রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

ভুল সবই ভুল (কবুতর কেস স্টাডি ৩য় পর্ব)

একদিন আমি মিরপুর থেকে মতিঝিল যাবার জন্য বাসে উঠলাম। চলার পথে জানালার পাশে বসে নানা ধরনের সাইন বোর্ড,বিল বোর্ড আর অ্যাড দেখছিলাম। এসব বিজ্ঞাপনে কত প্রতিশ্রুতি, এটা খেলে বুদ্ধি বাড়ে, ওটা খেলে তাড়াতাড়ি বাড়বে ইত্যাদি। হতাথ কন্টাক্টর আর এক যাত্রীর মধ্যে তুমুল ঝগড়া শুনে ঘার ফিরালাম। কি ব্যাপার জানার চেষ্টা করলাম। শেষে জানতে পারলাম যে, এক যাত্রী উত্তরা যাবেন কিন্তু ভুলে এই বাসে উঠে পড়েছেন! কিন্তু তিনি বাসের কন্টাক্টরকে ধমকাচ্ছেন। কেন সে তাকে বলেনি ইত্যাদি ইত্যাদি। শুধু এটাই না, তিনি যে শুধু ভাড়া দিবেন না তা নয় বরং উল্টো ভাড়া দাবি করে বসলেন। কন্টাক্টর ত মহা বিপদে পড়ল আর সে জন্য দুই একজন যাত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের বৃথা চেষ্টা করছিল। আমি ভেবে পেলাম না কোন পক্ষে যাব। যদি ন্যায় এর পথ ধরি তাহলে আমাকে বাস কন্টাক্টর এর সাপোর্ট করতে হয়। তাহলে আবার অন্য যাত্রীরা বলবেন ভাই আপনি যাত্রী হয়ে, কিভাবে আরেক যাত্রীর বিপক্ষে যাচ্ছেন। উনি এ পথে নতুন ইত্যাদি ইত্যাদি।



আল্লাহ্ তায়ালা মানুষকে সাধারন বিচার বুদ্ধি দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। কোনটা ভাল কোনটা মন্দ জ্ঞান দিয়েছেন। তারপর যদি মানুষ অজুহাত বানাই তাহলে সে রেহাই পাবে না। এখন আমি যদি আপনি বাজারে গিয়ে চাল চান, আর আপনাকে আটা দিয়া হয়, তাহলে কি বলবেন যে আমি নতুন তাই বুঝতে পারি নাই। বা আপনি কখনও আলু কিনতে গিয়ে পেয়াজ কিনবেন না আশা করি, তাই না। যদি আমাদের এই সব সাধারন বৈষয়িক জ্ঞান থাকে। তাহলে কেন আমরা সেটা অন্য ক্ষেত্রে ব্যাবহার করতে পারি না। কেন আমরা বার বার একই ভুল করি?! আপনি যেমন ভুল করবেন তার মাশুলও আপনাকে সেই পরিমাণই দিতে হবে। আর এই মাশুলের পরিনাম হইত আপনি বুঝছেন না, কারন এখানে আপনার জীবন জরিত নাই তাই…।


কিন্তু আমরা ভুলে যাই যে এখানে আরেকটি প্রাণীর জীবন জরিত। ক্রিকেটে যেমন যদি কোন সন্দেহ থাকে তাহলে তা ব্যাটসম্যান এর পক্ষে যায়। কিন্তু তারপরও যখন আপনি সেই সন্দেহ কে আউট না বলে আঙ্গুল তুলে দিচ্ছেন বা লাল বাটনে চাপ দিচ্ছেন। তখন আমরা হতবাক হওয়া ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না। মনে কষ্ট আর ব্যাথা নিয়ে থাকতে হয়। কিন্তু আপনি হয়ত জানতে পারছেন না। আমরা অনেক সময় না জেনেই একটা উপদেশ বা কথা সেই আঙ্গুল তুলার মতই আরেকজনের জীবনের লাল বাতি জ্বালিয়ে দিচ্ছি। তার জীবনটা হয়ত আমাদের ক্রিকেটার দের মত হইত মাথা নিচু করে ফিরছে না সেই না ফিরার দেশে…বরং সে হয়ত মাথা উচু করে খুশি মনেই যাচ্ছে, তার মনের মধ্যে এক অনর্থক সান্তনা নিয়ে যে, আমার মনিব ত আমাকে বাঁচানোর যথেষ্ট চেষ্টা করেছে, না পারলে কি করবে? আমাদের মত হয়ত সেও বলে, হায়াত মওত ত আর মানুষের হাতে না? আর এভাবেই সে তার মনে এক মিথ্যা সান্তনা নিয়ে পরম শান্তিতে তার নিরীহ চোখ টা বুজে আসে, তার কোমল দেহটা নিথর হয়ে আসে একসময়। আমরা অনেক ভাগ্যবান মানুষ হত্যার মত এদের যদি জবাবদিহিতার ব্যাবস্থা থাকত তাহলে হয়ত আমরা এত সহজে, এই প্রাণীটিকে নিয়ে বা তাদের জীবন নিয়ে এভাবে ছিনিমিনি খেলতাম না।


আমাকে কিছুদিন আগে একজন জানালেন যে, কবুতরের ভাল থাকার জন্য একজন জীবাণু নাশক ঔষধ temsen খাওয়া তে বলেছেন, একথা শুনে আমার মাথার চুল খাড়া হয়ে গেল! কেন? এতে কি উপকার হবে! তিনি জানালেন, এতে তার শরীরের বাইরের জীবাণু ত মরবেই, ভিতরের জীবাণু পর্যন্ত মারা যাবে। আমি বললাম ঠিক কথা ভাল উপদেশ। সেই সাথে আপনার কবুতরের সারা জীবনের যত জীবাণু আছে সেটাও মরে যাবে, আর কোন দিন রোগ বালাই হবে না। আর হলেও আপনি তা দেখতে পাবেন না। তিনি আমার রাগের ঝাঁজ তা প্রথমে না বুঝলেও পরে বুঝতে পারলেন। এটা কেন? কেন এভাবে মানুষ উপদেশ দিচ্ছেন? কোন কারন নাই…TV বা মিডিয়া তে নানা ধরনের সাবানের বিজ্ঞাপন প্রতিনিয়ত দেখছেন, যে কিছু জীবাণু নাশক সাবান গায়ে মেখে, নানা রোগ থেকে মুক্ত থাকছেন!? আর এটা দেখেই হয়ত মাথাতে এই আইডিয়াটা এসেছে। একজন আবার সেই জীবাণু নাশক দিয়ে গোসল দিতে বলছেন। তিনি হইত ভুলে গেছেন যে, এই ধরনের জীবাণু নাশক কবুতরের গায়ের জন্য না, বরং এটা খাচা,বা মেঝে বা বাইরের জীবাণু থেকে বাচার জন্য বা মুক্ত থাকার জন্য। আমি কখনও কোন ডাক্তার কে জীবাণু নাশক দিয়ে রোগ চিকিৎসা বা এর প্রতিরোধের জন্য বলতে শুনিনাই। কিন্তু তাহলে এই ধরনের মানুষ কেন, এই উপদেশ দিচ্ছেন, কারন ওই যে, ওনারা নিজেদের সেই আম্পায়ার দের মত ভাবেন। যেহেতু তাকে জিজ্ঞাস করা হয়েছে, যদি জানি না বলা হয়, তাহলে কেমন দেখাই। তাই ভুল হোক সিধান্ত ত একটা দিতেই হবে। আর তাই এই ধরনের লোক নানা ভুল সিধান্ত দিয়ে থাকেন। আর আমরা সেই বাসের যাত্রীর মত ভুল বাসে উঠে পড়ি, জিজ্ঞাস না করেই। তাহলে আসল দোষী কে?


পবিত্র কোরআন এ আল্লাহ্ বলেছেন, “যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই, তার পিছনে পড়ো না। নিশ্চয় কান, চক্ষু ও অন্তঃকরণ এদের প্রত্যেকটিই জিজ্ঞাসিত হবে।” (সূরা বনি ইসরাইল আয়াতঃ ৩৬)


সাধারন জ্ঞানের জন্য কি এম এ, বিএ, পাস করতে হয়? নাকি নিজের বিবেক বুদ্ধি খাটানই যথেষ্ট? আপনি এই যায়গায় আমি ত নতুন একথা বলে পার পাবেন না! যিনি ভুল উপদেশ দিচ্ছেন,তার থেকেও বেশি অপরাধী যিনি, তার বিবেক বুদ্ধি না খাটিয়ে অবলীলায় এগুলো ব্যাবহার করছেন বা এ ধরনের কাজ করছেন।


পবিত্র কোরআন এ আল্লাহ্ বলেছেন, “আর যদি তুমি দুনিয়ার অধিকাংশ লোকের মত চল তবে তারা তোমাকে আল্লাহ্র পথ থেকে বিচ্যুত করবে,তারা শুধু অনুমানের অনুসরন করে। আর তারা সুধুই মিথ্যা বলে।” (সূরা আনা-আম,আয়াতঃ১১৬)


আল্লাহ্ আরও বলেছেন,”দুর্ভোগ প্রত্যেক ঘোর মিথ্যাবাদী পাপীর” (সুরা জাজিয়া,আয়াতঃ৭)


জানা লোকদের অবস্থা সেয় মাহমুদুন নবীর গাওয়া সেই গানের মত, “আমি সাত সাগর পাড়ি দিয়ে কেন সৈকতে পড়ে আছি।” ছোট বেলায় একটা ছোট্ট ভুলের কারনে আমার মা আমাকে বেল্ট দিয়ে মেরেছিলেন, তার দাগ এখন আমি পিঠে বহন করছি। আমার নিজের অজান্তেই সেই দাগ আমি এখন পর্যন্ত মনের মধ্যেও বয়ে বেড়াচ্ছি, এখনও আমি কোন ভুল করতে গেলে মায়ের সেই মারের কথা মনে পরে যায়, আর পিঠের সেই দাগ আমাকে সেই সব ভুল যাতে না করি সে জন্য অনবরত মনে করিয়ে দেয়। আমারা সবাই এরকম ছোট বড় দাগ শরীরে বা জীবনে বহন করে বেড়াচ্ছি, কিন্তু পার্থক্য হল এই যে, আমরা কেউ উপলব্ধি করি আর কার সেই উপলব্ধিটা ভোতা হয়ে গেছে। আজ আমরা এক অশুভ প্রতিযোগিতায় লিপ্ত, আর সেটা নামের হোক আর যাই হোক।


আল্লাহ্ বলেছেন,”আল্লাহ ইচ্ছা করলে তোমাদের সবাইকে এক জাতি করে দিতে পারতেন, কিন্তু তিনি যাকে ইচ্ছা বিপথগামী করেন এবং যাকে ইচ্ছা পথ প্রদর্শন করেন। তোমরা যা কর সে বিষয়ে অবশ্যই জিজ্ঞাসিত হবে।” (সুরা আন নাহাল আয়াতঃ৯৩)


যারা সত্যিকারই কবুতরের বিভিন্ন বিষয় ভাল জানেন অর্থাৎ যারা বড় খামারি নামে পরিচিত, তারা সাধারণত মানুষের উপকার করতে চান না, কারন কি? জানা নেই, হয়ত ভাবেন, অরেকজনকে উপদেশ দিয়ে লাভ কি, বা হয়ত ভাবেন যে উপকার হলে ত আর নাম করবে না, কিন্তু অপকার হলে বদনাম করবে। কিন্তু কেন আমরা না বা বদনামের চিন্তা করব, আমরা ‘ফি সাবিলিল্লাহ…।’ হিসাবেই ত করব আল্লাহ্ ওয়াস্তেই ত করব আল্লাহ্ কে রাজি খুশি করার জন্নই ত করব।


আর তাই হয়ত এই ধরনের লোকদের সম্পর্কে আল্লাহ্ বলেন, “যারা কৃপণতা করে এবং মানুষকে কৃপণতার নির্দেশ দেয় এবং আল্লাহ্ নিজ অনুগ্রহে তাদের যা দিয়েছেন তা গোপন করে আল্লাহ্ তাদের ভালবাসেন না।”(সূরা আন নিসা,আয়াতঃ৩৭)


কিছুদিন আগে এক বিদেশী যিনি গার্মেন্টস শিল্পের সাথে জরিত, তাকে নিয়ে যাচ্ছিলাম, তিনি আমাকে একটি সাইন বোর্ডের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে বললেন ওটা কি দেখলাম একটি মধুর বোতলের ছবি দিয়ে বিজ্ঞাপন দিয়া, সেখানে লিখা আছে, “এখানে খাঁটি মধু পাওয়া যায়।” কিন্তু লজ্জাই বলতে পারলাম না, কথাটা ঘুরিয়ে অন্য প্রসঙ্গে চলে গেলাম। কেন? কারন তারা সবাই জানে মধুতে ভেজাল হবার কোন যুক্তি নেই, তাই খাঁটি কথাটাও লিখার কোন যুক্তি নেই…সেখানে লিখার দরকার ছিল…এখানে মধু পাওয়া যাই। আর আমরা সবাই নিঃসন্ধেহে সেটা কিনতে পারতাম। কিন্তু এটা আমাদের দেশে হয় না, আর তাই এখানে খাঁটি মধু,খাটি দুধ, খাঁটির খোঁজে দৌড়াদৌড়ি করতে হয়। আমাদের দেশে আজ সবক্ষেত্রেই একই অবস্থা, এই জন্যই ত কবুতরের বিজ্ঞাপনে দেখতে হয়, ভ্যাক্সিনেটেড, ইম্পরটেড, রিং এর পেয়ার, ডিজিজ ফ্রী ইত্যাদি। কেন? কারন আজ আমাদের মানুষের মধ্যেও ভেজাল…মনের মধ্যে ভেজাল…চিন্তা চেতনার মধ্যে ভেজাল…কাজে ও কর্মে ভেজাল…আর এর থেকে আপনি মুক্তি পাবেন না। কোথায় যাবেন আর কি করবেন আপনি আমি চিন্তা করে কিছুই করতে পারব না। তবে কিছু করতে না পারি এই সব লোকদের জন্য দোয়া ত করতে পারি, যেন আল্লাহ্ এসব লোকদের হেদায়েত দান করেন, এই ধরনের লোকদের মনের, চিন্তার, চেতনার মধ্যে যে রোগ আছে তা যেন ভাল করে দেন, এদের সত্য ও ভাল পথে চলার তৌফিক দান করুন(আমীন)। এছাড়া আপনি আমি আর কি বা করতে পারি। তবে হ্যা মনে রাখতে হবে, আমরা যদি অন্যায় এর প্রতিবাদ করতে শারীরিক ভাবে না পারি, তাহলে মানসিক ভাবে, তাও যদি না পারি তাহলে অন্তত পক্ষে তাদের জন্য পাশে ত একটু থুথু ফেলতে পারি! এটা আমার কথা না হাদিসের কথা। যাই হোক এখন সময় এসেছে, আপনার বন্ধু চিনেনিবার, আর যদি এটা ঠিকমত না করতে পারেন। তাহলে আমার পিঠের দাগের মত আপনিও আপনার মনের মধ্যে প্রতারনা আর প্রতারিত হবার,অবিশ্বাস ও বিশ্বাস হারানোর, ঠকবাজির মত দাগ বয়ে নিয়ে বেড়াতে হবে চিরকাল।


আল্লাহ্ পবিত্র কোরআনে বলেছেন,“হে বিশ্বাসীগন! তমাদের আপনজন ব্যাতিত অন্য কাউকেও অন্তরঙ্গ বন্ধুরুপে গ্রহন করনা। তারা তোমাদের বিভ্রান্ত(অনিষ্ট)করতে ত্রুটি করবেনা, যা তোমাদের বিপন্ন করে তাই তারা কামনা করে। তাদের মুখে বিদ্বেষ প্রকাশ পায় এবং যা তারা অন্তরে গোপন রাখে তা আরও গুরুতর। তোমাদের জন্য নিদর্শনসমূহ বিশদভাবে বিবৃত করছি, যদি তোমরা অনুধাবন কর। ”(সূরা আল ইমরান, আয়াতঃ১১৮)


এ প্রসঙ্গে আল্লাহ্ কোরআনে আর বলেছেন, “যদি তোমাদের কোন মঙ্গল হয় তারা দুঃখিত হয়, আর তোমাদের অমঙ্গল হলে তারা আনন্দিত হয়। এবং তোমরা যদি ধৈর্য ধর এবং সাবধান হয়ে চল তবে তাদের ষড়যন্ত্র তোমাদের কিছুই করতে পারবে না। তারা যা করে নিশ্চয় আল্লাহ্ তা পরিবেষ্টন করে রয়েছেন।” (সূরা আল ইম্রান,আয়াতঃ১২০)


মূল লেখক : সোহেল রাবি ভাই



ভুল সবই ভুল (কবুতর কেস স্টাডি ৩য় পর্ব) BD Online Pigeon Market

ভুল সবই ভুল (কবুতর কেস স্টাডি ৩য় পর্ব)

Pigeon Discussion, Pigeon Diseases & treatment

ভুল সবই ভুল (কবুতর কেস স্টাডি ২য় পর্ব)

স্কুল জীবনে ব্যাপারে মধ্যমানের ছাত্র ছিলাম অলসতার কারনে। সেই পড়া গুলই শুধু পরতাম যেগুলো গুরুত্বপূর্ণ মনে হত বা পরীক্ষায় কমন পড়ার সম্ভাবনা থাকত। আর শিক্ষা জীবন মোটামুটি এভাবেই পার করেছি। কিন্তু কর্ম ও ব্যাক্তি জীবনে এসে যেগুলো বাদ দিয়েছি সেগুলকেই আবার নতুন করে শিখতে হয়েছে। এর মানে হল জীবনে কোন কিছুকেই ফাকি দিবার কোন সুযোগ নেই। অর্থাৎ আমরা শিক্ষা থেকে পালিয়ে যেতে পারব কিন্তু জীবন থেকে না। জীবন আমাদের সব কিছুই শিখতে বাধ্য করবে। কেও হয়তো সহজে আর কেউ হয়তো অনেক মূল্য দিবার পর। আমাদের জীবনে যত সময় যাচ্ছে, আমরা সামনের দিকে এগোনোর বদলে উল্টো পথে হাঁটছি। আমরা যে শুধু উল্টো পথেই হাঁটছি তাই নয় আমাদের কমন সেন্স ও দিন দিন ভোতা হয়ে যাচ্ছে। আর তাই হয়তো কন্তি সঠিক আর কোনটি নয় সেটি বিবেচনার শক্তিও নাই।



যেমন আমাদের কবুতর খাতকেই ধরুন না কেন…এখানে সবাই নিজেকে বড় মনে করে আর করতে চাই। আর কে কার চেয়ে বড় তা নিয়ে চলে প্রতিযোগিতা । আর এটা করতে গিয়ে মানুষ নানা রকম ভুল তথ্য দিচ্ছে প্রতিনিয়ত আর এটা করতে তারা পিছপা হয়না, আর একটু লজ্জাবোধ ও জাগে না মনে। অথবা এটা নিয়ে তারা চিন্তাও করেন না যে তার একটা মন্তব্য বা কথা বা উপদেশ অন্যের জীবন হানীর কারন হতে পারে। কবুতরের ভালবাসার কারনে প্রতিদিন অনেক কল গ্রহন করতে হয়। আর অধিকাংশ আসে নানা কবুতরের সমস্যা নিয়ে, যাদের অনেকে সব ধরনের ঔষধ ব্যাবহারের পর যখন কবুতরের অবস্থা চরম হয়ে যায়। আর যিনি এর মূল্য দিচ্ছেন তিনিও এই ব্যাপারটাকে খুবই স্বাভাবিক ভাবেই নেন। যেন তিনি ব্যাপারটা জানেন যে এরকম হবে। এটা কি স্বাভাবিক? এরা কি আসলেই কবুতর প্রেমী? না কখনই না। যারা কবুতরকে গিনিপিগের মত কবুতরের উপর ঔষধ প্রয়োগ করেন, তারা অন্য কে উপদেশ দেন ঠিকই কিন্তু নিজেরা কিন্তু আবার সতর্ক এব্যাপারে। কারন সেসব লোক তখনি নিজেরা এই ঔষধ নিজেরা প্রয়োগ করেন যখন দেখেন আর ফলাফল ভাল। এরা যদিও নিজেদের কবুতর প্রেমী হিসাবে দাবি করে। কিন্তু তারা যদি নদীর পারে গলায় দরি বেধেও মাইক লাগিয়ে চিৎকার করতে থাকে তাহলেও সে নিজেকে কবুতর প্রেমী বানাতে পারবে না। এরা আসলে এক জন হিংসুক,অহংকারি একধরনের লোক যারা সুনামের জন্য ছুটে বেড়ায়। কিন্তু তারা ভুলে যায় যে,আল্লাহ যাকে সম্মানিত করতে চান তাকে কেউ বদনাম করতে পারে না আর যাকে অসম্মানিত করতে চান, তাকে কেউ সাহায্য করতে পারবে না। অনেক মানুষ আছেন যারা নতুনের দোহায় দিয়ে পার পেতে চান।


সেদিন একজন কে বললাম ১ সিসি ঔষধ প্রয়োগ করার জন্য তিনি পুরো ১ শিশি ঔষধ দিয়ে দিলেন, অজুহাত হিসাবে বললেন আমি ত নতুন তাই বুঝি নাই। নতুন বা পুরাতন যেই হন না কেন, যদি আপনার সাধ্রন জ্ঞান না থাকে তাহলে, আপনাকে অনুরধ করবো আপনি কবুতর পালা ছেড়ে দিন বা পালার কথা মাথায় আনবেন না। আমরা যদি একটু নিজেদের দিয়ে চিন্তা করি তাহলে দেখতে পাব যে, আমাদের যখন ঠাণ্ডা লাগে তখন আমরা কি অ্যান্টিবায়টিক ব্যাবহার করি? কিন্তু কবুতরের ক্ষেত্রে অবলিলায় ব্যাবহার করি। আমাদের যখন ডায়রিয়া হয় তখন কি অ্যান্টিবায়টিক ব্যাবহার করি? কিন্তু কবুতরের ক্ষেত্রে অবলিলায় ব্যাবহার করি! বহিঃ বিশ্ব ঔষধের উপর থেকে নির্ভরতা কমানর চেষ্টা করছে। যখন ঔষধ থেকে দূরে থাকার জন্য নানা ধরনের আকুপাংচার,আকুপ্রেসার রেফ্লেক্সসলজির মত থেরাপি ব্যাবহার করছে। যখন হারবাল ও হোমিও ঔষধের প্রতি বেশী ঝুকছে। তখন আমরা ৩য় ও ৪র্থ জেনারেশন এর মত উচ্চমানের অ্যান্টিবায়টিক ব্যাবহারের এক মহা প্রতিযোগিতায় লিপ্ত। কেন? শুধুই ব্যাক্তিগত প্রচার ও প্রসারের জন্য। অল্পতে বেশী সুনাম ও যশ কামানর জন্য। আমাদের মনে সেই বাংলা সিনেমার মত দেখা যায় যে নায়ক রাস্তা দিয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে বড়লোক হয়ে গেল। এই রকম অল্পতে কিছু হয়ে যাওয়া,আর সেটা যেকোনো মুল্যেই হোক না কেন। নকল করেই হোক আর যেভাবেই হোক। এরা সেই ব্যাক্তি যারা চাই না যে কবুতর খাত টি স্বয়ং সম্পন্ন হোক, দিনে দিনে বেড়ে উঠুক। তারা হিংসা করে, যেন তারা ছাড়া আর কেউ এই খাতে বড় না হতে পারে। আর তারই জন্য তাদের চেষ্টারও কমতি নাই, এই সেক্টর কে ধ্বংস করার জন্য। কিন্তু তারা হয়তো ভুলে গেছে যে, সবই আল্লাহ্‌র সৃষ্টি আর আল্লাহ ছাড়া কার বিন্দু মাত্র ক্ষমতা নেয় কোন প্রাণীর বিন্দু মাত্র ক্ষতি করার। কখনই তারা সফল হয় না বরং তারা আল্লাহ ও তার ফেরেশতাদের লানতের/অভিশাপের দাবানলে নিঃশেষ হয়ে যাবে একদিন। যাই হোক আসুন আমার কিছু ভুল সম্পর্কে জেনে নেই যা অধিকাংশ মানুষ করে থাকেঃ


১) Cosomix Plus,ESB30 এই ঔষধ সাল্মনিলা ভাল করে ঠাণ্ডা দূর করে ইত্যাদি ইত্তাদি, যা আসলেই সঠিক না। এরপরও মানুষ একই ভুল করে যাচ্ছেন নিয়মিত ভাবে।


২) ক্রিমির ঔষধ যেকোনো একটা প্রয়োগ করলেই হয়, যা আসলেই ঠিক না, ভাক্সিন ও ক্রিমির ঔষধ প্রয়োগের ফলে কবুতরের সবচেয়ে বেশী ক্ষতি করে, বিভিন্ন অঙ্গ প্রতঙ্গে আর তাই ভিটামিন ও মিনারেলস দিয়ে আস্তে আস্তে ঠিক করতে হয়। আর তাই এই দুটি যিনি নির্বাচনের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হয় সবচেয়ে বেশী। মানুষের ক্রিমির ঔষধ ব্যাবহারের আসন্ন ক্ষতি সম্পর্কে না জেনেই অনেকে এই ধরনের ঔষধ ব্যাবহারের পরামর্শ দেন আর কিছু লোক এগুলো না জেনেই ব্যাবহার করছেন অবলিলায়। আর তার মূল্য কম দিচ্ছেন না। কিছু নিদিষ্ট ঔষধ ছাড়া ও নিয়ম অনুসরন ছাড়া ক্রিমির ঔষধ ব্যাবহার করা থেকে সতর্ক থাকতে বিশেষ ভাবে অনুরধ করছি।


৩) কবুতরের চোখের জন্য নানা জন নানা ধরনের ড্রপ ব্যাবহারের পরামর্শ দেন, কিন্তু এর সতর্কতা সম্পর্কে বেশিরভাগ লোকই জানেন না। চোখের ড্রপ ব্যাবহারের সময় সিমা ৩-৫ দিন এর মধ্যে যদি ভাল না হয় তাহলে এক্সপার্ট এর পরামর্শ নিতে হবে, তা না হলে আপনার কবুতর সারা জীবনের মত অন্ধও হয়ে যেতে পারে।


৪) যে কোনো অ্যান্টিবায়টিক প্রয়োগের আগে খেয়াল করুন যে, আপনার কবুতর খাওয়া বন্ধ করেছে কিনা, কেবল এর পরই অ্যান্টিবায়টিক প্রয়োগ করুন। এর প্রয়োগের পর ২-৩ দিন খেয়াল করুন এর পায়খানার রঙ পরিবর্তন হয়েছে কিনা দেখুন। যদি পরিবর্তন না হয় তবে তখনি কেবল অন্য ওষুধ প্রয়োগ করুন। আর অ্যান্টিবায়টিক প্রয়োগের সময় সাথে আগে বা পরে অবশ্যই স্যালাইন দিন। আর অ্যান্টিবায়টিক এর সাথে কোন ভিটামিন মিক্স করবেন না।


৫) প্রায়ই দেখা যায় যে কাঙ্কার বা পক্স হলে অনেকে এর চামড়া উঠিয়ে ফেলতে বলেন,কিন্তু এতে সংক্রমণ হবার সম্ভাবনা বেশী থাকে।


৬) অনেকেই আছেন যারা পাতলা পায়খানা দেখলেই অস্থির হয়ে যান, কিন্তু কিছু পায়খানা আছে যেগুলো সাধারন, ফলে আগে পায়খানার ধরনটা নির্ণয় করতে হবে।


৭) বেশিরভাগ খামারিই ভাইরাল ও ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ এর পার্থক্য করতে পারেন না, আর না জেনেই অ্যান্টিবায়টিক প্রয়োগ করেন। কিন্তু ভাইরাল সংক্রমণ এ কোন অ্যান্টিবায়টিক কাজ করে না। যেমনঃ থান্দা,পক্স, ডায়রিয়া ইত্যাদি।


৮) সবুজ পায়খানা হলেই অনেকে মনে করেন রানিখেত, সাল্মনিলাইত্তাদি রোগ হয়েছে। যা আসলে ঠিক না, সবুজ পায়খানা খাবারের কারনেও হয়।


৯) অধিকাংশ খামারি সাদা পায়খানা নির্ণয়ে বিশেষ অসুবিধায় পরে থাকেন, সাদা পায়খানার সাথে অন্য অংশ থাকলেও তারা সাদা অংশটায় খেয়াল করেন। কিন্তু রোগ নির্ণয়ে পর্যবেক্ষণ টা অনেক বেশী জরুরি।


১০) শীতে ডিম বাচ্চা করতে হয়না বা শীতে কবুতর কম ডিম পারে বা শীতের সময় কবুতরের ডিম বাচ্চা করতে অসুবিধা হয়। এই ধরনের নানা কাহিনী শুনা যায়। আসলেই কথাটা কি ঠিক ? মোটেই না বরং একটু খোজ নিয়ে দেখুন ঘটনাটা ঠিক উল্টো। আপনি যেকোনো সময় ডিম বাচ্চা করেন না কেন, আপনাকে সুষম খাদ্য ও ভিতামিন/মিনারেলস আর বিস্রাম দিবার ব্যাপারটা একটু খেয়াল রাখবেন। আর ২৪ ঘণ্টা খাবার ও পানি নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে যেকোনো ঋতুতেই ডিম বাচ্চা করতে আপনার কোন অসুবিধা হবে না।


আপনি যাই করুন কিছু ব্যাপারটা আপনাকে ভাল করে খেয়াল রাখতে হবে। যেমনঃ

ক) সঠিককভাবে রোগ পর্যবেক্ষণ ও নির্ণয়।

খ) রোগ অনুযায়ী ঔষধ নির্বাচন ।

গ) রোগের অনতি বিলম্বে চিকিৎসা শুরু,ঔষধের সঠিক মাত্রায় প্রয়োগ ও পরিশেষে ধৈর্য ধারন করা।


এগুলি নিরাময়ের অন্যতম হাতিয়ার হিসাবে ধরা হয়। আর আপনি যদি এটি করতে অক্ষম হন তাহলে আপনার সমস্থ পরিশ্রম বিফলে যাবে। সর্বোপরি আমাদের খেয়াল রাখতে হবে যে আমাদের উদ্দেশ্য শুধু রোগ নির্ণয় না, রোগ নির্ণয়ের পরে এর সঠিক চিকিৎসাও এর পর সঠিকনিয়মে ডিম বাচ্চা করা। আর এই ব্যাপারটা আমরা অনেক সময় ভুলে যাই। একজন কবুতর প্রেমী এমন কোন কাজ করতে পারে না যাতে কবুতরের কোন ক্ষতি হয়। আপনি কত বছর কবুতর পালেন এটা আপনার ভালবাসার মাপকাঠি না বা সেটা আপনার অভিজ্ঞতার বা আপনি যে একজন এক্সপার্ট সেটাও নির্দেশ করে না। আপনি আপনার কবুতরের একমাত্র অবিভাবক আর আপনার থেকে আপনার কবুতরের ভাল মন্দ আর কেউ বুঝবে না। আর তাই আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে যে আপনি যার কাছে থেকে উপদেশ গ্রহন করছেন সে আদৌ কবুতর সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান আছে কিনা বা তিনি এই জ্ঞান ধারন করেন কিনা তা বিবেচনার দায়িত্ব আপনার। আপনি যদি এই ব্যাপারে ভুল করেন তাহলে আর পরের দায়িত্ব টা আপনার উপর বর্তায়। আর আপনি তখন এই ব্যাপারে অন্য কাউকেই দোষারোপ করতে পারবেন না। পরিশেষে বলতে চাই যে সবায় যদি ভুল পথে যাই, তাহলে সেটাই যে সঠিক তা নয়। এটা আপনার সাধারন জ্ঞান ও দৃষ্টি ভঙ্গি যা আপনাকে সঠিক পথ নির্দেশনা দিবে।


মূল লেখক : সোহেল রাবি ভাই



ভুল সবই ভুল (কবুতর কেস স্টাডি ২য় পর্ব) BD Online Pigeon Market

ভুল সবই ভুল (কবুতর কেস স্টাডি ২য় পর্ব)

Pigeon Discussion, Pigeon Diseases & treatment

ভুল সবই ভুল (কবুতর কেস স্টাডি ১ম পর্ব)

পবিত্র কোরআন এ আল্লাহ বলেছেন, “পড় তোমার প্রভুর নামে যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন।”


“পড়” এই আয়াত এর তাফসির করা হয় তাহলে বুঝা যায় যে আল্লাহ বলেছেন যে পড়তে বা জানতে। কিন্তু আমরা পড়তে পছন্দ করিনা শুনতে বেশি পছন্দ করি, আর তাই নানা ধরনের কুসংস্কার আর ভুল ধারনা আমাদের গ্রাস করে ফেলেছে। আমাদের অবস্থা এরকম যে সবই জানি কিন্তু কিছুই জানি না। অনেকের কাছ থেকে শুনতে পায় তারা বলে থাকেন। অনেকের ধারনা বড় খামারি বলতে বেশি কবুতর থাকলেই বুঝে, আসলেই কি তাই। আসলে তা না, আপনার কাছে হাজার কবুতর থাকতে পারে কিন্তু আপনি ভাল মত পালন করতে পারেন না, বাচ্চা তুলতে পারেন না, কবুতর বাচাতে পারেন না, ঠিকমত খেয়াল রাখতে পারেন না। তাহলে আপনাকে বড় খামারি বা কবুতরবাজ বলার কোন কারন নেই, আপনি যেই হন না কেন। আর আপনার যতই নাম থাকুক। তাতে কিছু যাই আসে না। আপনি যদি মনে করে থাকেন, আরে এটা ত একটা সাধারন একটা প্রাণী। এরা আর কি বুঝবে। তাহলে আপনাকে একটু বলি যে আপনি একটা ভুলের রাজ্যে বাস করছেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তাদের অনুভুতি আপনার আমার থেকে অনেক অনেকাংশে বেশী। তারা খুব সহজেই বুঝতে পারে যে আপনি এই প্রাণীটিকে অবজ্ঞা করছেন কিনা? আপনি একে কতটা ভালবাসেন ইত্যাদি। শুধু তাই নয় প্রানিদের মাঝে টেলিপ্যাথি নামক যে মাধ্যম আছে টা খুবই শক্তিশালী। তারা কোন ভাষা ব্যাবহার করে তাদের মনের সমস্থ কথা শুধু ২ একটা শব্দ ব্যাবহার করে প্রকাশ করে ফেলে। যা মানুষের ক্ষেত্রে খুবই কঠিন একটা ব্যাপার। এই টেলিপ্যাথির ব্যাপারটা নিয়ে কেস স্টাডি হিসাবে লিখার আশা রাখি। আমরা সাধারণত এই প্রাণী কে নিয়ে কিছু ভুল ধারনা পোষণ করি, কি সেগুলো? আসুন জেনে নেই। যেমনঃ


১) বাচ্চা কবুতর কে ভিটামিন ও মিনারেলস দিতে হয় না। বা যখন ডিম ফুতে তখন এর পিতামাতা কে ভিটামিন ও মিনারেলস দিতে হয় না। আমারা যদি একটু আমাদের জীবনের ব্যাপারে একটু খেয়াল করি তাহলে দেখবো যে,আমাদের মায়েদের যখন বাচ্চা হয়, তখন তাদের আর বেশি ভিটামিন ও মিয়ারেলস দিয়া হয় যাতে বাচ্চা বেশি দুধ পায়। এখন যদি আমারা কবুতরের দিকে খেয়াল করি তাহলে দেখবো তাদের বাচ্চা দের কেও তারা দুধ খাওয়াই প্রথম ১০-১২ দিন পর্যন্ত তাহলে তাদের কেন ভিটামিন ও মিনারেলস দিয়া যাবে না? অনেকেই এর উত্তর দিতে পারবে না,জানি। তাহলে কেন এই ভুল কথা ছড়ান হয়।


২) গরমের সময় ভিটামিন ও মিনারেলস দিতে বা তেল বীজ/ ডাল জাতীয় খাবার কবুতর কে দিতে হয় না। আমারা আবার যদি একটু আমাদের জীবনের ব্যাপারে একটু খেয়াল করি তাহলে দেখবো যে, আমরা গরম বা শীতে শরীরে ভিটামিন বা মিনারেলস এর ঘাটতির কারনে কিন্তু কখনি এটা বন্ধ করি না। বা গরমের সময় আমরা কিন্তু খাবার খাওয়ার ব্যাপারে কোন নিয়ম মানি না। কিন্তু কবুতরের ব্যাপারে তা সহজে মেনে নেয়। আপনি আপনার জীবন থেকে এদেরকে আলাদা করে দেখার কোন সুযোগ নাই।


৩) ভ্যাকসিন না দিলে কবুতর মারা যায়। আর এই ভ্যাকসিন দিলে সাল্মনিল্লা সহ সকল রোগ থেকে নিরাপদ থাকে কবুতর। কিছুদিন আগে ভ্যাকসিন নিয়ে পোস্ট দিয়েছিলাম, উদ্দেশ্য এর সম্পর্কে সতর্ক করা। আর এর বিপরীত প্রতিক্রিয়া সম্পরকেও সচেতন করা। আর এটাও জানান যে ভ্যাকসিন না দিলেও কোন অসুবিধা নাই। কিন্তু এর ফল হল উল্টো। এই পোস্ট এর সুবিধা গ্রহন করার জন্য এক শ্রেণির কতিপয় কিছু লোক ভাক্সিনের প্রচার শুরু করলেন। আর আগেও এ রকম হয়েছে। যাই হোক যেটা বলতে চাই যে ভ্যাকসিন না দিলে যে সমস্যা হয়, ভ্যাকসিন দিলে তার থেকে বেশী হয়। একটা ভ্যাকসিন ১/২ করে মিক্স করে কয়েকবার ব্যাবহার করা যায়। এটাকে পুরো ভায়াল ব্যাবহার করতে হয়। যদি…আপনি সত্যিই ভ্যাকসিন ব্যাবহার করতে চান।


৪) কবুতর সবার সহ্য হয় না বা কবুতর সবার কাছে টিকে না। অনেকেই বলে থাকেন যে, কবুতর সবার কপালে সহ্য হয় না। হয়ত মারা যায় বা উড়ে পালিয়ে যায়। কথাটা কি আসলেই কি সত্য? জি না একেবারেই না। তবে হাঁ আপনি যদি কবুতর কে ঠিক মত খাবার না দেন, পানি না দেন, ঠিকমত চিকিৎসা না করেন। তাহলে আপনার ভাগ্যকে আর কুসংস্কারকে দোষ দিয়া ছাড়া আর কিছু করার থাকবে না। তাই বলি কবুতর সবারই সহ্য হবে যদি আপনি ঠিকমত পালন করতে পারেন আর জানেন।


৫) শীতে কবুতর বেশী আসুস্থ হয়। শীতে দেখা যায় যে কবুতরের দাম সবচেয়ে নিন্ম পর্যায়ে নেমে আসে। কারন হিসাবে অনেকে ভয় পান যে, শীতে কবুতরের রোগ বালাই বেশী হয়। কিন্তু কথাটা আসলেই ঠিক না। রোগ বালাই শীত বা গ্রীষ্ম বলে আসেনা। আমাদের দেশে অধিকাংশ খামার বাইরে বা ছাদে হয় আর এই সব জাইগাই ঠাণ্ডা একটু বেশী লাগে আর এই কারনেই রোগ একটু বেশী হয়। এটা মানুষের ক্ষেত্রে কম বলা যাই না। শীতে কবুতরের রোগ বালাই বেশী হয় এই প্রচার করে এক শ্রেনীর লোকরাই বেশী ফয়দা লুটে থাকে। তাই এই ব্যাপারে চিন্তা করার সময় এসেছে। আপনি যদি কিছু সাধারন নিয়ম মেনে চলেন তাহলে শীত বা গ্রীষ্ম সবই আপনার কাছে সমান মনে হবে।


৭) কবুতর কে প্রতিদিন রোদে দিতে হয় তা না হলে কবুতর মারা যায় বা বেশি রোগ বালায় হয়। আমাকে একজন নামকরা কবুতর বিশেষজ্ঞ বলেছিলেন যে কবুতর কে প্রতিদিন রোদে দিতে হয়, না হলে মারা যায়, ব্যাপারটা আমাকে ভাবিয়ে তুলল, আর তাই বাইরের সব বিশেষজ্ঞ দের বই পড়লাম, উপলব্ধি ও চিন্তা করলাম করলাম। সব fancy কবুতর বাংলাদেশর বাইরে থেকে আসে…আর আমরা সবাই জানি যে, বাংলাদেশে যে রকম যে রকম রোদ পাওয়া যায় বিশ্ব এর আর কোন দেশের সেরকম পাওয়া যায় না। তাহলে রোদ নিয়ে চিন্তা করি কেন। আমি কবুতর বারান্দায় পালি। যেখানে রোদ কি, রোদের ছিটেফোঁটাও পড়ে না। কিন্তু তার পরও আলহামদুলিল্লাহ্‌ তার ভাল আছে। আমার মত অনেকি এই ভয় বুকে নিয়ে দিনপাত করেন যে হয়ত রোদ না পেলে তাদের কবুতরের কি হবে। বিশ্বাস করুন আপনি যদি আপনার কবুতর কে ঠিক মত যত্ন নেন তাহলে কোন কিছুরই প্রয়োজন পড়বে না।


৮) কবুতরের ফোঁড়া হলে অস্ত্রপ্রচার করতে হয়, না হলে ভাল হয় না। একদিন একজন কল দিলেন যে তার কবুতরের পাখাই একটা ফোড়ার মত হয়েছে। কি করব? এই তাকে ঔষধ বললাম কিন্তু তার মনপুত হল না। তিনি বললেন যে কবুতর এর একজন জনাব অ্যান্টিবায়টিক তাকে বলেছেন যে, অস্ত্রপ্রচার করতে হবে। আমি তাকে জানালাম আপনি কবুতরের অভিভাবক আর আপনি যেটা ভাল মনে করবেন সেটাই করা উচিৎ। আমাদের একটা কথা খেয়াল রাখতে হবে যে, কবুতর কে ভাল করার পাশা পাশি তার দ্বারা ডিম বাচ্চাও করাতে হবে। তবে কেউ যদি চিন্তা করে যে না আমার প্রথমটার দরকার তাহলে কোন কথাই নাই। অস্ত্রপ্রচার করলে কবুতর হয়ত ভাল হয়ে যাবে কিন্তু এর বিপরীত প্রতিক্রিয়া হয়ত তাকে বয়ে বেরাতে হবে অনেক দিন। এমনকি তার জীবনও দিতে হতে পারে।


৯) কবুতর কে বাইরের গ্রিট খাওয়াতে হয় না। আমাকে এক কবুতর পালক গর্ব করে জানালেন যে, তিনি কবুতর কে বাজারের গ্রিট দেন না। জিজ্ঞাস করলাম কেন? তিনি জানালেন যে বাইরের গ্রিট এ অনেক জীবাণু থাকে। আমি তাকে জিজ্ঞাস করলাম প্রথম যখন কবুতর পালা শুরু করেন তখন কোন গ্রিট দিতেন। কাচুমাচু করে বললেন তখন ত জানতাম না তাই। আসলে কি তাই। মনে হয় না। আসলে আমরা সকলেই কিছু লোকের কাছে জিম্মি হয়ে আছি। কেন? কারন কতিপয় কিছু লোক ব্যাবসায়িক চিন্তা থেকে আমাদের মাথাই এই চিন্তা ভরে দিয়েছে যে বাইরের গ্রিট খাওয়ালে কবুতর অসুস্থ হয়ে যাই। যদি তাই হয় তাহলে ত খাবারের ভিতর আর বেশী পরিমান জীবাণু থাকার কথা ছিল? কয়জন আছে যারা খাবার ওয়াশ করে খেতে দিয়। গ্রামে গঞ্জে যারা গিরিবাজ পালে তারা কয়জন আছে যে নিজের তৈরি গ্রিট দেয়। সব কবুতরি ত ইটভাটা থেকে ইটের গুড়া খেয়ে আসে। তাদের ত কখনও অসুস্থ হতে দেখি না? তাহলে, এটাই হল আমাদের নিজেদের তৈরি কারিশমা। গ্রিট হোক বা খাবার যেখানকারই হোক একটা নিদিষ্ট সময় পড় আমি যদি রোদে না দেন বা গরম না করেন। তাহলে ফাঙ্গাস পড়বেই। তাই এই বদ্ধমূল ধারনা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। যদিও অনেকে আবার মনে করেন গ্রিট ডিম গঠনে সাহায্য করে থাকে। কিন্তু আসলেই এই ধরনের কথা সঠিক না। গ্রিট মুলত কবুতরের হজমের জন্য ও মুখে যে সাদা প্রলেপ পড়ে বা মুখে যে মিউকাস হয় তা থেকে মুক্ত রাখে।


১০) শাকসবজি কবুতর কে দিতে হয় না। আকদিন এক বিশেষজ্ঞ আমাকে জানালেন যে ধনে পাতা কবুতর কে দিলে তার ব্রিডিং এর অসুবিধা হয় (অর্থাৎ এর সেক্স পাওয়ার নষ্ট হয়ে যায়।) খুবিই আশ্চর্য হলাম কারন বাংলাদেশর খুব কম লোকই আছেন যিনি ধনে পাতা পছন্দ না করে থাকেন। তার মানে কি আমাদের সকলেরই…। গাজর বা অন্য শাকসবজি কবুতরের জন্য ভাল না। যায় হোক এইসব লোকদের আমার কিছু বলার নেই সুধুমাত্র দুয়া করা ছাড়া।


১২) হারবাল ঔষধ কবুতরের জন্য ভাল না। হারবাল ঔষধ বিশ্ব জুড়ে সবচেয়ে সমাদৃত। বিশেষ প্রাণীদের জন্য। আমি হারবার ঔষধ সবচেয়ে বেশী পছন্দ করি। আর প্রতিরোধ হিসাবে এর থেকে ভাল এর কিছু নাই। কিন্তু আমাদের দেশে অনেক লোকেরই এই ব্যাপারটা নিয়ে অ্যালার্জি আছে। কারন আমরা একটু বেশী মাত্রায় শিক্ষিত তাই হয়ত।


১৩) দুই ধরনের অ্যান্টিবায়টিক বা ভিটামিনের সাথে অ্যান্টিবায়টিক। কিছুদিন আগে পশু হাসপাতাল এর এক ডাক্তার এক কবুতর প্রেমী কে Oracin K + Doxivet একসঙ্গে দিতে বললেন। অথচ ২ টা অ্যান্টিবায়টিক একসঙ্গে দিবার মারাত্মক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে হয়ত তিনি তেমন জানেন না। অনেকে আবার অ্যান্টিবায়টিক এর সাথে নানা ভিটামিন যোগ করতে বলেন। অথচ অসুস্থ হলে এর কুফল সম্পর্কে জানেন না। অনেকেই আবার এই অ্যান্টিবায়টিক প্রতিরোধক হিসাবে ব্যাবহার করতে বলে থাকেন। কেন…কারন অনেক কোম্পানির মড়কে লিখা দেখে এই সিধান্ত নিয়ে থাকেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে অ্যান্টিবায়টিক কখনই প্রতিরোধের ব্যাবস্থা হতে পারে না!


১৮) এছাড়াও আর ভুল কথা মানুষ প্রচার করে থাকে যেমন- কবুতর কে বেশি খাবার ও পানি দিতে হয় না। ডিমে রোদ পরলে বা পানি পরলে ডিম নষ্ট হয়ে যায়। অসুস্থ কবুতর কে ছোলাবুট ভিজিয়ে খাওয়াতে হয়, বয়লার গ্রয়ার দিতে হয়! কবুতর অসুস্থ কবুতরকে রোদে দিতে হয়। সামাজিক সাইট পোস্ট দিলেই বড় ব্রীডার হওয়া যায়। এগুলোর সঠিক বিচারের দায়িত্ব আপানার।


ইদানীং কবুতরের বিভিন্ন সাইট গুলোতে নানা জন নানা ধরনের ঔষধ প্রয়োগের উপদেশ দিচ্ছেন, জেনে বা না জেনে। কিছু যায় আসে না তাদের। কারন তিনি ত আর তার কবুতরের ক্ষেত্রে এই উপদেশ দিচ্ছেন না। আর তিনি যে ঔষধ প্রয়োগ করতে বলছেন তিনি নিজেও কখনও তার কবুতর কে মনে হয় না সেই সব ঔষধ প্রয়োগ করেন বা করেছেন। আরেক দল লোক আছেন যারা জ্ঞান পাপী! তারা অনেক পুরান লোক সবই জানেন তারপর মজা নিবার জন্য প্রশ্ন করেন। আরেকদল লোক আছেন যারা একই পোস্ট নিয়ে মাসের পর মাস বিভিন্ন গ্রুপ এ প্রশ্ন জিজ্ঞাস করেন। আর সরল সোজা লোকগুলো উত্তর দিতে থাকেন। আর ১২ জন বার রকমের উপদেশ দেন। ফলে আগন্তকরা বিপাকে পরেন, কি করবেন বুঝেই পান না। এরা কারা? আর কিই বা এদের উদ্দেশ্য? আসলেই কি এরা সত্যিকার কবুতর প্রেমী? আমরা সবাই দাবি করি যে তারা প্রকৃত কবুতর প্রেমী…। কিন্তু কাজে কর্মে এর এর উল্টাটা প্রদর্শন করে থাকে। আজ কবুতর খাতটি এক অস্থিতিশীল খাতে পরিনত হয়েছে। শেয়ার বাজারের মত। কারন কি? কিছুই না…সেই চক্র…যারা নিজেরা উচ্চদামে কবুতর বিক্রি করে থাকে, কিন্তু বাযারে আবার তারাই তাদের লোক দিয়ে সেই কবুতর ৩ গুন কম দামে বিক্রি করে থাকেন। বাজারকে নষ্ট করার জন্যই। কেন কারন তারা এতদিন মনপলি ব্যাবসা করে আসছে। আর তারা যদি প্রতিযোগী কমাতে পারে তাহলে তাদেরই লাভ…। এরা আর এদের সেই চক্রটি নানা গ্রুপ এ নানা বিভ্রান্তি ছড়ায়। আর এভাবেই দিনে দিনে তারা নিরিহ ছোট কবুতর খামারি দেরকে নিরুৎসাহিত করছেন। আপনি যদি সত্যিকার কবুতর প্রেমী হন তাহলে সারাদিন মাইক দিয়ে বলে বেড়ালে হবে না। আপনাকে মনে প্রানে বিশ্বাস করতে হবে। আর সেটা কাজেকর্মের মাধ্যমেও প্রকাশ করতে হবে। আপনি যদি সত্যিকার কবুতর প্রেমী হন তাহলে বাক্তিগত সুনামের জন্য উপকার করবেন না। আল্লাহ্‌র ওয়াস্তে সাহায্য করবেন, সেই প্রাণীটিকে ভালবেসে সাহায্য করবেন, নেকি কামানর আশা নিয়ে সাহায্য করবেন, প্রকৃত জ্ঞান অর্জন করে সাহায্য করবেন। তবেই আমরা আমাদের অভীষ্ট লক্ষে পৌছাতে পারব।


মূল লেখক : সোহেল রাবি ভাই



ভুল সবই ভুল (কবুতর কেস স্টাডি ১ম পর্ব) BD Online Pigeon Market

ভুল সবই ভুল (কবুতর কেস স্টাডি ১ম পর্ব)

Pigeon Discussion, Pigeon Diseases & treatment

বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

English upper tail ren pigeon pair sale


English upper tail ren pigeon pair sale BD Online Pigeon Market

English upper tail ren pigeon pair sale

কবুতরের গ্রীষ্ম কালীন মাসিক ছক

কবুতরের গ্রীষ্ম কালীন মাসিক ছক আমাদের দেশে ঋতু পরিবর্তন এর সাথে সাথে কবুতরের রোগ বালাই ও তাদের ধরন পরিবর্তন করতে থাকে। আর আমাদের কম বেশি সকলের বাসায় বাচ্চাদের ক্ষেত্রে একটু বেশি খেয়াল নিতে হয় এই সময়ে। কারন বাচ্চাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা একটু কম থাকে, আর তাদের নাজুক স্নায়ু এর কারনে। বাচ্চাদের মত আমাদের বাসাতে সখের বশে নানা ধরনের পোষা প্রাণী পালন করে থাকি, আর সেগুলোর মধ্যে কবুতর অন্যতম। আর রোগের ক্ষেত্রে সৌখিন কবুতর (fancy pigeon) রোগ বালাইয়ের দিক দিয়ে একটু বেশি এগিয়ে। কিছু হলেই রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ে। সেটা মৌসুম পরিবর্তন, ও পরিকল্পিত ব্যাবস্থাপনা, একটু কম পরিচর্যা ইত্যাদি এদিক ও দিক হলেই দেখা যায় সমস্যা শুরু। কিন্তু আমরা যদি একটু খেয়াল রাখি তাহলেই এ সব অনাখাংখিত পরিস্থিতি থেকে মুক্ত হতে পারি অনায়াসে। যেমন কিছু প্রাথমিক চিকিৎসা, কিছু প্রাথমিক ধারনা, বা অপ্রয়োজনীয় ঔষধের প্রয়োগ থেকে বিরত থাকা, বা না জেনে ঔষধ প্রয়োগ না করা ইত্যাদি। যেমন বেশীরভাগ ঠাণ্ডা জনিত সমস্যা ও ডায়রিয়া তৈরি হয় পুষ্টি হীনতা ও অ্যান্টিবায়টিক এর অযাচিত প্রয়গ থেকে তেমনি আবার বেশীরভাগ রোগ বৃদ্ধি পেয়ে মারাত্মক অবস্থা হয় না জেনে ঔষধ প্রয়োগ ও ধর্জ্জ না ধরার কারনে।



একটি কবুতর না খেয়ে অনেক দিন বেচে থাকতে পারে, সেটা অসুস্থ বা অন্য যে কোন কারনেই হোক, আপনি যদি তার পানি শূন্যতার প্রতি খেয়াল করেন তাহলে আপনি তার রোগ নিরাময় করার সুযোগ পাবেন। আবার হয়ত সুস্থ হয়ে এক সপ্তাহ ঠিক মত খাবার পেলে আবার ভাল স্বাস্থ্য ফিরে পেতে পারে। কিন্তু অধিকাংশ খামারি এটি বাদ দিয়ে খাওয়ানোর ব্যাপারে ব্যাতিবাস্ত হয়ে পড়েন আর সেটা কি ধরনের খাবার, যেটা হজমের ক্ষেত্রে কঠিন। যেমন বেশীরভাগ ক্ষেত্রে খামারিরা ছোলা বুট ভিজিয়ে খাওয়ানোর চেষ্টা করেন, বা এই ধরনের দুস্প্রাচ্চ খাবার যা অসুস্থ অবস্থাই আমার নিজেরাও হয়ত খাব না। অথবা কোন ঔষধ চলাকালিন সময়ে ভিটামিন যুক্ত করা। যার ফলাফল উল্টো হয়ে যায়। তাই আগে আপনার খামারে কবুতর কে সুস্থ করার আগে আমাদের মানসিক ভাবে সুস্থ হতে হবে। অনর্থক ধ্যান ধারনা থেকে বেরিয়ে আস্তে হবে। নেতিবাচক বা কুসংস্কার থেকে মুক্ত থাকতে হবে। কান চিলে নিয়েছে এই ধরনের কথার পিছনে না ছুটে নিজের বিচার বুদ্ধি কে কাজে লাগাতে হবে। আপনাকে সেই জায়গাতে চিন্তা করতে হবে যে আপনি এই জাইগায় থাকলে কি ঔষধ খেতেন আর কি করতেন। তাহলেই আপনার অর্ধেক সমস্যা কমে যাবে।


একটা কথা মনে রাখতে হবে, কবুতর পালন আমাদের, নেশা,পেশা,সখ বা তার থেকেও বেশি কিছু। তাই এটা নিয়ে ছেলে খেলা বা অন্যের খেয়াল খুশির উপর নির্ভর করা যাবে না। অনেক সময় পার হয়ে গেছে এখন আমাদের জেগে উঠার পালা। তাই জেগে উঠুন আপনার ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় কে কাজে লাগান। আপনার শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা কে কাজে লাগান। যাই হোক আমার এবার কাজের কথাই আসি। শীত প্রায় গত হয়েছে আর গ্রীষ্ম প্রায় আগত, আর শীতের আগামন ও গত এই সময় তাই বেশি রোগ হয়। আর একজন খামারির সফলতা ও ব্যার্থতা এই সমটাতেই নির্ভর করে। আশা করি অন্য যেকোনো শীতের থেকে এই শীত আপনারা ও আপনাদের খামারে তেমন বেশি রোগের প্রকোপ হয়নি। তার কারন আপনি একটু সচেতন ছিলেন। এমন অনেক শীত গেছে যে শীতে খামার কে খামার উজাড় হয়ে গেছে। যায় হোক শীতের আগমন ও গত এর সময় যে রোগের বেশি প্রাদুর্ভাব হয়, আর তা হল ঠাণ্ডা, পাতলা পায়খানা, ডিপথেরিয়া ইত্যাদি। আর আপনার যদি এ সব রোগের সম্পর্কে সাধারন জ্ঞান থাকে। তাহলেই হয়ত আপনি উতরে যেতে পারবেন, অনর্থক ঔষধ ব্যাবহার করে এর কোন ফল পাবেন না। আসুন আমরা মাসে কিভাবে ঔষধ ও ভিটামিন প্রয়োগ করব তারই একটি ধারনা নেবার চেষ্টা করি-


প্রথম পর্যায়ঃ (প্রতিরোধক)


১) সাল্মনেল্লা কোর্স- ২ টেবিল চামচ শাফি+ ২ টেবিল চামচ ফেবনিল ১ লিটার পানিতে মিক্স করে ৪-৫ দিন সাধারন খাবার পানি হিসাবে পরিবেশন করবেন (একটানা)। (হোমিও ব্যাপ্তেসিয়া ৩০, ১ সিসি =১ লিটার পানিতে মিক্স করেও আপনি এই কোর্স করাতে পারবেন। (একটানা ৪-৫ দিন।)

বিঃদ্রঃ এই কোর্স চলাকালীন কবুতর সবুজ পায়খানা করতে পারে, আর এই অবস্থাই ঔষধ বন্ধ করা যাবে না, এটা ভিতরের জীবাণুকে বের করতে সাহায্য করে।


২) অ্যাপেল সিডার ভিনেগার ১ সিসি ১ লিটার পানিতে মিক্স করে মাসে ১-২ দিন দিবেন। (২ দিন আলাদা ভাবে।)

বিঃদ্রঃ আবেগের বশে বেশি দিবার চেষ্টা করবেন না বা বেশীদিন দিবেন না তাতে হিতে বিপরীত হতে পারে।


৩) রসুন বাঁটা ১ চামচ(চা) + মধু ১ চামচ+লেবুর রস ১ চামচ= ১ লিটার পানিতে মিক্স করে ছেকে সাধারন খাবার পানি হিসাবে পরবেশন করবেন ১ দিন মাসে।

বিঃদ্রঃ ৩ নং টি করার সময় অনেক কবুতর বমি করতে পারে যা ভয়ের কারন নাই, তবে যদি ক্রিমির কোর্স করা না থাকে, বা সাল্মনেল্লা কোর্স করা না থাকে তাহলে এই কোর্স করাবেন না অনুগ্রহ করে।


(উপরের ৩ টি সাল্মনেল্লার জন্য বিশেষ উপকারি তাই ছকে ৩টাই আলাদা দুরত্তে রাখবেন।)


৪) হোমিও deptherinum 200 , ১ সিসি= ১ লিটার পানিতে মিক্স করে সাধারন খাবার পানি হিসাবে পরিবেশন করবেন (মাসে ১-২ বার আলাদা ভাবে।)


৫) হোমিও Tiberculinum 30, ১ সিসি= ১ লিটার পানিতে মিক্স করে সাধারন খাবার পানি হিসাবে পরিবেশন করবেন (মাসে ১ বার)।


৬) হোমিও Belodona 30, ১ সিসি= ১ লিটার পানিতে মিক্স করে সাধারন খাবার পানি হিসাবে পরিবেশন করবেন (মাসে ১ বার)।


৭) হোমিও Borax 30, ১ সিসি= ১ লিটার পানিতে মিক্স করে সাধারন খাবার পানি হিসাবে পরিবেশন করবেন (মাসে ১ বার)।


৮) হোমিও Eupatorium Perfo. ১ সিসি= ১ লিটার পানিতে মিক্স করে সাধারন খাবার পানি হিসাবে পরিবেশন করবেন (মাসে ১ বার)।


(সতর্কতাঃ ২ ধরনের হোমিও ঔষধ একসঙ্গে ব্যাবহার করবেন না একটানা প্রয়োগ করবেন না অনুগ্রহ করে।)


দ্বিতীয় পর্যায়ঃ (প্রতিকার)


৯) মাল্টি ভিটামিন (pawer max(made in Vietnam), All Vit Ma(Made in Germany), Max grower (made in Holland) ১ সিসি/গ্রাম= ১ লিটার পানিতে মিক্স করে ৩-৪ দিন সাধারন খাবার পানি হিসাবে পরিবেশন করবেন (একটানা)।


১০) ক্যালসিয়াম ও ই ভিটামিনের জন্য ( Calcium Forte+AD3e ) এইধরনের ভাল মানের ভিটামিন প্রয়োগ করতে পারেন, ১ সিসি/গ্রাম= ১ লিটার পানিতে মিক্স করে ৩-৪ দিন সাধারন খাবার পানি হিসাবে পরিবেশন করবেন (একটানা)।


১১) লিভার টনিক হিসাবে হামদারদ এর (Cinkara, Icturn, Karmina) করতে পারেন ২ টেবিল চামচ = ১ লিটার পানিতে মিক্স করে ২-৩ দিন সাধারন খাবার পানি হিসাবে পরিবেশন করবেন (একটানা)।


১২) ভিটামিন বি হিসাবে (toxynil, biovit, vita B+C) ১ সিসি/গ্রাম= ১ লিটার পানিতে মিক্স করে ২-৩ দিন সাধারন খাবার পানি হিসাবে পরিবেশন করবেন (একটানা)।


১৩) এছাড়াও আলভিরা, স্যালাইন( ভেট এর), লেবুর রস বা ভিটামিন সি প্রয়োজন মত ব্যাবহার বা প্রয়োগ করতে পারেন। (গরমের সময় পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে, যাতে কবুতর পানি শূন্যতাই না ভুগে।)


তৃতীয় পর্যায়ঃ( প্রতিষেধক)


১৪) কবুতরের ক্রিমির ঔষধ শীতে ৪৫ দিন পর পর ও গ্রীষ্মে ২ মাস পর পর অবশ্যই প্রয়োগ করতে হবে। (wormazole/avinex/panacure) আদর্শ ক্রিমির ঔষধ হিসাবে দিতে পারেন। (খেয়াল রাখবেন ক্রিমির ঔষধ প্রয়োগ রাতে করুন, আর পরিমান টা নির্দিষ্ট করুন। সাধারন খাবার পানি হিসাবে পরিবেশন করবেন না, আর মানুষের কোন ক্রিমির ঔষধ কখনও দিবেন না। আর প্রয়গের আগে ও পরে নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলুন।)


১৫) যারা PMV এর জন্য ভাক্সিন বা পক্স বা অন্য রোগের ভাক্সিন দিতে চান তারা একটু নিয়ম মেনে তারপরই দিবেন (আর এটা অবশ্যই বাইরের টা যদিও পক্স ও অন্য রোগের ভাক্সিন এ তেমন ভুমিকা রাখে না) , আর যারা মনে করেন যে মুরগির ভাক্সিন দিয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তুলবেন, তারা এই পোস্ট টা এড়িয়ে চলুন। কারন তাদের জন্য এই পোস্ট না।


১৬) আপনার কবুতর কে অবশ্যই ৩ মাস পর পর উকুন নাশক শ্যাম্পু দিয়ে গোসল করাতে হবে, যাতে মাইট ও কবুতরের গায়ের মাছি থেকে নিরাপদ থাকা যায়। যা বিভিন্ন রোগের কারন হিসাবে দায়ী। সাধারন অবস্থাই প্রতি সপ্তাহে গোসল এর ব্যাবস্থা করা ভাল, আর রোগ থেকে আরোগ্য লাভের পর অবশ্যই গোসল দিয়াবেন।


১৭) প্রবায়টিক মাসে ২ বার অবশ্যই দিবেন, সেটা প্রাকৃতিক হোক বা প্রস্তুত করাই হোক। আর অ্যান্টিবায়টিক ব্যাবহারের পর এটা দিতে কোনদিন যেন ভুলে না যান, সেদিকে খেয়াল রাখবেন।


এই ছকটি দিন আকারে বা তারিখ হিসাবে দেয়া হয়নি কারন, অনেকেই মনে করেন যে, তারিখ আকারে নিয়ম টা এদিক ওদিক হয়ে গেলে অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে, যা আসলেই ঠিক না, এমনকি কবুতরের অসুস্থ অবস্থাতেও এর ব্যাতিক্রম করতে চান না। তাই এমন ভাবে উপস্থাপন করা হল যাতে আপনার পছন্দ মত আপনি সাজিয়ে নিতে পারেন। অবশ্যই এগুলো প্রয়োগ করতে গিয়ে পরিবেশ পরিতস্থিতির ও আবহাওয়ার দিকে খেয়াল রাখবেন। যাতে আপনি নিজে একজন পরনির্ভরশীল খামারিতে পরিনত না হন। বা এটা করতে গিয়ে আপনাকে আরেকজনের উপর নির্ভর করতে না হয়। পরিশেষে কোরআন এর একটি আয়াত দিয়ে শেষ করতে চায়,


“আর যে সম্পদকে আল্লাহ তোমাদের জীবন-যাত্রার অবলম্বন করেছেন, তা অর্বাচীনদের হাতে তুলে দিও না। বরং তা থেকে তাদেরকে খাওয়াও, পরাও এবং তাদেরকে সান্তনার বানী শোনাও।” (সূরা আন নিসাঃআয়াত- ৫)


মূল লেখক : সোহেল রাবি ভাই



কবুতরের গ্রীষ্ম কালীন মাসিক ছক BD Online Pigeon Market

কবুতরের গ্রীষ্ম কালীন মাসিক ছক

Pigeon Discussion

Saddle back Pashuary O por for sale

Contact : https://www.facebook.com/mohammed.emran.315



Saddle back Pashuary O por for sale BD Online Pigeon Market

Saddle back Pashuary O por for sale

সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

Grizel male 8 por for sale


Grizel male 8 por for sale BD Online Pigeon Market

Grizel male 8 por for sale

LOTON madi running For sale


LOTON madi running For sale BD Online Pigeon Market

LOTON madi running For sale

Giribaz Sonia (Male) Giribaz (Sonia+Shobuz gola cross ) female


Giribaz Sonia (Male) Giribaz (Sonia+Shobuz gola cross ) female BD Online Pigeon Market

Giribaz Sonia (Male) Giribaz (Sonia+Shobuz gola cross ) female

One pair running Jhorna Shartin is for sell


One pair running Jhorna Shartin is for sell BD Online Pigeon Market

One pair running Jhorna Shartin is for sell

One pair running yellow king is for sell


One pair running yellow king is for sell BD Online Pigeon Market

One pair running yellow king is for sell

রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

Fullspring gola kosHa n0r for sale


Fullspring gola kosHa n0r for sale BD Online Pigeon Market

Fullspring gola kosHa n0r for sale

New racing pigeon Pair for sale


New racing pigeon Pair for sale BD Online Pigeon Market

New racing pigeon Pair for sale

Racing pigeon for sale


Racing pigeon for sale BD Online Pigeon Market

Racing pigeon for sale

Sobujgola pair for sale


Sobujgola pair for sale BD Online Pigeon Market

Sobujgola pair for sale

বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

সৌখিনদের সৌখিন কবুতর পালন পদ্ধতি

সৌখিনদের সৌখিন কবুতর পালন পদ্ধতি নিয়ে কিছু কথা বলব। কবুতর একটা আমন প্রানি যে, এটা মসজিদ, মন্দির, গির্জা, মঠ ছাড়াও গ্রামের ১০০ ঘরের মধ্যে ৬০ ঘরেই কবুতর পালতে দেখা যায়। কবুতরের প্রতি মানুষের যে আকর্ষণ তা অন্য কিছুতে নাই। এটা মানুষের নেশা, পেশা, সখ ও সময় কাটানোর অন্যতম মাধ্যম হিসাবে আজ পরিচিত। কবুতর প্রেমিদের সেই নেশা, পেশা ও ভাললাগার আর একধাপ এগিয়ে নিয়েছে সৌখিন কবুতর (fancy pigeon), এই সৌখিন কবুতর যে কত সুন্দর হতে পারে না দেখলে বিশ্বাস করা যাই না। আজ ইস্কুলের একজন ছাত্র থেকে শুরু করে অফিস আদালতের কর্মরত, সেনাবাহিনী, জর্জ, উকিল, পুলিশ কমিশনার এর মত সব উচ্চপদের মানুষ আজ এই কবুতর পালন কে সখ, নেশা যেটাই বলা হোক না কেন। আজ সবারই ভাললাগা ও ভালবাসার পাখিতে পরিনত হয়েছে এই কবুতর পালন। আজ সৌখিন কবুতর (fancy pigeon) পালন শুধু সখ বা নেশা না। এটা অনেক বড় পেশাতেও পরিনত হয়েছে। আজকাল অনেক শিক্ষিত বেকার যুবকরা এই পেশায় নিজেদের কাজে লাগাচ্ছে। এই পেশায় সময় দিয়ে অনেক যুবকরা তাদের বাইরের আড্ডা, বা খারাপ সঙ্গ থেকেও নিজেদের রক্ষা করতে পারছে। একজন কবুতর খামারি নিজেও বলতে পারবে না যে তাকে খামারে সময় দিতে গিয়ে দিনটা কিভাবে কেটে যায়। অনেক সময় হইত ভেবেই পাওয়া যায় না যে দিনটা এত তারাতারি কিভাবে কাটল, আজ দিনটা কি ছোট নাকি? অনেকে আবেগের তাড়নায় বলে ফেলেন যে, বন্দি বা খাচায় পাখি বা কবুতর পালা উচিৎ না। আর এটা ইসলামে এটা নিষেধ। আসলে এটা একেবারেই ভিত্তিহীন কথা, যারা এধরনের কথা বলেন তারা না জেনেই বলে থাকেন। আর না জেনে কথা বলাটা মারাত্মক পাপ।



রসূল (সঃ) বলেন, “একজন মুসলিম যিনি একটি পোষা প্রাণী রাখতে পছন্দ করে, তার দায়িত্ব হল ভালমত এর যত্ন নেয়া,যথাযথ খাদ্য, পানি এবং আশ্রয়ের ব্যাপারে খেয়াল করা আবশ্যক। কোন ব্যাক্তি যদি একটি পোষা প্রাণীর যত্নর ব্যাপারে উদাসীন বা উপেক্ষিত হয় তার কঠিন শাস্তি বর্ণনা করেছেন।“


সুতরাং কেউ যদি সত্যি সত্যি পাখি, প্রানি বা কবুতর পালতে চান তাহলে তাদের অবশ্যই এসব সর্ত মানতে হবে। যাই হোক যারা আগে থেকেই সৌখিন কবুতর পালেন তাদের ও যারা পালতে চান তারা আজ এই পোস্টটি পরে কিছুটা হলেও উপকৃত হবেন বলে আশা রাখি। আপনি কিভাবে একটি ভাল খামার গঠন করবেন?


১) জায়গা নির্বাচনঃ

খামারের জায়গা এমন হওয়া উচিৎ, যেখানে পর্যাপ্ত আল বাতাস ও রোদ আসে। অর্থাৎ গরমের সময় বাতাস ও শীতের সময় রোদ দুটোই পাওয়া যায়। গ্রামে যারা থাকেন তাদের এমন ধরনের জায়গা নির্বাচন নিয়ে তেমন বেগ পেতে হয় না। কিন্তু যারা শহরে থাকেন, বিশেষ করে সেটা যদি ভাড়া বাসা হয় তাহলে, তা হয় এক মহা বিপদের মত। আপনি আপনি যদি বাড়ির মালিক হন তাহলে আপনার ছাদে ঘর বানিয়ে,খামার তৈরি করতে পারেন। আর যদি ভাড়া থাকেন, তাহলে মালিকের অনুমতি নিয়ে, একটা ঘর বা বারান্দায় খামারের ব্যাবস্থা করতে পারেন।


২) কিভাবে পালবেনঃ

সৌখিন কবুতর দুই ভাবে পালা যায়, ক) ছাড়া অবস্থাই(কলোনি) ও খ) খাঁচার মধ্যে।

ছাড়া(কলোনি) অবস্থাই পালতে চাইলে খেয়াল রাখতে হবে যেন মিস ক্রস না হয়, তাহলে জাত নষ্ট হবার ভয় থাকে। তাই আমি খাঁচায় পালন করাটাই বেশি অগ্রাধিকার দিই।


৩) খাচার মাপ/আকার/সাইজঃ

খাঁচার আকার বা সাইজ কি হবে তা নির্ভর করে আপনি কি ধরনের কবুতর পালতে চাচ্ছেন তার উপর। যদি আপনি সুধু গিরিবাজ পালতে চান তাহলে। ১৪*১৪*১৬ ইঞ্চি হলে ভাল। আর যদি সৌখিন কবুতর পালতে চান তাহলে সাধারণত আদর্শ মাপ হল। ২৪*২৪*১৮ ইঞ্চি বা ২৪*২৪*২০ ইঞ্চি হলে আর ভাল। তবে খামারে সব খাঁচা একই মাপের হলে ভাল। এতে খামারের জাইগার ব্যাবস্থাপনা করাটা ভাল হয়।


৪) খাঁচা কোথাই পাবেন বা বানাবেন আর এর দামঃ

বাজারে বা এলাকায় তৈরি খাঁচা পাওয়া যায়। কিন্তু যা ৪০০-১২০০ টাকার মধ্যে, তবে এসব খাঁচার মান তেমন ভাল থাকে না। তাই ওডারি খাঁচা বা নির্দেশ মোতাবেক খাঁচা বানান ভাল যদিও দামের পার্থক্য খুব বেশি হয় না। কিন্তু ভাল মানের জিনিস পাওয়া যাই। যার রিসেল মূল্য ভাল হবে। ঢাকার নিমতলি পশু হাসপাতাল এর অপরপাশে এই ধরনের খাচার অনেক দোকান আছে যারা সুলভে খাঁচা তৈরি করে থাকে। যার মূল্য ১১৫ টাকা/কেজি থেকে ১৩০ টাকা/কেজি। দেখে নিবেন যেন খাঁচার তার টা একটু মোটা ও জং ধরা না হয়। ট্রে তা একটু মোটা শিট দিয়ে তৈরি করবেন জাতে সেটা জং ধরার ভয় না থাকে। খাঁচার শিক গুল অনেক সময় জং ধরা থাকে তাই খাঁচা আনার আগে রঙ করিয়ে নিলে আর ভাল হয়। আর অবশ্যই খাঁচা তৈরির পর ভাল করে দেখে নিবেন যেন কোণ গুলো ঠিক মত মেশিন দিয়ে ঘষা হয়েছে তা না হলে আপনার হাত ও কবুতরের পা কাটার ভয় থেকেই যাবে। খাঁচার ফাঁকটা(গ্যাপ) ৪*৪ ইঞ্ছি হয় বা এর কম বেশি করতে পারেন। এতে দুটি উপকার হবে এক আপনার খাঁচার খরচ কমে যাবে ও দুই খাবারের পাত্র খাঁচার বাইরে লাগান যাবে। কারন খাঁচার ভিতরে খাবারের পাত্র থাকলে কবুতর পানি ও খাবারের পাত্রে পায়খানা করতে পারে বা খাবার নষ্ট করার প্রবনতা তৈরি হতে পারে। যারা ভাড়া বাসায় থাকেন তারা খাঁচা আলাদা ভাবে বানলে ভাল এতে বাসা পরিবর্তন এর সময় খাঁচা নিতে সুবিধা হবে। যদিও এতে একটু খরচ বাড়তে পারে। কিন্তু এতে আপনি বেশি উপকারিত হবেন। আর খাঁচা যখন পরিবহন করবেন কবুতর সহ তখন অবশ্যই খাঁচা ঢেকে নিবেন। এতে কবুতরের ভয় পাবার বা স্ট্রেস হবার ভয় কম থাকে। আর যাদের নিজের বাড়ি তারা ৬ টা বা ৮ তার একটা সেট তৈরি করতে পারেন। তবে খাঁচার নিচের দিকে একটু বেশি গ্যাপ দিবার চেষ্টা করবেন এতে করে আপনার খাঁচার পরিচর্যা করতে সুবিধা হবে।


৫) খাবার ও পানির পাত্রঃ

খাবার ও পানির পাত্র টিনের না হয়ে প্লাস্টিক এর হলে ভাল হয় যাতে আপনি কিছুদিন পর পর ধুতে পারেন আর এটা জং ধরার ভয়ও থাকবে না। আর পাত্র গুলো একটু বড় ও গভির হলে ভাল কারন তাতে কবুতর খাবার গুলো নষ্ট করবে কম ও ফেলতেও পারবেন না। সবচেয়ে যেটা বেশি দরকার সেটা হল ঔষধ বা সাধারন অসুস্থ কবুতর কে খাওয়ানর জন্য নল লাগান syringe।


৬) ঔষধ ও ভিটামিন মজুতঃ

কথাই আছে ঘোড়া কেনার আগে লাগাম কেন গরু কেনার আগে দড়ি। তেমনি কবুতর পালনের আগেই আপনাকে প্রস্তুত থাকতে হবে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও অ্যান্টিবায়টিক এর মজুত এর ব্যাপারে। যেমনঃ Doxivet, ESB30 (অ্যান্টিবায়টিক), Cosmix Plus, Electrolyte(saline), Biovit/Toxinil(ভিটামিন), Powermax Ws(মাল্টি ভিটামিন), Calcium Forte(ভিটামিন),Shafi,Febnil,Cinkara(tonic),Riboflabin,Flazil ইত্যাদি। এছাড়া হমিও কিছু ঔষধ যেমনঃ Belodona 30,Borax 30, Kali curb 30,Kali Hydro 30 ইত্যাদি জীবাণু নাশক ফার্ম ৩০, Timson,Virocid, Vircon S, Hexisol hand rub, Povisep,Detol,Antiseptic creme ঔষধ ও মজুত রাখলে ভাল। ঔষধ নিমতলি ভি-ফার্মা এ পাবেন। (মিঃইমরান চেল্ল#০১৭১৭৯২০৭১৮) আপনি পার্সেল যোগেও ঔষধ নিতে পারবেন।


৭) প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিঃ

কিছু জিনিস যা আপনার হাতের কাছে রাখলে ভাল যেমনঃ কাচি, হ্যান্ড গ্লভস(৯০ টাকা), মাস্ক, আলাদা স্যান্ডেল, হ্যান্ড স্প্রে (যার দাম পড়বে অটো ৩ লিটার ১৮০ টাকা, আর বড় অটো ২০ লিটার ৯০০ টাকা।) ছেনি (ময়লা বা পায়খানা পরিস্কার এর জন্য।), এছাড়াও ঔষধ ও ভিটামিন রাখার জন্য ছোট বড় রঙ্গিন বোতলে রাখলে ভাল হয়। এছাড়াও খাবার রাখার জন্য একটা ঢাকনা ওয়ালা বড় পাত্র ও পানির বড় ঢাকনা ওয়ালা পাত্র হলে ভাল হয়, আর পানি পরিবেশনের জন্য একটা জগ ও খাবার দিবার একটা ছোট বাটি বা হাতল ওয়ালা ছেনি। গোসল করানর জন্য একটা টিনের বা প্লাস্টিক বড় টব।


৮) কি ধরনের বা জাতের কবুতর পালবেনঃ

কবুতর পালনের ৩টি স্তর আছে, যেমন –

ক) প্রথম স্তর/ পর্যায় = এই স্তরে একজন নতুন পালক নতুন ভাবে কবুতর অবস্থাই কবুতর পালন শুরু করেন। এই অবস্থাকে কঠিন অবস্থা বলা হয়। কারন এই পর্যায়ে একজন নতুন খামারে বেশি ঠকে থাকেন। এই অবস্থাই যে কবুতর দেখা হয় সেটাই ভাল লাগে। আর তাই ফাটা বেজাতের, মিস ক্রস, যেমন ইচ্ছে তেমন কবুতর সংগ্রহ করে খামার ভরিয়ে তুলেন। যে কবুতরের দাম ৫০০ টাকা তা ১০০০ টাকা দিয়ে এভাবে দুই গুন ৩ গুন দামে কবুতর কেনেন। আর কিছু অসাধু ব্যাবসায়ি ও খামারি এই সুযোগের অপেক্ষাতেই থাকেন। এই স্তর/ পর্যায় এর পালক অনেক সময় কম দাম এই স্তরের কবুতর পালক তার কেনা সব কবুতরই কিছু দিন পরে হারাতে বসেন। কারন তিনি জেনে না জেনে সুস্থ কবুতর যথাযথ জ্ঞানের অভাবে সাধারন চিকিৎসা দিতে বার্থ হন। ফলে সুস্থ কবুতর অসুস্থ ও পরে অসুস্থ কবুতর মারা যায়। তাই এই স্তরের পালকদের প্রতি আমার অনুরধ থাকবে, আগে কবুতর পালন শিখতে হবে। আর এর জন্য প্রথমে লক্ষা,সিরাজি, হোমার,এই ধরনের কবুতর পালন করে হাত জস/পাকাতে হবে। কারন সৌখিন কবুতর দেশি/গিরিবাজ কবুতরের মত না এগুলোর রোগবালাই একটু বেশিই হয়।


খ) দ্বিতীয় স্তর/ পর্যায়ঃ

এই পর্যায়ে একজন খামারি কিছুটা অভিজ্ঞতা অর্জন করে থাকে। আর তার ভুলের কারনে নিজের প্রতি ও তাকে যারা ঠকিয়েছে তাদের প্রতি একটু বিরিক্ত বোধ করে। অনেকেই পালন ছেড়েই দেন। আর অনেকেই পুরান ভুল সুধরানর জন্য ফাটা বা বেজাতের কবুতর গুলোকে বিক্রি করেই হোক বা দান করেই হোক বা জবাই করেই হোক খামার থেকে এক প্রকার তরিঘরি করে, আবার নতুন করে তৈরি করার পরিকল্পনা করে থাকে। এই পর্যায়ে এই স্তরের পালক রিং ও আমদানিকৃত কবুতরের প্রতি ঝুকে বেশি। যা তাকে আরেকটি ভুল পথে পা বাড়ায়। আর যেহেতু আগে অনেক দাম দিয়ে ফেলেছেন তাই এই স্তর/ পর্যায় এ কম দামে ভাল কবুতর কিনতে যান। ফলে দ্বিতীয় বারের মত ভুল করে বসেন। আর যেহেতু এই স্তরের খামারি রিং সম্পর্কে তেমন কিছুই জানে না। আর এই সুযোগে সেই সকল ব্যাবসায়ি ও খামারি নিজের সরবরাহকৃত রিং, সেই অলিক রিং বলে চালিয়ে দেয়। আর আমদানিকৃত কবুতর কিনে ১ বছরেও ডিম না পেয়ে হতাশায় ডুবে যান। তখন খামার করবে না ছাড়বেন, এই ধরের দোটানায় থাকেন। আমার এই পর্যায়ের খামারির প্রতি অনুরোধ, রিং বা আমদানিকৃত কবুতরের পিছনে না ছুটে। ভাল মারকিং, ও জাতের কবুতর সংগ্রহ করুন। দাম যাচাই করে। এই স্তরের খামারি যেহেতু কিছুটা অভিজ্ঞতা অর্জন করে থাকে তাই তাদের একটু ভাল জাতের ও দামের কবুতর পালনে যেতে পারেন। যেমনঃ পটার, স্ত্রেসার, কিং, জ্যাকবিন, বিউটি হুমার, হলুদ লক্ষা, হেলমেট, নান ইত্যাদি।


গ) তৃতীয় স্তর/ পর্যায়ঃ

এই স্তর/ পর্যায় এর খামারি অনেক কাঠ খড় পুরিয়ে, রোদেজলে থেকে, অনেক ঠক খেয়ে,অনেক ভালবাসার ও পছন্দের কবুতর হারিয়ে। খাঁটি খামারি হয়ে যান। আর এই পর্যায়ের খামারি চিনতে শিখেন সেই সব কবুতর ব্যাবসাই ও ঠকবাজদের। আর চিনতে শিখেন আসল রিং আর কোনটা নকল। কোনটা আমদানিকৃত আর কোনটা লোকাল। তিনি জানতে শিখেন আমদানিকৃত কবুতর কিনে কি করতে হবে। আর এই পর্যায়ের কবুতের পালক বা খামারি দের আমার কোন উপদেশ নেয় কারন তারা যদি একটু নিজের বিচার বুদ্ধি খাটায় তাহলেই তারা একজন সফল খামারি হতে পারবেন। আপনি যে স্তরের খামারি হন না কেন অল্প পালেন কিন্তু ভাল জাতের কবুতর পালেন।


৯) ফসটার কবুতর তৈরিঃ

কিছু কবুতর আছে যারা নিজেদের ডিম বা বাচ্চা নিজেরাই করে আর কিছু দামি কবুতর তারা এটা করতে পারে না। তাদের দেহের গঠন এর কারনেই হোক বা অন্য কারনেই হোক, এসব কবুতরের ডিম তা দিবার জন্য বা বাচ্চা তুলা ও বাচ্চা পালনের জন্য কিছু শক্ত সামর্থ্য কবুতর রাখতে হয়। আর এটা করতে হয়। এক জোড়ার জন্য দুই জোড়া ফসটার। যেমনঃ পটার, স্ত্রেসার,কিং,জ্যাকবিন ইত্যাদি ডিম ফস্তারিং করলে ভাল। এক্ষেত্রে ডিম দিবার ও চালার তারিখ মনে রাখতে বা লিখে রাখতে হবে। আর এর পার্থক্য ২-৩ দিনের ব্যাবধানের বেশি যেন না হয়।


১০) কবুতরের খাবারঃ

কবুতরের খাবার একজন খামারির জন্য অন্যতম উপাদান। একজন খামারি কি খাবার দিবেন বা একজন খামারি কিভাবে খাবার সংরক্ষণ করবেন তার উপর তার সফলতা ও বার্থতা নির্ভর করে থাকে। কারন কবুতরের অধিকাংশ রোগ ও ব্রিডিং ক্ষমতা এই খাবারের উপরি নির্ভর করে। একজন খামারি শুধু গম বা ধান দিয়ে তার দায়িত্ব সারতে পারবে না। অনেকেই আছেন যে ব্যাবসার চিন্তা মাথাই থাকে বলে, খাবারের পিছনে বেশি খরচ করতে চান না। যাতে তার ব্যাবসার ক্ষতি না হয়। কিন্তু ব্রিডিং কম ও ডিম না ফুটা বা বাচ্চা ভাল মত না হবার কারনে যে তার কত ক্ষতি হচ্ছে তিনি সেটা মনে রাখেন না। আপনি আপনার কবুতর কে কি ধরনের খাবার দিবেন তা খাবারের পোস্ট এ বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। অনুগ্রহ করে একটু দেখে নিবেন। তবে খেয়াল রাখবেন যেন অলসতা করে বা আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন দেখে সাধারন মিক্স খাবার বেশি দামে কিনবেন না। আপনার খাবার আপনি নিজেই কিনুন। এতে আপনার খরচ বাচবে ও অভিজ্ঞতাও সঞ্চয় হবে। আর খাবার কখন দিবেন কিভাবে দিবেন এটা আপনার উপর নির্ভর করে। তবে খাবার দিনে ২ বার দিবেন ও তুলে নিবেন পানি যেন সব সময় থাকে সে ব্যাপারে খেয়াল রাখবেন। আর পানি যদি নষ্ট করে তাহলে তাড়াতাড়ি পরিবর্তন করে ফেলবেন। তবে যে কবুতর ডিম পেড়েছে, বা বাচ্চা আছে, বা তাদের খাবার সব সময় রাখা ভাল এতে বাচ্চার আকার বড় হয়। আর এই অবস্থায় গ্রিট এর সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। আর খাবারের ব্যাপারে খেয়াল রাখবেন যেন ডাবলির পরিমান বেশি থাকে কারন এটা কবুতরের জন্য খুবই স্বাস্থ্যকর খাবার।


১১) গ্রিটঃ

গ্রিট কবুতর ও ঘুঘুর জন্য অন্যতম একটি খাদ্য উপাদানের মত। যদিও পাখিদের গ্রিট দিয়া হয়। যা কবুতরের গ্রিট থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। গ্রিট মূলত কবুতরের খাদ্য ও বীজ হজমে বিশেষ ভুমিকা রাখে। যদিও অনেকেই মনে করেন যে গ্রিট ডিমের খোসা শক্ত করে ক্যালসিয়াম এর অভাব পুরন করে ইত্যাদি। কিন্তু এই ধারনা একেবারেই ভুল। গ্রিট ক্যালসিয়াম এর কিছুটা অভাব পুরন করে, ঝিনুক শেল,সমুদ্রের ফেনা ইত্যাদির কারনে, কিন্তু এর উদ্দেশ্য এটা না। গ্রিট এর ব্যাপারে একটা বিষয় খুবই খেয়াল রাখতে হবে যে, তৈরি গ্রিট যেখান থেকেই কিনুন না কেন, খেয়াল রাখবেন যেন শামুকের শেল না থাকে। এটা কবুতরের অনেক ক্ষতি করে থাকে। অনেকের ধারনা বাজারে যে গ্রিট কিনতে পাওয়া যায় তা ভাল না। অথচ যারা নতুন কবুতর পালে তাদের প্রথম এই গ্রিট দিয়েই শুরু করে। অনেকেই ব্যাবসায়িক চিন্তা থেকে বলে থাকেন যে বাইরের গ্রিট দিবেন না ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু আমি বলি বাইরের গ্রিট যদি আপনি গরম করে আপনার কবুতর কে সরবরাহ করেন তাহলে আপনার ভয়ের কোন কারন নাই। তবে আপনি নিজে গ্রিট তৈরি করতে পারলে ভাল। গ্রিট তৈরির পদ্ধতি নিয়ে একটা পোস্ট আছে। অনুগ্রহ করে দেখে নিবেন।


১২) কবুতরের রোগ ব্যাধিঃ

কবুতরের যত ধরনের রোগ আছে সেগুল নিয়ে অনেক পোস্ট দিয়া হয়েছে। যা এই সাইট আ সংরক্ষণ করা আছে। তবে একটা ব্যাপার খেয়াল রাখবেন, আপনি যদি সাল্মনেল্লা (salmonella) ক্রিমি ও কবুতরের শরীরের মাইট কে নিয়ন্ত্রন করতে পারেন তাহলে কবুতর পালন নিয়ে আপনাকে আর চিন্তা করতে হবে না। মনে রাখবেন যে, কবুতরের রোগে না মরে তার থেকে বেশি মরে উল্টাপাল্টা ঔষধ ও রোগ নির্ণয়ের অভাবে। অধিক পরিমানে ও মাত্রার অ্যান্টিবায়টিক এর ব্যাবহারের ফলে, তাই এগুলোর ব্যাপারে একটু সতর্ক থাকবেন।


১৩) ব্রিডিং পেয়ার তৈরিঃ

একটা ব্রিডিং জোড়া তৈরি করাটা খুবই কঠিন একটা ব্যাপার। মানে আপনি যদি ভাল ডিম বাচ্চা করতে চান তাহলে আপনাকে অল্প বয়স থেকে তাকে তৈরি করতে হবে। যদিও অনেকেই পূর্ণ বয়স্ক কবুতর কিনতেই বেশি পছন্দ করে থাকেন। কিন্তু আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে যে আপনি পূর্ণ বয়স্ক কবুতর কিনতে গিয়ে বুড়ো কবুতর আবার না কিনে ফেলেন । এই জন্য নতুন পূর্ণ বয়স্ক কবুতর কিনতে পারেন। তবে জিরো পরের কবুতর কিনলে আপনি তাকে আপনার পরিবেশ ও খাবারের সাথে খাপ খাওয়া তে সুবিধা বেশি। একটা ব্যাপারে খেয়াল রাখবেন জেন ব্রিডিং জোড়া কে পারতত পক্ষে অ্যান্টিবায়টিক না দিয়া আর যদিও দিতে হয় মধ্যম বা নিন্ম লেভেল এর অ্যান্টিবায়টিক দিবেন। তা না হলে অর ডিম পারার ক্ষমতা কমে যাবে।


১৪) খামারের নিরাপত্তাঃ

নিরাপদ খামার তৈরি আদর্শ খামারের পূর্ব শর্ত। খামার গঠনের পর আপনাকে চোর ও অনাখাঙ্খিত আগন্তক প্রতিরোধ করতে হবে। যেমনঃ বাইরের পাখি, বেড়াল, বেজি, কাক ইত্যাদি। আপনার কোন অতিথি কে খামার দেখাতে হলে অবশ্যই খামারের স্যান্ডেল ব্যাবহার করবেন। বাইরের ময়লা যেন আপনার খামারে প্রবেশ না করে। আর অনর্থক কবুতর দের বিরক্ত করা থেকে বিরত থাকতে হবে। আর এ জন্য নিয়মিত জীবাণু নাশক ছিটাতে হবে। হাঁট থেকে কবুতর কেনার ব্যাপারে একটু সতর্ক থাকবেন। আর নতুন কবুতর আনার পর কিছু নিয়ম মেনে তারপরই কেবল খামারে প্রবেশ করাবেন। আর খামারে নেট লাগাতে ভুলবেন না যাতে, মশা, মাছি ও পোকা, মাকড়ের হাঁট থেকে রক্ষা পেতে।


১৫) খামারের পরিচর্যাঃ

একটা খামারের মূল শত্রু হল,ইদুর, তেলেপোকা ও ধুলা। তাই যেকোন ভাবে এগুলো থেকে আপনার খামার কে মুক্ত রাখতে হবে। আর এরই লক্ষে আপনাকে প্রতি ২-৩ দিন অন্তর জীবাণু নাশক ছিটান, কবুতরের মল পরিস্কার করতে হবে। এর জন্য আপনি ট্রে তে কাগজ বা কাপর দিয়ে রাখতে পারেন। আর খাঁচাতে এক্তুক্রা কাঠ দিতে ভুলবেন না। আর পারলে ছোট একটুকরা কাপর বা চট(বস্থা কেটে) দিলে ভাল হয়। ডিম পারার জন্য হাড়ি দিবেন। আর তা নিয়মিত পরিস্কার করবেন। খাঁচাতে নাম্বার দিবেন, আর খাবার ও পানির পাত্রেও নাম্বার দিতে ভুলবেন না। ডিম পারার পর ডিমের পরিচর্যা করবেন নিয়মিত। কারন ডিমে যদি ৯০% আদ্রতা না থাকে তাহলে বাচ্চা ফুটার জন্য সমস্যা তৈরি হতে পারে। নিয়মিত ভাবে মাসিক ছক করে, উন্নত মানের ভিটামিন ও মিনারেলস দিবেন, লিভার টনিক দিবেন, ভালমানের খাবার দিবেন আর ২ মাস অন্তর ক্রিমির ঔষধ দিবেন। (মানুষের টা নয়)। সাল্মনেল্লা কোর্স করাবেন প্রতিমাসে। (অ্যান্টিবায়টিক দিয়ে নয়।) প্রতি সপ্তাহে নিজের মত করে গোসলের ব্যাবস্থা করবেন। সপ্তাহে না পারলে ১৫ দিনে বা মাসে একবারের জন্য হলেও এই ব্যাবস্থা করবেন। ৩ মাস অন্তর ধরে উকুন নাশক শ্যাম্পু দিয়ে গোসলের ব্যাবস্থা করবেন। সাধারণত একার পক্ষে কোন খামার পরিচর্যা সম্ভব হয় না। আর এ জন্য বাসার মানুষদের এতে সহযোগিতা নিতে পারেন। অথবা কেয়ার টেকার নিতে পারেন। কারন আপনি হয়ত চাকরি করেন বা ব্যাবসা করেন বা ইস্কুল ও কলেজে পড়েন। তাই হয়ত সময় নাও পেতে পারেন দুপুরে বা অন্য সময়ে যথাযথ ভাবে পরিচর্যা করার। আর এই ওজুহাতে আপনি আপনার খামারের কোন প্রকার গাফলতি করার কোন সুযোগ নেই। কারন একটা খামার কে যেমন লাইন এ আনতে কষ্ট করতে হয়। আর একবার ঠিক হয়ে গেলে আপনাকে এটা নিয়ে আর চিন্তা করতে হবে না। কিন্তু আবার যদি কোন কারনে লাইনচূত হয় তাহলে তাকে আবার সঠিক পথে আনতে অনেক বেগ পেতে হয়। তাই এব্যাপারটা একটু খেয়াল রাখবেন। কোন কবুতর অসুস্থ হয়ে অনতিবিলম্বে চিকিৎসা শুরু করতে হবে। যাতে করে অনাখাংকিত পরিস্থিতির মোকাবেলা সম্ভব হয়। আর বাচ্চা যখন বড় হবে ও খাওয়া শিখবে তখন তাদের তাড়াতাড়ি আলাদা করার ব্যাবস্থা করতে হবে। তানাহলে তারা পরবত্তি ডিম বা বাচ্চা কে মেরে ফেলার সম্ভাবনা থাকে।


১৬) কবুতরের আচার আচারন লক্ষ করা ও খামারে সময় দেয়াঃ

আপনার খামারের অন্যতম সাফল্য নির্ভর করে আপনি যদি আপনার কবুতরের আচার-আচরন ঠিকমত খেয়াল করেন। কারন এক এক কবুতরের আচারন এক এক রকম। তাই যখন এর পরিবর্তন দেখবেন তখনই বুঝবেন এর কোন সমস্যা হয়েছে। আর এর জন্য আপনাকে কিছু সময় কাটাতে হবে খামারে আপনার ভালবাসার কবুতরের পাশে। আর যেটা খুবই জরুরি সেটা হল রোগাক্রান্ত কবুতরের লক্ষণ গুলো ভাল মত লক্ষ করা। তার মধ্যে পায়খানা/ Dropping টা অন্যতম।


১৭) ভাল উপদেষ্টা বা খামারের জন্য বন্ধু খুজে নেওয়াঃ

একজন মুচি যেমন চায় আরেকজনের জুতা ছিঁড়ুক, একজন ডাক্তার চান বেশি বেশি রোগী আসুক তার চেম্বারে। তেমনি কিছু মানুষ চাই যেন আপনার খামারেও সেই অবস্থা হোক। আর এরই লক্ষে নানা ধরনের এমন সব উপদেশ আপনাকে দিবে যা তিনি নিজেও যে কাজ করেন না। তাই যেকোনো কাজ বা চিকিৎসা বা ঔষধ অথবা ভিটামিন প্রয়োগ করারা আগে অভিজ্ঞ লোকের পরামর্শ নিবেন। বা দুই একজনের কাছে জিজ্ঞাস করবে। যাতে আপনি অনাখাংকিত ঘটনা থেকে নিরাপদ থাকতে পারেন।


১৮) খামারির কিছু জরুরি সতর্কতাঃ

প্রত্যেক খামারিকেই কিছু জরুরি সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়, আর এগুলো যদি সঠিক ভাবে মেনে চলা হয় তাহলে, আশা করা যাই তিনি সফল ভাবে খামার পরিচালনা করতে সক্ষম হবেন। যেমনঃ


a) অ্যান্টিবায়টিক ব্যাবহারের ৩ দিনের মধ্যে খেয়াল করবেন যে পায়খানার রঙ পরিবত্তন হচ্ছে কিনা? যদি না হয় তাহলে ৩ দিন পর অন্য অ্যান্টিবায়টিক ব্যাবহার করতে হবে।

b) অ্যান্টিবায়টিক ব্যাবহারের পর অবশ্যই probiotic দিতে হবে। তাহলে আবার ভাল ব্যাকটেরিয়া তৈরি হবে। আর পাতলা পায়খানা, সর্দি ইত্যাদির মত রোগ থেকে নিরাপদ থাকবে।

c) অধিক পরিমাণে অ্যান্টিবায়টিক ব্যাবহার করবেন না।

d) চোখের রোগের জন্য কোন চোখের ড্রপ ৫ দিনের বেশি ব্যাবহার করবেন না।

e) ভিটামিন বা কোন ঔষধ দলা বেঁধে গেলে আর ব্যাবহার করবেন না।

f) ভিটামিন ব্যাবহারের পর যদি হলুদ ধরনের পায়খানা করে, তাহলে ওই ভিটামিন আর ব্যাবহার করবেন না।

g) কবুতর বমি করলে omidon বা এই ধরনের ঔষধ বেশি ব্যাবহার করবেন না। বা histasin ধরনের ঔষধ কখনও ব্যাবহার করবেন না।

h) খামার ভিজা বা স্যাঁতসেঁতে রাখবেন না।

i) ঔষধের গায়ে লেখা নির্দেশনা মত ঔষধ ব্যাবহার করতে যাবেন না।

j) কবুতর অসুস্থ হলে আগে চালের স্যালাইন দিবেন।

k) ভিটামিন বা ঔষধ যেন রোদে না রাখা হয় সেটা খেয়াল রাখবেন। বা কোন ঔষধ বা ভিটামিন ১২ ঘণ্টার বেশি রাখবেন না।

l) যেকোনো রোগের ক্ষেত্রে নিজেকে দিয়ে বিচার করবেন।যেমনঃ অনেকেই ঠাণ্ডা লাগলে কবুতর কে অ্যান্টিবায়টিক দিতে বলেন।কিন্তু আমাদের জানামতে আমরা কখনও এক্ষেত্রে নিজেদের জন্য অ্যান্টিবায়টিক ব্যাবহার করি না।

m) পানি অবশ্যই ফুটান দিবেন বা নলকূপের টা দিবেন বা ফিল্টার এর টা দিবেন।

n) অনর্থক কবুতর কে ধরবেন না। বা ডিম চালার সময় বেশি নারানারি করবেন না এতে ডিমের ভিতরের লিগমেন্ত ছিরে যেতে পারে।


পরিশেষে, আপনি আমার এই পর্যন্ত কবুতরের যত রোগ বালাই সম্পর্কিত যত পোস্ট আছে সেগুল পড়েন আর সেই অনুযায়ী মানে চলেন। তাহলে আশা করে আপনার খামারে কোন অসুবিধা হবার সম্ভাবনা নেই। আর যদিও বা হয় তাহলে আশা করি আপনি নিজে একজন বিজ্ঞ লোকের মত নির্ভয়ে তার চিকিৎসা করতে অসুবিধা হবার কথা না। আর এর জন্য চাই আপনার আত্মবিশ্বাস। আর সাধারন কিছু জ্ঞান ও প্রাথমিক কিছু চিকিৎসা পদ্ধতি। আপনি যদি এটা চিন্তা করেন যে এটা আমি পারব না তাহলে আর কখনও পারবেন না। আপনার যদি ইচ্ছে ও চেষ্টা থাকে তাহলে ইংশাআল্লাহ বাকিটুকু আল্লাহ করে দিবেন। আল্লাহ আমাদের সঠিক জ্ঞান দান করুন(আমীন)।


(বিঃ দ্রঃ – এই লিখা বা এর সব কথাতাই যে চূড়ান্ত টা নয়, আপনি এর থেকে আপনার মনের মত করে খামার গড়ে নিতে পারেন। এটি শুধুই একটি পথ নির্দেশনা মাত্র।)


মূল লেখক : সোহেল রাবি ভাই



সৌখিনদের সৌখিন কবুতর পালন পদ্ধতি BD Online Pigeon Market

সৌখিনদের সৌখিন কবুতর পালন পদ্ধতি

Pigeon Discussion

নরম ডিম শেল বা Misshapen ডিম

পাতলা শেল, নরম ডিম শেল, কোন শেল ছাড়া, সচ্ছিদ্র , অনিয়ম বিকৃত ডিম ও অন্যান্য ডিম শেল বিভিন্ন কারণে হতে পারে। ডিমের উৎপাদন হটাৎ ড্রপ করতে পারে, এক্ষেত্রে রোগের সুস্পষ্ট লক্ষণ না থাকলেও, এ পরিস্থিতিতে সংক্রামক হতে এর সম্ভবনা বেশি থাকে। এছাড়াও সম্ভাব্য পরিবেশগত ও খাদ্যতালিকাগত বিষয় জরিত (ডিম পাড়ার অবস্থান আকস্মিক পরিবর্তন, নির্দিষ্ট রোগের কারনে যেমন ওজন, রেসপিরেটরি, ক্ষতি, ইত্যাদি বা) । নরম শেল ডিম সবচেয়ে সাধারণ কারণ খাদ্য ও পরিবেশগত। ডিম বা ডিমের অস্বাভাবিকতা সম্ভাবনার কবুতরের বয়স বৃদ্ধিড় সঙ্গেও ঘটতে পারে।


* পরিবেশগত সমস্যা:

• অস্বাভাবিক তাপ / আর্দ্রতা মাত্রা।

• অত্যধিক তাপ – 85-90 ওভার তাপমাত্রা এক্সপোজার ° ফাঃ (29 – 32 ° Centigrade)

• কম বা উচ্চ আর্দ্রতা মাত্রা

• প্যারাসাইট: চামড়া প্যারাসাইট অথবা অভ্যন্তরীণ ক্রিমি।

• পরিবেশগত বিষক্রিয়াগত সংক্রমণ (অর্থাৎ, ছাঁচ / ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া, ইত্যাদি)

• স্ট্রেস

• অতি শব্দ বা মাদি কবুতরকে বিরক্ত, অনর্থক আগন্তক ইত্যাদি কারনে মাদি অপরিপূর্ণ ডিম পাড়তে পারে।

• পালক বদলের সময়ও (molting) এই ধরনের ঘটনা ঘটে।


** অপুষ্টি / পুষ্টিগত ঘাটতি:

ডিম শেল বা ভ্রূণ এর জন্য একটি প্রতিরক্ষামূলক স্তর হয় ডিমের ভিতরে, শেল 95% ভিতরের ঝিল্লি উপর তৈরী করে যা ক্যালসিয়াম কার্বোনেট দ্বারা গঠিত। সাধারণত একটি শেল (শুধুমাত্র ভিতরের এবং বাইরের ঝিল্লি এবং কুসুম) ছাড়া পাতলা বা নরম শাঁস ভিটামিন E, B12, এবং D সেইসাথে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, সেলেনিয়াম প্রভাব ডিম শেল গঠন ঘাটতি জড়িত।


=> পুষ্টিকর খাদ্য ঘাটতি: ডিম শেল LIMESTONE, চুনাপাথর ময়দা বা ঝিনুক শেল (চিকেন ফিড সঙ্গে আলাদাভাবে দেওয়া যেতে পারে,যা boiler grower নামে প্রিছিত একটি মিশ্র খাদ্য) ভিটামিন D3 সহ প্রাকৃতিক সূর্যালোক বা সম্পূরক খাদ্য এর সঙ্গে একযোগে “ভিটামিন D2 না” (কম পুষ্টিসম্পন্ন-ও নিম্মমান খাদ্য একটি পাখির পায় সরাসরি তার সামগ্রিক পুষ্টি মান প্রভাবিত করে একইরূপে)। একটা জরুরী কথা সবাইকে মনে রাখতে হবে যে ক্যালসিয়াম এর সাথে অবশ্যই ভিটামিন D+E যোগ করতে হবে তা না হলে পর্যাপ্ত মাত্রাই ক্যালসিয়াম শরীরে শোষিত হবে না। গ্রিট কখনও কখনও এটি ক্যালসিয়াম রয়েছে এই ধরনের ভ্রান্ত ধারনা প্রদান করা হয়, কিন্তু তা ঠিক না, এটা ডিমের মানের উপর কোনো প্রভাব ফেলে না। ফসফরাস বা ক্যালসিয়াম এর অত্যধিক খরচ একটি অস্বাভাবিক মোটা শেল বা রুক্ষ শেল এর যোগাযোগ আছে। ব্লাড inbreeding অবস্থাই পর্যাপ্ত খাদ্যে বিধান সত্ত্বেও অপুষ্টিতে ভুগতে পারে। সুক্ষ / নরম শেল ডিম সঙ্গে যুক্ত হয় ঝুঁকি। ডিম পাড়ার সময় নরম ডিম ভেঙ্গে অভ্যন্তরীণ সংক্রমণ হয়,ফলে প্রায়ই পায়রা / পাখির মৃত্যু ঘটে থাকে।। নালীর ভিতর একটি ডিম ভাঙ্গে সম্ভাব্য অভ্যন্তরীণ টিস্যু একটি সংক্রমণ বা ক্ষতি হতে পারে, তখন সঠিক চিকিত্সা না করে ছেড়ে যাওয়া হলে মৃত্যু অনিবার্য। বাউন্ড ডিম আস্তে খুঁজে ম্যাসেজ করা যেতে পারে। এই ব্যর্থতা তা ডিমের ভিতরে বিরতি এবং অংশে এটি সরানোর জন্য একটি পশুচিকিত্সক জন্য প্রয়োজনে ডিম ভাঙ্গা গেলে ডিম্বনালী ক্ষতি বা সংক্রমণ এড়ানোর জন্য শেল টুকরা এবং ডিমের অবশিষ্টাংশ পরিষ্কার করা উচিত। আর কিছু পদক্ষেপ যেমনঃ হালকা গরম পানির সাথে হেক্সিসল দিয়ে মুছে দিতে হবে।

একটি অভিঘাত/shocked একটি মুরগি নরম shelled ডিম পাড়তে পারে, এই জন্য তার সিস্টেম পূর্বের অবস্থাই ফেরে না আশা পর্যন্ত তাকে নিয়মিত সুষম খাদ্য নিশ্চিত করতে হবে।


অনেকে কুসংস্কার মানে নরম শেল ডিম পারলে, কিন্তু সাধারন ভাবে এটা আমাদের দাই/অপারগতা অন্নের উপর চাপাতে চাই, আমারা যদি প্রথম থেকেই পর্যাপ্ত ভিটামিন ও সুষম খাদ্য সরবরাহ করি তাহলেই কেবল এই ধরনের সমস্যা থাকে মুক্তি পাতে পারে।


মূল লেখক : সোহেল রাবি ভাই



নরম ডিম শেল বা Misshapen ডিম BD Online Pigeon Market

নরম ডিম শেল বা Misshapen ডিম

Pigeon Discussion, Pigeon Diseases & treatment

মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

আমি এটা করি, আপনিও এটা করতে পারেন (কেস স্টাডি)

সামাজিক সাইট গুলো যোগাযোগের একটা ভাল মাধ্যম! এটার যেমন ভাল দিক আছে তেমন খারাপ ফলও আছে। এখানে একটা ছোট আমন্ত্রণ যেমন মুহূর্তে লাখ লাখ লোক জড় করতে পারে। তেমনি একটা ছোট ভুল লাখ লাখ লোকের জীবন কে দুর্বিষহও করে তুলতে পারে। অথবা একটা সঠিক তথ্য অনেক জীবন বাঁচাতে ও তাকে শান্তিময় করে তুলতে পারে। এখন এটা আমাদের উপর আমরা এটা কিভাবে ব্যাবহার করছি তারই উপর। আমি অন্য কোন প্রসঙ্গে কথা বলছি না আমি বলছি কবুতরের গ্রুপ এর কথা। এখানে অনেকে ভাল উপদেশ দেন। আর কিছু আছেন যারা না জেনেই বলে ফেলেন মনে মধ্যে যা আছে তাই। কিছু মানুষ আছেন যারা আবার সরাসরি উপদেশ দেন না। তারা এভাবে বলে থাকেন যে, আমি এটা করে উপকার পেয়েছি,আপনিও এটা করতে পারেন। যদি আপনি তার ভুল ধরেন তাহলে বলবে আমি ত তাকে এটা করতে বলিনি। (যদিও বলে রাখা ভাল, এই ধরনের কথা যারা বলে তারা এই কাজ নিজেরাও মনে হয় করেন না।) যারা এমন ভাবে তারা মানুষ দের ভুল পথে পরিচালিত করে থাকে। আর তাতে মাসুল নতুন কবুতর পালকরাই দিয়ে থাকেন।


এদের প্রসঙ্গে আল্লাহ্‌ বলেন, “আর তাদের সাথে যুদ্ধ করতে থাক যতক্ষণ না ভ্রান্তি শেষ হয়ে যায়; এবং আল্লাহর সমস্ত হুকুম প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। তারপর যদি তারা বিরত হয়ে যায়, তবে আল্লাহ তাদের কার্যকলাপ লক্ষ্য করেন। “(সূরা আল আনফাল আয়াত-৩৯)


এদের ব্যাপারে আল্লাহ্‌ আর বলেন,“তবে কোন সম্প্রদায়ের ধোঁকা দেয়ার ব্যাপারে যদি তোমাদের ভয় থাকে, তবে তাদের চুক্তি তাদের দিকেই ছুঁড়ে ফেলে দাও এমনভাবে যেন হয়ে যাও তোমরাও তারা সমান। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধোকাবাজ, প্রতারককে পছন্দ করেন না।।“(সূরা আল আনফাল আয়াত-৫৮ )


এই ধরনের লোকদের ব্যাপারে ছোট বেলার একটা গল্প মনে পড়ে গেল, এক শেয়াল একবার বনে ঘুরতে ঘুরতে হটাত একটা ফাঁদে আটকা পড়ল। অনেক কষ্টে সে ছাড়া পেল,কিন্তু তার লেজটা কাঁটা পড়ল। মন কষ্টে সেই শেয়াল ঘুরে বেড়ায়। আর সবায় তাকে দেখে মুচকি হাসে। তাই সেই শেয়াল একটা বুদ্ধি আঁটল। সে সব শেয়ালদের ডেকে বলল ওহে বন্ধুগণ তোমরা কি জান, আমাদের লেজ কোন কাজে আসে না। তাই এটা আমাদের রেখে লাভ নেই। আর এটা কেটে ফেলাই ভাল। শুনে একটা বয়স্ক শেয়াল হেসে বলল, ওহে চালাক শেয়াল তুমি ফাঁদে পড়ে তোমার লেজ হারিয়েছ বলে তুমি আমাদের লেজও হারানোর পরিকল্পনা করেছ। চালাক শেয়াল ধরা পড়ল।


এই ধরনের লোক সেই চালাক শেয়ালের মত তারা তাদের ভুলের মাশুল তারা যেভাবে দিয়েছেন, এখন তার চান অন্যরাও তাদের মত ভুল করুন। যাই হোক নানা মুনির নানা মতের মত ভিন্ন মতের কারনে আজ এই খাত সঙ্কটাপন্ন অবস্থা। ট্রেডার আর মুনাফা ভোগী ব্রিডারদের দোউরাত্র আজ এই খাতটি খিচুরি পাকান অবস্থা। যে যেমন ইচ্ছে এই খাতকে তেমন ভাবেই ব্যাবহার করছেন। যে যেমন ইচ্ছে তেমন ভাবে ব্রীড করছেন। আর অন্য সবাইকে নানা ভাবে উৎসাহিত করছেন। কিছুদিন আগে আমাকে একজন জানালেন তিনি একজনের কাছ থেকে কিং নড় ও স্ত্রেসার মাদি এনেছেন ফসটার হিসাবে। মানে যিনি এটা বিক্রি করেছেন সেই নতুন কবুতর পালককে তাকে গাইড করার প্রয়োজন মনে করেননি। কারন তার প্রোডাক্ট ত বিক্রি হচ্ছে।


এক খামারে দেখা গেল যে একজন নামকরা ব্রিডার এই রকম দুই জাতের কবুতর কে ক্রস করাচ্ছেন। একজন লক্ষা ও সিরাজির ক্রস করিয়ে এক ধরনের জাত তৈরি করেছেন। আর তিনি নতুন আরেকজনের কাছে দামে সেই কবুতর বিক্রি করেছেন। এরকমই কিছুদিন আগে এ ধরনের কিছু জাত করার চেষ্টা করা হয়ে ছিল। যেটাকে লাজুক লক্ষা নাম দিয়ে উচ্চদামে নতুন খামারিদের কাছে বিক্রি করে পকেট ভরেছেন। রোগ প্রতিকার থেকে শুরু করে এই ধরনের ধকাবাজ/ঠকবাজ লোকদের কারনে আজ এই খাতে ইতিমধ্যে অশনিসংকেত দেখা গেছে। এখন এটা আর কত খারাপ হতে পারে তারই দেখা বাকি। এই প্রসঙ্গে একটা গল্প আপনারদের শুনানোর লোভ সামলাতে পারছি না, একলোক একবার একটা কঙ্কালের মাথা পেল। যার কপালে লিখা ছিল,”এর কপালে আরও খারাবী আছে।“ লক্তির ভুরু কুঁচকে গেল। যার এত খারাপ অবস্থা তার আর কি খারাপ হতে পারে। তাই সেটাই দেখার জন্য সে,মাথাটি বাসাই নিয়ে আসল ও লুকিয়ে রাখল।


প্রতিদিন অফিস এ যাবার আগে ও অফিস থেকে ফিরে একবার করে। ঘুমাতে যাবার আগে ও ঘুম থেকে উঠে একবার করে দেখত যে এর কপালে আর কি ঘটেছে। এই ভাবে দিন যায় একদিন তার স্ত্রী ব্যাপারটি খেয়াল করল। আর তাকে জিজ্ঞাস করল। কিন্তু লোকটি তালবাহানা করে বিষয়টি এড়িয়ে গেল। এতে তার স্ত্রীর সন্ধেহ হল। আর তাই একদিন তার অবর্তমানে সেখানে গেল ও দেখল যে, সে একটা মাথা প্রতিদিন এভাবে দেখে। এর পরদিন অফিস থেকে ফিরে যথারীতি সেই লোকটি মাথাটি চেক করতে গেল কিন্তু সে সেটা পেল না। শেষে খুজে না পেয়ে। সে তার স্ত্রী কে জিজ্ঞাস করল। তার স্ত্রী মুখ ভেংচিয়ে বলল, ওটার ল্যাতার মেরে দিয়েছি। পুরান প্রেমিকের ভালবাসা মরার পরও ভুলতে পারনি তাই বাসাই নিয়ে এসেছ। এটাকে ভেঙ্গে গুড়ো করে বাথরুমে ফ্ল্যাশ করে দিয়েছি। লোকটি মুচকি হাসল, আর বলল আর এই জন্যই বোধ হয় মাথাটির কপালে এই লিখাটা ছিল।


আমাদের এই কবুতরের খাতের কপালেও মনে হয় ঠিক এমনটিই আছে, যা আমরা এখন পর্যন্ত নিজেদের স্বার্থের আড়ালে ঢেকে আছে। কিন্তু যদি সময়মত আমরা নিজেদের সংশোধন না করি। তাহলে হইত এই গল্পটির মাথার মতই হয়ত অবস্থা হবে। তাই সময় এসেছে, নিজেদের স্বার্থের আড়ালটা সরিয়ে একটু ভালমত চোখ খুলুন। তা না হলে এই খাতটির ব্যাপারে এক সময় ভুলে যেতে হবে। হয়তো এমন একটা সময় আসবে যখন, আপনার নাতি পোতারা একদিন বলবে আমার দাদা না সৌখিন কবুতর পালত খুবই সুন্দর সেই সব কবুতর! আর আপনি তাদের সেই পুরান ছবি গুলই শুধু দেখাবেন বা দেখাতে পারবেন। তখন আর কিছু করার থাকবে না। (ধন্যবাদ।)


মূল লেখক : সোহেল রাবি ভাই



আমি এটা করি, আপনিও এটা করতে পারেন (কেস স্টাডি) BD Online Pigeon Market

আমি এটা করি, আপনিও এটা করতে পারেন (কেস স্টাডি)

Pigeon Discussion

কিছু রোগ সম্পর্কে কিছু সতর্কতা (কেস স্টাডি)

কবুতর পালতে গিয়ে প্রথম পর্যায়ে নানা অসুবিধার সম্মখিন হন অনেকেই আমিও হয়েছি। আর তাই সব সময়ই চেষ্টা করি যেন ,আমি যে অসুবিধা গুলোর সম্মখিন হয়েছি সে রকম যেন আর কাওকেই পরতে না হয়। তাই সাধ্যমত চেষ্টা করি। বিভিন্ন ভাবে কিন্তু যত দিন যাচ্ছে ততই হতাশ হচ্ছি। ছোট বেলায় শুনেছিলাম যে ভুতের নাকি উল্টো পায়ে হাঁটে। কিন্তু আজ অনেকদিন পর মনে হল যেন আমরাও ঠিক ভুতের মত উল্টো পায়ে হাঁটছি। বাসে উঠতে গেলে একসঙ্গে ১০ জন উঠার চেষ্টা করি,অফিস এ একজন আরেকজনের উপর ল্যাঙ মারার চেষ্টা করি। আমরা মাঝে মাঝে ভুলে যায় একজন উঠলেই আরেকজন উঠবে। কিন্তু আমার তা করি না। যাইহোক, আমি আমার একটা পোস্ট এ বলেছিলাম আমরা পড়তে পছন্দ করি না। সব কিছুই তৈরি চাই। আর তাই হয়তো সমস্যা দিন দিন কমা ত দূরে থাক আরও বাড়ছে। সামাজিক সাইট গুলো তে কবুতর সংক্রান্ত যে ধরনের অসম্পন্ন প্রশ্ন দেখা যায়, যেমনঃ


১) আমার কবুতর লোম ফুলিয়ে বসে থাকে বা লোম ফুলিয়ে থাকে,কি করবো?


ব্যাখ্যাঃ কোন বিস্তারিত তথ্য নাই,বুঝার কোন উপাই নাই কি উপদেশ দিয়া যাবে! আর অনেককে প্রশ্ন করে অপেক্ষা করতে হয়,কারন তিনি ঠিকমত খেয়াল করেননি।!


২) আমার কবুতরের খাওয়া দাওয়া কমে গেছে, কি করবো?


ব্যাখ্যাঃ কোন বিস্তারিত তথ্য নাই,কারও সাধ্য নাই,কি বলবে!


৩) আমার কবুতর পানি পায়খানা করছে, কি করবো?


ব্যাখ্যাঃ কি ধরনের কোন নির্দেশনা নাই!


৪) আমার কবুতর গোসল দিবার পর ঝিমাচ্ছে, কি করবো?


ব্যাখ্যাঃ খুবই স্বাভাবিক, তারপরও মানুষ ঔষধ দিয়ে বসে!


৫) আমার কবুতর পাতলা পায়খানা করছে/ঠাণ্ডা লাগেছে অ্যান্টিবায়টিক দিচ্ছে কিন্তু কোন কাজ হচ্ছে না, কি করবো?


ব্যাখ্যাঃ যদিও অ্যান্টিবায়টিক এই ধরনের রোগে কোন কাজ করে না তারপরও দেয়া হয়!

এছাড়াও অ্যান্টিসেপ্তিক ঔষধ কোথায় পাওয়া যায়, হোমিও কোথাই পাওয়া যায়।

এই ধরনের নানা অনর্থক নানা প্রশ্ন দেখা যায়। আমরা ছোট বেলাই পরেছিলাম “গ্রন্থগত বিদ্যা আর পরহস্থে ধন, নহে বিদ্যা নহে ধন হলে প্রয়োজন।”


যেকোনো রোগের প্রশ্ন জিজ্ঞাস করলে। যে ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে, বা যেকোনো প্রশ্ন জিজ্ঞাস করার আগে কিছু তথ্য দিলে ভাল হয়,কি সেগুলোঃ


১) সমস্যা কয়দিনের?

২) পায়খানা কেমন রঙ এর?

৩) কিছু প্রাসঙ্গিক তথ্য… রোগ সম্পর্কিত, কোন ভিতামিন,বা ঔষধ দিয়া হইছিল কিনা?

৪) মুখে ঘা আছে কিনা, কোন গন্ধ আছে কিনা? খাওয়া দাওয়া করে কিনা? ইত্যাদি


আমি বিভিন্ন সময়ে পোস্ট/কেস স্টাডি এর সাথে PMV(প্যারামক্সি ভাইরাস) ও ডিপথেরিয়া রোগ নির্ণয় ও তার প্রতিকার সম্পর্কে বলেছিলাম। যদিও সবাই প্যারামক্সি ভাইরাস কেউ বেশী গুরুত্ত দেন, আর সে ব্যাপারে যত তোড়জোড় করেন, কিন্তু দুর্ভাগ্য জনক হলেও সত্য যে ডিপথেরিয়া কে নিয়ে এমন কোন ব্যাবস্থা দেখা যায় না। যদিও আমাদের দেশে PMV(প্যারামক্সি ভাইরাস) যত কবুতর মারা যায় তার থেকেও বেশী কবুতর মারা যায় ডিপথেরিয়া নামক রোগে যদিও কিছু লোক এগুলো কে PMV(প্যারামক্সি ভাইরাস)বলে চালিয়ে দেন। কিন্তু সেগুলো আসলে প্যারামক্সি ভাইরাস না। এই দুইটা রোগের বাইরেও আরেকটি নিরব ঘাতক আছে কবুতরের সেটা হল ম্যালেরিয়া। আর এই সকল রোগের পোস্ট পর্যায় ক্রমে দিবার খুবই ইচ্ছে ছিল, কিন্তু নকল বাজ লকদফের কারনে বন্ধ করে দিয়েছি। আর এই সকল রোগের বর্ণনা আমার বইয়ে থাকবে (ইন শা আল্লাহ)। আসুন এই রোগ নির্ণয়ে বা রোগ জিজ্ঞাসার আগে নিজেকে তৈরি করে নিই।


১) আপানর কবুতরের কি ঘাড় বা অন্য কোন অঙ্গ অবস ?

২) আপানর কবুতরের কি মুখে গন্ধ আছে?

৩) খাবার বা পানি খেলে কি মুখ নাক দিয়ে বের হয়ে আসে?

৪) গা বা শরীর গরম বা ঠাণ্ডা?

৫) পায়খানা কি সবুজ সাদা?

৬) নাক দিয়ে সরদি ঝরে?

৭) মুখ দিয়ে কি ঘড় ঘড় শব্দ হয়?

৮) মুখে কি সাদা বা হলুদ ঘাআ আছে?

৯) চোখ কি ফুলে ও পানি ঝরে?

১০) নাক দিয়ে রক্ত পড়ে মাঝে মাঝে?


যদি এই সব প্রশ্ন মিলে যায় তাহলে, আপনার কবুতরের ডিপথেরিয়া হয়েছে, কোন সন্দেহ বা ভুল নাই। আর অনতিবিলম্বে চিকিৎসা শুরু করেন। আর ভাল হলেও চিকিৎসা বন্ধ করবেন না কারন এই রোগের চিকিৎসা ও রোগ পরবর্তী পথ্য অনেক বেশী জরুরি। আর এর আনুমানিক সময় ৩-৪ মাস লাগে। আপনার যদি আরও কিছু প্রশ্নের উত্তর খুজার চেষ্টা করুন, যেমনঃ


১) আপনার কবুতরের কি খাবার জমে থাকে পাকস্থলীতে?

২) আপনার কবুতরের কি মুখ দিয়ে গরম পানি বের হয় চাপ দিলে বা এমনিতে?

৩) আপনার কবুতরের কি গা গরম থাকে আর বসে থাকে চুপ করে?

৪) আপনার কবুতর কি কাঁপে?

৫) বুকের হাড্ডির নিচে কি প্রচুর খুস্কি?

৬) লোম ফুলিয়ে বসে থাকে?

৭) উরতে গেলে কি হাপিয়ে যাই বা বেশী উড়ে না?

৮) কবুতরের ঠোঁট কি ফ্যাঁকাসে সাদা যা গলাপি ভাব নাই বা সুকন সাদা সাদা ভাব লেগে থাকে?

৯) কবুতরের গায়ে কি মাছি আছে?


যদি এই সকল প্রশ্নের উত্তর পান তাহলে আপনার কবুতরের মাল্যারিয়া হয়েছে। আর এটা ৭-৮ সপ্তাহ আপনাকে সময় দিতে হবে সুস্থ হতে। আর এগুলো শুধু তখনি সম্ভব যখন আপনি আপনার কবুতরের খামারে সময় দিবেন। তাদের আচার আচরন লক্ষ্য করবেন। এখানে আমি রোগের কোন চিকিৎসা ব্যাবস্থা দিলাম না, কারন এগুলো খুবই স্পর্শ কাতর ঔষধ তাই এগুলর যেমন ইচ্ছে ব্যাবহার ঠিক না। একটা ব্যাপার অবশ্যই খেয়াল রাখবেন, এই সব রোগের চিকিৎসা ৫-৭ দিনে সম্ভব না, তাই ২ দিনে এর ফলাফল আশা করবেন না। কারন কিছু লোক অল্পতেই তাদের আশা হারিয়ে ফেলেন, তারা ২-৩ দিনেই ফলাফল চান। আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে আপনি আপনার কবুতর গুলো কে কি ঔষধ দিচ্ছেন আর কার উপদেশে দিচ্ছেন সেটা একটা বিবেচনার বিষয়। আপনি যদি সাল্মনেল্লা জন্য ercot or cosmix plus দেন তাহলে আর বলার কিছুই নাই। তাই এখনি আপনার সঠিক সময় আপনার কবুতরের সঠিক চিকিৎসা করার। একটু ঠাণ্ডা মাথাই চিন্তা করুন ও তারপর চিকিৎসা শুরু করুন। একটু চিন্তা করুন আপনার এটা হলে আপনি কি ঔষধ খেতেন। তাহলেই আপনার সঠিক সমাধান পেয়ে যাবেন। আল্লাহ্‌ আমাদের সবাই কে সঠিক জ্ঞান দান করুন। (আমীন)।


মূল লেখক : সোহেল রাবি ভাই



কিছু রোগ সম্পর্কে কিছু সতর্কতা (কেস স্টাডি) BD Online Pigeon Market

কিছু রোগ সম্পর্কে কিছু সতর্কতা (কেস স্টাডি)

Pigeon Discussion

Blue Streeser(bar less) New adult pair for sale


Blue Streeser(bar less) New adult pair for sale BD Online Pigeon Market

Blue Streeser(bar less) New adult pair for sale

সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

সুধুই ডিম চাই by KF Sohel Rabbi

একভাই একদিন ফোন দিলেন যে তাঁর একজোড়া কবুতর কেনার পর থেকে ডিম দিচ্ছে না। কি করা যায়? আমাদের দেশে অধিকাংশ খামারি আছেন যারা প্রতিনিয়ত আশা করেন কবুতর ডিম বাচ্চা করবে আর করতেই থাকবে। আর সেটা যে কোন মুল্যেয় হোক না কেন! যদি কোন কবুতর ১৫ দিন বা ১ মাস ডিম দিতে দেরি করে তাহলে চিন্তার অন্ত থাকে না। কিন্তু কেউ এততুকু বুঝতে চাই না যে, এই প্রাণীটিরও বিশ্রাম এর প্রয়োজন আছে। ব্যাপারটা অনেকটা এরকম যে “ তুই ডুবে মর আমাকে শালুক তুলে দে ” কথায় বলে যে একটা কবুতর ১২ মাসে ১৩ বার ডিম দেয় স্বাভাবিক পরিবেশ ও সুষম খাবার পায় সেই অবস্থায়। কিন্তু খুব কম খামারিই আছেন যে তাদের এই অবস্থা নিশ্চিত করতে পেরেছেন। আপনি যেমন ফসল বুনবেন আর ফলও তেমনি পাবেন। আপনি শুধু গম ভুট্টা খেতে দিয়ে আপনি কখনও ভাল ডিম বাচ্চা আশা করতে পারেননা। কিছু খামারি আছেন যারা কিছু দামি জাতের কবুতর কে দিয়ে নিয়মিত ডিম নেন। আর ফসটার দিয়ে বাচ্চা পালেন। এই ভাবে মাসে ২-৩ বার ডিম নেনে।আর কিছু খামারি আছেন যারা ২ মাদী ও ১ নর দিয়ে ব্রীড করেন ও ডিম নেনে। আর এটা তারা গর্ব ভরে প্রচার করেও বেড়ান। এখন কেউ যদি এই ধরনের ব্রীডার কে কসাই বলে আখ্যায়িত করেন তাহলে কি ভুল বলা হবে?


এই ত সেদিন এক খামারি জানালেন যে তিনি তা একজোড়া কবুতর থেকে ২ লক্ষ টাকা আয় করেছেন কিন্তু মাদিটা ২-৩ মাস ধরে অনিয়মিত ডিম দিচ্ছিল বলে তাকে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। কি ধরনের কথা। এত টাকা আয় করার পরও তাকে বিশ্রাম দিবার প্রয়োজন মনে করেননি এই খামারি। খুবই দুঃখ জনক একটা ব্যাপার। প্রায় খামারি আছেন যারা ব্রিডিং জোড়া কিনতে পছন্দ করেন, যাতে বাসায় নিয়ে যাবার কিছু দিনের মধ্যে ডিম পারে বাচ্চা উঠায়। আর তিনি যদি সেই জোড়া বাসায় নিবার পর ১ মাস ডিম না দেন তাহলে অস্থির হয়ে পরেন। আর বিক্রেতার চোদ্দ গুষ্টি উদ্ধার করে ফেলেন। কিন্তু কেন এরকম হচ্ছে কেও একবার ভাবার চেষ্টা করেন না।


আমরা অনেকে সখ থেকে কবুতর পালা শুরু করি কিন্তু পরে টা নেশা ও এরপর পেশা হিসাবে নেন বা নিতে পারেন কন দোষের কিছু নাই। কিন্তু দোষ হল যে সেই প্রাণীটির দিকে খেয়াল না রাখা। সধারনত নর এর থেকে মাদি কবুতরের জীবন কাল তুলনামূলক ভাবে একটু কম হয়। এর অনেক কারন গুলোর মধ্যে একটা কারন হল ঘন ঘন ডিম পারা ও বাচ্চা তুলা। একটা কবুতরের জন্য ডিম পাড়া ও বাচ্চা তুলাটা এবং সেই বাচ্চা তিলতিল বড় করা যে কি কষ্টের তা যদি কেউ সঠিক ভাবে হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে পারত তাহলে হত তিনি বা তারা ডিম বাচ্চা করা বন্ধ করে দিত। একজন সাধারন মানুষ যদি দিনে ২-৩ বার বমি করে তাহলে তাঁর শারীরিক অবস্থা কি হতে পারে? কিন্তু একটা কবুতর দিনের পর দিন অনবরত বাচ্চা কে এই ভাবে খাওয়াচ্ছে। আমি বলব না যে ডিম বাচ্চা করা বন্ধ করে দিতে কিন্তু এর মাঝে একটু রেস্ট দিতে হবে। যেমন আপনি ২-৩ বার বাচ্চা করেছেন এর পর ১৫ দিন রেস্ট দেন। কিভাবে দিবেন। যেমন নর মাদি কে আলাদা রাখা বা প্লাস্টিক ডিম দিয়ে বসিয়ে রাখা। আর এর মাঝে তাকে সুষম খাদ্য, ভিটামিন ও মিনারেলস সরবরাহ করা। গরমের সময় ডিম বাচ্চা করা সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। কারন একটা কবুতরের জন্য শীতের সময়তা একটু চালেজিং । কারন এই সময় টা তে রোগ বালায় বেশি হয়। এ ছাড়াও অন্যান্য অবস্থা চিন্তা করলে বুঝা যায়। যদিও বাংলাদেশের বাইরে থেকে এই দেশের জলবায়ু ও আবহাওয়া কবুতর পালা জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত। ইউরোপ সহ বাইরের বিভিন্ন দেশে শীতে একেবারেই ব্রিডিং বন্ধ করে দেওয়া হয়। তাঁর মানে আমি এটা বলছি না যে শীতে একবারেয় ব্রিডিং বন্ধ করে দিতে।এতা বলছি যে যে কন মৌসুমেই ব্রিডিং করেন না কেন একটু দেখে শুনে বুঝে ব্রিডিং করাবেন। এখন আসুন আমরা ডিম ও এর গঠন নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করি।


ডিমঃ


ডিম্ব বা ডিম্বাণু থেকেই প্রাণী জিবনের সৃষ্টি হয়। সাধারণত স্তন্নপায়ী প্রাণীর ভ্রুনের বৃদ্ধি ঘটে জননীর দেহের ভিতর, কিন্তু পাখি বা কবুতর জাতীয় প্রাণীর ভ্রুনের বৃদ্ধি ঘটে দেহের বাইরে তা দেবার মাধ্যমে। আমার কয়েকটি পোস্ট এ ডিম নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তাঁর মধ্যে কবুতর কেন ডিম ভাঙ্গে ও খায়, ডিমের নরম খোলস, ও ডিমের ভিতর বাচ্চা মারা যাওয়া ইত্যাদি। আপনি আপানার কবুতর কে যে ধরনের খাবার দিবেন সে ঠিক সেয় ধরনেরি ডিম দিবে। মানে আপনি যদি ভাল বাচ্চা পেতে চান তাহলে অবশ্যই সুষম খাদ্য ও ভাল খাদ্য সার দিতে হবে। আর ডিমের ভিতর বাচ্চা মারা যাওয়া বা বাচ্চা দুরবল হাওয়াই এর অন্যতম কারন হিসাবে ধরা হয়। প্রতিটি ডিম্বাণু ঝিল্লি প্রাথমিক অবস্থায় একটি বোটার সাহায্যে ডিম্বাশয়ের সঙ্গে যুক্ত থাকে। এরপর পুষ্ট ডিম্বাণু ডিম্বাশয় থেকে বিছিন্ন হয়ে ফ্লানেল এর মধ্যে আসে এবং পরিশেষে বাইরে বেরিয়ে আসে। ডিম পারার ৩০ মিনিট পর্যন্ত ডিমের খলের চারপাশে মোম জাতীয় একটি আবরন পরে। যাকে Cuticle বলে। এটি ডিম নালির ভিতর সঞ্চালনে সাহায্য করে থাকে। ডিম শেল এর সামগ্রিক মান প্রভাবিত করে এমন অনেক কারন আছে। ডিম শেল 97 94 % ক্যালসিয়াম কার্বোনেট ওপর গঠিত। অন্য তিন শতাংশ জৈবপদার্থ ও ডিম শেল রঙ্গক হয়। শেলে 8,000 হিসেবে আণুবীক্ষণিক ছিদ্র আছে। শেল নিজেই বাইরের আবরণ আচ্ছাদন মত প্রোটিন এর ঠিক পূর্বে শেল জমা হয় যা ত্বকের বাইরের স্তর বা পুষ্প শেল মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়া অনুপ্রবেশ থেকে ডিম অভ্যন্তর বিষয়বস্তু রক্ষা নামক শ্লৈষ্মিক আবরণ রয়েছে। ডিম শেল এর গুণ শেল এর রং, আকৃতি, এবং গঠন দ্বারা নির্ধারিত হয়। ডিম্বাণু ও শুক্রাণুর মিলিত হয়ে ডিমের ভিতর একটি প্রান মণ্ডল তৈরি হয় আর এটা সব সময় কুসুমের উপরের অংশে থাকে। ডিমের কুসুম বাচ্চার দেহের অ্যান্টিবডি তৈরিতে সাহায্য করে থাকে। আর এটি ভ্রুনের জন্য প্রতিনের সরবরাহ নিশ্চিত করে। ডিম ধরার সময় আলত করে ধরতে হয় যাতে ঝাকি না লাগে।বা ডিম ৪ দিনের মাথায় যে রক্ত জমে তা জোরে নাড়াচাড়া করলে তা রগ ফেটে ডিম অকার্যকর হয়ে যেতে পারে। ডিমে যদি কন কারনে ফাটল ধরে আর যদি কন রস বের না হয় তাহলে ডিম জমার ব্যাপারে কন অসুবিধা হয় না তবে ডিম টি পুদিং দিয়ে ভাল করে লেপে শুকিয়ে নিতে হবে। টেপ দিয়া ঠিক না…এতে পরে বাচ্চা বের হতে অসুবিধা হতে পারে। কিছু কবুতর আছে একটা ডিম দিবার পরপরই ডিমে বসে। আর কিছু আছে যে ২ টা ডিম দিবার পরি কেবল ডিমে তা দেয়। কিছু আবার আছে ডিমে একেবারেই বসে না বা কিছুদিন পর ডিম থেকে উঠে যায়। আই ধরনের কবুতরের জন্য ফসটার রাখতে হয়। সাধারণত বড় ধরনের কবুতরের ১ জোড়ার জন্য ৩ জোড়া করে ফসটার রাখা ভাল।


পরিশেষে বলতে চাই যদি আপনি ঠিকমত বাচ্চা আশা করেন তাহলে অবশ্যই রেস্ট এর পাশাপাশি ডিম বাতি পরিস্কার, ডিম পরিস্কার ও ডিমের আদ্রতা নিশ্চিত করতে হবে। আর তায় ৮ দিনের পর থেকে ডিমে ২-৩ দিন অন্তর পানি স্প্রে করা ও কবুতরের গোসল নিশ্চিত করতে হবে। এতে ডিমের হ্যাচিং এর সম্ভাবনা বেরে যায়। আর আপনি যদি সোনার ডিম পাড়া হাঁসের গল্পের মত সুধুই ডিম চান তাহলে কোন কথা নাই। আপনি হয়ত বেস কয়বার ডিম বাচ্চা করতে পারবেন, কিন্তু আদুর ভবিষ্যৎ এ একটি সুন্দর সম্ভাবনা কে নষ্ট করার জন্য আপনিই দায়ি থাকবেন।


মূল লেখক : সোহেল রাবি ভাই



সুধুই ডিম চাই by KF Sohel Rabbi BD Online Pigeon Market

সুধুই ডিম চাই by KF Sohel Rabbi

Pigeon Discussion

শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪