সামাজিক সাইট গুলো যোগাযোগের একটা ভাল মাধ্যম! এটার যেমন ভাল দিক আছে তেমন খারাপ ফলও আছে। এখানে একটা ছোট আমন্ত্রণ যেমন মুহূর্তে লাখ লাখ লোক জড় করতে পারে। তেমনি একটা ছোট ভুল লাখ লাখ লোকের জীবন কে দুর্বিষহও করে তুলতে পারে। অথবা একটা সঠিক তথ্য অনেক জীবন বাঁচাতে ও তাকে শান্তিময় করে তুলতে পারে। এখন এটা আমাদের উপর আমরা এটা কিভাবে ব্যাবহার করছি তারই উপর। আমি অন্য কোন প্রসঙ্গে কথা বলছি না আমি বলছি কবুতরের গ্রুপ এর কথা। এখানে অনেকে ভাল উপদেশ দেন। আর কিছু আছেন যারা না জেনেই বলে ফেলেন মনে মধ্যে যা আছে তাই। কিছু মানুষ আছেন যারা আবার সরাসরি উপদেশ দেন না। তারা এভাবে বলে থাকেন যে, আমি এটা করে উপকার পেয়েছি,আপনিও এটা করতে পারেন। যদি আপনি তার ভুল ধরেন তাহলে বলবে আমি ত তাকে এটা করতে বলিনি। (যদিও বলে রাখা ভাল, এই ধরনের কথা যারা বলে তারা এই কাজ নিজেরাও মনে হয় করেন না।) যারা এমন ভাবে তারা মানুষ দের ভুল পথে পরিচালিত করে থাকে। আর তাতে মাসুল নতুন কবুতর পালকরাই দিয়ে থাকেন।
এদের প্রসঙ্গে আল্লাহ্ বলেন, “আর তাদের সাথে যুদ্ধ করতে থাক যতক্ষণ না ভ্রান্তি শেষ হয়ে যায়; এবং আল্লাহর সমস্ত হুকুম প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। তারপর যদি তারা বিরত হয়ে যায়, তবে আল্লাহ তাদের কার্যকলাপ লক্ষ্য করেন। “(সূরা আল আনফাল আয়াত-৩৯)
এদের ব্যাপারে আল্লাহ্ আর বলেন,“তবে কোন সম্প্রদায়ের ধোঁকা দেয়ার ব্যাপারে যদি তোমাদের ভয় থাকে, তবে তাদের চুক্তি তাদের দিকেই ছুঁড়ে ফেলে দাও এমনভাবে যেন হয়ে যাও তোমরাও তারা সমান। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধোকাবাজ, প্রতারককে পছন্দ করেন না।।“(সূরা আল আনফাল আয়াত-৫৮ )
এই ধরনের লোকদের ব্যাপারে ছোট বেলার একটা গল্প মনে পড়ে গেল, এক শেয়াল একবার বনে ঘুরতে ঘুরতে হটাত একটা ফাঁদে আটকা পড়ল। অনেক কষ্টে সে ছাড়া পেল,কিন্তু তার লেজটা কাঁটা পড়ল। মন কষ্টে সেই শেয়াল ঘুরে বেড়ায়। আর সবায় তাকে দেখে মুচকি হাসে। তাই সেই শেয়াল একটা বুদ্ধি আঁটল। সে সব শেয়ালদের ডেকে বলল ওহে বন্ধুগণ তোমরা কি জান, আমাদের লেজ কোন কাজে আসে না। তাই এটা আমাদের রেখে লাভ নেই। আর এটা কেটে ফেলাই ভাল। শুনে একটা বয়স্ক শেয়াল হেসে বলল, ওহে চালাক শেয়াল তুমি ফাঁদে পড়ে তোমার লেজ হারিয়েছ বলে তুমি আমাদের লেজও হারানোর পরিকল্পনা করেছ। চালাক শেয়াল ধরা পড়ল।
এই ধরনের লোক সেই চালাক শেয়ালের মত তারা তাদের ভুলের মাশুল তারা যেভাবে দিয়েছেন, এখন তার চান অন্যরাও তাদের মত ভুল করুন। যাই হোক নানা মুনির নানা মতের মত ভিন্ন মতের কারনে আজ এই খাত সঙ্কটাপন্ন অবস্থা। ট্রেডার আর মুনাফা ভোগী ব্রিডারদের দোউরাত্র আজ এই খাতটি খিচুরি পাকান অবস্থা। যে যেমন ইচ্ছে এই খাতকে তেমন ভাবেই ব্যাবহার করছেন। যে যেমন ইচ্ছে তেমন ভাবে ব্রীড করছেন। আর অন্য সবাইকে নানা ভাবে উৎসাহিত করছেন। কিছুদিন আগে আমাকে একজন জানালেন তিনি একজনের কাছ থেকে কিং নড় ও স্ত্রেসার মাদি এনেছেন ফসটার হিসাবে। মানে যিনি এটা বিক্রি করেছেন সেই নতুন কবুতর পালককে তাকে গাইড করার প্রয়োজন মনে করেননি। কারন তার প্রোডাক্ট ত বিক্রি হচ্ছে।
এক খামারে দেখা গেল যে একজন নামকরা ব্রিডার এই রকম দুই জাতের কবুতর কে ক্রস করাচ্ছেন। একজন লক্ষা ও সিরাজির ক্রস করিয়ে এক ধরনের জাত তৈরি করেছেন। আর তিনি নতুন আরেকজনের কাছে দামে সেই কবুতর বিক্রি করেছেন। এরকমই কিছুদিন আগে এ ধরনের কিছু জাত করার চেষ্টা করা হয়ে ছিল। যেটাকে লাজুক লক্ষা নাম দিয়ে উচ্চদামে নতুন খামারিদের কাছে বিক্রি করে পকেট ভরেছেন। রোগ প্রতিকার থেকে শুরু করে এই ধরনের ধকাবাজ/ঠকবাজ লোকদের কারনে আজ এই খাতে ইতিমধ্যে অশনিসংকেত দেখা গেছে। এখন এটা আর কত খারাপ হতে পারে তারই দেখা বাকি। এই প্রসঙ্গে একটা গল্প আপনারদের শুনানোর লোভ সামলাতে পারছি না, একলোক একবার একটা কঙ্কালের মাথা পেল। যার কপালে লিখা ছিল,”এর কপালে আরও খারাবী আছে।“ লক্তির ভুরু কুঁচকে গেল। যার এত খারাপ অবস্থা তার আর কি খারাপ হতে পারে। তাই সেটাই দেখার জন্য সে,মাথাটি বাসাই নিয়ে আসল ও লুকিয়ে রাখল।
প্রতিদিন অফিস এ যাবার আগে ও অফিস থেকে ফিরে একবার করে। ঘুমাতে যাবার আগে ও ঘুম থেকে উঠে একবার করে দেখত যে এর কপালে আর কি ঘটেছে। এই ভাবে দিন যায় একদিন তার স্ত্রী ব্যাপারটি খেয়াল করল। আর তাকে জিজ্ঞাস করল। কিন্তু লোকটি তালবাহানা করে বিষয়টি এড়িয়ে গেল। এতে তার স্ত্রীর সন্ধেহ হল। আর তাই একদিন তার অবর্তমানে সেখানে গেল ও দেখল যে, সে একটা মাথা প্রতিদিন এভাবে দেখে। এর পরদিন অফিস থেকে ফিরে যথারীতি সেই লোকটি মাথাটি চেক করতে গেল কিন্তু সে সেটা পেল না। শেষে খুজে না পেয়ে। সে তার স্ত্রী কে জিজ্ঞাস করল। তার স্ত্রী মুখ ভেংচিয়ে বলল, ওটার ল্যাতার মেরে দিয়েছি। পুরান প্রেমিকের ভালবাসা মরার পরও ভুলতে পারনি তাই বাসাই নিয়ে এসেছ। এটাকে ভেঙ্গে গুড়ো করে বাথরুমে ফ্ল্যাশ করে দিয়েছি। লোকটি মুচকি হাসল, আর বলল আর এই জন্যই বোধ হয় মাথাটির কপালে এই লিখাটা ছিল।
আমাদের এই কবুতরের খাতের কপালেও মনে হয় ঠিক এমনটিই আছে, যা আমরা এখন পর্যন্ত নিজেদের স্বার্থের আড়ালে ঢেকে আছে। কিন্তু যদি সময়মত আমরা নিজেদের সংশোধন না করি। তাহলে হইত এই গল্পটির মাথার মতই হয়ত অবস্থা হবে। তাই সময় এসেছে, নিজেদের স্বার্থের আড়ালটা সরিয়ে একটু ভালমত চোখ খুলুন। তা না হলে এই খাতটির ব্যাপারে এক সময় ভুলে যেতে হবে। হয়তো এমন একটা সময় আসবে যখন, আপনার নাতি পোতারা একদিন বলবে আমার দাদা না সৌখিন কবুতর পালত খুবই সুন্দর সেই সব কবুতর! আর আপনি তাদের সেই পুরান ছবি গুলই শুধু দেখাবেন বা দেখাতে পারবেন। তখন আর কিছু করার থাকবে না। (ধন্যবাদ।)
মূল লেখক : সোহেল রাবি ভাই
আমি এটা করি, আপনিও এটা করতে পারেন (কেস স্টাডি) BD Online Pigeon Market

Pigeon Discussion
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন