মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

কিছু রোগ সম্পর্কে কিছু সতর্কতা (কেস স্টাডি)

কবুতর পালতে গিয়ে প্রথম পর্যায়ে নানা অসুবিধার সম্মখিন হন অনেকেই আমিও হয়েছি। আর তাই সব সময়ই চেষ্টা করি যেন ,আমি যে অসুবিধা গুলোর সম্মখিন হয়েছি সে রকম যেন আর কাওকেই পরতে না হয়। তাই সাধ্যমত চেষ্টা করি। বিভিন্ন ভাবে কিন্তু যত দিন যাচ্ছে ততই হতাশ হচ্ছি। ছোট বেলায় শুনেছিলাম যে ভুতের নাকি উল্টো পায়ে হাঁটে। কিন্তু আজ অনেকদিন পর মনে হল যেন আমরাও ঠিক ভুতের মত উল্টো পায়ে হাঁটছি। বাসে উঠতে গেলে একসঙ্গে ১০ জন উঠার চেষ্টা করি,অফিস এ একজন আরেকজনের উপর ল্যাঙ মারার চেষ্টা করি। আমরা মাঝে মাঝে ভুলে যায় একজন উঠলেই আরেকজন উঠবে। কিন্তু আমার তা করি না। যাইহোক, আমি আমার একটা পোস্ট এ বলেছিলাম আমরা পড়তে পছন্দ করি না। সব কিছুই তৈরি চাই। আর তাই হয়তো সমস্যা দিন দিন কমা ত দূরে থাক আরও বাড়ছে। সামাজিক সাইট গুলো তে কবুতর সংক্রান্ত যে ধরনের অসম্পন্ন প্রশ্ন দেখা যায়, যেমনঃ


১) আমার কবুতর লোম ফুলিয়ে বসে থাকে বা লোম ফুলিয়ে থাকে,কি করবো?


ব্যাখ্যাঃ কোন বিস্তারিত তথ্য নাই,বুঝার কোন উপাই নাই কি উপদেশ দিয়া যাবে! আর অনেককে প্রশ্ন করে অপেক্ষা করতে হয়,কারন তিনি ঠিকমত খেয়াল করেননি।!


২) আমার কবুতরের খাওয়া দাওয়া কমে গেছে, কি করবো?


ব্যাখ্যাঃ কোন বিস্তারিত তথ্য নাই,কারও সাধ্য নাই,কি বলবে!


৩) আমার কবুতর পানি পায়খানা করছে, কি করবো?


ব্যাখ্যাঃ কি ধরনের কোন নির্দেশনা নাই!


৪) আমার কবুতর গোসল দিবার পর ঝিমাচ্ছে, কি করবো?


ব্যাখ্যাঃ খুবই স্বাভাবিক, তারপরও মানুষ ঔষধ দিয়ে বসে!


৫) আমার কবুতর পাতলা পায়খানা করছে/ঠাণ্ডা লাগেছে অ্যান্টিবায়টিক দিচ্ছে কিন্তু কোন কাজ হচ্ছে না, কি করবো?


ব্যাখ্যাঃ যদিও অ্যান্টিবায়টিক এই ধরনের রোগে কোন কাজ করে না তারপরও দেয়া হয়!

এছাড়াও অ্যান্টিসেপ্তিক ঔষধ কোথায় পাওয়া যায়, হোমিও কোথাই পাওয়া যায়।

এই ধরনের নানা অনর্থক নানা প্রশ্ন দেখা যায়। আমরা ছোট বেলাই পরেছিলাম “গ্রন্থগত বিদ্যা আর পরহস্থে ধন, নহে বিদ্যা নহে ধন হলে প্রয়োজন।”


যেকোনো রোগের প্রশ্ন জিজ্ঞাস করলে। যে ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে, বা যেকোনো প্রশ্ন জিজ্ঞাস করার আগে কিছু তথ্য দিলে ভাল হয়,কি সেগুলোঃ


১) সমস্যা কয়দিনের?

২) পায়খানা কেমন রঙ এর?

৩) কিছু প্রাসঙ্গিক তথ্য… রোগ সম্পর্কিত, কোন ভিতামিন,বা ঔষধ দিয়া হইছিল কিনা?

৪) মুখে ঘা আছে কিনা, কোন গন্ধ আছে কিনা? খাওয়া দাওয়া করে কিনা? ইত্যাদি


আমি বিভিন্ন সময়ে পোস্ট/কেস স্টাডি এর সাথে PMV(প্যারামক্সি ভাইরাস) ও ডিপথেরিয়া রোগ নির্ণয় ও তার প্রতিকার সম্পর্কে বলেছিলাম। যদিও সবাই প্যারামক্সি ভাইরাস কেউ বেশী গুরুত্ত দেন, আর সে ব্যাপারে যত তোড়জোড় করেন, কিন্তু দুর্ভাগ্য জনক হলেও সত্য যে ডিপথেরিয়া কে নিয়ে এমন কোন ব্যাবস্থা দেখা যায় না। যদিও আমাদের দেশে PMV(প্যারামক্সি ভাইরাস) যত কবুতর মারা যায় তার থেকেও বেশী কবুতর মারা যায় ডিপথেরিয়া নামক রোগে যদিও কিছু লোক এগুলো কে PMV(প্যারামক্সি ভাইরাস)বলে চালিয়ে দেন। কিন্তু সেগুলো আসলে প্যারামক্সি ভাইরাস না। এই দুইটা রোগের বাইরেও আরেকটি নিরব ঘাতক আছে কবুতরের সেটা হল ম্যালেরিয়া। আর এই সকল রোগের পোস্ট পর্যায় ক্রমে দিবার খুবই ইচ্ছে ছিল, কিন্তু নকল বাজ লকদফের কারনে বন্ধ করে দিয়েছি। আর এই সকল রোগের বর্ণনা আমার বইয়ে থাকবে (ইন শা আল্লাহ)। আসুন এই রোগ নির্ণয়ে বা রোগ জিজ্ঞাসার আগে নিজেকে তৈরি করে নিই।


১) আপানর কবুতরের কি ঘাড় বা অন্য কোন অঙ্গ অবস ?

২) আপানর কবুতরের কি মুখে গন্ধ আছে?

৩) খাবার বা পানি খেলে কি মুখ নাক দিয়ে বের হয়ে আসে?

৪) গা বা শরীর গরম বা ঠাণ্ডা?

৫) পায়খানা কি সবুজ সাদা?

৬) নাক দিয়ে সরদি ঝরে?

৭) মুখ দিয়ে কি ঘড় ঘড় শব্দ হয়?

৮) মুখে কি সাদা বা হলুদ ঘাআ আছে?

৯) চোখ কি ফুলে ও পানি ঝরে?

১০) নাক দিয়ে রক্ত পড়ে মাঝে মাঝে?


যদি এই সব প্রশ্ন মিলে যায় তাহলে, আপনার কবুতরের ডিপথেরিয়া হয়েছে, কোন সন্দেহ বা ভুল নাই। আর অনতিবিলম্বে চিকিৎসা শুরু করেন। আর ভাল হলেও চিকিৎসা বন্ধ করবেন না কারন এই রোগের চিকিৎসা ও রোগ পরবর্তী পথ্য অনেক বেশী জরুরি। আর এর আনুমানিক সময় ৩-৪ মাস লাগে। আপনার যদি আরও কিছু প্রশ্নের উত্তর খুজার চেষ্টা করুন, যেমনঃ


১) আপনার কবুতরের কি খাবার জমে থাকে পাকস্থলীতে?

২) আপনার কবুতরের কি মুখ দিয়ে গরম পানি বের হয় চাপ দিলে বা এমনিতে?

৩) আপনার কবুতরের কি গা গরম থাকে আর বসে থাকে চুপ করে?

৪) আপনার কবুতর কি কাঁপে?

৫) বুকের হাড্ডির নিচে কি প্রচুর খুস্কি?

৬) লোম ফুলিয়ে বসে থাকে?

৭) উরতে গেলে কি হাপিয়ে যাই বা বেশী উড়ে না?

৮) কবুতরের ঠোঁট কি ফ্যাঁকাসে সাদা যা গলাপি ভাব নাই বা সুকন সাদা সাদা ভাব লেগে থাকে?

৯) কবুতরের গায়ে কি মাছি আছে?


যদি এই সকল প্রশ্নের উত্তর পান তাহলে আপনার কবুতরের মাল্যারিয়া হয়েছে। আর এটা ৭-৮ সপ্তাহ আপনাকে সময় দিতে হবে সুস্থ হতে। আর এগুলো শুধু তখনি সম্ভব যখন আপনি আপনার কবুতরের খামারে সময় দিবেন। তাদের আচার আচরন লক্ষ্য করবেন। এখানে আমি রোগের কোন চিকিৎসা ব্যাবস্থা দিলাম না, কারন এগুলো খুবই স্পর্শ কাতর ঔষধ তাই এগুলর যেমন ইচ্ছে ব্যাবহার ঠিক না। একটা ব্যাপার অবশ্যই খেয়াল রাখবেন, এই সব রোগের চিকিৎসা ৫-৭ দিনে সম্ভব না, তাই ২ দিনে এর ফলাফল আশা করবেন না। কারন কিছু লোক অল্পতেই তাদের আশা হারিয়ে ফেলেন, তারা ২-৩ দিনেই ফলাফল চান। আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে আপনি আপনার কবুতর গুলো কে কি ঔষধ দিচ্ছেন আর কার উপদেশে দিচ্ছেন সেটা একটা বিবেচনার বিষয়। আপনি যদি সাল্মনেল্লা জন্য ercot or cosmix plus দেন তাহলে আর বলার কিছুই নাই। তাই এখনি আপনার সঠিক সময় আপনার কবুতরের সঠিক চিকিৎসা করার। একটু ঠাণ্ডা মাথাই চিন্তা করুন ও তারপর চিকিৎসা শুরু করুন। একটু চিন্তা করুন আপনার এটা হলে আপনি কি ঔষধ খেতেন। তাহলেই আপনার সঠিক সমাধান পেয়ে যাবেন। আল্লাহ্‌ আমাদের সবাই কে সঠিক জ্ঞান দান করুন। (আমীন)।


মূল লেখক : সোহেল রাবি ভাই



কিছু রোগ সম্পর্কে কিছু সতর্কতা (কেস স্টাডি) BD Online Pigeon Market

কিছু রোগ সম্পর্কে কিছু সতর্কতা (কেস স্টাডি)

Pigeon Discussion

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন