আর চরিত্র আমরা যতই চেষ্টা করি সহজে পরিবর্তন সম্ভব না, যদি না আল্লাহ্‌ অন্য কিছু করে দেন বা সাহায্য না করেন। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) পণ্যে ভেজাল দিয়ে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে দ্রব্যের মূল্য বাড়িয়ে দিতে নিষেধ করেছেন।


আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, একদা নবী করীম (ছাঃ) কোন এক খাদ্যস্তূপের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি খাদ্যস্তূপে হাত ঢুকিয়ে দিয়ে দেখলেন তার হাত ভিজে গেছে। তিনি বললেন, হে খাদ্যের মালিক! ব্যাপার কি? উত্তরে খাদ্যের মালিক বললেন, হে আল্লাহ্র রাসূল (ছাঃ)! বৃষ্টিতে উহা ভিজে গেছে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাকে বললেন, ‘তাহ’লে ভেজা অংশটা শস্যের উপরে রাখলে না কেন? যাতে ক্রেতারা তা দেখে ক্রয় করতে পারে। নিশ্চয়ই যে প্রতারণা করে সে আমার উম্মত নয়’। অন্য এক হাদিসে প্রখ্যাত ছাহাবী আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, জনৈক বেদুঈন একটি ছাগী নিয়ে যাচ্ছিল। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, তুমি কি ছাগীটি তিন দিরহামে বিক্রি করবে? লোকটি বলল, আল্লাহ্র কসম! বিক্রি করব না। কিন্তু সে পরে সেই মূল্যেই ছাগীটি বিক্রি করে দিল। আমি এ বিষয়টি রাসূলুল্লাহ্র (ছাঃ)-এর কাছে এসে উল্লে¬খ করলাম। তিনি আমার কথাগুলো শুনে বললেন, লোকটি দুনিয়ার বিনিময়ে তার পরকালকে বিক্রি করে দিয়েছে’।


একজন সৈনিক কে শিক্ষা দিয়া হয় যে, সাথী বাচলে আমি বাচব। সেই শিক্ষা একজন ব্যাবসায়ি পায় না। বিশেষ করে কবুতর সেক্টরে তো নাই। কিন্তু আমরা যদি সেই শিক্ষায় শিক্ষিত হই। “you save i save” বরং উল্টা হয়। একজন খামারি আরেকজন খামারি কে কিভাবে দমান যায় সেই চেষ্টাই সময় করে যায়। শুধু তাই নয় আমরা যদি একেক জন একেক ধরনের কবুতর পালি বা কবুতরের বাজে ক্রস ব্রীড বন্ধ করে দেয় তাহলেই কেবল এই সেক্টর কে বাচান সম্ভব। কিন্তু কথাই আছে চরে শনেনা ধর্মের কাহিনী। কাকে বলবেন আর কে শুনবে। সবারই একই অবস্থা, যার যার তার তার(he’s he’s who’s who’s), আর সমস্যা এখানেই।


আমাদের কবুতর সেক্টর এ ক্রেতার থেকে বিক্রেতা আবার এক খাড়া উপরে থাকার চেষ্টা করেন, ফাটা কবুতর কিভাবে পর তুলে বিক্রি করা যাই, বা নিম্ম মানের কবুতর কিভাবে রিং লাগিয়ে, আমদানি করা ব্লাড লাইন বলে চালান যাই। অথবা ক্রস ব্রীড তৈরি করে মানুষকে ঠকান যায় কিভাবে সেটাই নিয়ে সব সময় পরীক্ষা নিরীক্ষায় ব্যাস্ত। একজন ভাল খামারি কে ভাল মানের কবুতর তৈরি করতে অনেক কষ্ট কনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়, যেটা একজন ব্যাপারি বা ধোঁকাবাজ খামারি জানতেও পারবে না। আর জানার কথাও না। এব্যাপারে অনেক টা সেই গল্পের মত একবার আমার অফিস এ এক সহকর্মী বিয়ে করল, বস তাকে জিজ্ঞাস করল, what about planning of child? সহকর্মী বলল, Yes boss I’m trying…! বস বলল, trying? Its very easy…you know.. just put the things inside down…that all…! আসলেই কি তাই? যদিও একজন সেই ধরনের খামারি তাই মনে করেন…আর তাই তো এই ধরনের বাজে ব্রীড করতে উৎসাহিত হন, আর তাদের উৎসাহিত করেন সেই সব না জানা নতুন খামারি। যদিও এই সব খামারি তাদের পক্ষে যুক্তি দাড় করানোর অপচেষ্টা করেন ভাই, আমি ত নতুন…! আমি ত বুঝতে পারি নাই…! এসব কথা বলে নিজের দোষ ডাকার একটা চেষ্টা করে থাকেন তারা, আসলেই এভাবে বলে দায়িত্ব এড়ানো সম্বভ।


আমরা সব কিছুই বুঝি খালি কবুতর সেক্টরে আসলেই নতুন আর অবুঝ হয়ে যাই কেন? আর ডিজিটাল যুগে এসব কথা বলে কেউ পার পাবে না। একজন নতুন খামারি রাতারাতি খামারি হতে চান…আর সেই জন্য এক দিনেই সব ধরনের কবুতর না জেনেই সংগ্রহ করতে ব্যাতিব্যাস্ত হয়ে যান। কিন্তু তাদের মনে রাখতে হবে একদিনে ১০ তলা বাড়ি তৈরি সম্ভব না আর যদি কেউ এটা করতেও চাই তাহলে ভেঙ্গে পড়ার সম্ভাবনা অনেক অনেক বেশী।


পবিত্র কোরআনে আল্লাহ্‌ বলেন, আল্লাহ তোমাকে যে অর্থ সম্পদ দিয়েছেন তার দ্বারা আখিরাতের আবাস (জান্নাত) অনুসন্ধান করো এবং পার্থিব জীবনে তোমার বৈধ (ভোগের) অংশও ভুলে থেকোনা। (মানুষের) কল্যাণ করো, যেমন আল্লাহ তোমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। আর (অর্থ সম্পদ দ্বারা) দেশে বিপর্যয় সৃষ্টি করোনা। বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের আল্লাহ পছন্দ করেন না। (সূরা আল কাসাস : আয়াত ৭৭)


আর এই নতুন খামারিরা তাদের অর্থ দিয়ে এই সেক্টরে এক প্রকার মহা বিপর্যয় সৃষ্টি করছেন। আগে জানুন বুঝুন এর পর আসতে আসতে কবুতর সংগ্রহ করুন ভাল মানের কবুতর, প্রয়োজনে ভাল খামারির পরামর্শ নেন। আল্লাহ্‌ আরও বলেন, “যখন আমি কোন জনপদকে ধ্বংস করার ইচ্ছা করি তখন তার অবস্থাপন্ন লোকদেরকে উদ্ধুদ্ধ করি অতঃপর তারা পাপাচারে মেতে উঠে। তখন সে জনগোষ্টীর উপর আদেশ অবধারিত হয়ে যায়। অতঃপর আমি তাকে উঠিয়ে আছাড় দেই।“ (সূরা বনী ইসরাঈলঃআয়াত-১৫)


আমার দেশের বাড়িতে সামনের পাকা রাস্তায় একটু বৃষ্টি হলে পানি উঠে, আর এই সময় সেই পানি পার হয়ে যেতে হয় সবাইকেই কারণ বাজারে যাবার এটাই প্রধান সড়ক, তো এক লোক লুঙ্গি পড়া এক হাঁটে সিগারেট অন্য হাঁতে সে তার লুঙ্গির পিছনের কোঁচাটা ধরল, কিন্তু মনের ভুলে সেটা পিছনের টা না হয়ে সামনের কোঁচাটা ধরে সে হাটা দিল গান গাইতে গাইতে” প্রেমের মরা জলে ডোবে না…।“ সেই হাঁটু পানি পার হয়ে, এদিকে পানি যতই বাড়ছিল সে লুঙ্গিটা ততই উঠাচ্ছিল আর এদিকে যে নিচে তার বলস দেখা যাচ্ছিল সেদিকে তার খেয়ালি ছিল না, সবাই দৃশ্য টা দেখে হাসাহাসি করছিল কিন্তু লোকটি এদিক ওদিক তাকাচ্ছিল, আর মাথা নিচু করে তার নিচের দিকে কি ব্যাপার সেটা দেখার চেষ্টা করছিল, কিতু তার মাথা নিচে নামানর সময় তার হাতটাও নেমে যাচ্ছিল ফলে সে বুঝতেই পারছিল না মানুষরা তার দিকে তাকিয়ে কেন হাসছে। সে আর কোন চিন্তা না করেই তার বলস ঝুলাতে ঝুলাতে হেঁটে চলে গেল। আর এই সময় আরেক বয়স্ক লোক তার গানের কলি শুনে রেগে বলল হাঁ, প্রেমের মরা জলে ডোবে কিনা একবার ডুবাই দেখ না… ডোবে কিনা…? আমি জানি না প্রেমের মরা জলে ডোবে না ভাসে সে পরীক্ষা করার মত সময় হইনি, আর সেই পরীক্ষা কখনও করতেও চাইনা। কিন্তু আমি জানি, প্রেমের মরা জলে ডুবুক না নাই ডুবুক, এই যে এই নতুন খামারিরা এক অশুভ খেলাই মেতে উঠেছে অন্য অসাধু খামারি দের সাথে না বুঝেশুনে তারা যে একদিন ১০০% ডুববে তাতে বিন্দু মাত্র কোন সন্দেহ নাই। পরিশেষে কোরআনের আয়াত দিয়ে শেষ করছি, আল্লাহ্‌ বলেন,


“কেউ অপরের বোঝা বহন করবে না। কেউ যদি তার গুরুতর ভার বহন করতে অন্যকে আহবান করে কেউ তা বহন করবে না-যদি সে নিকটবর্তী আত্নীয়ও হয়। আপনি কেবল তাদেরকে সতর্ক করেন, যারা তাদের পালনকর্তাকে না দেখেও ভয় করে এবং নামায কায়েম করে। যে কেউ নিজের সংশোধন করে, সে সংশোধন করে, স্বীয় কল্যাণের জন্যেই আল্লাহর নিকটই সকলের প্রত্যাবর্তন।“(সূরা ফাতিরঃআয়াত-১৮)


মূল লেখক : সোহেল রাবি ভাই



আমার কবুতর ভাবনা। BD Online Pigeon Market

আমার কবুতর ভাবনা।

Pigeon Discussion, Pigeon Diseases & treatment

বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

কবুতরের আচার আচরন ও সহজাত অভ্যাস (কেস স্টাডি)

“বলুন, যারা জানে এবং যারা জানে না; তারা কি সমান হতে পারে? চিন্তা-ভাবনা কেবল তারাই করে, যারা বুদ্ধিমান।“ (সূরা যুমারঃআয়াত-৯)


ছোট বেলার অনেক কথা মনের মধ্যে এমনি ভাবে গেঁথে যায় যা কখনও ভুলা যায় না। আজ আমনি একটা কথা মনে পড়ছে। আমি তখন অনেক ছোট, আমি আমার বড় ভাই মা ও বড় বোন নানা বাসাই বেড়াতে গিয়েছিলাম। ইস্টেসনে মামা এসেছিলেন আমাদের নিতে। আমরা গ্রামের মেঠো পথে পায়ে হেঁটে রওনা দিলাম কারন সে রাস্তাটা ছিল সরু তাই সাইকেল ছাড়া আর কিছু চলতে পারত না। আমরা হাঁটছিলাম আমাদের আগে আমার বড়ভাই মামা আমার হাত ধরে ছিলেন অন্য হাতে ব্যাগ। পিছিনে আম্মা ও আমার বড় বোন। রাস্তাই যেতে যেতে একটা ছোট্ট গর্ত পড়ল (গর্তটা গোল ধরনের সেখানে ছোট ছোট কঙ্কর ছিল) মামা আমাদের আগেই বলে দিয়েছিলেন যে সামনে একটা গর্ত আছে সাবধান! কিন্তু আমার বড় ভাই সেখানে পিছলীয়ে পরে গেল, মামা আমাকে নিয়ে পার হবার সময় আমার একই দশা হল, তবে মামা আমার হাত ধরে থাকাতে তেমন ভাবে পড়লাম না। মামা অনেক বিরক্ত হয়ে বললেন, “কিরে তোরা কানা নাকি? বলার পরও কিভাবে পড়লি ??” আজ জীবনের অনেকটা বছর চলে গেছে মামা আজ আর বেচে নেই, কিন্তু মামার সেই কথা আজ মাঝে মাঝে মনে পড়ে,”কিরে তোরা কানা নাকি?”



বর্তমানে যদি চারিদিকে একটু নজর দেই তাহলে বুঝব আসলেই তো আমরা কানা! আমাদের মনে হয় দিনে দিনে আমাদের বাহ্যিক দৃষ্টি অন্ধ হবার পাশাপাশি অন্তর দৃষ্টিও বা জ্ঞান দৃষ্টি যাই বলি না কেন অন্ধ হয়ে গেছে বা যাচ্ছে। আমাদের পরিবেশ ও প্রকৃতি প্রতিনিয়ত আমাদের নানা শিক্ষা দিবার প্রয়াস করছে কিন্তু আমরা খুব কম মানুষই তা থেকে শিক্ষা গ্রহন করতে পারছি। আর সেটাকে ব্যাক্তি জীবনে প্রতিফলিত করছি। কেন এরকম হয় বা হচ্ছে? এর অন্যতম কারন আমাদের জ্ঞান চর্চারই অভাব। আমরা পড়তে পছন্দ করি না। কারন পড়তে গেলে অনেক পরিস্রম করতে হবে। কিন্তু সেটা আমরা করতে নারাজ। আমার জীবনের ১ যুগের ও বেশী একটা মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানি তে কেটেছে। সেখানে প্রতিদিন প্রতি সপ্তাহে প্রতি মাসে প্রতি ছয় মাসে এমনি কি প্রতি বছরে একটা বিশেষ ধরনের রিপোর্ট পাঠাতে হত আমাদের হেড অফিসে, তো পরে প্রায়ই দেখা যেত যে তারা সেই রিপোর্ট গুলো বার বার চাচ্ছে, ব্যাপারটা কি? কেন এমন হচ্ছে? তারা কি আমার রিপোর্ট ঠিক মত পাচ্ছে না নাকি অন্য কোন সমস্যা এটা নিয়ে আমাদের গ্রুপ হেড এর সাথে কথা বললাম পরে তিনি আমাকে হেসে জানালেন যে তিনিও অনেক বছর এ রকম সমস্যা ভোগ করেছেন কিন্তু এখন আর করেন না । তিনি ব্যাখ্যা করলেন যে আসলে ওরা পুরানো জিনিষ খোজার থেকে একটা ম্যাসেজ লিখা সহজ, তাই তারা না খুজে ম্যসেজ পাঠাত।


আমি কবুতর ও এর সংক্রান্ত বিষয়ে অনেক কিছুই লিখেছি বিভিন্ন গ্রুপ এ আমার লিখা যদি কেউ ঠিক মত পড়ে আর তা থেকে ১০% ও মনে রাখে তাহলে মনে হয় না তার খামারে কোন অসুবিধা হবার কথা। আমার এই লিখা গুলো বই আকারে বের করার অনেক দিনের প্রয়াস কিন্তু সময় স্বল্পতা আর অর্থনৈতিক কারনে হয়ে উঠছে না। তারপরও চেষ্টা করছি অনবরত। যাই হোক প্রায় দেখা যাই আমাদের অধিকাংশ কবুতর খামারি ভাইরা এসব লিখা ঠিকমত পড়েন না। আর পড়ার জন্য যে কষ্ট করা দরকার মানে খুজতে সেটাও করেন না আর তাই প্রতি নিয়ত আমাকে এ সব খুজে খুঁজে বিভিন্ন জনকে দিতে হয়। দেয়াটা কোন ব্যাপার না। কিন্তু ব্যাপারটা যখন সময়ের আর যখন চাচ্ছেন অনেক জন প্রতিদিন, তখন আমাকে এক একটার পিছে ৫ মিনিট করেও সময় দিলে অনেক সময়। সে যাই হোক কাজের কথা আসি।


রসুলুল্লাহ(সঃ) বলেছেন যে,” জ্ঞান অর্জন করা প্রতিটা মুসলিম নর নারীর জন্য ফরজ।“ (ইবনে মাজাহঃহাদিস-২২৪) কিন্তু আমরা প্রতি নিয়ত অন্য ফরজ তরখের সাথে সাথে নিজ জানতে বা অজান্তে এই ফরজ টাও তরখ করে যাচ্ছি, কোন খেয়াল নেই। আর কিছু মানুষ আছে আমাদের কবুতর সেক্টরে তারা তাদের অর্জিত জ্ঞান তাদের নিজেদের কাছে কুক্ষিত করে রাখে কারো সাথে শেয়ার করতে চান না। বা করলেও ভুল তথ্য দিয়ে ভিভ্রান্ত করে মানুষকে।


হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূল (সা.) বলেছেন “কাউকে তার জ্ঞাত কোনো জ্ঞান সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে সে তা গোপন করলে কেয়ামতের দিন তার কাঁধে আগুনের লাগম পরিয়ে দেওয়া হবে।”


আরেকদল আছেন যারা নিজেদের জাহির করার জন্য এ রকম করে থাকেন। যাই করি না কেন আমাদের মনে রাখতে হবে আমরা প্রতিনিয়ত কার্যকলাপ নিয়ে একদিন জিজ্ঞাসিত হব। আমার এক বন্ধুর সাথে অনেকদিন পর একদিন রাস্তাই দেখা হল সে কথা বলছিল আর তার বাম ঘাড়টা প্রচণ্ড ভাবে নাড়াচ্ছিল। আমি আশ্চর্য হয়ে তাকে জিজ্ঞাস করলাম, সে কেন এমনটি করছে, সে বলল মিথ্যা কথা বলছিলাম তো তাই যাতে ফেরেশতা সেটা লিখতে না পারে তাই তাকে ঘার নাড়িয়ে লিখাটা বরবাদ করছিলাম আর কি এটা হয়ত ছিল তার একটা ছেলেমানুষি বা কথা হয়ত সে কৌতুক করে করেছিল। কিন্তু বাস্তবে কি এভাবে আমরা আমাদের কৃত কর্ম থেকে বেচে যেতে পারব? মনে হয় না।


কিছুদিন আগে এক খামারি আমাকে জানালেন যে তার খামারে প্রতিদিন ৩-৪ কবুতর মারা যাচ্ছিল আর তাই সে নানা জনের নানা পরামর্শ মত কাজ করে ফল না পেয়ে এক নাম করা পশু ডাক্তারের (যার নামের পাশে ডিগ্রি দেখলে চোখ ছানা বড়া হয়ে যাই আর এই সম্পর্কে একটা লিখা লিখেছিলাম কিছুদিন আগে সংক্ষেপে) পরামর্শ নিলেন। ডাক্তার সাহেব তাকে তার কবুতরের ময়না করতে বললেন। সে তাই করল। রিপোর্টে জানালেন রানিক্ষেত ও ফাঙ্গাল সংক্রমন! প্রথমেই জেনে রাখা ভাল যে কবুতরের রানিক্ষেত হয় না। সে যাই হোক একজন নাম করা ডাক্তারের রিপোর্ট তো আর ছোট করে দেখা যায় না তার কথাই মেনে নিলাম আপাতত।


তো তিনি তার ডিগ্রি ধারি প্যাডে ঔষধ লিখে দিলেন 1) TWO PLUS 2) RESPIRION 3) NEW FLOXIN 4) LISOVIT 5) BIOVIT ভালো কথা কিন্তু একজন পেশাদার ডাক্তার হিসাবে তার প্রথমেই জানার কথা ছিল যে রানিক্ষেত একটি ভাইরাল সংক্রমন আর যেকোনো ভাইরাল সংক্রমনে কোন প্রকার অ্যান্টিবায়টিক কোন কাজে আসে না। এটা যে কোন ডাক্তারদের প্রথমেই শিখান হয় আমার জানা মতে। যদিও তিনি রানিক্ষেতের সাথে ফাঙ্গাল সংক্রমনের কথা যোগ করে সেই ঔষধ গুলোকে হালাল করার অপচেষ্টা করেছেন মাত্র! তাই বলে একসঙ্গে এতগুলো অ্যান্টিবায়টিক? আর সেই খামারি অবিবেচকের মত সেগুলকে প্রয়োগ করেছেন সেই নিরীহ প্রাণী গুলো উপর, যদিও কোন কাজ হইনি তাতে। আর কয়দিন পরপরই আরও কিছু মানুষকে দেখলাম এই একই ঔষধ উপদেশ দিতেছেন বিভিন্ন কবুতর খামারিদের সামাজিক সাইট গুলোতে!এতে কাকে দোষ দিব যারা উপদেশ দিতেছেন তাদের নাকি যারা না জেনে না বুঝে নিজেদের কমন সেন্স ব্যাবহার না করে পালন করছেন তাদের? বলে রাখা ভাল যে ভেটেনারি ডাক্তারি করার জন্য একটা সর্ট কোর্স ও লং কোর্স করা যাই কম পক্ষে এস এস সি ও এইস এস সি পাস করা থাকে তাহলেই আর তাতেই উনারা নিজেদেরকে বিশাল জ্ঞানী মনে করে থাকেন, আর জতসব উল্টাপাল্টা ঔষধ উপদশ দিয়ে থাকেন। হাই হোক এ প্রসঙ্গে একটা গল্প বলার লোভ সামলাতে পারছি না, একবার ২ জন লোক এক জঙ্গলে গেল শিকারে, শিকারের নেশাই তারা অনেক গভিরে চলে গেল ফলে তারা একসময় জঙ্গলের অধিবাসীদের হাতে ধরা পড়ল। এখন তাদের এলাকায় অনধিকার প্রবেশের কারনে তাদের শাস্তি দিবার জন্য আনা হল, তাদের কে জিজ্ঞাস করা হল যে কি শাস্তি তোমরা চাও, একটা হল মৃত্যুদণ্ড আরেকটা হল ‘সডমি’(sodomy) করা। প্রথম জন বলল আমাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়া হোক, দ্বিতীয়জন ভাবল ‘সডমি’ করলে তো প্রানে বেচে যাওয়া যাবে। তাই সে দ্বিতীয় শাস্তি পছন্দ করল। তাদের সর্দার নির্দেশ দিল, প্রথম জনে কে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা কর আর দ্বিতীয়জনকে ‘সডমি’ করতে করতে মেরে ফেল।


কবুতর জগতে যারা হয়ত কবুতর কে সময় মত চিকিৎসা দেয় না তাদের সেই ফাঁসিতে মারার মত আর যারা পশু ডাক্তারের কাছে যান তাদের অবস্থা হয় সেই দ্বিতীয় শাস্তির মতই হয়। আমরা সাধারণত হুজুর দের আর ডাক্তার দের কথা যেভাবে অনুসরন বা পালন করার চেষ্টা করি মাঝে মাঝে মনে হয় যদি এ রকম কোরআন হাদিস এর কথা মানুষ এমন ভাবে অনুসরন করত তাহলে কতই না ভাল হত। সব সমস্যার সমাধান হয়ে যেত। একজন হুজুর যদি ভুলও বলে আমরা আমাদের নিজস্ব বিচার বুদ্ধি না খাটিয়ে বা কোরআন ও হাদিসের আলোকে বিচার না করে সেটাই সঠিক বলে মনে করি, অন্যদিকে একজন ডাক্তার যদি কাওকে বলে যে, আপনি একপায়ে হাঁটবেন কোন বিচার ব্যাতিরেকেই সেই লোক এক পায়ে হাঁটার চেষ্টা করবেন, নিজের মনে একবার হলেও প্রশ্ন আসবে না যে কেন আমাকে এই উপদেশ দিয়া হল, আর কেনই বা আমি এমন করব। আমাদের কবুতর সেক্টরে অনেক শিক্ষিত মানুষ নিজেদের ক্ষেত্রে অনেক সচেতন কিন্তু কবুতরের ক্ষেত্রে আসলেই কেন জানি নিজের বিবেক বুদ্ধি লোপ পেয়ে যাই। আর কেউ জিজ্ঞাস করলেই ভাই আমি তো নতুন বা আমি ত কিছু জানি না বা আমি ভয় পেয়ে গেছিলাম তো মাথা কাজ করছিল না। এভাবে এসব কথা বলে অনেকেই তার ভুল থেকে বা দায়িত্ব থেকে পালিয়ে বাচতে চাই। কিন্তু এভাবে বললেই কি আপনি আপনার দায়িত্ব এড়াতে পারবেন বা যে ভুলের জন্য সেই নিরহ প্রাণীটার প্রান গেল তার মূল্য হয়ত দুনিয়াবি টাকার মূল্যতে মূল্যায়ন করতে পারবেন কিন্তু যদি প্রানের ক্ষেত্রে ধরেন তাহলে তার মূল্য আপনার আমার দিবার সাধ্য নাই। একজন খামারি তার খামারি যত না রোগ হয় তার থেকেও বেশী রোগ বয়ে আনে অনর্থক ঔষধ প্রয়োগ করে বা রোগ না জেনে ঔষধ দিয়াতে। আপনাকে একজন আদর্শ খামারি হতে বড় বড় ডিগ্রির দরকার নাই খালি একটু সাধারন জ্ঞানের দরকার এ ছাড়া আপনি একজন আদর্শ খামারি হতে পারবেন না, কখনই না।


রাসূল (সা.) আরও বলেন : ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য নয় বরং অন্য কিছু লাভের আশায় জ্ঞানার্জন করে, তার চিরস্থায়ী নিবাস হচ্ছে জাহান্নাম।'(তিরমিজী )


একজন আদর্শ খামারি হতে আপনাকে যে কাজটি সবচেয়ে আগে করতে হবে তাহল আপনার কবুতরের আচার আচরন ও সহজাত অভ্যাস সঠিক ভাবে পর্যবেক্ষণ করা ও জানা। আর এটা যে কত একটা মজার আর শিক্ষণীয় বিষয় আপনি না দেখলে বা না জানলে এটার আনন্দ উপভোগ করা সম্ভব না। এতে আপনার একদিকে যেমন মজা পাবেন অন্য দিকে আপনি আপনার কবুতরের আচরন বা অভ্যাস জানার ফলে আপনি আপনার খামারে অনাখাংকিত পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পাবেন তাতে কোনই সন্দেহ নাই বিশ্বাস করুন। এগুলো যদি আপনি না জানেন তাহলে যেমন আপনি একটি বিব্রতকর পরিস্থিতে পড়বেন অন্যকেও ফেলতে পারেন বা হয়ত এর ফলে আপনি অনর্থক ভয়ে ভিত হতে পারেন, যে মনে হয় আপনার কবুতর টি অসুস্থ কিনা। কিছুদিন আগে এক নতুন খামারি আমাকে কল দিলেন, ভাই আমার কবুতর টা কেমন যেন করতেছে, আমি তাকে জানতে চাইলাম কিরকম করছে, তিনি জানালেন যে তার একটা কবুতর অন্য কবুতরের পায়ের কাছে বসে কেমন যেন একটা শব্দ করছে। খাওয়া দাওয়া তেমন করছে না কি করব? এগুলো সবই সাধারন আচারন বা অভ্যাস ব্রিডিং এর সময় এ রকম আচরন করবে এটাই স্বাভাবিক। এরকম আরও অনেক আচার আচরণ বা অভ্যাস সম্পর্কে আপনার বাস্তব জ্ঞান থাকতে হবে। তাদের অনেক আচার আচরন স্বাভাবিক মানুষের মতই। এখন আসুন আমরা জেনে নেই একটা কবুতর কি ধরনের আচরণ করে বা করতে পারে বা কি ধরনের তাদের সহজাত অভ্যাস আছেঃ কবুতরের আচার আচরন বা অভ্যাস কয়েক ধরনের (ক) স্বাভাবিক আচরন বা অভ্যাস ও (খ) অস্বাভাবিক আচরন।


ক) স্বাভাবিক আচার আচরন বা অভ্যাস আবার ২ প্রকার (১) চরিত্রগত আচরন ও স্বভাব (২) বাহ্যিক আচরন।


ক)স্বাভাবিক আচার আচরন বা অভ্যাসঃ ১) চরিত্রগত আচরন ও স্বভাবঃ


১) একটা বাচ্চা কবুতর ২০-২৫ দিনের মধ্যে খাওয়া শিখে ফেলে, যদি না অন্যকোন অবস্থাই পড়ে। আর এই সময় আপনি যে ধরনের খাদ্য দিবেন বা যে ধরনার অভ্যাস বা পরিবেশ দিবেন তাতেই তারা অভস্থ হয়ে যাবে। এই সময় আপনি অনেকগুল বাচ্চাকে একসাথে রাখতে পারবেন। কারন এই সময় তাদের আচরন খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ হয়ে থাকে।(দুই এক জাতের কবুতর ছাড়া)আর যারা আদর্শ খামারি তারা এ ভাবেই একই জতের কবুতর একসাথে রেখে আদর্শ জোড়া মিলানর পাথমিক কাজটি সেরে ফেলেন। আর এই সময় থেকেই তাদের খাদ্য ও ভিটামিন/মিনারেলস এর দিকে একটু বিশেষ নজর দিতে হয়।


২) কবুতরের বয়স বাড়ার সাথে সাথে তাদের আচার আচরণও পরিবর্তন হতে থাকে প্রতিনয়ত। এ সময় থেকেই জোড়ার মধ্যে প্রচুর মিল দেখা যাই, যেমন একজন আরেকজনের গায়ে ঠোট দিয়ে বিলি কেটে দিয়া বা একজন যা করে তা আরেকজন করা ইত্যাদি। এটাকে গ্রম্মিং বলে। যদিও অনেক সময় একসাথে থাকার কারনে একই লিঙ্গের কবুতরের সাথে এই ধরনের সম্পর্ক হতে পারে যেমন ২ টি নর বা ২ টি মাদির মধ্যেও এ ধরনের সম্পর্ক হতে পারে ডিম পাড়া বা পূর্ণ বয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত। আর তাতে অনেকেই জোড়া ভেবে ভুল করে ফেলে যতক্ষণ না ২ টা মাদী ডিম পাড়া শুরু করে। বা নর ২ টা মারামারি করে।


৩) সাধারন কবুতরে স্বভাব অনেকটা মানুষের সঙ্গে মিল পাওয়া যাই, তারা একই জোড়ার সাথে সাড়া জীবন কাটিয়ে দিতে পারে, কোন প্রকার ব্যাতিক্রম ছাড়াই, কিন্তু যদি ডিম না দেয় বা ডিম দিতে দেরি করে তাহলে অনেক জ্ঞানী খামারিরা কথাই কথাই জোড়া পরিবর্তন করে, তাদের এই বদ্ধমূল ধারনা থেকে যে জোড়া পরিবর্তন করলেই সব সমস্যার সমাধান হবে। যদিও কবুতরের ইন ব্রিডিং এর ক্ষেত্রে অনেক সময় এটা হতে পারে কিন্তু সব ক্ষেত্রে না। একটি জোড়া যখন নতুন যৌবনে আসে তখন তারা একটু নার্ভাস থাকে । অন্য নর থেকে মাদিকে সব সময় রক্ষা করার চেষ্টা করে এ জন্য ছাড়া অবস্থাই মাদির কাছে অন্য নরের উপস্থিতি মেনে নিতে পারে না ঝাপিয়ে পড়ে বির দর্পে। বা লোম ফুলিয়ে পাখা উচিয়ে ঘুরে ঘুরে ডাক দিয়ে তার ক্ষমতা জাহির করার চেষ্টা করে। আর এই সময়টা তাদের একটু প্রাইভেশি দিতে হয়। মানে একটু আড়াল দিয়া বা বিরক্ত না করা ইত্যাদি। নতুন অ্যাডালট কবুতর যে প্রথম দিকেই ক্রস করবে তা ঠিক না এটা কিছুদিন পরও করতে পারে। আবার কিছু কবুতর একটু লজ্জা বা লাজুক প্রকৃতির হয়ে থাকে সেগুলো মানুষের সামনে কখনি ক্রস করে না বা করবে না। যেমন তাদের মধ্যে বিউটি হুমার অন্যতম। এই সময় নর কবুতর মাদির পায়ের কাছে মাথা নিয়ে একটা আজব ও করুন শব্দ করে থাকে তার কর্প তা ফুলিয়ে। আর মাদী মাঝে মঝে লেজ নিচের দিকে নামিয়ে নর কে তেরে এসে হালকা আঘাত করে থাকে। এর পর মাদী নরকে অনেক যত্নে মুখের ভিতরে ঠোট নিয়ে তাকে খাবার দেয়, এটাকে ম্যাটিং কিস বলে আর নর তাতে সন্তুষ্ট হলে সে তার মাথা হালকা করে স্লো মোশনে সামনে সামনে পিছনে করতে আর মাদী একটু পাখা ছড়িয়ে বসে ও নর ক্রস করে পাখা দুইটা দুপাশে ছড়িয়ে, অনেক সমত এই সময় পায়ের অতিরিক্ত লম,বা গলার লোম বা নখ বা লেগ প্রতিবন্ধক হিসাবে কাজ করে থাকে। তাই একজন খামারির এ ব্যাপারে বিশেষ নজর দিতে হয়। এ সময় নর পাখা ছড়ায় । আর এজন্ন যেগুলো বড় কবুতর সেগুলোর জন্য বড় খাঁচা বা বাইরে ক্রস করার ব্যাবস্থা করতে হয়। নর ক্রস করার পর লেজটা নিচের দিকে নিমিয়ে স্লো মোশনে একটু হাঁটে ও উড়ে যাই একটু নির্দিষ্ট দুরত্তে যেগুলো উড়ার সুযোগ থাকে সেগুলো আর মাদী তাকে অনুসরন করে।


৪) ক্রস করার আগে নর একটা জায়গা পছন্দ করে আর মাদী সেটাকে সমর্থন বা অনুমদন দেয়। যদি জায়গা পছন্দ বা উপযুক্ত না হয় তাহলে তারা বিকল্প জায়গা খুজার চেষ্টা করে। আর এ জন্য অনেক সময় খাচায় পালা কবুতর বাটিতে না বসে নিচে বাসা বানানর ব্যবস্থা করে থাকে। এক এক কবুতরের বাসা বানানোর পদ্ধতি এক এক রকম । যদিও বিভিন্ন প্রকার উপাদান পাওয়ার অভাবে একই ধরনের বা ভাবে বাসা বানাই অধিকাংশ কবুতর।


৫) ক্রস করার পর একটা নর খুবই আক্রমণাত্মক ভাব থাকে ও তার অনাগত শাবক এর চিন্তায় বাতিব্যাস্ত থাকে। এই সময় নর ও মাদী ২ জনাই খুবই নার্ভাস থাকে। আর এ কারনেই হয়ত মাদী কে বাটি বা ঘর থেকে বের হতে দেয় না। আর বের হলে অনবরত ঠোকর দিতে থাকে। অনেক সময় ডিম না পাড়া পর্যন্ত মাদী কে ঠিকমত খেতে বা বসতেও দেয় না। ডিম পাড়ার পর নর শান্ত হয় কিন্তু আশেপাশের নজর দারিতে ব্যাস্ত হয়ে পড়ে আর এ সময় আসে পাশে কোন কবুতর বা পাসের খাঁচার কবুতর কে অনবরত শাসন করতে থাকে।


৬) ডিম পাড়ার পর নর ও মাদী পালাক্রমে ডিমে তা দেয় যদিও মাদী কবুতর কে ডিমে বেশী ক্ষণ বসে থাকতে দেখা যাই। তারা ২৪ ঘণ্টাতে ১ বার বা ২ বার ডিম থেকে উঠে পানি ও খাবার খাই। বিশেষ করে সকালে ও সূর্য দুবার আগে। আর পায়খানা করে করে অনেক বেশী আর গন্ধ যুক্ত ফলে এটা নিয়ে ভয় পাবার কিছু না। আর এই সময় খাবার ও পানি ও প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও মিনারেলস ও লবন বা গ্রিট সরবরাহ নিশ্চিত করতে হয়। কারণ এই সময় মাদী কবুতর অনেক হাল্কে বা শুকিয়ে যাই। অনেক সময় ডিম পাড়ার পর মাদী কবুতর গোসলের জন্য ব্যাতিবাস্ত হয়ে পরে কারণ অনেক কবুতর গোসল করার পর ডিমে বসে, ডিমের আদ্রতা রক্ষা করার জন্য আর যদি গোসল করতে না পারে তাহলেও মুখ ও ঠোট ভিজিয়ে ডিমে মুখ ঘষতে দেখা যাই।


৭) ডিম ফুটার পর মাদী কবুতর ডিম থেকে উঠতে দেখা যাই না। আর এই সময় তারা গায়ের লোমটা এমন ভাবে ফুলিয়ে থাকে যাতে বাচ্চা কে ভাল করে দেখা না যাই। বা বেশী পরিমান আক্রমণাত্মক হয়ে উঠে মাদী কবুতর। আর অতি যত্নে মুখ নামিয়ে বাচ্চাদের কর্প মিল্ক খাওয়াতে দেখা যাই, যা সাদা রঙের দুধের মতই হয়ে থাকে। এই সময় খামারি দের বাচ্চাদের প্রতি একটু খেয়াল রাখতে হই কারণ বাচ্চারা যদি মাথা না নাড়াই সেক্ষেত্রে বাবা মা রা মনে করে বাচ্চার খিদে নাই তাই তারা খাওয়ানোর চেষ্টাও করে না আর এভাবেই অনেক দুরবল বাচ্চা না খেতে পেয়ে মরেও যাই। যদি এই সময় অনেকেই এটা দিতে হই না ওটা দিতে হই না এই ধরনের নানা উপদেশ দিয়ে থাকেন। কিন্তু তারা নিজেরাও জানেন না যে এই সময় কোন কবুতর তাদের বাচ্চাদের সয়ারাসরি কোন খাবার বা পানি দেই না। পরবর্তী ১০ দিনের মধ্যে। ১০ দিন পর থেকে বা তারও ১-২ দিন আগে থেকে নাবা মা’রা বাচ্চার উপর কম বসার থেকে বাচ্চাদের খাওয়ান দিকে বেশী নজর দেয়। এই সময় তারা খাবের পরপরই সেই খাবার বাচ্চাদের কাছে গিয়ে এক ধরনের শব্দ করে বা অনেক সময় শব্দ করার আগেই বাচ্চারা চিচি শব্দ করে খাবারের ইচ্ছা জাহির করে থাকে আর বাবা মা খাওয়ানোর চেষ্টা করে। কবুতরের পারিবারিক বন্ধন টা মানুষের মতই খুবই বেশী হই। এজন্য অনেক সময় বাচ্চা সরালে তারা অস্থির হয়ে উঠে।


৮) বাচ্চার বয়স যখন ১৫-২০ দিন হয় তখন অনেক কবুতর আনার ব্রিডিং করার জন্য ব্যাতিবাস্ত হয়ে উঠে। আর এই সময় যদি খেয়াল রাখা না হয় তাহলে বাচ্চারা তাদের এই ব্রিডিং এ অসুবিধার সৃষ্টি করে থাকে। আর তাই অনেক ডিমই দ্বিতীয় পর্যায় না জমার সম্ভাবনা বেশী থাকে। তাই এই সময় বাবা মা কবুতর কে আলাদা খাঁচাই বা ব্রিডিং করার সুযোগ দিতে হই। বাচ্চা দের যদি সময় মত না সরান হয় তাহলে অনেক সময় তারা ডিম ভেঙ্গে দেয়, বাচ্চা বাচ্চা ফুটার আগে না সরান হয় তাহলে পা দিয়ে মেরে ফেলে তাদের বেশী সময় পিতামাতার কাছে থাকার ব্যাপারটা নিশ্চিত করতে চাই।


(২)বাহ্যিক আচরনঃ


৯) কবুতরের বাহ্যিক আচরন সম্পর্কে একজন খামারির বেশী জ্ঞান থাকা দরকার কারণ এই আচরনটাকে তার কবুতরের সুস্থতা বা অসুখের আগাম বার্তা দিতে পারে। একটা কবুতর খামারে পরিচিত রক্ষক থাকতে হয় অর্থাৎ যিনি খাবার বা ভিটামিন দিবেন তিনিই যেন নিয়মিত সেই কাজটি করেন। কারণ খাবার প্রদান কারি কে কবুতর বা প্রাণীরা বেশী পছন্দ করে আর তার আগমনে তারা বেশী আচরন প্রদর্শন করে থাকে, যেমন পাখা ঝাপটিয়ে আনন্দ প্রকাশ করা বা বেশী ডাকাডাকি করা বা রাগ দেখান ইত্যাদি সে তার পরিচিত জনের সাথেই এটা করে থাকে। একজন অপরিচিত লোক যদি খামারে প্রবেশ করে তাহলে দেখা যাবে, যে কবুতর টা সবচেয়ে বেশী রাগি যেটা আপনাকে দেখলেই পাখা ঝাপটাই বা আপনাকে দেখলেই রাগে অস্থির হয়ে উঠে সেই কবুতর টা কেমন যেন ভয়ে খাঁচার মধ্যে পালাতে চাইছে বা ঝটপট করছে। আর এ কারনেই অনেক খামারে যারা খামারের তত্ত্বাবধায়ক নিয়মিত পরিবর্তন করে সেই খামারে কবুতরের ডিম পাড়ার ক্ষমতা তো কমে যেতে থাকে। বা দেরিতে ডিম পাড়ে বা স্ট্রেস এর কারনে বেশী অসুস্থ হয়ে পড়ে।


কবুতরের মাথা সামনে বা পিছনে নাড়ান বা দুপাশে নাড়ান ওদের আরেকটি আচরন এটাকে হেড টুইষ্টিং বলে,যেটা আমরা অনেকেই জানেন না এটা কি কিন্তু এটা অনেক কিছু নির্দেশ করেঃ


ক) হাঁটার সময় বা দাড়িয়ে থাকার সময় তাদের হেড টুইষ্টিং করলে তাদের শারীরিক ভারসাম্য রক্ষা করার ব্যাপারটা নির্দেশ করে।

খ) গভিরভাবে উপলব্ধি করার যখন চেষ্টা করে।(এজন্য কোন বিড়াল বা কাঁক বা নতুন মানুষ বা কিছু তারা দেখলেই মাথাটা বেশী বার নাড়াতে বা হেড টুইষ্টিং করতে দেখা যাই)

(গ) অনেক সময় দৃষ্টি কে প্রখর করার জন্যও তারা বার বার হেড টুইষ্টিং করে। আর এই সময় তাদের চোখের মনি টা ছোট বড় হতেও দেখা যাই। (তবে মনে করেন না টালের মত মাথা ঘুরান টা স্বাভাবিক।)


একটা কবুতরের ভিতরে টেলিপ্যাথি খুবই ভাল মত কাজ করে থাকে যেটা যেকোনো সাধারন মানুষ বা প্রাণীর থেকেও অনেক অনেক বেশী। তাই আপনার তার প্রতি কি অনুভূতি সেটা সে অতি সহজেই জানতে পারে, আপনার যদি কবুতরের প্রতি ভালবাসা থাকে তাহলে যে খামারি যান না কেন সেই কবুতর আপনাকে দেখে এমন আচরন করবে যেন সে আপনাকে অনেক আগে থেকেই চিনে। আমার কথা বিশ্বাস না হলে আজকেই একটা পরীক্ষা করে দেখেন, যেমন যে কবুতর টা আপনার কাছে খাবার দিবার সময় অতি সহজেই চলে আসে আপনি যদি টাকে ধরার মানসিকতা নিয়ে তার কাছে যান সে সহজে আসবে না, তবে বেশী খুদা থাকেলে আবার কথা আলাদা। কারণ খুদার সময় পৃথিবী গদ্যময় মনিষীরা বলে থাকেন। আর এই সময় অনেক ভুল আমার করে ফেলি। কবুতরের বুদ্ধি মত্তা অনেক সাধারন মানুষের বুদ্ধি লেভেল থেকেও অনেক বেশী। যদিও অনেকেই এই ব্যাপারটাকে গুরুত্ব কম দেন। তবে কিছু আচরন সম্পর্কে থেকে আমাদের আলাদা, যেমন আমরা কোন মানুষ দেখলে একটু দাঁত বের করে হাসার চেষ্টা করে থাকি কিন্তু প্রাণী জগতে এটার অর্থ হল বিপরীত এই মানে আপনি থাকে ভয় দেখাচ্ছেন বা চ্যালেঞ্জ করছেন। আর এই সময় সে একটু সতর্ক হয়ে যাবে। প্রানিদের কে সরাসরি তাকান অপরিচিত সেটাও আবার আরেক ধরনের অর্থ বহন করে থাকে আমরা যদি কারো দিকে না তাকাই তাহলে সে হইত ভাববে অহংকারী ভাব দেখাচ্ছে। কিন্তু প্রানিদের দিকে সরাসরি তাকানকে তারা শিকারের প্রচেষ্টা বলে মনে করে থাকে। তাই যেকোনো প্রাণীর কাছে সরাসরি তাকাতে হই না আপনার অবস্থান না জানিয়ে। আপনি যখনি খামারে যাবেন তখনি চেষ্টা করবেন আপনার কবুতরের সঙ্গে কথা বলা বা কোন শব্দ করা বিশেষ করে খাবার দিবার সময় তাতে আপনার কবুতর আপনার সাথে তাড়াতাড়ি পরিচিত হয়ে যাবে আপনার শব্দে অভস্থ হয়ে পড়বে ফলে এতে তাদের স্ট্রেস কমবে। আর কবুতরের বেশির ভাগ রোগ এই স্ট্রেস থেকেই শুরু হয়। যদি এই ব্যাপারে অনেক আগেই পোস্ট দিয়া হয়েছে।


(খ) অস্বাভাবিক আচরনঃ


একজন খামারি যদি কবুতর ভালবেসে পালেন তাহলে তার আচার আচরন তার জানা থাকে কারণ সেই খামারিকে খামারে অনেক সময় দিতে হয়। ফলে তাদের সম্পর্কে একটা ধারনা তার হয়ে যাই। তবে এটা শুধুই সম্ভব যদি সেই খামারি তার কবুতর কে ছোট থেকে বড় করে বা অনেক দিন ধরে তার অভ্যাস বা চরিত্র পর্যবেক্ষণ করে থাকে। যদিও আজকাল অধিকাংশ খামারি কে বাচ্চা কবুতরের থেকে বড় কবুতরের প্রতি ঝোঁক বেশী। এক্ষেত্রে আপনি আপনার কবুতরের স্বভাব ও অনেক আচরন জানা থেকে বঞ্চিত হবেন। একজন মানুষের মতই কবুতরের ও দিবা নিদ্রার অভ্যাস থাকতে পারে বা রাতে ঘুম না হলে বা যদি শরীরে বেশী পোকা হয় তাহলে ঘুমের অসুবিধা হয় আর তাহলে তারা একটু ঝিমানর মতই ন্যাপ নিতে পারে আর এজন্য অনেক খামারিই অসুস্থ ভেবে নানা ধরনের ঔষধ প্রয়োগ শুরু করে সুস্থ কবুতর কে অসুস্থ করে তোলে। অনেক সময় গস্ল করার পর কবুতর আরামে পাবার জন্য ঝিমাতে পারে, এটা খুবই স্বাভাবিক, আপনাকে দেখতে হবে যে আপনার কবুতর আসলেই ঝিমাচ্ছে, বা পায়খানা টা অস্বাভাবিক বা আপনি যখন খামারে প্রবেশ করেছেন তারপরও তার স্বাভাবিক চাঞ্চল্য নাই বা আপনাকে খুবই অলস ভাবে দেখল একবার আবার লোম ফুলিয়ে বা পেট চেপে বসে আছে, বা পা উচিয়ে পিছনে মাথা গুঁজে দাড়িয়ে ঝিমাচ্ছে বা লেজটা পিছনে দিয়ে খাঁচার এক কোনে দাড়িয়ে আছে, পছন্দ করছে না বা বাতাস থেকে সরে যেতে চাইছে। যদি এমন কোন আচরন দেখেন তাহলে অবশ্যই তাকে ধরে একটু ভাল মত পরীক্ষা করুন যে তার কোন সমস্যা হল কিনা।


মূল লেখক : সোহেল রাবি ভাই



কবুতরের আচার আচরন ও সহজাত অভ্যাস (কেস স্টাডি) BD Online Pigeon Market

কবুতরের আচার আচরন ও সহজাত অভ্যাস (কেস স্টাডি)

Pigeon Discussion, Pigeon Diseases & treatment